তিস্তায় পানির উদ্ভট তথ্য সরকারের পাতানো তথ্যের ফাঁদে মির্জা ফখরুল
রংপুর অফিস
২৩ এপ্রিল ২০১৪, বুধবার, ৬:৩৯
মৃত তিস্তায় পানির ব্যপারে সরকারের পাতানো ফাঁদে পা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি মঙ্গলবার বিকেলে গাইবান্ধা গোবিন্দগঞ্জ লংমার্চের পথসভায় বলেছেন, ‘বিশ্বাসযোগ্য সূত্রে জানতে পারলাম, লংমার্চের কারণে ভারত তিস্তায় কিছুটা পানি ছেড়েছে। এটা লংমার্চের প্রাথমিক সাফল্য। আমরা সাময়িক নয়, পুরোপুরি সফলতা চাই।’
মির্জা ফখরুলের এই কথা মিডিয়ায় প্রচার হওয়ার পর তিস্তা সেচ প্রকল্পের আওতাধীন বোরো চাষী এবং তিস্তা অববাহিকার মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিঅয়ার সৃষ্টি হয়েছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম যখন ওই বক্তব্য দেন তার চার ঘন্টা পর মঙ্গলবার রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে তিস্তার ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টের গেট কিপার ও হাইড্রোলিক মিটার রিডার নজরুল ইসলাম জানান, তিস্তায় পানি সোমবারের চেয়ে মঙ্গলবার কমেছে। মঙ্গলবার ওই সময়ে পানির পরিমাণ ছিল ডালিয়া পয়েন্টে ৬২০ কিউসেক। রিজার্ভারে যে পানি ছিল তা ক্যানেলে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজ এলাকার প্রবীণ সাংবাদিক আলতাফ হোসেন মঙ্গলবার দিনভর সেখানে অনুসন্ধান চালিয়ে রাত সাড়ে ৯টায় এ প্রতিবেদককে জানান, তিস্তার ব্যারেজের পয়েন্টে ৩০০ কিউসেকেরও কম পানি আছে। কর্তৃপক্ষ জনগণকে মিথ্যা আশ্বাস দেয়ার জন্য প্রধান ৪৪টি গেট ও আরওয়ানটি গেটটি বন্ধ করে দিয়ে তিস্তার ৩০০ কিউসেক পানিই সিএইচআর-এর ৮টি গেট দিয়ে প্রধান ক্যানেলে পানি ঢুকিয়ে দিয়েছে। এ কারণে প্রধান ক্যানেলের ১০ কিলোমিটার এলাকায় সামান্য পানি দেখা যাচ্ছে। এই পানিটিকেই কর্তৃপক্ষ তিস্তায় পানি এসেছে বলে প্রচার করছে। ঢাকা থেকে আসা সাংবাদিকদের ওই পানিটুকুই তারা দেখাচ্ছে। আর বিএনপিও সরকার তথা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের তথ্যের ভিত্তিতে তাদের পাতানো ফাঁদে পা দিয়ে তিস্তায় পানি এসেছে বলে প্রচারণা চালাচ্ছে। শুধু তাই নয়, অনেক সাংবাদিকরা সেই পানি এবং রিজারভারের পানির ছবি দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে তিস্তায় পানি আসার বিষয়টি তুলে ধরছে। কিন্তু কেউই তিস্তা ব্যারেজের নীচে যে এক ফোঁটা পানিও নেই সেটি বলছে না।
রংপুরের খলেয়া ইউনিয়নের স্লুইচগেট উত্তরগ্রামের তিস্তা সেচ ক্যানেল-সংলগ্ন পূর্বদিকে বাড়ি কৃষক নুরুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম রাত ৯টায় এ প্রতিবেদককে জানান, সেচ ক্যানেলে কোনো পানি নাই। ভারত পানি ছেড়ে দেয়ার কথাটি মিথ্যা ও বানোয়াট।
শলেয়াশাহ এলাকার কৃষক লুবা মিয়া রাত ৯টা ৫ মিনিটে জানান, ‘পানির অভাবে আমাদের জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। আমাদের ক্যানেলে কোনো পানি নেই। আমরা পানি পানি বলে মারা যাচ্ছি। আর মির্জা ফখরুল পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজনের কথা শুনে সরকারের সাথে তালে তাল মিলিয়ে বলে দিলেন ভারত পানি ছেড়েছে। এটা সঠিক নয়। ক্যানেলে কোন পানি নেই। আমরা পানি চাই।’
তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তিস্তা ডালিয়া আতিকুর রহমান জানান, মঙ্গলবার একটু পানি বেশি পাচ্ছি। তবে কী পরিমাণ সেটি তিনি প্রথমে বলতে ইতস্ততাবোধ করলেও পরে বলেন, তিন হাজার কিউসেক। তবে তার কথার কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি তিস্তা নদী ও সেচ ক্যানেলে।
Daily Naya Diganta
Hasina faked the news.....Miser Indians.....