বাংলাদেশে ক্ষেপণাস্ত্র যুদ্ধজাহাজ রপ্তানি করতে চায় ভারত, চলছে আলোচনা
বাংলাদেশের কাছে ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধজাহাজ সহ সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি করবে ভারত। এ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে। এদেশে ‘ব্রহ্ম’ ও ‘আকাশ’-এর মতো ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র রপ্তানির বিপুল সম্ভাবনা দেখছে ভারত সরকার। বাংলাদেশের কাছে যুদ্ধজাহাজও রপ্তানি করতে চায় তারা। শুধু বাংলাদেশই নয়, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মৌরিতানিয়ার মতো দেশেও ভারত তার ক্ষেপণাস্ত্র রপ্তানি করতে চায়। এর মাধ্যমে ২০১৯ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে প্রতিরক্ষা বিষয়ক সরঞ্জাম রপ্তানি করে ভারত ২০০ কোটি ডলার অর্জন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এ জন্য তারা অন্য দেশে স্থাপন করতে চায় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনকারী কারখানা। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকরকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন দ্য হিন্দুর বিজনেস লাইন। এতে বলা হয়েছে, সামরিক বা প্রতিরক্ষাবিষয়ক সরঞ্জাম বিক্রির জন্য নতুন নতুন দেশ খুঁজছে ভারত। প্রতিরক্ষাবিষয়ক সরঞ্জাম উৎপাদনের জন্য অন্যান্য দেশে কারখানা স্থাপনের সুযোগ খুঁজছে তারা। মনোহর পারিকর মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, (এ খাতে) আমাদের রপ্তানি শিগগিরই ১০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। আমাদের এখনকার টার্গেট হলো এই সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার আগেই রপ্তানি করে ২০০ কোটি ডলার অর্জন করা। তিনি আরো বলেন, প্রচলিত যেসব দেশের সঙ্গে ভারতের সামরিক অস্ত্রবিষয়ক শিপমেন্ট বা যেখানে ভারতের সামরিক অস্ত্রের বাজার আছে তার বাইরে নতুন নতুন দেশে বাজার খুঁজছে তার মন্ত্রণালয়। তার সরকার সশন্ত্র বাহিনীর জন্য ‘আইটেম’ রপ্তানির পথ খুঁজছে। একই সঙ্গে অন্য দেশে প্রতিরক্ষাবিষয়ক সরঞ্জাম উৎপাদনের জন্য কারখানা স্থাপনের সুযোগ খুঁজছে ভারত। প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর আরো বলেন, বন্ধুপ্রতিম যেকোনো দেশের কাছে আমরা ‘ব্রহ্ম’ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে চাই। এক্ষেত্রে ভিয়েতনাম কিন্তু আমাদের একটি বন্ধু দেশ। ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী এমন সময়ে এ কথা বললেন যখন কৌশলে চীনের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য ভিয়েতনামের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার চেষ্টা করছে ভারত। মনোহর পারিকর দৃশ্যত আরো আস্থা প্রকাশ করেন। তার আস্থা রয়েছে বাংলাদেশ, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও আফগানিস্তানের মতো আরো দেশকে তাদের রপ্তানির টার্গেটে নিতে হবে। এসব দেশে রপ্তানি করার মাধ্যমে তারা টার্গেট পূরণ করতে পারবেন। তার ভাষায়, আমরা অনেক দেশে যুদ্ধজাহাজ রপ্তানি করছি। এক্ষেত্রে একটি প্রাইভেট শিপওয়ার্ড যাচ্ছে ভিয়েতনামে। ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ সরবরাহ নিয়ে বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো ১৬-১৭টি দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তিনি আরো বলেছেন, প্রতিরক্ষা রপ্তানি তদারকি প্রতিষ্ঠানকে ভর্তুকি দেয়ার মাধ্যমে পূর্ণ সমর্থন দেবে সরকার। প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো থেকে দেয়া হবে বাজারজাতকরণবিষয়ক সহযোগিতা। এর মাধ্যমে ওই সংস্থাকে আরো শক্তিশালী করে গড়ে তোলা হবে। ডিফেন্স প্রকিউরমেন্ট প্রসিডিউর (ডিপিপি) ২০১৬ সম্পর্কে মনোহর পারিকর বলেন, এটা শিগগিরই চূড়ান্ত করা হবে। এর কৌশলগত অংশীদারিত্ববিষয়ক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়টি আলোচনা চূড়ান্ত দফায় রয়েছে। অল্প দু’একটি ইস্যু আছে যা যথাযথভাবে রেকর্ড করার প্রয়োজন রয়েছে। এ কাজটি শিগগিরই সম্পন্ন হবে। এটা চূড়ান্ত করতে শিগগিরই আমরা (ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কমিটি) বৈঠকে বসবো। নতুন ডিপিপি গত বছর জানুয়ারিতে প্রকাশ করা হয়। তারপর থেকে প্রতিরক্ষাবিষয়ক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সহ সব অংশীদারের সঙ্গে সরকার অনেকবার বৈঠক করেছে। পারিকর বলেন, কৌশলগত অংশীদারিত্বের মালিক থাকবে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো, যদিও এটা হবে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ।