1. I know the personal personally in real life and know he would do such a thing.
2. I myself have done it at home, asked Allah to remove all 3 stupid parties.
3. The BNP, Awami League and Jamat are all corrupt and useless. In some ways Jamat is even worse than the Awami League.
The BNP, Awami League and Jamat are all corrupt and useless. In some ways Jamat is even worse than the Awami League.
By weighing BAL, BNP and JI walas, you're equating yourself with that story teller. Obviously all parties have limitation but AL among three by any sane measure is the worst terrorist, conniving, bastard, looter and lying party. And the AL's margin of above destructiveness with other 2 is simply astronomical.
JI is indeed is not a political but ethical party whereas BNP walas could be termed as political and RAWAMYs are simply terrorist, lying dacoit-bastards.
JI walas biggest drawback is that they are wrapped up with too much of ideological hoopla, which doesn’t bode well in prevalent political practice throughout the world. Otherwise no one comes even close to them in regards to possession of human virtues. Please read the following 2 articles to get the glimpse of current reality, for which JI walas are getting desperate for their survivals..
সবাই কথা বলে, তবে হক কথা কেউ বলে না
মামুন ইমতিয়াজ
তারিখ: ৫ ডিসেম্বর, ২০১২
সাম্প্রতিক আলোচিত বিষয় হচ্ছে জামায়াত-শিবিরের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ। সরকার, সরকারি দল, মহাজোটের শরিক দল, বুদ্ধিজীবী ও সেকুলার মিডিয়া পুরো বিষয়টিকে জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব বলে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করেছে। কেউ কেউ এ ঘটনা ১৯৭১ সালের সাথে মিলিয়ে জামায়াত-শিবিরকে ‘সারেন্ডার’ করানো হবে বলেও মন্তব্য করেছেন।
বাংলাদেশে পত্রপত্রিকা আর টিভি চ্যানেলের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় প্রচার-প্রপাগান্ডার সুযোগ বেড়েছে। আলোচিত বিষয় নিয়ে ইতোমধ্যে অনেকে অনেক কথা বলেছেন, আবার অনেকে পত্রিকায় কলাম লিখেছেন। আমরা যারা কথা বলতে পারি না বা পত্রিকায় যাদের লেখা প্রকাশ করা হয় না, তারা টেলিভিশনে কথা শুনে বা পত্রিকায় লেখা পড়ে কেউ আনন্দিত হই আবার কেউ ব্যথিত হই। এ দেশের বেশির ভাগ নেতা ও পণ্ডিত সুন্দর সুন্দর কথা বলেন। কেউ রাজনীতির ভাষ্যকার আবার কেউ বা অর্থনীতির বিশ্লেষক। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নিয়েও অনেকে কথা বলেন। কেউ ভারতের সমালোচনা করেন আর কেউ পাকিস্তানকে গালি দিয়ে তৃপ্তি বোধ করেন। একসময় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নিন্দায় যারা মুখর থাকতেন, তারা এখন আমেরিকার সখ্যায় বেশি আগ্রহী। অবশ্য অতি সম্প্রতি এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী সাহস দেখিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। তিনি সংসদে আমেরিকার রাষ্ট্রদূত ডেন মজিনার নাম উল্লেখ না করে একহাত নিয়েছেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় পরিচয় কী? এটা কি ইসলামি দেশ নাকি ধর্মনিরপেক্ষ? এখানে ঈদ হলে এটিকে শুধু মুসলমানের ধর্মীয় উৎসব বলা হয় আর দুর্গা, কালী বা বুদ্ধপূর্ণিমা পূজা হলে রাষ্ট্রের কর্ণধারেরা বলেন, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’। অধুনা রাশপূর্ণিমা, চীবর দান, পূজা স্টাইলে নবান্ন উৎসব ইত্যাদিকে অসাম্প্রদায়িক ও সার্বজনীন উৎসব বলার চেষ্টা চলছে। অথচ শহীদ মিনারে ভাষাসৈনিক অলি আহাদের নামাজে জানাজাকে সাম্প্রদায়িক কর্মকাণ্ড আখ্যা দিয়ে বাধা দিতে কুণ্ঠিত হননি।
আবার মন্ত্রীরা যখন রাষ্ট্রের চরিত্র নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দেন, তখন আমরা সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হই। এক দিকে বলেন, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে ‘জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে’; পাশাপাশি পরাগ অপহরণকে ‘সংখ্যালঘুর ওপর নির্যাতন’ বলে মন্তব্য করেন। এ এক অদ্ভুত স্ববিরোধিতা। ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে কেউ সংখ্যালঘু বলে পরিচিত হওয়ার কথা নয়, সবাই নাগরিক। নাগরিক হিসেবে পরাগের যেমন রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার, তেমনি ব্যক্তিগত আক্রোশ বা সম্পত্তি নিয়ে শত্রুতাকে যারা ‘সংখ্যালঘুর ওপর নির্যাতন’ হিসেবে চিহ্নিত করে নাগরিকদের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করেন, তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে অভিযোগ আনাও রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
Voltaire বলেছেন, ‘disapprove of what you say, but I will defend to the death your right to say it’ অর্থাৎ আমি তোমার মতের সাথে একমত নই, কিন্তু তোমার মতামত প্রকাশ করার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরণ সংগ্রাম করব। দেশের সংবিধানের চারটি মৌলিক নীতির একটি হচ্ছে ‘গণতন্ত্র’; আর গণতন্ত্রের মূল কথাই হচ্ছে মত প্রকাশের সার্বজনীন অধিকার।
বাংলাদেশে নিবন্ধনকৃত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় এই দলের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত পরাজিত হয়েছে। ১৯৭২ সালে দলটি নিষিদ্ধ ঘোষিত হয় এবং ১৯৭৯ সালে নতুনভাবে এর আত্মপ্রকাশ ঘটে। তিন দশকের বেশি সময় ধরে দলটি প্রতিকূল অবস্থায় হাঁটি হাঁটি পা পা করে দেশের রাজনীতিতে একটি অবস্থান গড়ে তুলতে সমর্থ হয়।
ছয় ঘোড়ার মালিক মইন উদ্দিন আহমদ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে অনৈতিকভাবে ব্যবহার করেন। ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ’কে নামের কারণে আন্তর্জাতিক সংগঠনের বাংলাদেশ শাখা ঘোষণা দিয়ে নাম পরিবর্তনে বাধ্য করা হয়। বাংলাদেশের বাস্তবতা স্বীকারকারী জামায়াতে ইসলামী তার দলের নাম পরিবর্তন করে রাখে ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ (জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ’ নামের কারণে এটি যদি আন্তর্জাতিক সংগঠনের বাংলাদেশ শাখা হয় তাহলে, নির্বাচন কমিশনের নাম পরিবর্তন করে ‘নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ’ রেখে কোন দেশের শাখা কমিশন গঠন করা হলো এ প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই আসে
। ২০০৯ সালে বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরও এ ধারা অব্যাহত থাকে। দেশের সংবিধানের সাথে জামায়াতের দলীয় গঠনতন্ত্র সাংঘর্ষিকÑ এরূপ অজুহাতে নির্বাচন কমিশন বারবার দলের গঠনতন্ত্র সংশোধন করার জন্য নোটিশ দেয়। জামায়াত আওয়ামী নির্বাচন কমিশনের দাবি মেটাতে গিয়ে তাদের গঠনতন্ত্রের অনেকটাই পরিবর্তন করেছে। আর এসব পরিবর্তনের মাধ্যমে জামায়াত ‘ইসলামী সাংস্কৃতিক আন্দোলন’ থেকে কিছুটা হলেও দূরে সরে এসেছে।
২০০৯ সালে বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর জামায়াতে ইসলামীর বিপক্ষে কঠোর মনোভাব পোষণ করতে শুরু করে। ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের ওপর পুলিশি নজরদারি বাড়ানো, তল্লাশির নামে জামায়াত-শিবির অফিসে পুলিশি আক্রমণ, নেতাদের ঢাকার বাইরে সফরে পুলিশি বাধা, নেতাদের বিদেশে যাওয়ার ওপর ইমিগ্রেশন পুলিশের নিষেধাজ্ঞা জারি, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের, নেতাদেরকে অনৈতিকভাবে দাগি আসামির মতো ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে জনসমক্ষে হাজির করা, রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন, জামায়াত-শিবির আয়োজিত হজ, কোরবানি ও রমজানকেন্দ্রিক একান্ত ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে বাধা প্রদানÑ সব মিলিয়ে সরকার পুলিশকে দলীয় বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করতে থাকে। ২০০৯ সালের পর থেকে গোপনে ৩০ হাজার ছাত্রলীগ ক্যাডারকে পুলিশে নিয়োগ দেয়া হয়। এই নিয়োগপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরাই ‘পুলিশ লীগের’ সদস্য হিসেবে জামায়াত-শিবিরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতোই আগের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক অধিকারকে অস্বীকার করতেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হত্যার দায়ে ‘চিরুনি অভিযান’ পরিচালনার মাধ্যমে সারা দেশ থেকে হাজার হাজার জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। অথচ একই সময়ে ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবু বকর সিদ্দিক নামে একজন ছাত্রকে হত্যা করলে সরকার, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ ঘরানার বুদ্ধিজীবীরা একে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে দাবি করেন। শিবিরের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বর্তমান ও পূর্বতন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেখামাত্র শিবিরের ওপর আক্রমণের নির্দেশ দিলে সব বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, হলগুলো থেকে শিবিরের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের বের করে দেয়া হয়। পরীক্ষার হল থেকে তাদের বের করে নির্যাতন করা হয়। পাড়ামহল্লায় তাদের বসবাসের স্থানে আক্রমণ চালিয়ে তাদের ঘরছাড়া করা হয়। হল মসজিদে নাজাম পড়াসহ দাড়ি, টুপি, হিজাবের কারণে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ছাত্রলীগ ক্যাডারদের দিয়ে নির্যাতিত হতে হয়।
আওয়ামী লীগের মধ্য থেকে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে; নিবন্ধিত একটি রাজনৈতিক দল ও এর সহযোগী সংগঠনের সভা-সমাবেশ, লিফলেট-বুকলেট বিলি করার সাংবিধানিক অধিকার আছে। যতক্ষণ না নিষিদ্ধ করা হচ্ছে, ততক্ষণ এগুলো করতে বাধা দেয়ার নৈতিক অধিকার সরকারের নেই।
সরকার বিরোধী দলের সাংবিধানিক অধিকার সংরক্ষণ করার পরিবর্তে হরণ করতে বেশি ব্যস্ত ছিল। প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি
ও এর সহেযাগী সংগঠনের রাজনৈতিক অধিকার হরণ করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে এ দলটি সভা-সমাবেশ করার ঘোষণা দিলে একই স্থানে ও সময়ে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের সভা-সমাবেশ ডেকে প্রশাসনের মাধ্যমে ১৪৪ ধারা জারি করে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। জামায়াতে ইসলামী ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর সভা-সমাবেশসহ সব কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে সরকারের ভূমিকা ছিল আরো কঠোর, আক্রমণাত্মক; যাকে ফ্যাসিবাদী বলা যায়। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের আওয়ামী লীগের লগি-বৈঠা দিয়ে জামায়াত-শিবিরের ওপর আক্রমণের দৃশ্য হিটলারের নাৎসিবাহিনীর কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর শিষ্য শেখ মুজিব ১৯৭৪ সালে বাকশাল প্রতিষ্ঠিত করে যেমনি গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে হত্যা করেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করে শেখ মুজিবের মেয়ে শেখ হাসিনা গণতন্ত্র হত্যা করে পুনরায় বাকশাল কায়েম করার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
৫ নভেম্বর ২০১২ মানবতাবিরোধী অপরাধের (আদালত অবমাননা করে সব গণমাধ্যম, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদেরা এটিকে যুদ্ধাপরাধ বলে প্রচার করছেন
অভিযোগে জামায়াতের গ্রেফতার করা নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করলে (খবর, দৈনিক যুগান্তর, ০৬.১১.২০১২
পুলিশ তাদের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে জামায়াত-পুলিশ সংঘর্ষে মতিঝিল রণক্ষেত্রে পরিণত হয় (দৈনিক যুগান্তর ০৬.১১.২০১২
। পুলিশ জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে ‘চ্যাংদোলা’ করে নিয়ে যায় (চিত্র, দৈনিক যুগান্তর, ০৬.১১.২০১২
। পরদিন জামায়াত-শিবির মিছিল বের করলে পুলিশি আক্রমণের সূত্রে সংঘর্ষ বাধে। পাশাপশি আওয়ামী লীগের শ্রমিক সংগঠন শ্রমিক লীগ রংপুরে জামায়াতের অফিসে আগুন লাগিয়ে দেয় (চিত্র, দৈনিক যুগান্তর, ০৭.১১.২০১২
। একাধারে জামায়াতকে প্রতিহত করার জন্য আওয়ামী লীগের নানা কর্মসূচি যৌথ সভায় ঘোষণা করা হয় (খবর, দৈনিক যুগান্তর, ০৭.১১.২০১২
। ০৯.১১.২০১২ তারিখে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী এক সমাবেশে বলেন, ‘জামায়াত-শিবিরকে প্রতিহত করতে না পারলে আইজি, ডিআইজি, এসপিকে ধরব, লাঠিপেটা করব’ বলে পুলিশকে একাধারে লাঠিপেটা করলেন এবং সরকারি পুলিশ বাহিনীকে আওয়ামী লীগের সহেযাগী সংগঠন ‘পুলিশ লীগ’ বানিয়ে জামায়াত-শিবিরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে বাধ্য করেন।
আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, কর্মচারী লীগ, পুলিশ লীগ (সাদা পোশাকে মিছিলে ও সরকারি পোশাকে মিছিলের সামনে-পেছনে থেকে
১২.১১.২০১২ তারিখে গণমিছিল করে (চিত্র, দৈনিক যুগান্তর ১৩.১১.২০১২
। আওয়ামী লীগের সব সহযোগী সংগঠন ১৩.১১.২০১২ খণ্ড খণ্ড মিছিল করে। এ দিনই কারওয়ান বাজার এলাকায় একটি মিছিল থেকে পুলিশের ওপর আক্রমণ চালানো হয় বলে মিডিয়া প্রচার করে। এ ঘটনার জন্য জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করা হয়।
২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ, লগি-বৈঠা নিয়ে যে তাণ্ডব চালায়, সে দিন নারকীয়-পৈশাচিকতায় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের পিটিয়ে হত্যা করে লাশের ওপর নৃত্য করে, তাতে বিশ্ববাসী হতভম্ব হয়ে যায়। অথচ আওয়ামী লীগ ঘরানার বুদ্ধিজীবীরা এ জন্য জামায়াত-শিবিরকেই দায়ী করে। আর এ ঘটনার স্মরণে ০৪.১১.২০১২ তারিখে প্রেস কাবে ঘরোয়া আলোচনা সভা করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয় এবং সেখানে থেকে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে।
একসময়ে বেশ আলোচিত উক্তি ছিল ‘ব্রিটিশ আমলে ছিল শাসন, পাকিস্তান আমলে ছিল শোষণ আর বাংলাদেশ আমলে আছে ভাষণ।’ ভাষণে-কথনে মানুষ এখন পটু। আগেই বলেছি, মিডিয়ার কারণে মাুনষের কথা বলার সুযোগ বেড়েছ। জামায়াত-শিবিরের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ, মিটিং, মিছিল, কলাম লেখা হয়েছে অনেক। জামায়াতের সাথে বিএনপি ও এর নেতৃবৃন্দকে নিয়ে অনেক উসকানিমূলক কথাও বলা হয়েছে। জামায়াত বা বিএনপি এর কোনো জবাব না দিয়ে ধৈর্যের সাথে সব হজম করেছে। আগে জানতাম ‘বোবার কোনো শত্রু নাই’, এখন দেখা যায় বোবারও শত্রু কম নয়। মহাজোটের ১৪ দল, ১৪ দলের ১৪৪টি সহযোগী প্রতিষ্ঠান আর ১৪৪৪ জন বুদ্ধিজীবী জামায়াত-শিবিরের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ নিয়ে কথার ফুলঝুড়ি তুলেছেন। তারা সমস্বরে জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করে দলটিকে নিষিদ্ধ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। বিপরীতে যারা প্রকৃত ঘটনাকে বুঝতে পারছেন তারা এর কোনো জবাব দিচ্ছেন না। হক কথা বলতে তাদের এক প্রকার জড়তা কাজ করছে। রয়েছে ‘রাজাকার’ হিসেবে আখ্যায়িত হওয়ার ভয়। হয়তো এর চেয়ে বড় ভয় হচ্ছে যারা যুদ্ধাপরাধীদের(?) পক্ষে কথা বলবে তাদেরও যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিচার করা হবে বলে মন্ত্রীদের হুঙ্কারকে। হাজার হাজার বুদ্ধিজীবীর মধ্যে কেউ বললো না, ‘কথা বলার অধিকার, সবা সমাবেশ করার অধিকার জামায়াত-শিবিরেরও আছে। জামায়াত-শিবিরের ওপর পুলিশ গত চার বছর বর্বরতা চালিয়ে তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকিয়ে দিয়েছে। সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে গত চার বছরে জামায়াত-শিবিরের ওপর যত নির্যাতন হয়েছে, আওয়ামী ক্যাডার ও পুলিশের ভয়ে হোক বা তাদের অযোগ্যতার কারণে হোক জনগণের সামনে সেগুলো তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে।
গণতান্ত্রিক অধিকারপ্রাপ্ত একটি দলের বিরুদ্ধে অগণতান্ত্রিক, স্বৈরাচারী যে আক্রমণ, তা প্রতিহত করতে গেলে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ অনিবার্য। এ অনিবার্য পরিণতিকে যদি তাণ্ডব বলা হয়, তাহলে সূর্য সেনকে একজন সন্ত্রাসী বলতেই হবে। আর এসব হক কথা বলার জন্য মওলানা ভাসানীর পর কি দেশে আর কেউ জন্মগ্রহণ করেননি?
http://www.dailynayadiganta.com/new/?p=56587
পুলিশি রাষ্ট্রের প্রতিচ্ছবি
সহজ কথা
আলফাজ আনাম
তারিখ: ৫ ডিসেম্বর, ২০১২
নিপীড়নের মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক দলকে দমনের যে কৌশল সরকার নিয়েছে তাতে সাধারণ মানুষ এখন অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। পুলিশ বিরোধী দল দমনে দক্ষতা দেখাতে গিয়ে হাজার হাজার লোককে গ্রেফতার করছে, যাদের সাথে রাজনীতির সরাসরি কোনো সম্পর্ক থাকছে না। এমনকি পুলিশি নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না শিশু-কিশোরেরা পর্যন্ত। গত সপ্তাহে এই কলামে ছাত্রলীগের একজন অস্ত্রধারী নেতার ও এক কিশোরের ছবি ছাপা হয়েছিল। এই কিশোরকে শিবিরকর্মী পরিচয় দিয়ে বলা হয়েছিল, পুলিশের দিকে ঢিল ছোড়ার অপরাধে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর দিকে ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী নেতাকে হাসপাতালে দেখতে গেছেন মন্ত্রী, যার বিরুদ্ধে তার দলের একজন কর্মীকে হত্যার অভিযোগে মামলা রয়েছে।
কিশোরটি যে মাদরাসার ছাত্র সেই মাদরাসার অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, যে কিশোরের ছবি ছাপা হয়েছে সে শিবির বা অন্য কোনো সংগঠনের সাথে জড়িত নয়। মাদরাসার অধ্যক্ষ লিখিতভাবে জানিয়েছেন পুলিশের হাতে ধৃত সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত যে কিশোরকে শিবিরকর্মী ও পুলিশের প্রতি ঢিল নিক্ষেপকারী বলে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছে, সে কোনো সংগঠনের কর্মী নয় এবং পুলিশের প্রতি কোনো ঢিলও ছোড়েনি। এই কিশোরের নাম ওবায়দুল্লাহ মাসুম। তার বয়স ১৫। সে ঢাকার উত্তরা ২ নম্বর সেক্টর (র*্যাব-১ সংলগ্ন
বাইতুস সালাম মাদরাসার চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। ঘটনার দিন কিতাব কেনার জন্য সে রাজলক্ষ্মী মার্কেটের পেছনে নিগার প্লাজার একটি দোকানের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। কিছু দূর গিয়ে পুলিশ ও জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষের কথা শুনতে পেয়ে সে আর সামনে না এগিয়ে ফেরার পথে রওনা দেয়। সংঘর্ষের স্থান থেকে সে এবং তার সাথীরা ছিল অনেক দূরে। ফেরার পথে পুলিশ এই নিরীহ নিরপরাধ কিশোরসহ মাদরাসার আরো তিনজন ছাত্রকে সম্পূর্ণ বিনা কারণে ও বিনা অপরাধে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় এবং তাদের নামে কোর্টে চারটি মামলা ঠুকে দেয়। এ হলো প্রকৃত ঘটনার বিবরণ। মাদরাসার অধ্যক্ষ বলছেন, তাকে শিবিরকর্মী এবং পুলিশের প্রতি ঢিল নিক্ষেপকারীরূপে পরিচিত করার বিষয়টিতে তারা অত্যন্ত মর্মাহত। আমরাও মাদরাসার অধ্যক্ষের মতো একজন নির্দোষ কিশোর এভাবে নির্মম পরিস্থিতির শিকার হওয়ার জন্য মর্মাহত। জামায়াত ও শিবিরের মিছিলে পুলিশের আক্রমণের পর এই গ্রেফতারের ঘটনার কারণে ছবিটিতে ভুলবশত শিবিরকর্মী হিসেবে পরিচয় দেয়া হয়েছে।
এ ঘটনার মধ্য দিয়ে আমরা পুলিশি নিপীড়নের একটি চিত্র দেখতে পেলাম। প্রতিবাদপত্রটি পাওয়ার পর মাদরাসার অধ্যক্ষ মুফতি আব্দুল হাইয়ের সাথে যোগাযোগ করলে এই শিশুর ওপর অমানবিক আচরণের আরো কিছু তথ্য পাওয়া গেল। শিশু আইন ১৯৭৪ অনুযায়ী বাংলাদেশে ১৬ বছর পর্যন্ত বয়স্কদের শিশু হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। শিশুদের ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা রয়েছে এই আইনে। পুলিশের হাতে আটক ওবায়দুল্লাহ মাসুম আইন অনুযায়ী একজন শিশু। কিন্তু পুলিশ এই শিশুটির বিরুদ্ধে যে চারটি মামলা দায়ের করেছে, তার দু’টি হয়েছে দ্রুত বিচার আইনে। শিশুটির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক বহন, গাড়ি ভাঙচুর এবং পুলিশের কর্তব্যকাজে বাধা দেয়ার মতো গুরুতর সব অভিযোগ আনা হয়েছে। এই শিশুটির আরো দুই সহপাঠী মুশফিকুর রহমান ও লোকমান হাকিমকেও গ্রেফতার করা হয়। এই দু’জনের বয়স যথাক্রমে ১৪ ও ১৫। তিনজনের মধ্যে আবার দু’জন এতিম। গ্রেফতারের পর তাদের ঘাড়ে ও মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয় এবং পেটানো হয়। আরো বেদনাদায়ক ব্যাপার হচ্ছে, এই শিশুদের দুই দফায় পুলিশি রিমান্ডেও নেয়া হয়েছে। তাদের ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখা হয়। গত সোমবার পর্যন্ত এই তিন শিশুছাত্র পুলিশি রিমান্ডে থানায় ছিল।
যে শিশুরা মিছিলেই যায়নি, তাদের বিরুদ্ধে এত সব অপরাধের অভিযোগ। এদের মানসিক অবস্থা কল্পনা করতেও কষ্ট হয়। জীবনের শুরুতে তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, যার অনেক কিছুর গুরুত্বই তারা বোঝে না। পুলিশ দেখলে এ বয়সের শিশুরা এমনিতে পালিয়ে যেতে চেষ্টা করে। এদের পাঞ্জাবি ধরে টেনে-হিঁচড়ে যেভাবে থানায় নিয়ে রিমান্ডের নামে নির্যাতন করা হচ্ছে, তা ভাবলেও গা শিউরে ওঠে। সর্বাত্মক প্রতিহিংসার মানসিকতা নিয়ে একটি রাজনৈতিক দলকে দমনের নামে পুলিশ এখন শিশুদের ওপর নিপীড়ন করে বীরত্ব দেখাচ্ছে। অথচ এই পুলিশকে ক্ষমতাসীন দলের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের পাশে রেখেই বিরোধী দল দমনের মহড়া দিতে হচ্ছে।
এই শিশুদের গ্রেফতারের পর নির্যাতন, ডাণ্ডাবেড়ি পরানো এবং পুলিশি রিমান্ডে নিয়ে খোদ পুলিশই আইন ভঙ্গ করেছে। বাংলাদেশে শিশুদের জন্য কী আইনি সুরক্ষা দেয়া হয়েছে, আমরা তা দেখে নিই। ১৯৭৪ সালের শিশু আইনের ৪ ধারা অনুযায়ী শিশুদের অপরাধের বিচার কেবল শিশু আদালতেই হবে। ধারা-৬ অনুযায়ী কোনো শিশুকে প্রাপ্তবয়স্কদের সাথে যৌথভাবে বিচার করা চলবে না। ধারা-১৩ অনুযায়ী শিশুকে গ্রেফতার করা হলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিশুর পিতামাতা বা অভিভাবককে তার গ্রেফতারের বিষয় অবহিত করবেন। যে আদালতে শিশুটিকে হাজির করা হবে, আদালতে হাজির হওয়ার তারিখ পিতামাতা বা অভিভাবককে জানিয়ে ওই সময় ও স্থানে হাজির থাকতে বলবেন। ধারা-৩৪ অনুযায়ী যার হেফাজত, দায়িত্ব বা তত্ত্বাবধানে কোনো শিশু রয়েছে এরূপ কোনো ১৬ বছরের ওপর বয়স্ক ব্যক্তি যদি অনুরূপ শিশুকে এরূপ পন্থায় আক্রমণ, উৎপীড়ন, অবহেলা, বর্জন অথবা অরতি অবস্থায় পরিত্যাগ করে অথবা করায় যা দ্বারা শিশুটির অহেতুক দুর্ভোগ কিংবা তার স্বাস্থ্যের তি হয় এবং তার দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়, শরীরের কোনো অঙ্গ বা ইন্দ্রিয়ের তি হয় এবং কোনো মানসিক বিকৃতি ঘটে তাহলে ওই ব্যক্তি দুই বছর পর্যন্ত মেয়াদে কারাদণ্ড অথবা এক হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবে। ধারা-৪৮ অনুযায়ী যে েেত্র আপাতদৃষ্টিতে ১৬ বছরের কম বয়স্ক কোনো ব্যক্তিকে জামিন অযোগ্য অপরাধের দায়ে গ্রেফতার করা হয় এবং অবিলম্বে আদালতে হাজির করা না যায়, সে েেত্র থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাকে জামিনে খালাস দিতে পারেন।
ধারা-৫১(২
অনুযায়ী কারাদণ্ডে দণ্ডিত কোনো কিশোর অপরাধীকে বয়স্ক আসামির সাথে মেলামেশা করতে দেয়া যাবে না। ধারা-৫৫ কোনো শিশু অপরাধ করেছে বা করতে পারে এরূপ মনে করলে তাকে নিরাপদ স্থানে নেয়া যাবে, কিন্তু এরূপ আটক রাখার মেয়াদ ২৪ ঘণ্টার বেশি হবে না। ধারা-৫৭ শিশু কোনো অপরাধ করলে অবশ্যই তাকে শিশু আদালতে প্রেরণ করতে হবে। যেখানে শিশু আদালত নেই, সেখানে ৪ ধারার অধীনে মতাপ্রদত্ত আদালতে হাজির করতে হবে।
এই শিশুদের গ্রেফতারের পর পুলিশের নির্যাতন, মামলা দায়ের, রিমান্ডে নেয়া এবং জামিন না দেয়ার মাধ্যমে শিশুদের জন্য বাংলাদেশের বিদ্যমান আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে। বাংলাদেশে এখন আইন যারা প্রয়োগ করবেন তারাই আইন লঙ্ঘন করছেন। আইনের রক্ষক হয়ে উঠেছেন ভক্ষক। গণতান্ত্রিক বলে দাবিদার সরকারের আমলেও বাংলাদেশ যেন হয়ে উঠেছে একটি পুলিশি রাষ্ট্র। বিশেষ করে বিরোধী রাজনৈতিক দলকে দমনের রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি গ্রহণের পর থেকে সারা দেশে যে গণগ্রেফতার শুরু হয়েছে তাতে সাধারণ মানুষের জীবন অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। কে কোথায় জামায়াত-শিবির হিসেবে গ্রেফতার হচ্ছেন, তার কোনো ইয়ত্তা নেই। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও এলজিআরডি মন্ত্রী বলছেন, জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করা হবে না বা সে ধরনের কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। অথচ পুলিশকে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে যাতে মনে হয়, জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি যারা করছেন তারা অপরাধী। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা টেলিভিশনের সামনে প্রায়ই জামায়াত-শিবির ধরার কৃতিত্ব জাহির করেন। কী অপরাধে তাদের ধরা হয় তার কোনো সুস্পষ্ট বক্তব্য নেই। সেই পুরনো রেকর্ড বাজে, ‘নাশকতার আশঙ্কা’। আবার কোনো মেস বা বাসাবাড়িতে বই পেলে বলা হচ্ছে জিহাদি বইসহ গ্রেফতার। জিহাদ বা এই জিহাদি বইয়ের সংজ্ঞা কী? ইসলামের ওপর লেখা বই বা কুরআন-হাদিস পাওয়া গেলে তাকে জিহাদি বই বলার কী উদ্দেশ্য তা আজো স্পষ্ট নয়। সরকার তো ইচ্ছে করলেই নিষিদ্ধ বইয়ের তালিকা প্রকাশ করতে পারে। এ দেশে ইসলামসংক্রান্ত কোনো বই পড়া আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো বই আইনের পরিপন্থী হওয়ায় নিষিদ্ধ করা না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো বই পড়া বা সংগ্রহে রাখা বেআইনি নয়। অথচ কথিত জিহাদি বইয়ের এমন প্রচারণা চালানো হচ্ছে যেন ইসলামসংক্রান্ত কোনো বই রাখা অপরাধ।
জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে সরকারের ক্র্যাকডাউন শুরু হওয়ায় এই মাদরাসার শিশুদের মতো অনেক বৃদ্ধ লোকও নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন ও হচ্ছেন। অনেক লোককে নামাজের সময় বা দাড়ি-টুপি দেখে গ্রেফতার করা হয়েছে। অনেক ছাত্রাবাস থেকে ভিন্ন ছাত্রসংগঠনের বা সাধারণ ছাত্রদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ছাত্রলীগের নেতা ও ওয়ার্কার্স পার্টির কর্মীও রয়েছে। এ ধরনের দমননীতির মাধ্যমে ক্ষমতাসীন দল বা সরকারের কী লাভ হচ্ছে আমাদের জানা নেই। তবে এ কথা হলফ করে বলা যায়, পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর প্রতি মানুষের ক্ষোভ ও ঘৃণাই শুধু বাড়ছে। পুলিশ সদস্যদের বলব, যে শিশুদের গ্রেফতার করে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে নির্যাতন চালানো হলো, সেই শিশুরা আমৃত্যু পুলিশ সম্পর্কে কী ধারণা পোষণ করবেÑ তা যেন একবার ভেবে দেখেন। অথবা নিরপরাধ যে প্রবীণ লোকটিকে মসজিদে যাওয়ার সময় গ্রেফতার করা হচ্ছে, পুলিশ সম্পর্কে তার কী মনোভাব দাঁড়াবে। পুলিশকে সরকারি নির্দেশ মানতে হয়। কিন্তু এ কথাও ভুলে গেলে চলবে না, পুলিশ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী রাষ্ট্রের চাকরি করে, সরকারের নয়। তারাও আইনের ঊর্ধ্বে নয়। নাগরিকদের মর্যাদা ও অধিকার রক্ষা করার দায়িত্ব তাদের। অতি উৎসাহী নিপীড়নমূলক তৎপরতা তাদের ভাবমর্যাদা শুধু ুণœই করবে না, তাদের প্রতি জনগণের ঘৃণা ও বিরূপ মনোভাবও বাড়াবে। রাষ্ট্রের নাগরিকদের এ ধরনের মনোভাব তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে শুধু প্রতিবন্ধক নয়, সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্রের জন্যও বিপজ্জনক। পুলিশ যেন কোনো সরকারের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে রাষ্ট্রের জন্য বিপদ ডেকে না আনে।
alfazanambd@yahoo.com