CaPtAiN_pLaNeT
SENIOR MEMBER
- Joined
- May 10, 2010
- Messages
- 7,685
- Reaction score
- 0
By JOHN MILLER / CBS NEWS/ October 21, 2012, 8:48 PM
Officials say alleged Fed Bank bomber had big plans
Officials say alleged Fed Bank bomber had big plans - CBS News
Who is Quazi Mohammed Nafis? When CBS News asked his father, a banker in Bangladesh, he said he'd spent his life savings to send the quiet, timid boy to college in America.
At a small Missouri college, Nafis struck fellow students from Bangladesh as an intense young man who became more angry and radical over time. But prosecutors say Nafis had formed his plan to attack the U.S. even before he left Bangladesh.
In an interview with CBS News, Loretta Lynch, the U.S. Attorney for the Eastern District of New York said: "What is clear is that when he arrived here, he had already conceived of the plan to construct a bomb of some sort and of large magnitude and to effect great destruction. What's also clear is that he had already conceived of the plan to come here and recruit others already in the U.S. to join him, and that's what he actually set about doing."
Lynch is the chief prosecutor on the Nafis case. Her office has prosecuted major terrorism cases from the al Qaeda plot to bomb New York subways, to the plot to blow up the fuel lines supplying Kennedy Airport. Lynch says the Nafis case is another reminder of the key role the internet and social media play in terrorism.
When Nafis came onto the FBI's radar, he was trying to "friend" his way into recruiting small cell.
"This defendant used Facebook. There are internet chat rooms, there are websites, there are blogs devoted to terrorist thinking that are out there that can draw people in," Lynch said.
Prosecutor: N.Y. bomb suspect hoped to recruit others Accused Federal Reserve bomb plotter's home country wants details on case Alleged Fed Bank bomber raised red flags in college
One of those Nafis recruited turned out to be an informant, who introduced the 21-year-old student to an FBI undercover agent posing as an al Qaeda facilitator. Critics of such sting operations have charged that the government becomes an enabler for a plot that the suspect could never achieve. In this case, the federal prosecutor takes exception.
"I think that particular question presupposes the individuals who turn up in these schemes are, in fact, ineffectual, that they don't have the means, the manner, the method, to carry out these attacks when in fact, the individuals we see do," Lynch said. "And I think you have to look at every case individually. This case specifically concerned an individual who came here recruiting other, who was in fact recruiting when he came into the orbit of the FBI, and who made it very clear that he knew what kind of bomb he wanted and he knew how to make it. He was giving the instructions here. He was directing the undercover as to what to purchase and what kind of bomb he wanted. What size bomb he wanted."
Lynch says Nafis, who was under constant surveillance, was a challenge for the FBI undercover agent to keep up with.
"In this case, he was a defendant who was not only directing the action but was taking action on his own. The undercover would leave for a few days and come back and find out that this defendant had done his own surveillance, had drawn his own maps, had decided on his own to change the plan and change the particular target of this terrorist bomb," Lynch said.
One challenge for investigators, Lynch said, was not to egg the defendant on, but sometimes, to slow him down. That she said required an experienced undercover agent.
"So you have to have an agent in that capacity who can manage that, who can essentially listen and take it in, and you also have to have someone who knows how to deal with an individual who is trying to push ahead, and you want to be able to say to that defendant also, to give them the out, to tell them that they have the opportunity not to proceed with this, and make sure that it is in fact their idea," Lynch said.
Another problem was getting the 1,000-pound truck bomb past a series of NYPD checkpoints leading into the financial district.
"Obviously, on the day of the operation," Lynch said, "we made sure the people guarding the area knew about the operation and were essentially watching along with us."
But Nafis also allegedly introduced what he called a "Plan B" if the truck carrying what he believed to be 1,000 pounds of explosives was stopped at one of the checkpoints.
"I think he made it clear that if he thought law enforcement was going to interfere with their plan, that they should alter the plan and detonate their explosives and kill themselves and kill the law enforcement officers also, and simply move their destruction earlier in time," Lynch said.
For the FBI, the central controlling feature was that the bomb was not capable of going off, but Lynch said the case is about what the suspect intended the damage to be, adding "this bomb was 1,000 pounds. It would have done serious destruction to the building, to the people in the area, and for blocks and blocks around. It would have been carnage."
According to the federal complaint, Nafis was given the opportunity to back out of the plot. At one point he was asked what could keep him from going forward with the plot.
"The response was, 'I'm going to do it, and if I die doing it make sure that everyone in al Qaeda knows that this was my idea," Lynch said.
© 2012 CBS Interactive Inc. All Rights Reserved.
===========================================================
নিউইয়র্কে গোয়েন্দা ফাঁদে বাংলাদেশি যুবক
অপরাধে প্ররোচনা দেয় এফবিআই!
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-10-23/news/300200
প্রথম আলো ডেস্ক | তারিখ: ২৩-১০-২০১২
রেজওয়ানুল
কাজী মোহাম্মদ রেজওয়ানুল আহসান নাফিস হামলার উদ্যোগ নেওয়ার আগে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে বাংলাদেশে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মার্কিন ছদ্মবেশী গোয়েন্দা সদস্যরা তাঁকে দেশে আসার আগেই হামলা করতে উদ্বুদ্ধ করেন। রেজওয়ানুলের জন্য বিস্ফোরকও সরবরাহ করেন তাঁরাই।
আল-কায়েদার কারও সঙ্গে রেজওয়ানুলের সম্পৃক্ততাও দেখাতে পারেনি মার্কিন গোয়েন্দা ব্যুরো এফবিআই। বরং আল-কায়েদার সদস্য হিসেবে গোয়েন্দারা যাঁকে রেজওয়ানুলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন, তিনিও একজন ছদ্মবেশী গোয়েন্দা। আল-কায়েদার সদস্য সেজে ওই গোয়েন্দাই হামলার অনুমোদন দেন রেজওয়ানুলকে। আবার হামলার আগে এ নিয়ে একটি লেখা তৈরির ধারণাও দেন ছদ্মবেশী ওই গোয়েন্দা। আর এভাবেই গোয়েন্দাদের পাতা ফাঁদে ধরা পড়েন রেজওয়ানুল।
রেজওয়ানুলের বিরুদ্ধে আদালতে গোয়েন্দাদের দাখিল করা প্রাথমিক অভিযোগপত্রে তাঁর কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ আছে। ১৭ অক্টোবর রেজওয়ানুলকে গ্রেপ্তার করে এফবিআই। এর পরই নিউইয়র্কের ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন এফবিআইয়ের বিশেষ এজেন্ট জন নিস। নিউইয়র্ক থেকে এই অভিযোগপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। এরই ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে এই প্রতিবেদন। এফবিআইয়ের দেওয়া অভিযোগপত্রেই স্টিং অপারেশনের মাধ্যমে রেজওয়ানুলকে গোয়েন্দা ফাঁদে ফেলার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতেই যে গোয়েন্দারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ এবং সরঞ্জাম ও বিস্ফোরক সরবরাহ করেছিলেন, তা-ও অভিযোগপত্রে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। যোগাযোগের প্রথম দিন থেকে ধরা পড়ার দিন পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে গোয়েন্দাদের যেসব আলাপ-আলোচনা হয়, পর্যায়ক্রমে সে বর্ণনাও আছে অভিযোগপত্রে। গোয়েন্দারা রেজওয়ানুলের প্রতিটি কথাও রেকর্ড করে রাখেন।
তবে ‘স্টিং অপারেশন’ নামের এভাবে ফাঁদে ফেলার কার্যক্রম নিয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে। এভাবে ফাঁদে ফেলাকে ‘সন্ত্রাসী বানানোর কারখানা’ বলেও অভিহিত করা হচ্ছে। গ্লোবাল রিসার্চ নিউজ-এ মার্কিন অধ্যাপক মাইকেল এস রোজেফ লিখেছেন, এটি হচ্ছে এমন একটি সন্ত্রাসী কাজ, যেখানে এফবিআইয়ের দেখানো পদ্ধতি ধরে খেলতে হয়, গোলপোস্ট তারাই ঠিক করে দেয়, এমনকি গোল করার ফুটবলটিও তাদেরই সরবরাহ করা।
দেখা গেছে, রেজওয়ানুলের ক্ষেত্রেও এমনটি হয়েছে। গোয়েন্দাদের সরবরাহ করা বিস্ফোরকসহই ধরা পড়েন রেজওয়ানুল। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, গত জুলাইয়ের শুরুর দিকে কোনো এক দিন রেজওয়ানুলের সঙ্গে এফবিআইয়ের এক সূত্রের প্রথম যোগাযোগ হয়। যুক্তরাষ্ট্রে হামলা চালানোর জন্য ওই দিনই রেজওয়ানুল ওই সূত্রকে একটি জিহাদি সংগঠনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। এরপর একই মাসের ৫ তারিখ বা তার আগে-পরে কোনো এক দিন রেজওয়ানুল ওই সূত্রকে ফোন দেন। রেজওয়ানুল ওই সূত্রকে বলেন, জিহাদ পরিচালনার জন্যই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। একই সঙ্গে তিনি আল-কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেনের প্রশংসা করেন। এ ছাড়া রেজওয়ানুল একটি সাময়িকীর নামও করেন, যেটি জিহাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন কৌশল নিয়ে আলোচনা করে।
এফবিআইয়ের ওই সূত্রের মনে হয়, রেজওয়ানুল যে সাময়িকীটির উল্লেখ করেছেন, সেটির নাম ইন্সপায়ার। এটি আসলে আল-কায়েদাসংশ্লিষ্ট একটি জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রকাশনা।
ওই আলাপেই রেজওয়ানুল বলেন, তিনি দুটি কারণে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। ইসলামের প্রচার এবং জিহাদ। এ কাজের জন্য একজন আমেরিকান নাগরিক (সহ-ষড়যন্ত্রকারী, তিনি সরকারি এজেন্ট নন তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে ) এবং একজন বাংলাদেশির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে।
৬ থেকে ৮ জুলাইয়ের মধ্যবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেসবুকে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করেন রেজওয়ানুল, সহ-ষড়যন্ত্রকারী এবং এফবিআইয়ের ওই সূত্র। রেজওয়ানুল জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা তিনি চালিয়ে যাবেন। ১১ জুলাইয়ের দিকে এফবিআইয়ের ওই সূত্রের সঙ্গে সহ-ষড়যন্ত্রকারীর কথা হয়। এ সময় তিনি জানান, রেজওয়ানুল এর আগে তাঁকে বলেছেন যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে হামলা চালিয়ে বড় কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে হত্যা করতে চান। এর কয়েক ঘণ্টা পরই সম্ভবত ১২ জুলাই সকালের দিকে রেজওয়ানুল, সহ-ষড়যন্ত্রকারী এবং এফবিআইয়ের ওই সূত্রের মধ্যে আবার কথা হয়।
এরপর ১৪ জুলাই এফবিআই সূত্রকে রেজওয়ানুল জানান, আল-কায়েদার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য আগামী ডিসেম্বরে তিনি বাংলাদেশে ফিরতে পারেন। তখন তাঁকে এফবিআই সূত্র জানায়, আল-কায়েদার এক সদস্যের সঙ্গে তাঁর পরিচয় আছে। এ কথা শুনে রেজওয়ানুল আল-কায়েদার ওই সদস্যের সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এর তিন দিন পর রেজওয়ানুলের সঙ্গে আল-কায়েদার ওই সদস্যের (যিনি আসলে একজন ছদ্মবেশী গোয়েন্দা কথা হয়। এ সময় রেজওয়ানুল যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য আল-কায়েদার সহযোগিতা চান। তখন ওই ছদ্মবেশী গোয়েন্দা জানান, আল-কায়েদার অপর এক সদস্যের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে। তিনিই রেজওয়ানুলের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
১৯ জুলাই আরেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা আল-কায়েদা সদস্য সেজে রেজওয়ানুলের সঙ্গে কথা বলেন। ঠিক হয়, ২৪ জুলাই নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের সেন্ট্রাল পার্কে তাঁরা দেখা করবেন। এ সময় মধ্যস্থতাকারী সেজে সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরেক ছদ্মবেশী সদস্য। এ সময় রেজওয়ানুল যুক্তরাষ্ট্রে হামলার আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং জানান, তাঁর আরও দুজন সহযোগী আছেন, যাঁরা হামলায় অংশ নিতে রাজি আছেন। যাঁদের একজনের নাম ইয়াকিন (সহ-ষড়যন্ত্রকারী। রেজওয়ানুল বলেন, ‘কাজের জন্য আমরা প্রস্তুত। ছোটখাটো হামলা নয়, আমরা ব্যাপক বড় কোনো হামলা চালাতে চাই, যা পুরো যুক্তরাষ্ট্রকে নাড়া দেবে।’
৫ আগস্ট রেজওয়ানুল আল-কায়েদা ছদ্মবেশী গোয়েন্দা সদস্যকে জানান, তিনি নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে হামলা চালাতে চান। এরপর ৯ আগস্ট তাঁকে স্টক এক্সচেঞ্জ এলাকায় ঘুরতে এবং কাগজে কিছু টুকে নিতে দেখেন গোয়েন্দারা। ১১ আগস্ট নগরের কুইন্স এলাকার একটি হোটেলে ছদ্মবেশী গোয়েন্দার সঙ্গে রেজওয়ানুলের সাক্ষাৎ হয়। তিনি আত্মঘাতী হামলা পরিকল্পনার কথা জানান এবং বলেন, এ জন্য শক্তিশালী মাত্রার ব্যাপক বিস্ফোরক প্রয়োজন হবে। বিষয়টি নিয়ে আল-কায়েদা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলার এবং তাঁর পরিকল্পনা অনুমোদন করিয়ে আনার জন্য ছদ্মবেশী গোয়েন্দাকে বলেন। তিনিও এ ব্যাপারে আশ্বাস দেন।
২৩ আগস্ট কুইন্সের একটি হোটেলে আল-কায়েদা ছদ্মবেশী ওই গোয়েন্দার সঙ্গে আবার দেখা করেন রেজওয়ানুল। এ সময় তিনি জানতে চান, তিনি যা করতে চলেছেন, তা কি আল-কায়েদার তত্ত্বাবধানেই হচ্ছে? ছদ্মবেশী গোয়েন্দা এতে হ্যাঁ-সূচক সায় দেন। তখন রেজওয়ানুল জানান, নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ পুরো উড়িয়ে দিতে পুরো এক ট্রাক বিস্ফোরক প্রয়োজন হবে, যা ঢাকা থাকবে ফল ও শাকসবজি দিয়ে। একপর্যায়ে তিনি ওই ছদ্মবেশী গোয়েন্দাকে বলেন, তিনি নিজেও কেন এই হামলায় অংশ নিচ্ছেন না, কেন ট্রাকটি নিজেই চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন না। তখন ছদ্মবেশী গোয়েন্দা বলেন, এটা তাঁর কাজ নয়। তাঁর কাজ শুধু রেজওয়ানুলকে সহযোগিতা করা। যাওয়ার আগে তিনি জানিয়ে যান, হামলার পরিকল্পনা নিয়ে আল-কায়েদা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার জন্য তিনি শিগগির বিদেশে যাবেন।
২৭ আগস্টের দিকে এফবিআইয়ের সেই সূত্রের সঙ্গে রেজওয়ানুলের যোগাযোগ হয়। তখন তিনি ছদ্মবেশী গোয়েন্দার সঙ্গে বৈঠক ও আলোচনার বিষয়ে তাঁকে অবহিত করেন। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর কুইন্সের একটি হোটেলে ছদ্মবেশী গোয়েন্দার সঙ্গে আবার সাক্ষাৎ হয় রেজওয়ানুলের। এ সময় তিনি পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, কয়েকটি গাড়ি নিয়ে ওই হামলা চালানো হবে। জানান, তিনি নিজেও শহীদ হওয়ার জন্য প্রস্তুত। হামলার জন্য কোথা থেকে কীভাবে বিস্ফোরক সংগ্রহ করা হবে, এ নিয়েও দুজনের মধ্যে আলোচনা হয়।
২০ সেপ্টেম্বর দুজনের মধ্যে আবার সাক্ষাৎ হয়। এদিন রেজওয়ানুল জানান, নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের পরিবর্তে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে হামলা চালাতে চান। বিস্ফোরক নিয়ে আবার বিভিন্ন আলোচনা হয়। সবশেষে রেজওয়ানুল পরিবারের সদস্যদের শেষবারের মতো দেখার জন্য দেশে ফেরার আগ্রহ জানান। আল-কায়েদা ছদ্মবেশী গোয়েন্দা তখন জানান, তিনি যদি সত্যিই আল-কায়েদার সহযোগিতায় হামলা চালাতে চান, তা হলে পরিকল্পনার এ পর্যায়ে দেশে বা দেশের বাইরে চলাফেরা করা তাঁর উচিত হবে না। কারণ, যেকোনো সময় তিনি মার্কিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়তে পারেন।
এরপর ২৭ সেপ্টেম্বর ছদ্মবেশী গোয়েন্দার সঙ্গে রেজওয়ানুলের আবার সাক্ষাৎ হয়। ওই সাক্ষাতে গোয়েন্দারা জানান, হামলা পরিকল্পনার বিষয়টি নিয়ে তিনি আল-কায়েদার শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন। আল-কায়েদা চায় না, রেজওয়ানুলের দেশে ফেরার কারণে হামলা চালাতে দেরি হোক। আল-কায়েদা বলেছে, আত্মঘাতী হামলার পরিবর্তে দূরনিয়ন্ত্রিত বোমা দিয়ে হামলা চালাতে। তা হলে হামলা চালিয়ে পরে তিনি দেশে ফিরতে পারবেন। হামলার কৌশল পরিবর্তিত হওয়ায় রেজওয়ানুল খুশি হন। কেননা, এতে পরবর্তী সময়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আরও হামলা চালাতে পারবেন।
ছদ্মবেশী গোয়েন্দার সঙ্গে রেজওয়ানুলের পরবর্তী সাক্ষাৎ হয় ৪ অক্টোবর। ওই দিন তাঁরা দুজন মিলে শহরের পূর্বাঞ্চলে একটি গুদাম পরিদর্শন করেন। ঠিক হয়, সেখানেই বিস্ফোরকদ্রব্য মজুদ করা হবে। বিস্ফোরক তৈরির জন্য সেদিন তাঁরা বাজার থেকে বিভিন্ন সরঞ্জামও কেনেন। ১২ অক্টোবর তাঁদের দুজনের আবার সাক্ষাৎ হয়। এদিন গুদামে বিস্ফোরকদ্রব্য (যা আসলে ছিল নিষ্ক্রিয় বিস্ফোরক পৌঁছে দেওয়া হয়। ছদ্মবেশী গোয়েন্দা রেজওয়ানুলকে বলেন, হামলার আগে নিজের বক্তব্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে একটি নিবন্ধ লিখে ফেলা তাঁর উচিত। রেজওয়ানুলও এ ধারণা লুফে নেন। তিনি মনে করেন, এ রকম একটি নিবন্ধ লিখলে তা ইন্সপায়ার সাময়িকীতে ছাপা হবে। তিনি বেশ উৎসাহ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর হামলার পরিকল্পনা কীভাবে তাঁর মাথায় এল সে বর্ণনা দেন। বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস করতে হলে তার অর্থনীতি ধ্বংস করাই সবচেয়ে ভালো পথ। এ জন্যই তিনি সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভে হামলা করতে চলেছেন।
ওই দিনের বৈঠকের কিছুক্ষণ পর ছদ্মবেশী গোয়েন্দাকে ফোন করে রেজওয়ানুল জানান, তিনি আরেকটি মুঠোফোন কিনেছেন। বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য দূরনিয়ন্ত্রক হিসেবে তিনি এটি ব্যবহার করবেন। ১৫ অক্টোবর রেজওয়ানুলকে ফোন করে ছদ্মবেশী গোয়েন্দা জানান, সবকিছু প্রস্তুত। ১৭ অক্টোবর হামলা চালানো যায়। রেজওয়ানুলও এতে সায় দেন এবং জানিয়ে দেন, তিনিও প্রস্তুত।
১৭ অক্টোবর খুব সকালে একটি ভ্যানগাড়িতে চড়ে বিস্ফোরকের গুদামে পৌঁছান রেজওয়ানুল ও ওই গোয়েন্দা। গুদামে পৌঁছার পর রেজওয়ানুল নিজেই এক হাজার পাউন্ড বিস্ফোরক নির্দিষ্ট খোলসের মধ্যে ঢোকান এবং এর সঙ্গে ডেটোনেটর যুক্ত করেন। পরে সেগুলো ভ্যানগাড়িতে তুলে ফেলেন। এরপর গাড়িটি নিয়ে দুজন চূড়ান্ত লক্ষ্য ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের উদ্দেশে রওনা হন। পথে রেজওয়ানুল বলেন, আল-কায়েদার প্রয়াত তাত্ত্বিক আনোয়ার আল-আওলাকির ভিডিও টেপ দেখেই তিনি জিহাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। বিস্ফোরণ ঘটানোর আগে তিনি নিজেও একটি ভিডিও ধারণ করতে চান। অবশেষে তাঁরা পৌঁছে যান গন্তব্যস্থলে। ফেডারেল রিজার্ভ ভবনের সামনে গাড়িটি রাখেন। এরপর দুজনে ঢুকে পড়েন পাশের একটি হোটেলে। সেখানে রেজওয়ানুলের ভিডিও বক্তব্য ধারণ করেন ছদ্মবেশী গোয়েন্দা। ভিডিওতে মার্কিন জনগণকে উদ্দেশ করে রেজওয়ানুল বলেন, ‘চূড়ান্ত বিজয় অথবা শহীদ না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না।’
ভিডিও ধারণ শেষ হওয়ার পরই রেজওয়ানুল মুঠোফোনের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা করেন। বিস্ফোরকের সঙ্গে যুক্ত ডেটোনেটর সক্রিয় করতে তিনি যে মুঠোফোন জুড়ে দিয়েছিলেন সেই নম্বরে একের পর এক ফোন দিতে থাকেন, কিন্তু বিস্ফোরণ ঘটেনি। তাঁর এ কর্মকাণ্ড ধারণ করা হয় গোপন ক্যামেরায়। এর পরই গ্রেপ্তার করা হয় রেজওয়ানুলকে।
Officials say alleged Fed Bank bomber had big plans
Officials say alleged Fed Bank bomber had big plans - CBS News
Who is Quazi Mohammed Nafis? When CBS News asked his father, a banker in Bangladesh, he said he'd spent his life savings to send the quiet, timid boy to college in America.
At a small Missouri college, Nafis struck fellow students from Bangladesh as an intense young man who became more angry and radical over time. But prosecutors say Nafis had formed his plan to attack the U.S. even before he left Bangladesh.
In an interview with CBS News, Loretta Lynch, the U.S. Attorney for the Eastern District of New York said: "What is clear is that when he arrived here, he had already conceived of the plan to construct a bomb of some sort and of large magnitude and to effect great destruction. What's also clear is that he had already conceived of the plan to come here and recruit others already in the U.S. to join him, and that's what he actually set about doing."
Lynch is the chief prosecutor on the Nafis case. Her office has prosecuted major terrorism cases from the al Qaeda plot to bomb New York subways, to the plot to blow up the fuel lines supplying Kennedy Airport. Lynch says the Nafis case is another reminder of the key role the internet and social media play in terrorism.
When Nafis came onto the FBI's radar, he was trying to "friend" his way into recruiting small cell.
"This defendant used Facebook. There are internet chat rooms, there are websites, there are blogs devoted to terrorist thinking that are out there that can draw people in," Lynch said.
Prosecutor: N.Y. bomb suspect hoped to recruit others Accused Federal Reserve bomb plotter's home country wants details on case Alleged Fed Bank bomber raised red flags in college
One of those Nafis recruited turned out to be an informant, who introduced the 21-year-old student to an FBI undercover agent posing as an al Qaeda facilitator. Critics of such sting operations have charged that the government becomes an enabler for a plot that the suspect could never achieve. In this case, the federal prosecutor takes exception.
"I think that particular question presupposes the individuals who turn up in these schemes are, in fact, ineffectual, that they don't have the means, the manner, the method, to carry out these attacks when in fact, the individuals we see do," Lynch said. "And I think you have to look at every case individually. This case specifically concerned an individual who came here recruiting other, who was in fact recruiting when he came into the orbit of the FBI, and who made it very clear that he knew what kind of bomb he wanted and he knew how to make it. He was giving the instructions here. He was directing the undercover as to what to purchase and what kind of bomb he wanted. What size bomb he wanted."
Lynch says Nafis, who was under constant surveillance, was a challenge for the FBI undercover agent to keep up with.
"In this case, he was a defendant who was not only directing the action but was taking action on his own. The undercover would leave for a few days and come back and find out that this defendant had done his own surveillance, had drawn his own maps, had decided on his own to change the plan and change the particular target of this terrorist bomb," Lynch said.
One challenge for investigators, Lynch said, was not to egg the defendant on, but sometimes, to slow him down. That she said required an experienced undercover agent.
"So you have to have an agent in that capacity who can manage that, who can essentially listen and take it in, and you also have to have someone who knows how to deal with an individual who is trying to push ahead, and you want to be able to say to that defendant also, to give them the out, to tell them that they have the opportunity not to proceed with this, and make sure that it is in fact their idea," Lynch said.
Another problem was getting the 1,000-pound truck bomb past a series of NYPD checkpoints leading into the financial district.
"Obviously, on the day of the operation," Lynch said, "we made sure the people guarding the area knew about the operation and were essentially watching along with us."
But Nafis also allegedly introduced what he called a "Plan B" if the truck carrying what he believed to be 1,000 pounds of explosives was stopped at one of the checkpoints.
"I think he made it clear that if he thought law enforcement was going to interfere with their plan, that they should alter the plan and detonate their explosives and kill themselves and kill the law enforcement officers also, and simply move their destruction earlier in time," Lynch said.
For the FBI, the central controlling feature was that the bomb was not capable of going off, but Lynch said the case is about what the suspect intended the damage to be, adding "this bomb was 1,000 pounds. It would have done serious destruction to the building, to the people in the area, and for blocks and blocks around. It would have been carnage."
According to the federal complaint, Nafis was given the opportunity to back out of the plot. At one point he was asked what could keep him from going forward with the plot.
"The response was, 'I'm going to do it, and if I die doing it make sure that everyone in al Qaeda knows that this was my idea," Lynch said.
© 2012 CBS Interactive Inc. All Rights Reserved.
===========================================================
নিউইয়র্কে গোয়েন্দা ফাঁদে বাংলাদেশি যুবক
অপরাধে প্ররোচনা দেয় এফবিআই!
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-10-23/news/300200
প্রথম আলো ডেস্ক | তারিখ: ২৩-১০-২০১২
রেজওয়ানুল
কাজী মোহাম্মদ রেজওয়ানুল আহসান নাফিস হামলার উদ্যোগ নেওয়ার আগে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে বাংলাদেশে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মার্কিন ছদ্মবেশী গোয়েন্দা সদস্যরা তাঁকে দেশে আসার আগেই হামলা করতে উদ্বুদ্ধ করেন। রেজওয়ানুলের জন্য বিস্ফোরকও সরবরাহ করেন তাঁরাই।
আল-কায়েদার কারও সঙ্গে রেজওয়ানুলের সম্পৃক্ততাও দেখাতে পারেনি মার্কিন গোয়েন্দা ব্যুরো এফবিআই। বরং আল-কায়েদার সদস্য হিসেবে গোয়েন্দারা যাঁকে রেজওয়ানুলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন, তিনিও একজন ছদ্মবেশী গোয়েন্দা। আল-কায়েদার সদস্য সেজে ওই গোয়েন্দাই হামলার অনুমোদন দেন রেজওয়ানুলকে। আবার হামলার আগে এ নিয়ে একটি লেখা তৈরির ধারণাও দেন ছদ্মবেশী ওই গোয়েন্দা। আর এভাবেই গোয়েন্দাদের পাতা ফাঁদে ধরা পড়েন রেজওয়ানুল।
রেজওয়ানুলের বিরুদ্ধে আদালতে গোয়েন্দাদের দাখিল করা প্রাথমিক অভিযোগপত্রে তাঁর কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ আছে। ১৭ অক্টোবর রেজওয়ানুলকে গ্রেপ্তার করে এফবিআই। এর পরই নিউইয়র্কের ইউএস ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন এফবিআইয়ের বিশেষ এজেন্ট জন নিস। নিউইয়র্ক থেকে এই অভিযোগপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। এরই ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে এই প্রতিবেদন। এফবিআইয়ের দেওয়া অভিযোগপত্রেই স্টিং অপারেশনের মাধ্যমে রেজওয়ানুলকে গোয়েন্দা ফাঁদে ফেলার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতেই যে গোয়েন্দারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ এবং সরঞ্জাম ও বিস্ফোরক সরবরাহ করেছিলেন, তা-ও অভিযোগপত্রে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। যোগাযোগের প্রথম দিন থেকে ধরা পড়ার দিন পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে গোয়েন্দাদের যেসব আলাপ-আলোচনা হয়, পর্যায়ক্রমে সে বর্ণনাও আছে অভিযোগপত্রে। গোয়েন্দারা রেজওয়ানুলের প্রতিটি কথাও রেকর্ড করে রাখেন।
তবে ‘স্টিং অপারেশন’ নামের এভাবে ফাঁদে ফেলার কার্যক্রম নিয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনা অব্যাহত রয়েছে। এভাবে ফাঁদে ফেলাকে ‘সন্ত্রাসী বানানোর কারখানা’ বলেও অভিহিত করা হচ্ছে। গ্লোবাল রিসার্চ নিউজ-এ মার্কিন অধ্যাপক মাইকেল এস রোজেফ লিখেছেন, এটি হচ্ছে এমন একটি সন্ত্রাসী কাজ, যেখানে এফবিআইয়ের দেখানো পদ্ধতি ধরে খেলতে হয়, গোলপোস্ট তারাই ঠিক করে দেয়, এমনকি গোল করার ফুটবলটিও তাদেরই সরবরাহ করা।
দেখা গেছে, রেজওয়ানুলের ক্ষেত্রেও এমনটি হয়েছে। গোয়েন্দাদের সরবরাহ করা বিস্ফোরকসহই ধরা পড়েন রেজওয়ানুল। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, গত জুলাইয়ের শুরুর দিকে কোনো এক দিন রেজওয়ানুলের সঙ্গে এফবিআইয়ের এক সূত্রের প্রথম যোগাযোগ হয়। যুক্তরাষ্ট্রে হামলা চালানোর জন্য ওই দিনই রেজওয়ানুল ওই সূত্রকে একটি জিহাদি সংগঠনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। এরপর একই মাসের ৫ তারিখ বা তার আগে-পরে কোনো এক দিন রেজওয়ানুল ওই সূত্রকে ফোন দেন। রেজওয়ানুল ওই সূত্রকে বলেন, জিহাদ পরিচালনার জন্যই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। একই সঙ্গে তিনি আল-কায়েদার নেতা ওসামা বিন লাদেনের প্রশংসা করেন। এ ছাড়া রেজওয়ানুল একটি সাময়িকীর নামও করেন, যেটি জিহাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন কৌশল নিয়ে আলোচনা করে।
এফবিআইয়ের ওই সূত্রের মনে হয়, রেজওয়ানুল যে সাময়িকীটির উল্লেখ করেছেন, সেটির নাম ইন্সপায়ার। এটি আসলে আল-কায়েদাসংশ্লিষ্ট একটি জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রকাশনা।
ওই আলাপেই রেজওয়ানুল বলেন, তিনি দুটি কারণে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন। ইসলামের প্রচার এবং জিহাদ। এ কাজের জন্য একজন আমেরিকান নাগরিক (সহ-ষড়যন্ত্রকারী, তিনি সরকারি এজেন্ট নন তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে ) এবং একজন বাংলাদেশির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে।
৬ থেকে ৮ জুলাইয়ের মধ্যবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেসবুকে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করেন রেজওয়ানুল, সহ-ষড়যন্ত্রকারী এবং এফবিআইয়ের ওই সূত্র। রেজওয়ানুল জানান, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা তিনি চালিয়ে যাবেন। ১১ জুলাইয়ের দিকে এফবিআইয়ের ওই সূত্রের সঙ্গে সহ-ষড়যন্ত্রকারীর কথা হয়। এ সময় তিনি জানান, রেজওয়ানুল এর আগে তাঁকে বলেছেন যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে হামলা চালিয়ে বড় কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে হত্যা করতে চান। এর কয়েক ঘণ্টা পরই সম্ভবত ১২ জুলাই সকালের দিকে রেজওয়ানুল, সহ-ষড়যন্ত্রকারী এবং এফবিআইয়ের ওই সূত্রের মধ্যে আবার কথা হয়।
এরপর ১৪ জুলাই এফবিআই সূত্রকে রেজওয়ানুল জানান, আল-কায়েদার কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য আগামী ডিসেম্বরে তিনি বাংলাদেশে ফিরতে পারেন। তখন তাঁকে এফবিআই সূত্র জানায়, আল-কায়েদার এক সদস্যের সঙ্গে তাঁর পরিচয় আছে। এ কথা শুনে রেজওয়ানুল আল-কায়েদার ওই সদস্যের সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেন। এর তিন দিন পর রেজওয়ানুলের সঙ্গে আল-কায়েদার ওই সদস্যের (যিনি আসলে একজন ছদ্মবেশী গোয়েন্দা কথা হয়। এ সময় রেজওয়ানুল যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য আল-কায়েদার সহযোগিতা চান। তখন ওই ছদ্মবেশী গোয়েন্দা জানান, আল-কায়েদার অপর এক সদস্যের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে। তিনিই রেজওয়ানুলের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
১৯ জুলাই আরেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা আল-কায়েদা সদস্য সেজে রেজওয়ানুলের সঙ্গে কথা বলেন। ঠিক হয়, ২৪ জুলাই নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের সেন্ট্রাল পার্কে তাঁরা দেখা করবেন। এ সময় মধ্যস্থতাকারী সেজে সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরেক ছদ্মবেশী সদস্য। এ সময় রেজওয়ানুল যুক্তরাষ্ট্রে হামলার আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং জানান, তাঁর আরও দুজন সহযোগী আছেন, যাঁরা হামলায় অংশ নিতে রাজি আছেন। যাঁদের একজনের নাম ইয়াকিন (সহ-ষড়যন্ত্রকারী। রেজওয়ানুল বলেন, ‘কাজের জন্য আমরা প্রস্তুত। ছোটখাটো হামলা নয়, আমরা ব্যাপক বড় কোনো হামলা চালাতে চাই, যা পুরো যুক্তরাষ্ট্রকে নাড়া দেবে।’
৫ আগস্ট রেজওয়ানুল আল-কায়েদা ছদ্মবেশী গোয়েন্দা সদস্যকে জানান, তিনি নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে হামলা চালাতে চান। এরপর ৯ আগস্ট তাঁকে স্টক এক্সচেঞ্জ এলাকায় ঘুরতে এবং কাগজে কিছু টুকে নিতে দেখেন গোয়েন্দারা। ১১ আগস্ট নগরের কুইন্স এলাকার একটি হোটেলে ছদ্মবেশী গোয়েন্দার সঙ্গে রেজওয়ানুলের সাক্ষাৎ হয়। তিনি আত্মঘাতী হামলা পরিকল্পনার কথা জানান এবং বলেন, এ জন্য শক্তিশালী মাত্রার ব্যাপক বিস্ফোরক প্রয়োজন হবে। বিষয়টি নিয়ে আল-কায়েদা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলার এবং তাঁর পরিকল্পনা অনুমোদন করিয়ে আনার জন্য ছদ্মবেশী গোয়েন্দাকে বলেন। তিনিও এ ব্যাপারে আশ্বাস দেন।
২৩ আগস্ট কুইন্সের একটি হোটেলে আল-কায়েদা ছদ্মবেশী ওই গোয়েন্দার সঙ্গে আবার দেখা করেন রেজওয়ানুল। এ সময় তিনি জানতে চান, তিনি যা করতে চলেছেন, তা কি আল-কায়েদার তত্ত্বাবধানেই হচ্ছে? ছদ্মবেশী গোয়েন্দা এতে হ্যাঁ-সূচক সায় দেন। তখন রেজওয়ানুল জানান, নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জ পুরো উড়িয়ে দিতে পুরো এক ট্রাক বিস্ফোরক প্রয়োজন হবে, যা ঢাকা থাকবে ফল ও শাকসবজি দিয়ে। একপর্যায়ে তিনি ওই ছদ্মবেশী গোয়েন্দাকে বলেন, তিনি নিজেও কেন এই হামলায় অংশ নিচ্ছেন না, কেন ট্রাকটি নিজেই চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন না। তখন ছদ্মবেশী গোয়েন্দা বলেন, এটা তাঁর কাজ নয়। তাঁর কাজ শুধু রেজওয়ানুলকে সহযোগিতা করা। যাওয়ার আগে তিনি জানিয়ে যান, হামলার পরিকল্পনা নিয়ে আল-কায়েদা নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার জন্য তিনি শিগগির বিদেশে যাবেন।
২৭ আগস্টের দিকে এফবিআইয়ের সেই সূত্রের সঙ্গে রেজওয়ানুলের যোগাযোগ হয়। তখন তিনি ছদ্মবেশী গোয়েন্দার সঙ্গে বৈঠক ও আলোচনার বিষয়ে তাঁকে অবহিত করেন। এরপর ১৫ সেপ্টেম্বর কুইন্সের একটি হোটেলে ছদ্মবেশী গোয়েন্দার সঙ্গে আবার সাক্ষাৎ হয় রেজওয়ানুলের। এ সময় তিনি পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, কয়েকটি গাড়ি নিয়ে ওই হামলা চালানো হবে। জানান, তিনি নিজেও শহীদ হওয়ার জন্য প্রস্তুত। হামলার জন্য কোথা থেকে কীভাবে বিস্ফোরক সংগ্রহ করা হবে, এ নিয়েও দুজনের মধ্যে আলোচনা হয়।
২০ সেপ্টেম্বর দুজনের মধ্যে আবার সাক্ষাৎ হয়। এদিন রেজওয়ানুল জানান, নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের পরিবর্তে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে হামলা চালাতে চান। বিস্ফোরক নিয়ে আবার বিভিন্ন আলোচনা হয়। সবশেষে রেজওয়ানুল পরিবারের সদস্যদের শেষবারের মতো দেখার জন্য দেশে ফেরার আগ্রহ জানান। আল-কায়েদা ছদ্মবেশী গোয়েন্দা তখন জানান, তিনি যদি সত্যিই আল-কায়েদার সহযোগিতায় হামলা চালাতে চান, তা হলে পরিকল্পনার এ পর্যায়ে দেশে বা দেশের বাইরে চলাফেরা করা তাঁর উচিত হবে না। কারণ, যেকোনো সময় তিনি মার্কিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়তে পারেন।
এরপর ২৭ সেপ্টেম্বর ছদ্মবেশী গোয়েন্দার সঙ্গে রেজওয়ানুলের আবার সাক্ষাৎ হয়। ওই সাক্ষাতে গোয়েন্দারা জানান, হামলা পরিকল্পনার বিষয়টি নিয়ে তিনি আল-কায়েদার শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন। আল-কায়েদা চায় না, রেজওয়ানুলের দেশে ফেরার কারণে হামলা চালাতে দেরি হোক। আল-কায়েদা বলেছে, আত্মঘাতী হামলার পরিবর্তে দূরনিয়ন্ত্রিত বোমা দিয়ে হামলা চালাতে। তা হলে হামলা চালিয়ে পরে তিনি দেশে ফিরতে পারবেন। হামলার কৌশল পরিবর্তিত হওয়ায় রেজওয়ানুল খুশি হন। কেননা, এতে পরবর্তী সময়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আরও হামলা চালাতে পারবেন।
ছদ্মবেশী গোয়েন্দার সঙ্গে রেজওয়ানুলের পরবর্তী সাক্ষাৎ হয় ৪ অক্টোবর। ওই দিন তাঁরা দুজন মিলে শহরের পূর্বাঞ্চলে একটি গুদাম পরিদর্শন করেন। ঠিক হয়, সেখানেই বিস্ফোরকদ্রব্য মজুদ করা হবে। বিস্ফোরক তৈরির জন্য সেদিন তাঁরা বাজার থেকে বিভিন্ন সরঞ্জামও কেনেন। ১২ অক্টোবর তাঁদের দুজনের আবার সাক্ষাৎ হয়। এদিন গুদামে বিস্ফোরকদ্রব্য (যা আসলে ছিল নিষ্ক্রিয় বিস্ফোরক পৌঁছে দেওয়া হয়। ছদ্মবেশী গোয়েন্দা রেজওয়ানুলকে বলেন, হামলার আগে নিজের বক্তব্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে একটি নিবন্ধ লিখে ফেলা তাঁর উচিত। রেজওয়ানুলও এ ধারণা লুফে নেন। তিনি মনে করেন, এ রকম একটি নিবন্ধ লিখলে তা ইন্সপায়ার সাময়িকীতে ছাপা হবে। তিনি বেশ উৎসাহ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর হামলার পরিকল্পনা কীভাবে তাঁর মাথায় এল সে বর্ণনা দেন। বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস করতে হলে তার অর্থনীতি ধ্বংস করাই সবচেয়ে ভালো পথ। এ জন্যই তিনি সে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভে হামলা করতে চলেছেন।
ওই দিনের বৈঠকের কিছুক্ষণ পর ছদ্মবেশী গোয়েন্দাকে ফোন করে রেজওয়ানুল জানান, তিনি আরেকটি মুঠোফোন কিনেছেন। বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য দূরনিয়ন্ত্রক হিসেবে তিনি এটি ব্যবহার করবেন। ১৫ অক্টোবর রেজওয়ানুলকে ফোন করে ছদ্মবেশী গোয়েন্দা জানান, সবকিছু প্রস্তুত। ১৭ অক্টোবর হামলা চালানো যায়। রেজওয়ানুলও এতে সায় দেন এবং জানিয়ে দেন, তিনিও প্রস্তুত।
১৭ অক্টোবর খুব সকালে একটি ভ্যানগাড়িতে চড়ে বিস্ফোরকের গুদামে পৌঁছান রেজওয়ানুল ও ওই গোয়েন্দা। গুদামে পৌঁছার পর রেজওয়ানুল নিজেই এক হাজার পাউন্ড বিস্ফোরক নির্দিষ্ট খোলসের মধ্যে ঢোকান এবং এর সঙ্গে ডেটোনেটর যুক্ত করেন। পরে সেগুলো ভ্যানগাড়িতে তুলে ফেলেন। এরপর গাড়িটি নিয়ে দুজন চূড়ান্ত লক্ষ্য ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের উদ্দেশে রওনা হন। পথে রেজওয়ানুল বলেন, আল-কায়েদার প্রয়াত তাত্ত্বিক আনোয়ার আল-আওলাকির ভিডিও টেপ দেখেই তিনি জিহাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। বিস্ফোরণ ঘটানোর আগে তিনি নিজেও একটি ভিডিও ধারণ করতে চান। অবশেষে তাঁরা পৌঁছে যান গন্তব্যস্থলে। ফেডারেল রিজার্ভ ভবনের সামনে গাড়িটি রাখেন। এরপর দুজনে ঢুকে পড়েন পাশের একটি হোটেলে। সেখানে রেজওয়ানুলের ভিডিও বক্তব্য ধারণ করেন ছদ্মবেশী গোয়েন্দা। ভিডিওতে মার্কিন জনগণকে উদ্দেশ করে রেজওয়ানুল বলেন, ‘চূড়ান্ত বিজয় অথবা শহীদ না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না।’
ভিডিও ধারণ শেষ হওয়ার পরই রেজওয়ানুল মুঠোফোনের মাধ্যমে বিস্ফোরণ ঘটানোর চেষ্টা করেন। বিস্ফোরকের সঙ্গে যুক্ত ডেটোনেটর সক্রিয় করতে তিনি যে মুঠোফোন জুড়ে দিয়েছিলেন সেই নম্বরে একের পর এক ফোন দিতে থাকেন, কিন্তু বিস্ফোরণ ঘটেনি। তাঁর এ কর্মকাণ্ড ধারণ করা হয় গোপন ক্যামেরায়। এর পরই গ্রেপ্তার করা হয় রেজওয়ানুলকে।