kobiraaz
ELITE MEMBER
- Joined
- Oct 29, 2010
- Messages
- 9,831
- Reaction score
- 0
- Country
- Location
Bangladeshis on this forum have time and again proved themselves as mindless bigots... and have a very active Hindu Cleansing on top of their agenda.
now you have found a mirror! thanks God
---------- Post added at 10:27 PM ---------- Previous post was at 10:26 PM ----------
গুয়াহাটি (ভারত থেকে: বাংলাদেশের প্রতিবেশি ভারতীয় রাজ্য আসামে মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলেন এমন প্রায় তিনলাখ ভারতীয় নাগরিক দেশটি থেকে বহিষ্কারের মুখে রয়েছেন। কয়েক দশক ধরে ধরে ভারতে বসবাস করে জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ভোটারতালিকায় নাম উঠানো ২ লাখ ৭৪ হাজার ৯৭৯ জনের নাগরিকত্ব নিয়ে এরইমধ্যে তোলা হয়েছে প্রশ্ন। এ তালিকা বাড়ছে প্রতিদিনই।
আসামজুড়ে ৩৬টি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে চলছে এদের বিচার কার্যক্রম। এসব ট্রাইব্যুনালে গত ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ২ লাখ ৭৪ হাজার ৬৯৭টি মামলা অন্তর্ভুক্ত হয়। যদিও এদের সবাইকে এখনও আটক করা হয়নি। তবে মামলা শেষে পরোয়ানা জারি করা হবে।
ভারতের নির্বাচন কমিশনের ভাষায় এসব ভারতীয় ‘ডি ভোটার।’ ভোটার তালিকায় তাদের নামের পাশে গত কিছুদিন যাবৎ ইংরেজি ‘ডি’ (সন্দেহজনক শব্দ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তারা গত বিধানসভা নির্বাচনেও ভোট দিতে পারেননি।
আসামজুড়ে ‘বিদেশি খেদাও’ কর্মসূচির অধীনে ‘বাংলাদেশি’ বলে চিহ্নিত করে এসব মানুষকে নাগরিকহীন করে বাংলাদেশে ‘পুশইন’ দেওয়ার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত হয়ে পড়েছে।
আসামে বাংলাভাষীদের এভাবে দেশটি থেকে বহিষ্কার ঠেকাতে গড়ে ওঠা সংগঠন ‘সিটিজেন রাইটস প্রটেকশন কমিটি’(সিআরপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাধন পুরকায়স্থ বাংলানিউজকে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘ভয়ঙ্কর বিষয় হলো, ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ হয়ে যাওয়ার পর এদের সিলেট সীমান্তের মহিশাসন এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়। এধরনের একাধিক ভারতীয়কে এরইমধ্যে বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করার কথাও আসামের গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।’
পুশব্যাক কার্যক্রম স্বচোখে দেখেছেন গুয়াহাটির এমন একজন সাংবাদিক নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘মহিশাসন সীমান্তে নিয়ে পুলিশ এসব মানুষকে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। বিএসএফ গভীররাতে কাঁটাতারের বেড়ার গেট খুলে তাদের নোম্যান্স ল্যান্ডে ঠেলে দিয়ে গেট বন্ধ করে দেয়।’
ভারতের সংসদ লোকসভায় দেশটির স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম রামাচন্দন গত ১৪ ডিসেম্বর বলেছেন, ‘ভারতের অবৈধভাবে প্রবেশকরা বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর জন্য ভারত সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে।’
আসামের বিধানসভার বিরোধীদলীয় সদস্য বিধায়ক আমিনুল ইসলাম শুক্রবার গুয়াহাটিতে বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিদেশির নামে সাধারণ সংখ্যালঘু মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে।’
ভারতীয় সংসদ লোকসভার একটি তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সন্দেহভাজনদের ধরে ডিটেনশন ক্যাম্পের নামে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। সেখানে বছরের পর বছর আটকে থাকছে মানুষেরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয় পুলিশ সন্দেহের ভিত্তিতে কাউকে কিছু না জানিয়েই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নামে মামলা করতে পারে। এ কারণেই মামলার সঙ্গে সঙ্গে হয়রানিও বাড়ছে।’
এসব ট্রাইব্যুনালের বিচার হওয়া সর্বশেষ উদাহরণ কাছাড় জেলার ধলাই এলাকার মঙ্গল দাশ নামের এক ব্যক্তি। গত ৩০ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনাল তাকে বিদেশি নয় বলে রায় দেন। ১৯৯৭ সালে তার নামে পুলিশ মামলা করে, পরে শুনানিও হয় কিন্তু জানতে পারেননি তিনি। ২০০৮ সালে তাকে গ্রেফতার করার পর তিনি আপিল করেন, দীর্ঘ ৩ বছর শুনানি চলার পর তিনি কালিমামুক্ত হলেন।
আসামের বহুল প্রচারিত বাংলা দৈনিক পত্রিকা ‘যুগশঙ্খ’র প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও শিলচরের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী অতীন দাশ শিলচরের রংপুরে নিজ বাসভবনে বাংলানিউজের এ প্রতিবেদককে আসামে বাঙালি খেদাও অভিযানের আদ্যপান্ত একটি বর্ননা দেন।
তিনি বলেন, ‘আসামে বাঙালি বিশেষত: বাংলাভাষীদের দুর্দিন চলছে। অসমীয়া ভাষায় কথা বলেন এমন মানুষেরা মনে করছে, বাংলাভাষীরা আসামে অবাঞ্ছিত, তারা উড়ে এসে জুড়ে বসেছে।’
‘অথচ, বরাক উপত্যকা তো বৃহত্তর বাংলারই একটি অংশ; ১৯৪৭ সালের দেশবিভাগের রাজনৈতিক নাটকের শিকার হয়ে তারা এখন দেশহীন নাগরিকে পরিণত হচ্ছেন’, বলেন তিনি।
আসামের সাংবাদিকতার দিকপাল এবং পাঁচ দশকের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা নিয়ে সত্তোরোর্ধ অতীন দাশ বলেন, ‘আশির দশকে প্রথমে এখানে বাঙালি খেদাও অভিযান শুরু করে চিহ্নিত কয়েকটি রাজনৈতিক দল।’
নিজের লেখা একটি উপন্যাস ‘সময়ের স্বরলিপি’র প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘এদের জন্য কেন্দ্র বা রাজ্য কেউই কথা বলছে না।’
উত্তর পূর্বাঞ্চলের আরেকটি রাজ্য মিজোরামের রাজধানী আইজল থেকে প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক ‘মিজোরাম পোস্ট’র সম্পাদক নীলোৎপল চৌধুরী শিলচরে বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘আমাকে যখন একজন অসমীয় বলেন, তোমরা তো অসমীয়া ভাষায় কথা বলা শিখতেই পারো, তখন আমি অনুভব করি যে আমার পায়ের দিক থেকে গরম রক্তের একটি প্রবাহ মাথায় উঠে যাচ্ছে।’
উত্তরপূর্ব ভারতের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব নীলোৎপল চৌধুরী আরও বলেন, ‘এখানে যে কী হচ্ছে, আমরা বুঝতে পারছিনা। কেন্দ্রীয় সরকারের কেউই আমাদের এখানকার সমস্যা বোঝার চেষ্টা করছে না।’
তিনি বলেন, ‘আসামের বরাক উপত্যকায় এখন বাংলাদেশি হয়ে যাওয়ার ভয়ে বাংলাভাষী মানুষের রাতে ঘুম হয় না।’
নিলোৎপল চৌধুরীর দাদার বাবা ছিলেন উনিশ শতকে শিলচরের প্রথম ম্যাজিস্ট্রেট। সেসময় থেকেই তারা এখানে বসবাস করছেন; বাংলাতেই কথা বলছেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাভাষায় কথা বলার দাবিতে এই শিলচরে ১৯৬১ সালের ১৯ মে পুলিশের গুলিতে ১১ জন শহীদ হয়েছেন। বাংলাদেশের ২১ শে ফেব্রুয়ারির পাশাপাশি এদিনটিও আমরা ভাষা দিবস হিসেবে পালন করি।’
আসামের কাছাড় জেলার পুরনো শহর শিলচর। এ শহরে দাদার আমল থেকে বাসকরা বনেদি পরিবারের একজন মানুষকেও গত সপ্তাহে অভারতীয় বলে চিঠি দিয়েছে সরকার।
শিলচর শহরের সেন্ট্রাল রোডে অবস্থিত নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘দেখুন এই দোকান ও পাশের বাড়ি চল্লিশের দশকে আমার দাদা কিনেছিলেন। বাবাও এখানে ছিলেন, আমিও এখানে জন্মেছি, এখন আমাকে বলা হচ্ছে, আমি নাকি বাংলাদেশি।’
তিনি বলেন, ‘ভোটার তালিকা থেকে আমার নাম বাদ দেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমাকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরা দিতে হয়েছে। গত ১৬ ডিসেম্বর হাজিরা দিয়েছি।’
অভারতীয় নির্ধারণের ট্রাইব্যুনাল:
২০০৫ সালের ১৬ জুলাই আদালতের আদেশে আসামের বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের আগে ১৯৬৪ সালের ‘ফরেনার্স অ্যাক্টের’ অধীনে ১৯৮৫ সাল থেকে আদালতের মাধ্যমে অভারতীয় নির্ধারণ করা শুরু হয়।
৩৬টি ট্রাইব্যুনালে গত এক বছরে ৭২৯টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। আদালত শুরুর পর থেকে ৬ বছরে নিষ্পত্তি হয়েছে ৬৪ হাজার ৭৭৪টি মামলা।
সে সময় থেকে ২০১০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৮৪ জনকে অভারতীয় চিহ্নিত করা হয়; এদের মধ্যে আটক থাকা ২ হাজার ৪১২ জনকে সীমান্ত গলিয়ে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের তথ্য থেকে জানা যায়, এখন পর্যন্ত হয়ে যাওয়া মামলার রায় অনুযায়ী ৪৯ দশমিক ১০ শতাংশ ভারতীয় এবং ৫০ দশমিক ৯০ শতাংশ ভারতীয় নাগরিক নন।
ট্রাইব্যুনাল সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা এ হিসাব পর্যালোচনা করে বলেন, ‘সে হিসেবে বলা যায়, মামলা হয়ে প্রায় তিন লাখের মধ্যে অর্ধেকই বাংলাদেশি নাগরিক!’
সিটিজেন রাইটস প্রটেকশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাধন পুরকায়স্থ বাংলানিউজকে জানান, প্রাথমিক তদন্ত ছাড়াই পুলিশ ভারতীয় নাগরিকদের বিদেশি বলে ধরে নিয়ে ট্রাইব্যুনালে পাঠাচ্ছে।’
আসামের ক্ষমতাসীন কংগ্রেস সরকারের এতে হাত রয়েছে বলে দাবি করে সাধন বলেন, ‘বাঙালি ও বাংলায় কথা বলাই আসামে আমাদের অপরাধ।’