সিলেটে পর্যটকদের ঢল
টানা তিন দিনের ছুটিতে সিলেটে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। সাপ্তাহিক দুই দিনের ছুটির সঙ্গে বড় দিনের ছুটি যুক্ত হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সিলেটে বেড়াতে এসেছেন ভ্রমণপিয়াসীরা। ফলে হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউসে সিট পাওয়া অনেকটা কঠিন হয়ে পড়েছিল।
www.jugantor.com
আবদুর রশিদ রেনু, সিলেট ব্যুরো
২৫ ডিসেম্বর ২০২২, ১০:২৪ পিএম | অনলাইন সংস্করণ
98Shares
টানা তিন দিনের ছুটিতে সিলেটে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। সাপ্তাহিক দুই দিনের ছুটির সঙ্গে বড় দিনের ছুটি যুক্ত হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সিলেটে বেড়াতে এসেছেন ভ্রমণপিয়াসীরা। ফলে হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউসে সিট পাওয়া অনেকটা কঠিন হয়ে পড়েছিল।
শুক্র ও শনিবারের সঙ্গে রোববার বড়দিনের ছুটি থাকায় এই তিন দিন পর্যটকদের ভিড়ে পর্যটনকেন্দ্রগুলো অনেকটা জনারণ্যে পরিণত হয়েছিল।
সিলেটের জাফলং, সাদা পাথর, রাতারগুল, লালাখাল, বিছনাকান্দি, পান্থুমাই জলপ্রপাত হবিগঞ্জের কমলারানীর সাগর দীঘি, সাতছড়ি, রেমা কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য মৌলভীবাজার জেলার মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, হাকালুকি হাওর, মাধবপুর লেকে ছিল হাজার হাজার দর্শনার্থীর ভিড়।
একসঙ্গে এত পর্যটক সিলেটে আসার কারণে সিলেটের হোটেল-মোটেলে সিট পাননি অনেকেই। সিলেট হোটেল-মোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি এটিএম শোয়েব বলেন, শুধু সিলেট নগরীতেই প্রায় ২০ হাজার পর্যটক এসেছিলেন। ফলে অধিকাংশ হোটেলেই সিট মেলেনি।
কুষ্টিয়া থেকে সাদা পাথর দেখতে আসা লাবনী আক্তার মিম যুগান্তরকে বলেন, টানা তিন দিনের ছুটি তাই পরিবারের সবাই সিলেটে এসেছি। জিন্দাবাজারের হোটেল ব্যবসায়ী তারেক জামান বলেন, তিন দিনের জন্য হোটেল অনেকটা ফুল বুকিং ছিল। এতে দীর্ঘদিনের মন্দাভাব কাটিয়ে সিলেটের পর্যটনে যেন প্রাণ ফিরেছে।
সিলেটের হযরত শাহজালাল (র.) ও হযরত শাহপরান (র.) মাজার, গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দি, জাফলং, কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর, জৈন্তাপুরের লালাখাল, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর ও মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলসহ বিভাগের সব পর্যটন স্পটে গতকাল রোববার বড়দিনে পর্যটকদের ঢল নামে।
পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, অল্প সময়ের ছুটিতে অন্য দেশে যাওয়া ঝামেলাপূর্ণ হওয়ায় দেশের অভ্যন্তরে ভ্রমণের হার বেড়েছে। সিলেটের জনপ্রিয় সব পর্যটন গন্তব্যে এখন উপচেপড়া ভিড়। অতিথিতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট। বহুদিন পর পর্যটক সমাগম হওয়ায় আনন্দিত পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, সপ্তাহখানেক আগে থেকেই নগরীসহ পর্যটন স্পটের হোটেল-মোটেলগুলোর বেশির ভাগই আগাম বুকিং দেওয়া ছিল। কিছু দিন ধরে হোটেল ব্যবসা মন্দা গেলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে আশার আলো দেখছেন ব্যবসায়ীরা। গত শুক্রবারই সিলেট বিভাগে প্রায় কয়েক লাখ পর্যটক ভিড় করেছেন। বড় দিনে এই সংখ্যা আরও বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জাফলং বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের সিলেট-তামাবিল সড়কের যানজটে পড়ে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। বিশেষ করে সিলেট শহরতলীর শাহপরান গেটে পর্যটকবাহী গাড়ির চাপে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে হয়।
সিলেটের সর্বত্র এখন পর্যটকদের বিচরণ। তাদের আনাগোনায় যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ট্রাফিক পুলিশকে বাড়তি চাপ সামলাতে হচ্ছে। সিলেটের বেশির ভাগ হোটেল-মোটেলের কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। তাই থাকার জায়গা খুঁজতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে অনেককে। বিপুলসংখ্যক পর্যটকের উপস্থিতিতে নিরাপত্তায় নজরদারি বাড়িয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
কোম্পানীগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, অপার সৌন্দর্যের মুগ্ধতায় সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর দেখতে এখন পর্যটকদের বাঁধভাঙা জোয়ার। টানা তিন দিনের ছুটিতে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার পর্যটক ভিড় জমাচ্ছেন এই পর্যটন কেন্দ্রে। এতদিন পর আশানুরূপ পর্যটকের আগমন ঘটায় খুশি এখানকার দোকান-রেস্তোরাঁ মালিক, নৌকার মাঝি, ফটোগ্রাফারসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানান, সারা বছরই সাদা পাথরের সৌন্দর্য দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন বহু পর্যটক। তবে বন্যায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। বাড়িঘরও ক্ষতির মুখে পড়েছে। বন্যার সময় পর্যটক না আসায় আমরা খুব কষ্টে ছিলাম। এতদিন তেমন একটা পর্যটকের আগমন না ঘটলেও সাপ্তাহিক ছুটি ও বড় দিন উপলক্ষে টানা তিন দিনের ছুটি থাকায় ব্যাপক পর্যটকের সমাগম ঘটেছে সাদা পাথরের। সব মিলিয়ে দীর্ঘদিন পর সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্রে ফের সুবাতাস।
শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্র লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়েছে। উপচেপড়া ভিড়ে নৌকা ঘাটে নৌকার জন্য দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে পর্যটকদের। জিরো পয়েন্টে আগত পর্যটকরা ছবি তোলা, স্বচ্ছ পানিতে ছোট ছোট টায়ারে হৈ-হুল্লোড়, আড্ডা, বেঞ্চিতে বসে সময় কাটানো এবং উজান থেকে নেমে আসা জলে গাঁ ভাসিয়ে উপভোগ করছেন তাদের ভ্রমণ।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মিলি চৌধুরী বলেন, সরকারি ছুটি পেয়ে পরিবার নিয়ে এখানে এসেছি। সাদা পাথর এত সুন্দর ভাবতেই পারছি না। খুব আনন্দ উপভোগ করেছি।
বাবা-মায়ের সঙ্গে বেড়াতে আসা শিশু রূপম, মীম বলেন, এখানে নদী, পাহাড়, সুন্দর সাদা পাথর আছে- এজন্য খুব ভালো লাগছে।
কুষ্টিয়া থেকে আসা আরেক পর্যটক অভি বাড়ৈ জানান, পাহাড়ের গা ঘেঁষা সাদা পাথর স্পটটি খুব সুন্দর। বারবার এখানে ছুটে আসতে মন চায়।
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর পর্যটন স্পটের নৌকার মাঝি তারেক আহমদ বলেন, পর্যটকদের নিয়ে ছুটে চলাতেই আমার আনন্দ ও আয়-রোজগার। বন্যার পর থেকে পর্যটক কমে যাওয়ায় খুব কষ্টে ছিলাম। কয়েক দিন ধরে সাদা পাথরে প্রতিদিন অনেক পর্যটক আসছেন। আশাকরি এ কয়দিন ভালোই আয় হবে।
কোম্পানীগঞ্জ ফটোগ্রাফি সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক কবির আহমদ বলেন, দীর্ঘদিন পর সাদা পাথরে ব্যাপক পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। ফলে আমাদের ফটোগ্রাফারদের আয় অন্য সময়ের তুলনায় দুই-তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
পর্যটকদের ভ্রমণ নিরাপদ ও আনন্দদায়ক করতে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি সুকান্ত চক্রবর্তী। তিনি বলেন, সাদা পাথর ঘাট ও জিরো পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য সবধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
Google tranlation
Tourists flock to Sylhet
Abdur Rashid Renu, Sylhet Bureau
25 December 2022, 10:24 pm | Online version
Tourists flocked to Sylhet for three consecutive days of vacation. Since the big day holiday is connected with the two-day weekly holiday, travelers from different parts of the country have come to Sylhet. As a result, it became very difficult to get seats in hotels, motels and guest houses.
Since Friday and Saturday and Sunday are Christmas holidays, these three days the tourist centers became crowded with tourists.
Sylhet's Jaflong, Sada Pathar, Ratargul, Lalakhal, Bichnakandi, Panthumai Falls, Sagar Dighi of Kamlarani in Habiganj, Satchari, Rema Kalenga Wildlife Sanctuary, Madhavakunda Falls, Hakaluki Haor, Madhavpur Lake in Moulvibazar district were crowded with thousands of visitors.
Due to the fact that so many tourists came to Sylhet at once, many people did not get a seat in Sylhet's hotels and motels. President of Sylhet Hotel-Motel and Guest House Owners Association ATM Shoaib said that only in Sylhet city, about 20 thousand tourists came. As a result, seats were not available in most of the hotels.
Labani Akhtar, who came from Kushtia to see the white stone, told Mim Jugantar that the whole family has come to Sylhet because of three consecutive days of vacation. Jindabazar hotelier Tarek Zaman said that the hotel was fully booked for three days. After a long period of recession, Sylhet's tourism has come back to life.
Hazrat Shahjalal (r.) and Hazrat Shahparan (r.) shrines of Sylhet, Bichnakandi of Goainghat, Jaflong, Bholaganj Sada Pathar of Companyganj, Lalakhal of Jaintapur, Tahirpur of Sunamganj and Srimangal of Moulvibazar in all the tourist spots of the division yesterday on Christmas day.
Businesses in the tourism sector say that the rate of domestic travel has increased as it is troublesome to go to another country for a short vacation. All the popular tourist destinations of Sylhet are now overcrowded. Hotels, motels and resorts have become full of guests. Tourists related to tourism are happy because of the arrival of tourists after many days.
It is known that most of the hotels and motels in tourist spots in the city were booked in advance a week before. The hotel business has been depressed for some days, but the businessmen are seeing the light of hope in the current situation. Last Friday, about a few lakhs of tourists flocked to Sylhet division. Those concerned said that this number increases even more on big days.
Tourists visiting Jaflong have to suffer due to traffic jams on the Sylhet-Tamabil road. Especially at the Shahparan Gate in Sylhet suburb, one has to be stuck for a long time due to the pressure of tourist vehicles.
Tourists are now everywhere in Sylhet. The traffic police have to cope with extra pressure to keep the traffic moving normally. Most of the hotel-motel rooms in Sylhet have been booked in advance. So many people have to face difficulties while looking for a place to stay. The tourist police has increased security surveillance in the presence of large number of tourists.
Companyganj Correspondent said that the Bholaganj white stone of Companyganj upazila of Sylhet is now overflowing with tourists due to its immense beauty. Thousands of tourists from different parts of the country and abroad are thronging this tourist center for a three-day holiday. Shop-restaurant owners, boatmen, photographers and other tourism-related businessmen are happy to see the expected arrival of tourists after such a long time.
Tourism officials said that many tourists come from different parts of the country to see the beauty of the white stone throughout the year. But we have suffered a lot in the flood. Houses are also damaged. We were in a lot of trouble as tourists did not come during the floods. So far there has not been a lot of tourists, but due to the weekend and three consecutive days off on the occasion of the big day, white stone has seen a large number of tourists. All in all, after a long time, Sada Pathar tourist center is fresh again.
Visited from morning to afternoon on Saturday, the tourist center of Sada Pathar was crowded. Tourists have to wait in long lines for the boats at the overcrowded boat wharf. Tourists arriving at Zero Point are enjoying their trip by taking pictures, riding small tires in the clear water, chatting, sitting on benches and floating in the water coming down from the upstream.
Milli Chowdhury, a tourist from Dhaka, said, I came here with my family on government leave. I can't imagine the white stone is so beautiful. I enjoyed it very much.
Rupam, a child visiting with her parents, Meem said, "There are rivers, mountains, beautiful white stones here - that's why I feel so good."
Abhi Barai, another tourist from Kushtia, said that the white stone spot around the hill is very beautiful. I want to come here again and again.
Tarek Ahmad, a boatman at Bholaganj Sada Pathar tourist spot, said, "My happiness and income is to run with tourists." I was very distressed as the number of tourists decreased after the floods. Many tourists are coming to White Stone every day for several days. Hopefully these few days will be good.
Kabir Ahmad, General Secretary of Companyganj Photography Society, said that after a long time, there has been a large gathering of tourists at Sada Pathar. As a result, the income of our photographers has increased two-three times compared to other times.
Companyganj police station OC Sukant Chakraborty said that all security measures have been taken to make the travel of tourists safe and enjoyable. He said that police are deployed at Sada Pathar Ghat and Zero Point. All measures have been taken for the safety of tourists.