Heart breaks down to see that one after another 'Historic Educational Institution' of our beloved motherland is getting ruined by no other than the enemies of state. BRO/Friend/Compatriot, Please read the following article to find out that the main factor behind putting fire is a Hindu (Pankaz Kumar Purukayasta), similarly like OCT.28th, 2006's Lathi-Baita's Hindu actors.
Now sensing entire Sylethaist's retribution, the Hindu's run newspapers like Prothom-Alo, Daily Star, Janakantha etc. would start to pre-empt it by manufacturing fake Hindu oppression stories. This is how the cunning Malauns have been getting away for years. Their grand strategy is to kill by millions and get away lying by billions.
এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে আগুন দিয়ে ঐতিহ্য ধ্বংস করল ছাত্রলীগ : ক্ষোভে ফুঁসছে সিলেট, দুটি মামলা, আটক ১৫, কলেজ বন্ধ
সিলেট অফিস
ছাত্রলীগ ও ইসলামী ছাত্রশিবির কর্মীদের সংঘর্ষ এবং ছাত্রাবাস পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় সিলেট এমসি কলেজের ক্লাস ও পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করেছে। ছাত্রলীগ ছাত্রাবাস পুড়িয়ে দিলেও পুলিশ প্রশাসন এপর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় জনমনে ক্ষোভ পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে রাতেই পুলিশ নগরীর বিভিন্ন মেস থেকে শিবির সন্দেহে ১৫ জনকে আটক করেছে । এদিকে ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যাপীঠের ছাত্রাবাস পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় সিলেটজুড়ে ধিক্কার ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। সেই সঙ্গে দুর্বৃত্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জোরালো হয়ে উঠেছে। এমনকি এই ঘটনার সময় উপস্থিত পুলিশ কোনো ভূমিকা না নেয়ায় তাদের কর্তব্য ও দায়িত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরে কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের এক বৈঠক প্রিন্সিপাল ধীরেশ চন্দ্র সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ক্লাস ও অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা নেয়া হবে। কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল আল হেলাল ভূঁইয়াকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে অজ্ঞাতদের অভিযুক্ত করে থানায় মামলা করা হয়েছে। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও একটি মামলা করা হয়েছে।
অপরদিকে সিলেটের ঐতিহ্য এমসি কলেজের ছাত্রাবাস আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেয়ার ঘটনায় সিলেটজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। গত রোববার রাতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবির কর্মীদের মধ্যকার সংঘাতের জের ধরে ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা ছাত্রাবাসের ৪টি ব্লকের শতাধিক কক্ষ পুড়িয়ে দেয়। এসব কক্ষ শিবির ও ছাত্রলীগ ছাড়াও সাধারণ ছাত্ররা বসবাস করত। এ ঘটনায় সিলেটজুড়ে সচেতন মহল নিন্দা ও ধিক্কার দিচ্ছেন। তারা জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন। সেই সঙ্গে এদের মদতদাতাদের চিহ্নিত করার আহ্বান জানিয়েছেন সিলেটবাসীকে।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমসি কলেজের হোস্টেল পোড়ানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শত বছরের প্রাচীন এ কলেজ হোস্টেল পোড়ানোর ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তিনি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেফতার করতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। তিনি শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সব মহলের প্রতি আহ্বান জানান।
রোববার সন্ধ্যায় শিবিরের সঙ্গে সংঘর্ষের পর ছাত্রলীগ কর্মীরা এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের চারটি ভবনের শতাধিক কক্ষে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে ৪২টি কক্ষ সম্পূর্ণ এবং ৭০টির মতো কক্ষ আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিন ঘণ্টা চেষ্টার পর ফায়ার ব্রিগেড কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ওইসব কক্ষে ছাত্রদের বই-খাতা, কম্পিউটার, আসবাবপত্র সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এদিকে শওকত হাসান মানিক নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী এ ঘটনায় সোমবার সকালে শাহপরাণ থানায় একটি মামলা করেছেন। এতে ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৬০-৭০ জন অজ্ঞাত শিবির কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৫ শিবির কর্মীকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, নগরীর উপশহর এলাকায় একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে সিলেট সরকারি কলেজ শাখা শিবিরের সেক্রেটারি মামুন হোসাইন ও এমসি কলেজ ছাত্রাবাস সভাপতি রাসেল, শিবির নেতা নোমান ও সিদ্দিক নামে ৪ জনকে আটক করা হয়। এছাড়া মেজরটিলার একটি মেস থেকে ৮ জন, দক্ষিণ সুরমা থেকে আরও ২ জনকে এবং জল্লারপাড় থেকে একজন শিবির কর্মীকে আটক করা হয়েছে।
ঘটনার নিন্দা : সিলেটে ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজ ছাত্রাবাস পুড়িয়ে দেয়ায় সিলেটের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। সিলেট মহানগর সভাপতি এমএ হক আমার দেশ-কে বলেন, সিলেটের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য সরকারের লালিত ছাত্র সংগঠন এমসি কলেজের ছাত্রবাসে অগ্নিসংযোগ করেছে। তিনি বলেন, এ ঘটনা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ কিনা তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। বিশিষ্ট চিকিত্সক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, এটি দেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রের অংশ। জনগণ এর সঠিক তদন্ত ও অগ্নিসংযোগকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখতে চায়। বিভিন্ন মিডিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রদত্ত বক্তব্যে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান এ ঘটনা সমপর্কে বলেন, এরকম ঘটনা অবশ্যই নিন্দনীয়। ছাত্রলীগ-শিবির যেই করুক এ ঘটনা, তার বিচার হওয়া দরকার। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন জানান, তিনি এ ঘটনা শুনেছেন। এর নিন্দা জানান তিনি। কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ধীরেশ চন্দ্র সরকার জানান, এমসি কলেজের ইতিহাসে এ রকম ঘটনা নজিরবিহীন। তবে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে ঐতিহ্যবাহী ছাত্রাবাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত কোনো নিন্দা প্রকাশ করতে দেখা যায়নি। অপরদিকে অগ্নিসংযোগের পর সমাবেশে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি পংকজ দাস পুরকায়স্থ বলেছেন, স্বাধীনতার পর এবারই শিবিরমুক্ত হলো কলেজ ছাত্রাবাস। সিলেট মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি সিরাজুল ইসলাম শাহীন বলেন, ছাত্রলীগ যখন থেকে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন মেয়র কামরানসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। অনুরোধ জানানো হয় বহিরাগতদের ঠেকাতে। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও জানানো হয়। কেউ পাত্তা দেয়নি। শেষ পর্যন্ত অনুরোধ করা হয় ঐতিহ্যবাহী ছাত্রাবাসটি রক্ষা করুন। তাতেও তারা সাড়া দেননি। শাহীন বলেন, এতে পুরো সিলেটবাসী ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ধ্বংসের ঘটনায় আওয়ামী লীগকে সিলেটবাসীর কাছে জবাবদিহি হতে হবে।
ছাত্র শিবিরের বিবৃতি : ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সিলেট এমসি কলেজ হোস্টেলে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের হামলা ও তাণ্ডবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সিলেট শিবির। এক যুক্ত বিবৃতিতে সিলেট মহানগর শিবির সভাপতি আনোয়ারুল ওয়াদুদ টিপু, সেক্রেটারি আবদুুর রাজ্জাক, শাবিপ্রবি সভাপতি হোসাইন আহমদ, সেক্রেটারি এহসানুল করিম, জেলা পশ্চিম সভাপতি ফরিদ আল মামুন, সেক্রেটারি মো. দুলাল আহমদ, জেলা পূর্ব সভাপতি মাসুক আহমদ, এমসি কলেজ সভাপতি এস এম মনোয়ার হোসেন, সেক্রেটারি মঞ্জুর আহমদ ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের জ্বালাও পোড়াও হামলা ও তাণ্ডবের তীব্র প্রতিবাদ জানান। শিবির নেতারা বিবৃতিতে আরও বলেন, এমসি কলেজে ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীরা রোববার বিকালে সম্পূর্ণ বিনা উস্কানিতে হোস্টেলের বৈধ বর্ডারদের ওপর পরিকল্পিত হামলা চালায়। হামলায় শিবিরের কর্মী জাহাঙ্গীর, মাসুম, রাসেল, মনোয়ার, জুনায়েদ, শাফকাত, জামিল, আরাফ, সালিমুল্লাহ, সুমন, সামসুদ্দিন, জামান ও হাসানসহ প্রায় ১৮ থেকে ২০ জন নিরীহ ছাত্র গুরুতরভাবে আহত হয়। পরে সাধারণ ছাত্রদের প্রতিরোধের মুখে টিকতে না পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সহযোগিতায় শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজের প্রায় সবকটি ছাত্রাবাস পুড়িয়ে দেয়। মুহূর্তেই ভস্ম হয়ে যায় অসংখ্য ছাত্রদের বই-খাতাসহ প্রয়োজনীয় সব আসবাব। ছাত্রলীগের এই হামলা আবারও প্রমাণ করল তারা বাকশালি রাজনীতিতে বিশ্বাসী। নেতারা অবিলম্বে এই সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান এবং ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্রদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানান। অন্যথায় সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে এসব সন্ত্রাসীকে প্রতিহত করা হবে।
ঘটনার সূত্রপাত : এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের ৫টি ব্লক পুড়িয়ে দেয়ার মূল কারণ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি পঙ্কজ পুরকায়স্থ জানিয়েছেন, খেলার মাঠে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিবিরকর্মীরা ছাত্রলীগের দুই কর্মীকে পিটিয়েছে। এর জের ধরে ঘটনাটি ঘটেছে। মহানগর শিবির সভাপতি আনোয়ারুল ওয়াদুদ টিপু জানিয়েছেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ মেধার ভিত্তিতে হলে ছাত্র তোলার সিদ্ধান্ত নেয় কলেজ কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্ত বানচালের লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে ছাত্রলীগ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ টিপুর। তবে বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, উজ্জ্বল নামের এক ছাত্রলীগ কর্মী শিবিরের জাহাঙ্গীর নামের এক সিনিয়র ছাত্রের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হয়। এরপর দুপক্ষের মধ্যে মৃদু ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এর জের ধরেই মূলত ঘটনার সূত্রপাত। ছাত্রলীগের দাবি, জুয়েল নামে তাদের এক কর্মী গতকাল ছাত্রবাস মাঠে খেলতে গেলে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায় শিবির কর্মীরা। এসময় শিবিরের এক কর্মী জুয়েলকে দা দিয়ে কোপ দিলে সে দৌড়ে আত্মরক্ষা করে। এদিকে অপর এক সূত্র জানায়, ছাত্রাবাসে নতুন সিট বরাদ্দ নিয়ে কদিন থেকে ছাত্রলীগ-শিবির কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। দুদলই নিজেদের কর্মীকে সিট বরাদ্দ দিতে কৌশল অবলম্বন করে আসছিল। এতে দুদলই ছাত্রাবাসের নিয়ন্ত্রণ নিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল সপ্তাহখানেক থেকে। এ থেকেই রোববার সন্ধ্যায় সংঘর্ষের সূত্রপাত বলে একাধিক সূত্রে জানা যায়। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রোববার সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ-শিবির সংঘর্ষ শুরু হয়। ছাত্রাবাসের ৩ নং ব্লকে সংঘর্ষ শুরু হয়ে কয়েক দফা চলে। এসময় ছাত্রলীগের ধাওয়ার মুখে পিছু হটে শিবির কর্মীরা। শিবিরের এমসি কলেজ সভাপতি এসএম মনোয়ারসহ ৬ জন আহত হন। পরে ছাত্রলীগ নামধারীরা ছাত্রাবাসের ৫টি ব্লকের সবকটি কক্ষে আগুন দেয়। দাউ দাউ করে আগুনের লেলিহান শিখা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ছাত্রাবাসের সব কক্ষে। পুলিশ এসময় দাঁড়িয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। আগুনে ছাত্রদের বই-খাতা ও আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস প্রথমে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভাতে ব্যর্থ হয়। ক্রমাগত আগুন দেয়ায় ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। পরে প্রায় আধঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নেভায় ফায়ার সার্ভিস। এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত ছাত্রাবাসের শতাধিক কক্ষ পুড়ে গেছে। ছাত্রাবাসের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, রোববার বিকালে ছাত্রাবাস মাঠে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে কলেজ ছাত্রলীগের আফজল ও শিবিরের জাহাঙ্গীরের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে শিবিরের জাহাঙ্গীর ছাত্রলীগ কর্মী আফজলকে মারপিট করে। পরে এ ঘটনাটি আফজল কলেজ ছাত্রলীগ নেতাদের অবহিত করে। ফলে টিলাগড় আজাদ-রঞ্জিত গ্রুপের ছাত্রলীগ কর্মীরা পাল্টা জবাব দেয়ার জন্য রাতে কলেজ ছাত্রাবাসের গিয়ে শিবিরের মুখোমুখি হয়। এসময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শিবির-ছাত্রলীগ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ছাত্রাবাসে আগুন লাগার পর আশপাশে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভাতে পারেনি। আগুনে পুরো ছাত্রাবাস পুড়ে যায়। এক পর্যায়ে ফায়ার সার্ভিস শেষ চেষ্টা চালিয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। ছাত্রলীগ রঞ্জিত-আজাদ গ্রুপ ছাত্রাবাস থেকে মিছিল নিয়ে বের হয়ে টিলাগড় পয়েন্টে আসে। সেখানে আধিপত্য বিস্তার করার উদ্দেশ্যে মহানগর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের দোকান ভাংচুর করে। এসময় তারা আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষ্যে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এর জের ধরে ছাত্রলীগের বাবলা গ্রুপ রঞ্জিত-আজাদ গ্রুপের সঙ্গে সংষর্ঘে জড়িয়ে পড়ে। বাবলা গ্রুপের গুলিবর্ষণে ছাত্রলীগ কর্মীরা গুলিবিদ্ধ হয়। এসময় জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসান চৌধুরী সাজনের একটি মোটরসাইকেলসহ মোট দুটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে কবির পক্ষ।
যেভাবে পোড়ানো হলো ছাত্রাবাস : প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা ৬টার দিকে ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগ-শিবির কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর ছাত্রলীগ কর্মীরা টিলাগড় পয়েন্টে চলে যায়। এরপর ছাত্রলীগ সংগঠিত হতে থাকে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে টিলাগড় থেকে দুশতাধিক বহিরাগত নেতাকর্মীকে নিয়ে ছাত্রাবাসে ঢোকেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি পঙ্কজ দাস পুরকায়স্থ ও এমসি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, বর্তমানে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা তাজিম উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন জেলা যুবলীগ নেতা মুশফিক জায়গীরদার, সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক দেবাংশু দাস মিঠুসহ সিনিয়র নেতারা। ছাত্রলীগের মিছিলটি যখন হোস্টেলের দিকে এগুচ্ছিল, তখন পুলিশ ছিল তাদের সামনে। এরপর পুলিশ দলটি আটকে যায় ছাত্রাবাসের মূল গেটে। আর দা, ছোরা ও পেট্রোলের পিপা নিয়ে ভেতরে ঢুকে দুশতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী। প্রথমেই দৃষ্টিনন্দন বিশাল ক্যাম্পাসের ৬টি ব্লকের প্রথম ব্লকে আগুন ধরায় ছাত্রলীগ কর্মীরা। এরপর একে একে ২য় ব্লক, ৩য় ব্লক, ৪র্থ ব্লক ও ৫ম ব্লকে আগুন ধরানো হয়। এর আগে শিবিরকর্মীরা ছাত্রাবাসের পেছন দিয়ে চলে যায়। অবশ্য ছাত্রলীগ কর্মীদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে ছাত্রাবাসের হিন্দু ছাত্রদের একটি মাত্র ব্লক শ্রীকান্ত ছাত্রাবাস। এদিকে সবকটি ছাত্রাবাসে পর্যায়ক্রমে আগুন ধরিয়ে ১ম ব্লকের মূল গেটে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে ছাত্রলীগ। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি পঙ্কজ দাস পুরকায়স্থ ও ছাত্রলীগ নেতা সাজনসহ বেশ কজন নেতা। সমাবেশে পঙ্কজ দাস পুরকায়স্থ বলেন, স্বাধীনতার পর এবারই শিবিরমুক্ত হলো কলেজ ছাত্রাবাস। তারা শিবিরকে যে কোনো মূল্যে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন।
ঐতিহ্য পোড়াল ছাত্রলীগ : এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ধীরেশ চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, এমসি কলেজ ছাত্রাবাসটি ১২০ বছরের পুরনো। আর এই ছাত্রাবাসটির সবকটি ব্লকে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ। সবার চোখের সামনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল এমসি কলেজের ৯১ বছরের প্রাচীন ছাত্রাবাসের ৩টি ব্লক। নান্দনিক স্থাপত্যের সুবিশাল আয়তনের সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের সঙ্গে জড়িয়ে এ কলেজের সাবেক ও বর্তমান হাজার হাজার ছাত্রের আবেগানুভূতি। হোস্টেলের সামনে সুবিশাল মাঠ। খোলামেলা মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ। ৬টি ব্লকে ভাগ করা হোস্টেল ভবন। প্রতিটি ব্লক দৈর্ঘ্যে কয়েকশ ফুট লম্বা। এক ব্লক থেকে অন্য ব্লকের দূরত্বও অনেক। ৪র্থ ও ৫ম ব্লকের মাঝে রয়েছে ছাত্রদের গোসলের জন্য পুকুর। ছায়াঘেরা মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের এমন হোস্টেল বিরল। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো হোস্টেল ভবনের ভিন্নধর্মী স্থাপত্যশৈলী। স্থাপত্যকলার সংশ্লিষ্টদের মতে, সেমিপাক্কা আসাম টাইপের এত বিশাল ভবন কোথাও হয়তো এখন আর অবশিষ্ট নেই। ইতিহাস থেকে জানা যায়, সিলেটের স্বনামখ্যাত শিক্ষানুরাগী রাজা গিরিশ চন্দ্র রায় তার পিতামহ মুরারী চাঁদের নামানুসারে ১৮৯২ সালে স্থাপন করেন মুরারী চাঁদ কলেজ। শুরুতে কবছর কলেজের ব্যয়ভার বহন করেন রাজা নিজেই। এরপর তত্কালীন শিক্ষামন্ত্রী আবদুল মজিদ সিআইইর প্রচেষ্টায় ব্রিটিশ সরকারের অর্থানুকূল্য পাওয়ায় কলেজটি ১৯২১ সালে স্থানান্তরিত হয় টিলাগড়ে অবস্থিত থ্যাকারে টিলায়। এ সময় কলেজের জন্য একাধিক একাডেমিক ভবন নির্মিত হয়। একই সময় কলেজের অদূরে নির্মিত হয় সুবিশাল এই হোস্টেলটি। প্রায় ২০ কেদার ভূমির ওপর নির্মিত হোস্টেলের ভবন, এর অঙ্গসজ্জা ও স্থাপত্যশৈলী যে কোনো দর্শনার্থীর দৃষ্টি কাড়ত। অসংখ্য নামজাদা ও কীর্তিমান ব্যক্তিত্ব যেমন এই হোস্টেলে থেকে অধ্যয়ন করেছেন, তেমনি অনেক ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের পদধুলি পড়েছে এখানে। বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সিলেট সফরে এলে ১৩২৬ বঙ্গাব্দের ২১ কার্তিক একটি দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেন এমসি কলেজ হোস্টেলে।
ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্রাবাস পরিদর্শনে আওয়ামী লীগ নেতারা : ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজের ছাত্রাবাস পুড়িয়ে দেয়া দুর্বৃত্তদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও দলের সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।
তিনি বলেন, যা ঘটানো হয়েছেতা অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জাজনক। শতবর্ষের স্মারক ও ঐতিহ্যবাহী এই ছাত্রাবাস যারা পুড়িয়ে দিয়েছে, তারা অবশ্যই ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে। তদন্ত করে এর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনা এদেশের জন্যই কাজ করছেন। দেশবিরোধী এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দেশের স্বার্থে, সমাজের স্বার্থে রুখে দাঁড়াতে হবে।
তিনি গতকাল দুপুরে এমসি কলেজের পুড়িয়ে দেয়া ছাত্রাবাস পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এসময় সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিলেট জেলা পরিষদের প্রশাসক আবদুর জহির চৌধুরী সুফিয়ান, জেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন, মহানগর যুবলীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ শামিম আহমদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি সুব্রত পুরকায়স্থ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ মকলু মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বেলাল আহমদসহ দলীয় নেতারা তার সঙ্গে ছিলেন।
সিলেট জামায়াত : একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন কর্তৃক শত বছরের ঐতিহ্যের স্মারক এমসি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্রাবাসে অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজ ও ভাংচুরের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করে এক যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন সিলেট জামায়াত নেতারা। বিবৃতিতে নেতারা বলেন, এমসি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শিক্ষা জগতে ঐতিহ্যের এক স্মৃতিস্তম্ভ। ঐতিহ্যবাহী এ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রাবাসে সে আবাসিক ছাত্র হিসেবে লেখাপড়া করে অগণিত ব্যক্তিবর্গ দেশ-জাতি, এমনকি আন্তর্জাতিকভাবে অনন্য অবদান রেখেছেন। সেই ঐতিহ্যের স্মারক এখন প্রতিহিংসার আগুনে পুড়ে একটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
গত ৮ জুলাই সন্ধ্যায় একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের অস্ত্রধারী উগ্রপন্থী সন্ত্রাসীরা প্রশাসনের ছত্রছায়ায় এমসি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্রাবাসে আগুন জ্বালিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। যা প্রত্যক্ষ করেছে শত শত সাধারণ মানুষ। ভাংচুর, লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগে কারা জড়িত ছিল তা ভিডিও ফুটেজ ও স্থির ক্যামেরায় ছবি দেখলেই সহজে শনাক্ত করা যাবে। বিবৃতিতে নেতারা বলেন, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় ঘটনা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সরকারদলীয় নেতাদের করুণভাবে এ ধ্বংসযজ্ঞ থামাতে অনুরোধ করলেও কেউ তাতে সাড়া দেননি। অবস্থাদৃষ্টে প্রতীয়মান হয় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কাছে বিবেক যেন স্তব্ধ হয়ে যায়। ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের গায়ে পড়ে সংঘাত বাঁধিয়ে লুটপাট ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো ছাত্রলীগের নেশায় পরিণত হয়েছে। এর আগে সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রবাসে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় একই ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। সরকারি কলেজ ছাত্রাবাসে এখন আর কোনো ছাত্র নেই। আছে মাদকসেবী নেশাগ্রস্ত ব্যক্তিদের আবাস। চলছে অবাধে অসামাজিক কার্যকলাপ। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হাজার হাজার ছাত্রের আবাসিক ব্যবস্থা থাকলেও বর্তমানে আছে মাত্র কয়েকশ ছাত্র। এভাবে পরিকল্পিতভাবে সিলেটের শিক্ষাঙ্গনগুলোকে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে। নেতারা বলেন, সিলেটের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধরে রাখতে হলে সন্ত্রাসনির্ভর প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে শিক্ষাবিধ, সামাজিক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ সুশীলসমাজকে। তারা শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এমসি ছাত্রাবাসে হামলাকারী দায়ী ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করেন।
বিবৃতিদাতা নেতারা হলেন, জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগর আমির অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, মহানগর নায়েবে আমির ডা. সায়েফ আহমদ, সেক্রেটারি সিরাজুল ইসলাম শাহীন, দক্ষিণ জেলা আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, নায়েবে আমির অধ্যাপক আবদুল হান্নান, সেক্রেটারি মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান, উত্তর জেলা আমির হাফিজ আনোয়ার হোসাইন খান, সেক্রেটারি মাওলানা ইসলাম উদ্দিন।
জাগপা : জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি জাগপার কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা সভাপতি মকসুদ হোসেনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল গতকাল শত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাস পরিদর্শনে যান। এ সময় তারা মুজিববাদী ছাত্রলীগ কর্তৃক আগুনে পুড়িয়ে দেয়া ছাত্রাবাসের ভস্মীভূত কক্ষগুলো ও ভবন পরিদর্শন করেন। পরে নেতারা শত বছরের ঐতিহ্যের স্মারক প্রতিষ্ঠান এমসি কলেজের বর্তমান আগুনের লেলিহান শিখার দ্বারা ছারখার হয়ে যাওয়া ধ্বংসস্তূপ দেখে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা জাগপার সিনিয়ন সহ-সভাপতি শাহিদুর রহমান জুনু, সাধারণ সম্পাদক তারেক আহমদ বিলাস, নগর আহ্বায়ক আবদুল মোতাওয়াল্লি ফলিক, জেলা জাগপা ছাত্রলীগ সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন, সহ-সভাপতি নাসির তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমদ, মুকুল চৌধুরী, ছাত্রনেতা সেলিম আহমদ, নির্মাণ শ্রমিকনেতা আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
সিলেট মহানগর ছাত্রদল : জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সিলেট মহানগর শাখার সভাপতি জিয়াউল গণি আরেফিন জিল্লুর ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম সিদ্দিকী খালেদ, জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওমর আশরাফ ইমন, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাফেক মাহবুব এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, ঐতিহ্যে লালিত সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সন্ত্রাসীরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে যে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে তা অতীতের সব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে হার মানিয়েছে। নেতারা অবিলম্বে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ছাত্রাবাস নষ্টকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের জোর দাবি জানান। সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়ে নেতারা বলেন, অবিলম্বে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ছাত্রাবাস মেরামত করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে, অন্যথায় ছাত্রদল সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে। যদি এই জঘন্য ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীরা পার পেয়ে যায় তবে ভবিষ্যতে সিলেটের শিক্ষাঙ্গন সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হবে, যা সিলেটবাসী আশা করে না। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা অতিক্রম হওয়া সত্ত্বেও এখন কোনো সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার না করায় জনমনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। তাই প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর আহ্বান জানান।
এমসি কলেজ ছাত্রদল : ইতিহাসে কলঙ্কজনক এবং ন্যক্কারজনক সর্বজনধিকৃত সন্ত্রাসীরা ঐতিহ্যবাহী এমসি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রাবাসে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে সবগুলো আবাসিক হল পুড়িয়ে দেয়ার প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এমসি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে গতকাল এক প্রতিবাদ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ঐতিহাসিক কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশে মিলিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আহমদ চৌধুরী ফয়েজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা উল্লেখ করেন, ঐতিহাসিক এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত, সাবেক সফল অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এম. ইলিয়াস আলী ও বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদসহ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের অনেক কীর্তিমান ব্যক্তিত্বের ছাত্রজীবনের সোনালি অধ্যায়গুলো এই ছাত্রাবাসেই কেটেছে। সন্ত্রাসী এ কর্মকাণ্ডের ফলে মেধাবীদের মিলনমেলার এই ক্যাম্পাস থেকে মেধাবীরা মুখ ফিরিয়ে নেবে। ছাত্রদল এমসি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি, ইতিহাস-ঐতিহ্য দায়িত্বশীল ছাত্র সংগঠন হিসেবে যুগ যুগ ধরে বহন করবে। অবিলম্বে মানুষের হৃদয়ের এই রক্তক্ষরণ ও ন্যক্কারজনক ঘটনার দায়ী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করা না হলে ছাত্রদল অতীতের ন্যায় ভবিষ্যতেও তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলবে। ছাত্রদল ক্যাম্পাসের প্রত্যেকটি ছাত্র সংগঠনকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাচ্ছে।
এমসি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদুল হাসান খালেদের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মহানগর ছাত্রদল নেতা আবদুল জলিল, অর্জুন ঘোষ, খিজির হোসেন এনু, প্রাণেশ দে, লাহিন আহমদ, ফয়জুল ইসলাম পীর, মাহবুবুর রহমান লোকমান, সুহেল আহমদ, সাইদুজ্জামান লাভলু, মির্জা জাহেদ, জাহেদ আহমদ, ফজলুর রহমান, এমসি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক আসাদুল হক আসাদ, প্রচার সম্পাদক ইশতিয়াক আলী সজীব প্রমুখ।
মদন মোহন কলেজ ছাত্রদল : এমসি কলেজের ঐতিহ্যবাহী ছাত্রাবাস পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনার প্রতিবাদে মদন মোহন কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে গতকাল কলেজ ক্যাম্পাসে এক প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি কাজী মেরাজের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এসএম সেফুলের পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর ছাত্রদলের ক্রীড়া সম্পাদক লুত্ফুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক লোকমান আহমদ, কলেজ শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি হেলাল আহমদ, নেছার আলম শামীম, সদর উত্তর ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজরুল ইসলাম, মহানগর ছাত্রদল নেতা বেলাল আহমদ, দেওয়ান আরাফাত চৌধুরী জাকির, জেহিন আহমদ, আবুল হোসেন। এ সময় বক্তারা বলেন, এমসি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রাবাসে যে সম্পদ সন্ত্রাসীরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে অন্যথায় ছাত্রদল শান্তিপূর্ণ সিলেটবাসীকে নিয়ে পবিত্র নগরীর ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে।
বৃহত্তর সিলেট গণদাবি পরিষদ : বৃহত্তর সিলেট গণদাবি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির এক সভায় শতাব্দীর ঐতিহ্যবাহী সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাস পুড়িয়ে দেয়ার জন্য দায়ীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়। গতকাল বিকালে সুরমা মার্কেট সংগঠনের সভাপতি মহম্মদ আশরাফ আলীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বদরুল ইসলাম জাহাঙ্গীরের পরিচালনায় আলোচনায় অংশ নেন আলহাজ আখলাক আহমদ চৌধুরী, সাংবাদিক এম এ হান্নান, মো. সালাহউদ্দিন রিমন, নূরুদ্দীন রাসেল, আবদুল মুমিন লাহিন, মো. শামীম আহমদ, ইসমাঈল আলী টিপু, চন্দন চন্দ্র দে, আজির উদ্দিন প্রমুখ।
নয়াসড়ক ক্রীড়া সংস্থা : ঐতিহ্যবাহী সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাস ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের পুড়ানোর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন নয়াসড়ক ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মতিউর রহমান শিমুল ও সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন। নেতারা বলেন যারা এ ধরনের অমানবিক কাজ করে সিলেটের ইতিহাসকে দাবিয়ে দিতে চায় তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া উচিত। বিবৃতিদাতারা অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারে প্রতি অনুরোধ জানান।
Daily Amardesh -??? ????, ???????? ?? ????? ????, ?? ???? ????, ?? ????? ???? ?????