PlanetSoldier
SENIOR MEMBER
- Joined
- Apr 8, 2012
- Messages
- 2,043
- Reaction score
- 0
- Country
- Location
Sorry guys, it's in Bangla.
বৃহস্পতিবার, 31 জানুয়ারী 2013 19:19
সীমান্তে ভারতের আচরণের উপযুক্ত জবাব দেয়া উচিত : ফরহাদ মজহার
ফরহাদ মজহার ফরহাদ মজহার
সম্প্রতি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফেরের সময় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্দীবিনিময় চুক্তি সই হয়েছে। এছাড়া, উভয় দেশের মধ্যে ভিসা সহজীকরণ করা হয়েছে। সীমান্ত হত্যা নিয়েও কথা বলেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তো এসব বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলেছি বাংলাদেশের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, কলামিস্ট, কবি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহারের সঙ্গে। পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাতকারটি এখানে উপস্থাপন করা হলো :
রেডিও তেহরান : প্রতিবেশী ও বন্ধুপ্রতীম ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দীবিনিময় ও ভিসা সহজীকরণ বিষয়ক দুটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। ঢাকায় বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্দে চুক্তি দুটি স্বাক্ষর করেন। চুক্তির পর বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বন্দীবিনিময় চুক্তির ফলে ভারতের চেয়ে বাংলাদেশই বেশি লাভবান হবে। প্রশ্ন হচ্ছে, এ চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে বাংলাদেশ কোন্* কোন্* দিক থেকে লাভবান হল?
ফরহাদ মজহার : এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশের লাভবান হওয়ার মত কোন ক্ষেত্র আমি দেখছি না। যে সব জাতিসত্ত্বা দিল্লির অধীনস্ত থাকতে চায় না এবং তাদের বহু বছরের যে লড়াই-সে লড়াই এখনও চলছে। যারা তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের জন্য লড়াই করছে বাংলাদেশ সরকার এর আগেও সেইসব রাজনৈতিক বন্দিদের ভারতের হাতে তুলে দিয়েছিল। আর এতে মূলত ভারতের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশ ইতিবাচক কিছু পায়নি। বরং আমি বলব আন্তর্জাতিক যে বিধি-বিধান আছে সেই বিধি-বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে এই ধরনের রাজনৈতিক কর্মীদেরকে ধরে অন্য দেশে- যেখানে সত্যিকারার্থে যাদের নিরাপত্তা নিশ্চত নয় তাদের হাতে তুলে দিতে পারে না। এটা মানবাধিকারের লঙ্ঘন। আর বাংলাদেশ মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই কাজগুলো করে মূলত ভারতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের ভেতরে যেসব অন্তর্ঘাতমূলক ততপরতা চলে এবং ভারত থেকে অপরাধীগোষ্ঠী বিভিন্ন সময় যে ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়, মাদকদ্রব্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকমের অপরাধ করে থাকে সেক্ষেত্রে আমরা এ পর্যন্ত ভারতের কাছ থেকে কোন রকেমের সহযোগিতা পাইনি। বরঞ্চ ওই সব অপরাধীরা ভারতে সেফ হ্যাভেনে রয়েছে। ফলে এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশের লাভের কোন কিছুই তো আমি দেখতে পাচ্ছিনে। এখানে একটি ফার্মের মুরগীকে যেমন করে রাখা হয় তেমনি করে ভারত চতুর্দিকে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে বাংলাদেশকে ঘিরে রেখেছে। আর বাংলাদেশের মানুষকে তারা কুকুর ছাগলের মত গুলি করে মারছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের এখান থেকে কী লাভ হবে সেটা আমি বুঝতে অক্ষম!
রেডিও তেহরান : বন্দি বিনিময় চুক্তির একটি ধারায় বলা হয়েছে, যারা রাজনৈতিক অপরাধী এবং যারা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থী তারা এই চুক্তির আওতায় আসবে না। বন্দি বিনিময় প্রক্রিয়া থেকে রাজনৈতিক অপরাধী ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের আলাদা করে রাখার এই ধারাটি কেন রাখা হয়েছে বলে আপনার মনে হয়?
ফরহাদ মজহার : দেখুন! যে ধরনের অপরাধীদের তারা বিনিময় করতে চায় সেক্ষেত্রে তারা বলছে রাজনৈতিক বন্দিদের তারা বিনিময় করতে পারবে না। তবে এ বিষয়টির জন্যে চুক্তি করার কোন দরকার নেই কেননা আন্তর্জাতিক বিধি-বিধান অনুযায়ী রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার অধিকার রয়েছে। ফলে বাংলাদেশ কী এমন চুক্তি করল যাতে তাদের বেনিফিট হবে। আমরা তো আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে এই সুবিধাগুলো পেতে পারি। তাছাড়া ইন্টারপোলসহ বিভিন্ন রকমের আন্তর্জাতিক সংস্থা রয়েছে এসব জায়গা থেকে এমনিতেই বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে এসব সুবিধা পেতে পেরে। ফলে আমি বলব দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করে বাংলাদেশের ক্ষতি হয়েছে এই কারণে যে আমরা যে বহুপাক্ষিক চুক্তি সুবিধাগুলো পেতে পারতাম সে চুক্তিগুলোকে বরং প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে।
রেডিও তেহরান : চুক্তির দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে সহজতর হবে ভিসা পদ্ধতি। ভিসা সংক্রান্ত নতুন এ চুক্তির মাধ্যমে জরুরি প্রয়োজনে চিকিতসার জন্যে ভারতে যাওয়া-আসা বা ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ভিসা আগের চেয়ে অপেক্ষাকৃত সহজ হবে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে আমরা জানতে পেরেছি।
তো, ভিসা প্রক্রিয়ার এই সহজীকরণে নিশ্চয়ই দুদেশের সাধারণ মানুষ লাভবান হবে; আপনি কি মনে করছেন?
ফরহাদ মজহার : দেখুন! একটি দেশে যদি অন্যদেশের জনগণকে ঢুকতে না দেন- একটু আগে আমি যে কথা বলেছি যে, কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে রাখেন- এটা একটা ব্লাডি সাইড। পৃথিবীর রক্তাক্ত সীমান্তগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ- ভারত অন্যতম। সেখানে ভিসার সুবিধার কথা বলা হচ্ছে। কোনো লোক যদি চিকিতসার জন্য ভারতে যেতে চায় তাকে তো মানবিক কারণে এমনিতেই ভিসা দেয়ার কথা। আর ব্যবসায়ীরা যদি বিনিয়োগের জন্য যায় সেক্ষেত্রে ডব্লিউটিওর যে বাণিজ্যিক চুক্তি আছে সে অনুসারে তাদের ভিসা সহজ করাটা বাধ্যতামূলক।
ফলে আমি বলব, যে চুক্তির কথা বলা হচ্ছে এগুলো সম্পূর্ণ ভুয়া এবং এগুলোর কোন ভিত্তি নেই। এই দ্বিপাক্ষিক চুক্তির সমস্ত সুবিধাগুলো আমরা এমনিতেই পেতে পারি যদি আন্তর্জাতিক ফোরামে যাই। ফলে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের উচিত তাদের প্রতি ভারতের যে বৈরি আচরণ তার প্রতিবাদ করা এবং এটাকে আন্তর্জাতিক করে তোলা ও এর বিরোধীতা করা। আমরা মনে করি আমরা ভাল প্রতিবেশীর সঙ্গে থাকতে চাই কিন্তু মূলত দিল্লির যে নীতি ক্রমাগত বাংলাদেশের ওপর দমন ও নিপীড়ন চালানো এবং তাদের ভিসা পদ্ধতি বাংলাদেশের জনগণকে অপমান করা ছাড়া এর অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে বলে আমি মনে করি না। আমি যতবারই ভারতে গিয়েছি ততবরাই্ আমি দেখেছি দীর্ঘ কিউতে মানুষ দাঁড়িয়ে রয়েছে। তারা ইচ্ছে করলে এগুলোকে সরল করতে পারে। তবে সেজন্য আলাদা করে তো চুক্তির দরকার নেই। ফলে আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে, বিষয়গুলো আপনি এমনিতেই পেতে পারেন সেগুলোর জন্য আপনি আলাদা করে চুক্তি কেন করবেন?
রেডিও তেহরান : সীমান্তহত্যা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়া উচিত নয়। সীমান্তহত্যার ঘটনা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। তিনি বলেন, আমরা আমাদের সংশ্লিষ্ট লোকজনদের নির্দেশনা দিয়েছি সীমান্তহত্যার ঘটনা যেন আর না ঘটে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সব সময়ই এ ধরনের আশ্বাসবাণী শোনা যায়। কিন্তু তারপরও গণমাধ্যমের খবরে দেখা যায়, বিএসএফের হাতে বাংলাদেশিদের হত্যাকাণ্ড বন্ধ হচ্ছে না। এর কারণ কি বলে আপনার মনে হয়?
ফরহাদ মজহার : দেখুন! সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যা বন্ধ না হওয়ার কারণ হচ্ছে-এদেশের ১৬ কোটি মানুষকে ভারত তাদের দুশমন হিসেবে গণ্য করে। ভারতের জনগণ এটি মনে না করলেও এটি দিল্লির নীতি। শুধু তাই নয়, তারা আমাদেরকে গরু ছাগলই মনে করে। ফলে গণমাধ্যম এ বিষয়ে যে কথা বলে সেটা সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। আমরা মনে করি দিল্লি এ ধরনের প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশকে এর আগেও দিয়েছে কিন্তু কোন কাজ হয়নি। আমি এজন্য বাংলাদেশ সরকারকে পুরোপুরি দায়ী করি। এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে প্রশ্নগুলো উঠছে যে, এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং বা আইন বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ভারত করেছে-এটা শুধু মানবাধিকারের লঙ্ঘন নয় এটা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। আর মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য দিল্লিকে দায়ী করে বাংলাদেশের প্রচারণা চালানো দরকার। আর এই বক্তব্য শুধু আমার একার নয়, বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন যেমন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বা এ ধরনের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার বিষয়ক বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে যখন কথা বলেছি তারা বারবার বলেছে- বাংলাদেশ কেন সীমান্ত হত্যার এ বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলছে না কারণ আসলেই এটা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। ফলে দিল্লি যে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করে যাচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া আমাদের নীতি হওয়া উচিত। ফলে এখানে সুবিধা পাওয়া বা ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দুঃখপ্রকাশ বা এসব মিষ্টি কথা শুনে তো আমাদের কোন লাভ নেই। তারা হচ্ছে- সিম্পলি ক্রিমিনাল। তার হচ্ছে বানস অব ক্রিমিনাল। তারা বাংলাদেশের সীমান্তে এ দেশের জনগণকে হত্যা করছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের উচিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা এবং ভারতের এ আচরণের উপযুক্ত জবাব দেয়া, কূটনৈতিক, রাজনৈতিক এবং প্রয়োজনে সামরিক জবাব দেয়া উচিত। আমাদের যদি সার্বভৌমত্ব সম্পর্কে কোন মর্যাদা জ্ঞান থাকত তাহলে বাংলাদেশ এই কাজটা করত কিন্তু আমাদের শাসকশ্রেণী যারা আছে তারা দিল্লির অধীনস্ত দাসমূলক একটি শাসক শ্রেণী। যতক্ষণ পর্যন্ত এই শাসক শ্রেণী ক্ষমতায় থাকবে ততক্ষণ তারা এ ধরনের দাসের মত কথা বলবে। ভারত থেকে এসে আমাদের মানুষদের গুলি করে মারার পর আমাদেরকে বলবে যে, হত্যা করা উচিত নয়। এ রকম হাস্যকর এবং অপমানজনক বক্তব্য তারা ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে করতে দিয়েছে। তো বাংলাদেশের মাটিতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যদি এই কথা বলে থাকে তাহলে তো তাকে থাপ্পড় মারা উচিত ছিল কারণ এটি ঔচিত্যের প্রশ্ন।#
রেডিও তেহরান/জিএআর/এআর/৩১
???????? ?????? ?????? ??????? ???? ????? ???? : ????? ?????
বৃহস্পতিবার, 31 জানুয়ারী 2013 19:19
সীমান্তে ভারতের আচরণের উপযুক্ত জবাব দেয়া উচিত : ফরহাদ মজহার
ফরহাদ মজহার ফরহাদ মজহার
সম্প্রতি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফেরের সময় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্দীবিনিময় চুক্তি সই হয়েছে। এছাড়া, উভয় দেশের মধ্যে ভিসা সহজীকরণ করা হয়েছে। সীমান্ত হত্যা নিয়েও কথা বলেছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তো এসব বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলেছি বাংলাদেশের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, কলামিস্ট, কবি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহারের সঙ্গে। পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাতকারটি এখানে উপস্থাপন করা হলো :
রেডিও তেহরান : প্রতিবেশী ও বন্ধুপ্রতীম ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দীবিনিময় ও ভিসা সহজীকরণ বিষয়ক দুটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। ঢাকায় বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্দে চুক্তি দুটি স্বাক্ষর করেন। চুক্তির পর বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বন্দীবিনিময় চুক্তির ফলে ভারতের চেয়ে বাংলাদেশই বেশি লাভবান হবে। প্রশ্ন হচ্ছে, এ চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে বাংলাদেশ কোন্* কোন্* দিক থেকে লাভবান হল?
ফরহাদ মজহার : এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশের লাভবান হওয়ার মত কোন ক্ষেত্র আমি দেখছি না। যে সব জাতিসত্ত্বা দিল্লির অধীনস্ত থাকতে চায় না এবং তাদের বহু বছরের যে লড়াই-সে লড়াই এখনও চলছে। যারা তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের জন্য লড়াই করছে বাংলাদেশ সরকার এর আগেও সেইসব রাজনৈতিক বন্দিদের ভারতের হাতে তুলে দিয়েছিল। আর এতে মূলত ভারতের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশ ইতিবাচক কিছু পায়নি। বরং আমি বলব আন্তর্জাতিক যে বিধি-বিধান আছে সেই বিধি-বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে এই ধরনের রাজনৈতিক কর্মীদেরকে ধরে অন্য দেশে- যেখানে সত্যিকারার্থে যাদের নিরাপত্তা নিশ্চত নয় তাদের হাতে তুলে দিতে পারে না। এটা মানবাধিকারের লঙ্ঘন। আর বাংলাদেশ মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই কাজগুলো করে মূলত ভারতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের ভেতরে যেসব অন্তর্ঘাতমূলক ততপরতা চলে এবং ভারত থেকে অপরাধীগোষ্ঠী বিভিন্ন সময় যে ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়, মাদকদ্রব্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকমের অপরাধ করে থাকে সেক্ষেত্রে আমরা এ পর্যন্ত ভারতের কাছ থেকে কোন রকেমের সহযোগিতা পাইনি। বরঞ্চ ওই সব অপরাধীরা ভারতে সেফ হ্যাভেনে রয়েছে। ফলে এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশের লাভের কোন কিছুই তো আমি দেখতে পাচ্ছিনে। এখানে একটি ফার্মের মুরগীকে যেমন করে রাখা হয় তেমনি করে ভারত চতুর্দিকে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে বাংলাদেশকে ঘিরে রেখেছে। আর বাংলাদেশের মানুষকে তারা কুকুর ছাগলের মত গুলি করে মারছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের এখান থেকে কী লাভ হবে সেটা আমি বুঝতে অক্ষম!
রেডিও তেহরান : বন্দি বিনিময় চুক্তির একটি ধারায় বলা হয়েছে, যারা রাজনৈতিক অপরাধী এবং যারা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থী তারা এই চুক্তির আওতায় আসবে না। বন্দি বিনিময় প্রক্রিয়া থেকে রাজনৈতিক অপরাধী ও রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের আলাদা করে রাখার এই ধারাটি কেন রাখা হয়েছে বলে আপনার মনে হয়?
ফরহাদ মজহার : দেখুন! যে ধরনের অপরাধীদের তারা বিনিময় করতে চায় সেক্ষেত্রে তারা বলছে রাজনৈতিক বন্দিদের তারা বিনিময় করতে পারবে না। তবে এ বিষয়টির জন্যে চুক্তি করার কোন দরকার নেই কেননা আন্তর্জাতিক বিধি-বিধান অনুযায়ী রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার অধিকার রয়েছে। ফলে বাংলাদেশ কী এমন চুক্তি করল যাতে তাদের বেনিফিট হবে। আমরা তো আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে এই সুবিধাগুলো পেতে পারি। তাছাড়া ইন্টারপোলসহ বিভিন্ন রকমের আন্তর্জাতিক সংস্থা রয়েছে এসব জায়গা থেকে এমনিতেই বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে এসব সুবিধা পেতে পেরে। ফলে আমি বলব দ্বিপক্ষীয় চুক্তি করে বাংলাদেশের ক্ষতি হয়েছে এই কারণে যে আমরা যে বহুপাক্ষিক চুক্তি সুবিধাগুলো পেতে পারতাম সে চুক্তিগুলোকে বরং প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হয়েছে।
রেডিও তেহরান : চুক্তির দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে সহজতর হবে ভিসা পদ্ধতি। ভিসা সংক্রান্ত নতুন এ চুক্তির মাধ্যমে জরুরি প্রয়োজনে চিকিতসার জন্যে ভারতে যাওয়া-আসা বা ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ভিসা আগের চেয়ে অপেক্ষাকৃত সহজ হবে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে আমরা জানতে পেরেছি।
তো, ভিসা প্রক্রিয়ার এই সহজীকরণে নিশ্চয়ই দুদেশের সাধারণ মানুষ লাভবান হবে; আপনি কি মনে করছেন?
ফরহাদ মজহার : দেখুন! একটি দেশে যদি অন্যদেশের জনগণকে ঢুকতে না দেন- একটু আগে আমি যে কথা বলেছি যে, কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে রাখেন- এটা একটা ব্লাডি সাইড। পৃথিবীর রক্তাক্ত সীমান্তগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ- ভারত অন্যতম। সেখানে ভিসার সুবিধার কথা বলা হচ্ছে। কোনো লোক যদি চিকিতসার জন্য ভারতে যেতে চায় তাকে তো মানবিক কারণে এমনিতেই ভিসা দেয়ার কথা। আর ব্যবসায়ীরা যদি বিনিয়োগের জন্য যায় সেক্ষেত্রে ডব্লিউটিওর যে বাণিজ্যিক চুক্তি আছে সে অনুসারে তাদের ভিসা সহজ করাটা বাধ্যতামূলক।
ফলে আমি বলব, যে চুক্তির কথা বলা হচ্ছে এগুলো সম্পূর্ণ ভুয়া এবং এগুলোর কোন ভিত্তি নেই। এই দ্বিপাক্ষিক চুক্তির সমস্ত সুবিধাগুলো আমরা এমনিতেই পেতে পারি যদি আন্তর্জাতিক ফোরামে যাই। ফলে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের উচিত তাদের প্রতি ভারতের যে বৈরি আচরণ তার প্রতিবাদ করা এবং এটাকে আন্তর্জাতিক করে তোলা ও এর বিরোধীতা করা। আমরা মনে করি আমরা ভাল প্রতিবেশীর সঙ্গে থাকতে চাই কিন্তু মূলত দিল্লির যে নীতি ক্রমাগত বাংলাদেশের ওপর দমন ও নিপীড়ন চালানো এবং তাদের ভিসা পদ্ধতি বাংলাদেশের জনগণকে অপমান করা ছাড়া এর অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে বলে আমি মনে করি না। আমি যতবারই ভারতে গিয়েছি ততবরাই্ আমি দেখেছি দীর্ঘ কিউতে মানুষ দাঁড়িয়ে রয়েছে। তারা ইচ্ছে করলে এগুলোকে সরল করতে পারে। তবে সেজন্য আলাদা করে তো চুক্তির দরকার নেই। ফলে আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে, বিষয়গুলো আপনি এমনিতেই পেতে পারেন সেগুলোর জন্য আপনি আলাদা করে চুক্তি কেন করবেন?
রেডিও তেহরান : সীমান্তহত্যা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়া উচিত নয়। সীমান্তহত্যার ঘটনা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। তিনি বলেন, আমরা আমাদের সংশ্লিষ্ট লোকজনদের নির্দেশনা দিয়েছি সীমান্তহত্যার ঘটনা যেন আর না ঘটে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সব সময়ই এ ধরনের আশ্বাসবাণী শোনা যায়। কিন্তু তারপরও গণমাধ্যমের খবরে দেখা যায়, বিএসএফের হাতে বাংলাদেশিদের হত্যাকাণ্ড বন্ধ হচ্ছে না। এর কারণ কি বলে আপনার মনে হয়?
ফরহাদ মজহার : দেখুন! সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যা বন্ধ না হওয়ার কারণ হচ্ছে-এদেশের ১৬ কোটি মানুষকে ভারত তাদের দুশমন হিসেবে গণ্য করে। ভারতের জনগণ এটি মনে না করলেও এটি দিল্লির নীতি। শুধু তাই নয়, তারা আমাদেরকে গরু ছাগলই মনে করে। ফলে গণমাধ্যম এ বিষয়ে যে কথা বলে সেটা সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক। আমরা মনে করি দিল্লি এ ধরনের প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশকে এর আগেও দিয়েছে কিন্তু কোন কাজ হয়নি। আমি এজন্য বাংলাদেশ সরকারকে পুরোপুরি দায়ী করি। এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে প্রশ্নগুলো উঠছে যে, এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং বা আইন বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ভারত করেছে-এটা শুধু মানবাধিকারের লঙ্ঘন নয় এটা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। আর মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য দিল্লিকে দায়ী করে বাংলাদেশের প্রচারণা চালানো দরকার। আর এই বক্তব্য শুধু আমার একার নয়, বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন যেমন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বা এ ধরনের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার বিষয়ক বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে যখন কথা বলেছি তারা বারবার বলেছে- বাংলাদেশ কেন সীমান্ত হত্যার এ বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলছে না কারণ আসলেই এটা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। ফলে দিল্লি যে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করে যাচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া আমাদের নীতি হওয়া উচিত। ফলে এখানে সুবিধা পাওয়া বা ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দুঃখপ্রকাশ বা এসব মিষ্টি কথা শুনে তো আমাদের কোন লাভ নেই। তারা হচ্ছে- সিম্পলি ক্রিমিনাল। তার হচ্ছে বানস অব ক্রিমিনাল। তারা বাংলাদেশের সীমান্তে এ দেশের জনগণকে হত্যা করছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের উচিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা এবং ভারতের এ আচরণের উপযুক্ত জবাব দেয়া, কূটনৈতিক, রাজনৈতিক এবং প্রয়োজনে সামরিক জবাব দেয়া উচিত। আমাদের যদি সার্বভৌমত্ব সম্পর্কে কোন মর্যাদা জ্ঞান থাকত তাহলে বাংলাদেশ এই কাজটা করত কিন্তু আমাদের শাসকশ্রেণী যারা আছে তারা দিল্লির অধীনস্ত দাসমূলক একটি শাসক শ্রেণী। যতক্ষণ পর্যন্ত এই শাসক শ্রেণী ক্ষমতায় থাকবে ততক্ষণ তারা এ ধরনের দাসের মত কথা বলবে। ভারত থেকে এসে আমাদের মানুষদের গুলি করে মারার পর আমাদেরকে বলবে যে, হত্যা করা উচিত নয়। এ রকম হাস্যকর এবং অপমানজনক বক্তব্য তারা ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে করতে দিয়েছে। তো বাংলাদেশের মাটিতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যদি এই কথা বলে থাকে তাহলে তো তাকে থাপ্পড় মারা উচিত ছিল কারণ এটি ঔচিত্যের প্রশ্ন।#
রেডিও তেহরান/জিএআর/এআর/৩১
???????? ?????? ?????? ??????? ???? ????? ???? : ????? ?????