What's new

Ghulam Azam surrenders, jailed

BanglaBhoot

RETIRED TTA
Joined
Apr 8, 2007
Messages
8,839
Reaction score
5
Country
France
Location
France
Former Jamaat-e-Islami ameer Ghulam Azam was sent to jail Wednesday morning after he had surrendered before the International Crimes Tribunal complying with its summon in connection with charges of crimes against humanity.

The tribunal turned down Ghulam Azam’s bail prayer before ordering officials to send him to jail.

Hearing on the charge framing against the ex-Jamaat chief will be held on February 15.

The three-judge tribunal headed by its Chairman Justice Nizamul Huq directed the prosecution to submit a copy of formal charge and other relevant documents to the tribunal registrar office by Thursday so that the defence could collect those on Sunday.

Responding to an ICT summon issued on Monday, Ghulam Azam appeared before the court in the morning. Around 9:48am, a green SUV carried the Jamaat leader to the tribunal premises.

Security was beefed up on and outside of the ICT premises following the day's proceedings.

Accepting the formal charges pressed against Ghulam Azam by the prosecution on Monday, the ICT asked Azam’s chief counsel Barrister Abdur Razzak to produce him before it by 10:30am on Wednesday.

The prosecution on January 5 resubmitted 62 charges against Ghulam Azam before the tribunal.

In the charges, six counts were for conspiring with the Pakistani occupation force to commit crimes against humanity. Three counts were for planning to commit crimes and atrocities, 28 counts were for incitement, 24 counts for complicity, and one specific charge for murder and torture during the 1971 Liberation War.

The charges against Ghulam Azam also include leading mass murder of intellectuals on December 14, 1971, and killing 38 prisoners of Brahmanbaria jail.

He was also held responsible by the prosecutors for all atrocities committed across the country between March 25, 1971, and December 16, 1971.

Earlier on December 12, the prosecution pressed formal charges containing 52 counts of crimes against humanity against Ghulam Azam and sought for his arrest.

But the tribunal on December 26 sent the charges back to the prosecution saying that the charges were not “properly arranged and classified”. It also ordered the chief prosecutor to reorganise and rearrange the charges in a “systematic form” and resubmit by January 5.

According to history, Jamaat under Ghulam Azam's leadership opposed the country's independence during the Liberation War and cooperated with the Pakistani occupation army in committing heinous crimes.

Although Ghulam Azam stepped down from the highest post [ameer] of his party over a decade ago, his followers still consider him as the supreme spiritual leader.

Ghulam Azam lands in jail on surrender
 
.
What more we can expect from this monkey court ? this man and his associate are going to face a concoct order from the this court its sure . i think if this govt will even try to sent any one of them to gallows .
 
.
গোলাম আযমের (৮৯) যতো অপরাধ!

vision_2050201201111326286448_ga.jpg

১। আল্লাহকে ছাড়া আর কাউকে ভয় না করা।
যদি ভয় করতেন, তাহলে অনেক আগেই মিথ্যের সাথে আপোষ করে তিনি নিজেকে দায়মুক্ত ও নিরাপদ করে কথিত গ্রহণযোগ্য ভালো মানুষ সেজে যেতে পারতেন। আর সন্দেহাতীতভাবেই তাঁর সে যোগ্যতাও রয়েছে।

তিনি বলেছেন, একজন মু’মিনের তো আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ভয় করার সুযোগ নেই।

২। বিদেশে পালিয়ে না যাওয়া।
যদি যেতে চাইতেন তাহলে, তিনি স্বাধীনতার পর দেশে আর ফিরেই আসতেন না। বা পরেও যে কোনো সময় বিদেশে চলে যেতে পারতেন স্থায়ীভাবে। অথবা পরে যে অনেক বার দেশের বাইরে গেছেন তখন আর ফিরে না-ও আসতে পারতেন। একাধিক দেশ তাঁকে নাগরিকত্ব দিতে চেয়েছে। যে সুযোগ সারা বিশ্বে অনেক রাজনীতিকরাই নিয়েছেন।

৩। মিথ্যা কথা না বলা, ছল-চাতুরী না করে সত্যের পথে অবিচল থাকা।
যদি তা না হতো তাহলে, ইতিমধ্যে কথার মার-প্যাচ বা কথা ঘুরিয়ে, মিথ্যাকে সত্যের সাথে মিশিয়ে অথবা তথাকথিত রাজনীতিকদের মতো বোল পাল্টিয়ে ব্যাপারটি সুচারুভাবে ম্যানেজ করে ফেলতে পারতেন - যা আজ অসৎ রাজনীতিতে প্রচলিত এবং কোনো ব্যাপারই না।

৪। ইসলাম-বিরোধীদের সাথে আপোষ না করা।
যদি তা না হতো তাহলে, ওদের বন্ধু সেজে এতদিনে অনেক অনেক ফায়দা হাসিল করতে পারতেন - এখনো দেশের অনেক কথিত ইসলাম-পন্থী নেতারা অবলীলায় তা করে যাচ্ছেন।

৫। ষড়যন্ত্র না করা।
যদি তা না হতো তাহলে, স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কতো শত চক্রান্ত আর ষড়যন্ত্র যে হয়েছে, তার কোনো একটির সাথেও যুক্ত হয়ে বসন্তের কোকিল হতে পারতেন। অনেক কথিত নেতাই ওসব সাবোটেজ থেকে আখের গুছিয়েছেন, কিন্তু সত্যপন্থী এই অগ্রপথিকের ক্ষেত্রে সে প্রশ্নই আসে না।

৬। সন্ত্রাসের সাথে জড়িত না হওয়া।
যদি তা না হতো তাহলে, স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ে যেসব ভয়ঙ্কর রক্তাক্ত লিগেসি’র ঘটনা ঘটেছে, তার কোনো না কোনোটাতে তাঁর সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়া যেতো। অথচ ওগুলোর একটির সাথেও তাঁর কণামাত্রও সম্পর্কের হদিস নেই। ওগুলোর বেনিফিসিয়ারি হওয়ার অপচেষ্টাও করতে পারতেন তিনি।

৭। বাংলাদেশকে ভালোবাসা।
যদি তা না হতো তাহলে, ভারতের গোলাম হবার আশংকায় পূর্ব-পাকিস্তান বিচ্ছিন্ন হবার নীতিগত বিরোধিতা করতেন না - যে আশংকা আজ সত্যে পরিণত হয়েছে।
যদি তা না হতো তাহলে, আর বাংলাদেশে ফিরে আসতেন না। নাগরিকত্ব ফিরে পাওয়ার চেষ্টাও আর করতেন না।
যদি তা না হতো তাহলে, এখনো তিনি পাকিস্তানের সাথে যোগাযোগ রাখতেন বা ঐ দেশের পক্ষে কথা বলতেন।

তিনি বলেছেন,http://banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=1d4a34e24f5f9f3b6ebc214556b50de3&nttl=1712201174979

৮। বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসা।
যদি তা না হতো তাহলে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মুক্তিকামী বাঙালীদের ওপর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নির্বিচার গণহত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদ করতেন না।
যদি তা না হতো তাহলে, তিনি শান্তিপূর্ণভাবে পূর্ব-পাকিস্তানের নির্বাচিত নেতা শেখ মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানাতেন না।

৯। ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলন থেকে বিরত না থাকা।
যদি তা না হতো তাহলে, তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের কোনো অভিযোগই তো উঠতো না বরং অনেক অনেক বার বঙ্গভবন, গণভবনে চায়ের দাওয়াত পেতেন। অন্যান্য অনেক নেতার ক্ষেত্রে যার ভুরি ভুরি উদাহরণ রয়েছে।

১৯৪৬- ৪৭ সালে ঢাবি’র এফ এএইচ হলের জিএস, ১৯৪৭- ৪৮’ এ ডাকসুর জিএস, ভাষা-আন্দোলনের নেতা, তাবলীগ জামাতের আমীর, ’৫৩-তে ডেমোক্রেটিক ইয়থ লীগ (কমিউনিস্ট সংগঠন) থেকে ’৫৪-তে জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন।

১০। মিথ্যে অপরাধের জন্য ক্ষমা না চাওয়া।
যদি তা না হতো তাহলে, অনেক আগেই নিজের ব্যক্তিত্বকে বিসর্জন দিয়ে, দলীয় স্বাতন্ত্র্য ও দৃষ্টিভঙ্গিকে জলাঞ্জলি দিয়ে, তৎকালীন প্রেক্ষাপটে উপমহাদেশে ইসলাম এবং মুসলমানদের স্বার্থের কথা ভেবে তাঁদের সে দৃষ্টিকোণ ও আশংকাকে মিথ্যেমিথ্যিভাবে ভুল বলে কবেই ক্ষমা চেয়ে কথিত দেশপ্রেমিক হয়ে যেতেন!

তিনি বলেছেন, আমাদের ফাঁসিতে ঝোলাতেই সরকার এই উদ্যোগ নিয়েছে। যে কোনো অবস্থার জন্যই আমি প্রস্তুত আছি।

আল্লাহর সন্তুষ্টি প্রত্যাশী, শুধুমাত্র তাঁর কাছেই আত্মসমর্পণকারী, একমুখী ও সাহায্যপ্রার্থী, নিঃস্বার্থ, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, বলিষ্ঠ, সত্যের পথে অবিচল, সাহসী ও বিপ্লবী এক নেতার নাম গোলাম আযম।
সশ্রদ্ধ সালাম ঐ মহান নেতাকে!
 
.
বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১১, ৮ পৌষ ১৪১৮
এই লোকটি গোলাম হয়েই রইল আযম হতে পারল না
মুনতাসীর মামুন
যে মওলানা, মওলানাসুলভ কাজ করে না তার নামের আগে মওলানা শব্দটি লেখা অনুচিত। কারণ যিনি এ শব্দ উচ্চারণ করবেন বা লিখবেন তিনি সেই ব্যক্তিটিকে সম্মান করছেন। আর নিজেকে খাটো করছেন। মানুষজনকে বিভ্রান্ত করার জন্যও তিনি অপরাধী। যিনি অধ্যাপক নন, তার নামের আগেও এ ধরনের শব্দ ব্যবহার করা অনুচিত। অধ্যাপক গোলাম আযম। জামায়াতীদের লিডার, তাই তারা অধ্যাপক শব্দটি ব্যবহার করে তাকে মর্যাদাপূর্ণ করার জন্য। গোলাম আযম অল্প কয়েকদিন রংপুর কারমাইকেল কলেজে প্রভাষক হিসেবে পড়িয়েছেন মাত্র। অধ্যাপক ও প্রফেসর হওয়ার দীর্ঘ পথ পাড়ি দেননি। যিনি সারাজীবন ইসলামের নামে ব্যবসা করেছেন, দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছেন, পাকিস্তানী প্রভুদের হয়ে খুনখারাবি, ধর্ষণে সবরকম সহায়তা দিয়েছেন তিনি হয়ে গেলেন অধ্যাপক! আমাদের দেশের মানুষদের আর কী বলব!
গোলাম আযম রাজনৈতিক জীবন শুরম্নই করেন পাকিসত্মানী মানসিকতার গোলাম হিসাবে। দেশের জন্য আজ পর্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাল কাজ করেছেন এ বিষয়টি কেউ প্রমাণ করতে পারবেন না। ১৯৭১ সালে আজান দিয়ে যিনি মুক্তিযোদ্ধাদের কতল করতে নেমেছিলেন, বলেছিলেন_ 'এ দেশের জনগণ সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীদের কখনও ত্রাণকর্তা হিসেবে মনে করেন না। পূর্ব পাকিস্তানের দেশপ্রেমিক জনগণ সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীদের কোন স্থানে দেখামাত্র খতম করে দেবে বলে তারা দৃঢ়আস্থা পোষণ করেন। এ বিবৃতি তিনি দেন ১৯৭১ সালের ৮ এপ্রিল। এখানে 'দেশপ্রেমিক জনগণ' মানে গোলাম আযম গং বা রাজাকাররা আর 'অনুপ্রবেশকারী'রা হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধারা_ যাঁরা দেশ স্বাধীনের লড়াইয়ে যুদ্ধ করছেন। এ গোলাম আযম এখন ঘোষণা করছেন_ 'রাজাকার আজকাল একটা গালি। আমাকেও এ গালি দেয়া হয়। কিন্তু আমি রাজাকার নই।' [যায়যায়দিন, ১৭.১২.২০১১] গোলাম আযম রাজাকার না হলে এ দেশে রাজকারের সংজ্ঞা কী হবে? তা হলে হারামজাদাকে হারামজাদা না বলে সাহেবজাদা বলতে হবে? যে আজীবন গোলামী করল পাকিদের, সে এখন আযমের মতো বলে, আমি রাজাকার নই। তারেক মাসুদের 'মুক্তির কথা'য় একটি সংলাপ আছে। এক গ্রামে এক রাজাকার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে। সেই কৃষক বলছেন, হ্যা, আমাদের চোখে নগণ্য কৃষক এক অসামান্য কথা বলেছেন। তিনি বললেন, আমরা যদি একজন রাজাকারকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করি তা হলে তো আমরা 'কুত্তার লাহানই হইয়া গেলাম, কী কন?' আসলে নিতানত্ম সারমেয় শাবক না হলে আমরা গোলাম আযমকে এখনও অধ্যাপক গোলাম আযম হিসেবে সম্মান করি। তার বক্তব্য এককভাবে প্রচার করি। তাকে বাঁচিয়ে রাখি? সাংবাদিকরা বিজয় দিবসে হঠাৎ গোলাম আযমের সাৰাতকার গ্রহণ করেন।
সাংবাদিকরা এর পাশাপাশি যদি ১৯৭১ সালে গোলাম আযমের কর্মকা- বয়ান করতেন বা একজন মুক্তিযোদ্ধারও সাৰাতকার নিতেন তার সঙ্গে, তা হলেও একটা কথা ছিল। এ রকম অবিবেচনার কাজ কেন করা হলো? সংবাদপত্র পড়েই জেনেছি বিভিন্ন সেক্টরে জামায়াত প্রচুর টাকাপয়সা ঢালছে। বিজয়ের মাসে গোলাম আযম ঘোষণা করলেন তিনি রাজাকার নন এবং বাংলাদেশের খেতাবপ্রাপ্ত কোন মুক্তিযোদ্ধা একটি শব্দও উচ্চারণ করলেন না এবং দিব্যি গোলাম আযম হাসিমুখে বেরোচ্ছেন, কথা বলছেন। মাঝে মাঝে দুঃখ হয়, শালার কী দেশে জন্মালাম!
গোলাম আযমের ইতিহাস আমি বয়ান করব না। ১৯৭১ সাল পর্যনত্ম তিনি জামায়াত গড়ে তুলতে সহায়তা করেছেন, কোন নির্বাচনে জামায়াত জেতেনি। গোলাম আযমের তো প্রশ্নই ওঠে না। তার জীবনের একমাত্র কৃতিত্ব ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে খানসেনারা যে উপনির্বাচন করেছিল গোলাম আযম তাতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। গণহত্যা শুরম্ন হওয়ার পরপরই তিনি প্রথম চান্সে টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করে এসে শানত্মি কমিটি গঠন করেন। ১৯৭১ সালে শানত্মি কমিটির সদস্যদের লুটপাট ধর্ষণের কথা তো অজানা নয়। তা ছাড়া হত্যা ও হত্যা করতে কমিটির সহযোগিতার কথা এখন স্মৃতিতে জ্বলজ্বলে। তারপর রাজাকার বাহিনী ও রাজাকারদের সব সময় উজ্জীবিত করেছেন তিনি হত্যা ও লুটপাটে। ১৬ অক্টোবর তিনি বলেছিলেন, 'জামায়াতে ইসলামী গোটা দেশে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার জন্য নিরলসভাবে শানত্মি কমিটির মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে।' আর বাংলাদেশ ও রাজাকার সম্পর্কে তাঁর মনত্মব্য?
'কোন ভাল মুসলমানই তথাকথিত বাংলাদেশ আন্দোলনের সমর্থক হতে পারে না। পূর্ব পাকিসত্মানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিমর্ূল করার জন্য একমন ও দেশপ্রেমিক লোকেরা একত্রে কাজ করে যাচ্ছেন। রাজাকাররা খুবই ভাল কাজ করছেন।' ২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ সালে এ কথা বলেছিলেন তিনি। আমরা কেউ ভাল মুসলমান নই। ভাল মুসলমান হলো হত্যা লুট ধর্ষণের হুকুমদার গোলাম আযম!
বিজয় দিবসের প্রাক্কালে দেয়া ঐ সাৰাতকারে গোলাম আযম বলেন, তিনি ও তাঁর দল পাকিসত্মানের পৰে ছিলেন সেটার কারণ রাজনীতি। তিনি যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে যুক্ত নন এবং সে কারণে তিনি অনুতপ্ত নন। জামায়াতী নেতাদের এ একটি ভঙ্গি আছে, তারা বাংলাদেশ চাননি, এটি রাজনৈতিক ব্যাপার। তাতে দোষ কী। তাঁর ভাষায়, 'আমরা তখন স্বাধীনতার পৰে বা বিপৰে কোন অবস্থানই নিতে পারিনি। ভারতের সহায়তায় বিভক্ত পূর্ব পাকিসত্মান স্বাধীনতার স্বাদ ভোগ করতে পারবে না। আশঙ্কা করেই তখন আমরা মুক্তিযুদ্ধ সমর্থন করিনি। [দৈ. মানবজমিন, ১৫.১২.২০১১] গণহত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা যদি রাজনৈতিক প্রশ্ন হয়, তা হলে বলতে হবে ঐ অপরাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্যই তাঁর বিচার হতে হবে।
১৯৭১ সালে পাকিসত্মানের আজাদী দিবস উপলৰে পাকিসত্মানের এ গোলাম ঘোষণা করেছিলেন_ 'পাকিসত্মান টিকিয়া থাকিলে বাঙালী মুলমানের হক একদিন আদায় হইবে। আর যদি পাকিসত্মান না থাকে তবে বাঙালী মুসলমানের অসত্মিত্বই থাকিবে না। যাহারা এই কথাটি বুঝিতে চায় না তাহাদের উৎখাত করিতে হইবে।' অর্থাৎ বাংলাদেশের পৰে যাঁরা আছেন তাঁদের হত্যা করতে হবে। এরপরও এ লোকটি যুদ্ধাপরাধী নয়? এখনও গোলাম আযম একই সুরে বলেছেন_ 'ইসলামকে রৰা করতে হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রৰা করতে হবে। আর ইসলাম না থাকলে এ দেশ ভারতের অঙ্গরাজ্য হয়ে যাবে। [সাপ্তাহিক]
বিজয় দিবসের প্রাক্কালে গোলাম আযমের ঔদ্ধত্য দেখাবার কারণ আছে। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে তাঁর বিরম্নদ্ধে ৫২টি অভিযোগ আনা হয়েছে। ২৬ জানুয়ারি অভিযোগের শুনানি হবে। ট্রাইবু্যনাল সন্তুষ্ট হলে হয়ত তাঁকে গ্রেফতার করা হবে। গোলাম আযম এ বিষয়ে প্রায় নিশ্চিত। মিডিয়াকে যেভাবে হোক ম্যানেজ করে তাঁর বক্তব্য প্রচার করেছেন। ভাবটা এই, এক. তাঁর পেছনে এখনও দৈবশক্তি কাজ করছে অতএব সাবধান। তাঁর গায়ে হাত দিলে সরকার পাল্টে যাবে। আফ্রিকান ভুুডু আর কী! আমাদের নেতাদের অনেকে আবার তুকতাকে বিশ্বাসী। দুই. নতুন প্রজন্মকে বোঝানো, আমাকে রাজনৈতিক কারণে টানাহেঁচড়া করা হচ্ছে। আমি তো বৃদ্ধ, আমি কি কারও ৰতি করতে পারি!
মনে রাখা উচিত, এ লোকটি এককভাবে যত মুসলমান হত্যায় সহায়তায় করেছে পৃথিবীতে আর কোন মুসলমান এত মুসলমান হত্যায় সহায়তা করেনি। মাঝে মাঝে মনে হয়, আলস্নাহ্্র আরশ কি এতেও কেঁপে উঠল না। নাকি এটি সত্য যে, নেক লোক তাড়াতাড়ি প্রস্থান করে, বদ লোক বেঁচে থাকে মানুষকে বিভ্রানত্ম করার জন্য। যুদ্ধাপরাধী হিসাবে তার নামে চার্জশীট হওয়া উচিত ছিল সবার আগে। হয়নি দেখেই এ ঔদ্ধত্য। আওয়ামী লীগ বা বর্তমান সরকারও এর জন্য খানিকটা দায়ী। বাদী হিসাবে সরকারের প্রথম কাজ ছিল গোলাম আযমকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো। না করানোর ফলে ধারণা হয়েছে আমজনতার, যে তার পিছে মহাশক্তি আছে। গোলাম যদি কোন অপরাধ নাই করে থাকে তা হলে ১৯৭১-৭৫ দেশে থাকেননি কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের একটি মসত্ম ভুল ছিল তাকে বাঁচিয়ে রাখা।
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর জেনারেল জিয়াউর রহমান গোলাম আযমকে দেশে ফিরিয়ে আনেন। এ কারণে তার মরণোত্তর বিচার হওয়া বাঞ্ছনীয়। গোলাম আযম বলেছেন, "আমার মা আমার দেশে ফেরার সুযোগ চেয়ে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কাছে আবেদন করেন। তার পরিপ্রেৰিতেই আমাকে দেশে ফেরার সুযোগ দেয়া হয়। পাকিসত্মানী পাসপোর্ট দেখিয়ে বাংলাদেশে আসি। এরপর একদফা সময় বাড়ানো হয়। পরে জানিয়ে দেয়া হয় আর সময় বাড়ানো হবে না। কিন্তু আমিও বলে দেই, আমি আর দেশ থেকে ফিরে যাব না। এরপর জিয়াউর রহমান আমাকে দেশে থাকার সুযোগ দেন। কিন্তু কোন বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই। আমাকে বলে দেয়া হয়, দেশে থাকুন কিন্তু সরকার কোন কাগজপত্র দেবে না।" [যাযাদিন]
বিএনপি যে গোলাম আযমকে সমর্থন করবে তা তো স্বাভাবিক।
দেশে ফিরে গোলাম আযম আমীর হিসাবে পাকিসত্মানের হয়ে জামায়াতকে সংগঠিত করেছেন। পাকিমনা বিএনপিকেও সহায়তা করেছেন। আমরা, রাজনৈতিক দল, সবাই তা সহ্য করেছি। জাতিকে, শহীদদের, এই রাষ্ট্রকে এভাবে আমরা অপমান করেছি। আমরা সবাই এর জন্য দায়ী। মানুষের বাচ্চা হলে আমরা এ জঘন্য অপরাধ করতাম না।
প্রেসক্লাবে জামায়াত এখন অনুষ্ঠান করে এবং বলে, তারা পুরনো ইতিহাস ভুলতে চান। আমাদের নয় তাদের। বর্তমান জামায়াত নেতা গোলাম পারওয়ার বলছেন, "অনেক দেশ যুদ্ধ করেছে, কিন্তু স্বাধীনতার পর তারা বিভক্ত হয়নি। প্রত্যেক জাতি আগে যা খারাপ কাজ হয়েছে তা ভুলে যায়।" তাদের খুনখারাবি আমাদের ভুলে যেতে হবে! তার ঔদ্ধত্য এমন যে বিজয় দিবসে এ কথা বলার পর বলছেন, যুদ্ধাপরাধী বিচারে ট্রাইবু্যনাল 'তথাকথিত'। আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আপনাদের যাওয়ার জায়গা আছে (ভারতে)। আমাদের নেই। আমাদের চারদিকে ভারত ও বঙ্গোপসাগর। আমাদের ইসলামী আদর্শ ও সেই বাসত্মবতার কারণে দেশকে ভালবাসি (ডেইলি স্টার, ১৬-১২-১১)। আওয়ামী লীগ হচ্ছে, গ-ারের মতো। কাতুকাতু দিলে সাত দিন পর হাসে। আজ ৩ বছর পর আওয়ামী নেতারা ঘোষণা করছেন, তারা ঢাকায় এখন মিছিল করবেন যুদ্ধাপরাধের বিরম্নদ্ধে। ৰমতা এত মদমত্ত করে দেয় এইসব লোকদের! আমাদের কপাল!
আজ বিএনপির মওদুদও বলছেন, বুদ্ধিজীবী হত্যায় পাকিসত্মানী হানাদার বাহিনীর চেয়ে তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার (গোলাম আযম) আলবদররা (নিজামী) বেশি সক্রিয় ছিল [ঐ ১৫.১২], অধ্যাপক এমাজউদ্দিনও বলছেন, "মানবতাবিরোধীদের বিচার চলছে, বিচারের দিকেই জাতি চেয়ে আছে।"
আমাদের নিষ্ক্রিয়তা, বোধহীনতা, লজ্জাহীনতার কারণে গোলাম আযমরা আজ বিজয় দিবসেও আমাদের নিয়ে ঠাট্টা মশকরা করে। সাংবাদিকরা তার খবর ফলাও করে প্রচার করেন। ইকবাল সোবহানরা প্রেসক্লাবে কেন যান? যেদিন পারওয়ার বিজয় দিবসে সেখানে সভা করেন সেদিন একটা প্রতিবাদ তো করতে পারতেন!
সরকার গোলাম আযমের বিচার করতে পারবে কিনা জানি না। আমরা রাজনৈতিক নেতা নই, এখনও বিবেকের দংশন বোধ করি দেখে গোলাম আযমের বিচারের জন্য গণআদালত করেছিলাম আর সাধারণ মানুষ আমাদের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। তাই এখনও ঐসব খুনীর কথা মনে করিয়ে দিই নিজেদের বিপদাপন্ন করে। গোলাম আযমের প্রতি আওয়ামী-বিএনপি দুর্বলতার কথা আমরা জানি, গোলাম আযমও জানেন। এ বৃদ্ধ এখনও ইসলামের নামে অনর্গল মিথ্যা বলে যাচ্ছেন, তাও আমরা সহ্য করেছি। তার বাসত্মব বিচার না হোক ইতিহাসের বিচার হয়ে গেছে। সাধারণের কাছে গোলাম আযম পরিচিত রাজাকার হিসাবে। সভ্যসমাজে তিনি বা তার পরিবার গ্রহণযোগ্য নয়, রাজাকারদের কাছে ছাড়া। বাংলাদেশে, দেশকে ভালবাসে এমন কোন মানুষ, তার সনত্মানের নাম গোলাম আযম রাখবে না। মীরজাফর নামটি যে কারণে কেউ রাখে না। অনেকে এফিডেভিট করে এ নাম বদলও করেছে। এ নাম মানুষকে গৌরবান্বিত করে না। কারণ এ লোকটি চিরদিন পাকিদের গোলাম হয়েই রইল, তাদের বা নিতান্ত মানুষদের, কারও আযম হতে পারল না।
 
.
বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০১১, ৮ পৌষ ১৪১৮
এই লোকটি গোলাম হয়েই রইল আযম হতে পারল না
মুনতাসীর মামুন
যে মওলানা, মওলানাসুলভ কাজ করে না তার নামের আগে মওলানা শব্দটি লেখা অনুচিত। কারণ যিনি এ শব্দ উচ্চারণ করবেন বা লিখবেন তিনি সেই ব্যক্তিটিকে সম্মান করছেন। আর নিজেকে খাটো করছেন। মানুষজনকে বিভ্রান্ত করার জন্যও তিনি অপরাধী। যিনি অধ্যাপক নন, তার নামের আগেও এ ধরনের শব্দ ব্যবহার করা অনুচিত। অধ্যাপক গোলাম আযম। জামায়াতীদের লিডার, তাই তারা অধ্যাপক শব্দটি ব্যবহার করে তাকে মর্যাদাপূর্ণ করার জন্য। গোলাম আযম অল্প কয়েকদিন রংপুর কারমাইকেল কলেজে প্রভাষক হিসেবে পড়িয়েছেন মাত্র। অধ্যাপক ও প্রফেসর হওয়ার দীর্ঘ পথ পাড়ি দেননি। যিনি সারাজীবন ইসলামের নামে ব্যবসা করেছেন, দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছেন, পাকিস্তানী প্রভুদের হয়ে খুনখারাবি, ধর্ষণে সবরকম সহায়তা দিয়েছেন তিনি হয়ে গেলেন অধ্যাপক! আমাদের দেশের মানুষদের আর কী বলব!
গোলাম আযম রাজনৈতিক জীবন শুরম্নই করেন পাকিসত্মানী মানসিকতার গোলাম হিসাবে। দেশের জন্য আজ পর্যন্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাল কাজ করেছেন এ বিষয়টি কেউ প্রমাণ করতে পারবেন না। ১৯৭১ সালে আজান দিয়ে যিনি মুক্তিযোদ্ধাদের কতল করতে নেমেছিলেন, বলেছিলেন_ 'এ দেশের জনগণ সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীদের কখনও ত্রাণকর্তা হিসেবে মনে করেন না। পূর্ব পাকিস্তানের দেশপ্রেমিক জনগণ সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারীদের কোন স্থানে দেখামাত্র খতম করে দেবে বলে তারা দৃঢ়আস্থা পোষণ করেন। এ বিবৃতি তিনি দেন ১৯৭১ সালের ৮ এপ্রিল। এখানে 'দেশপ্রেমিক জনগণ' মানে গোলাম আযম গং বা রাজাকাররা আর 'অনুপ্রবেশকারী'রা হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধারা_ যাঁরা দেশ স্বাধীনের লড়াইয়ে যুদ্ধ করছেন। এ গোলাম আযম এখন ঘোষণা করছেন_ 'রাজাকার আজকাল একটা গালি। আমাকেও এ গালি দেয়া হয়। কিন্তু আমি রাজাকার নই।' [যায়যায়দিন, ১৭.১২.২০১১] গোলাম আযম রাজাকার না হলে এ দেশে রাজকারের সংজ্ঞা কী হবে? তা হলে হারামজাদাকে হারামজাদা না বলে সাহেবজাদা বলতে হবে? যে আজীবন গোলামী করল পাকিদের, সে এখন আযমের মতো বলে, আমি রাজাকার নই। তারেক মাসুদের 'মুক্তির কথা'য় একটি সংলাপ আছে। এক গ্রামে এক রাজাকার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে। সেই কৃষক বলছেন, হ্যা, আমাদের চোখে নগণ্য কৃষক এক অসামান্য কথা বলেছেন। তিনি বললেন, আমরা যদি একজন রাজাকারকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করি তা হলে তো আমরা 'কুত্তার লাহানই হইয়া গেলাম, কী কন?' আসলে নিতানত্ম সারমেয় শাবক না হলে আমরা গোলাম আযমকে এখনও অধ্যাপক গোলাম আযম হিসেবে সম্মান করি। তার বক্তব্য এককভাবে প্রচার করি। তাকে বাঁচিয়ে রাখি? সাংবাদিকরা বিজয় দিবসে হঠাৎ গোলাম আযমের সাৰাতকার গ্রহণ করেন।
সাংবাদিকরা এর পাশাপাশি যদি ১৯৭১ সালে গোলাম আযমের কর্মকা- বয়ান করতেন বা একজন মুক্তিযোদ্ধারও সাৰাতকার নিতেন তার সঙ্গে, তা হলেও একটা কথা ছিল। এ রকম অবিবেচনার কাজ কেন করা হলো? সংবাদপত্র পড়েই জেনেছি বিভিন্ন সেক্টরে জামায়াত প্রচুর টাকাপয়সা ঢালছে। বিজয়ের মাসে গোলাম আযম ঘোষণা করলেন তিনি রাজাকার নন এবং বাংলাদেশের খেতাবপ্রাপ্ত কোন মুক্তিযোদ্ধা একটি শব্দও উচ্চারণ করলেন না এবং দিব্যি গোলাম আযম হাসিমুখে বেরোচ্ছেন, কথা বলছেন। মাঝে মাঝে দুঃখ হয়, শালার কী দেশে জন্মালাম!
গোলাম আযমের ইতিহাস আমি বয়ান করব না। ১৯৭১ সাল পর্যনত্ম তিনি জামায়াত গড়ে তুলতে সহায়তা করেছেন, কোন নির্বাচনে জামায়াত জেতেনি। গোলাম আযমের তো প্রশ্নই ওঠে না। তার জীবনের একমাত্র কৃতিত্ব ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে খানসেনারা যে উপনির্বাচন করেছিল গোলাম আযম তাতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। গণহত্যা শুরম্ন হওয়ার পরপরই তিনি প্রথম চান্সে টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করে এসে শানত্মি কমিটি গঠন করেন। ১৯৭১ সালে শানত্মি কমিটির সদস্যদের লুটপাট ধর্ষণের কথা তো অজানা নয়। তা ছাড়া হত্যা ও হত্যা করতে কমিটির সহযোগিতার কথা এখন স্মৃতিতে জ্বলজ্বলে। তারপর রাজাকার বাহিনী ও রাজাকারদের সব সময় উজ্জীবিত করেছেন তিনি হত্যা ও লুটপাটে। ১৬ অক্টোবর তিনি বলেছিলেন, 'জামায়াতে ইসলামী গোটা দেশে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার জন্য নিরলসভাবে শানত্মি কমিটির মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে।' আর বাংলাদেশ ও রাজাকার সম্পর্কে তাঁর মনত্মব্য?
'কোন ভাল মুসলমানই তথাকথিত বাংলাদেশ আন্দোলনের সমর্থক হতে পারে না। পূর্ব পাকিসত্মানে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিমর্ূল করার জন্য একমন ও দেশপ্রেমিক লোকেরা একত্রে কাজ করে যাচ্ছেন। রাজাকাররা খুবই ভাল কাজ করছেন।' ২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ সালে এ কথা বলেছিলেন তিনি। আমরা কেউ ভাল মুসলমান নই। ভাল মুসলমান হলো হত্যা লুট ধর্ষণের হুকুমদার গোলাম আযম!
বিজয় দিবসের প্রাক্কালে দেয়া ঐ সাৰাতকারে গোলাম আযম বলেন, তিনি ও তাঁর দল পাকিসত্মানের পৰে ছিলেন সেটার কারণ রাজনীতি। তিনি যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে যুক্ত নন এবং সে কারণে তিনি অনুতপ্ত নন। জামায়াতী নেতাদের এ একটি ভঙ্গি আছে, তারা বাংলাদেশ চাননি, এটি রাজনৈতিক ব্যাপার। তাতে দোষ কী। তাঁর ভাষায়, 'আমরা তখন স্বাধীনতার পৰে বা বিপৰে কোন অবস্থানই নিতে পারিনি। ভারতের সহায়তায় বিভক্ত পূর্ব পাকিসত্মান স্বাধীনতার স্বাদ ভোগ করতে পারবে না। আশঙ্কা করেই তখন আমরা মুক্তিযুদ্ধ সমর্থন করিনি। [দৈ. মানবজমিন, ১৫.১২.২০১১] গণহত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকা যদি রাজনৈতিক প্রশ্ন হয়, তা হলে বলতে হবে ঐ অপরাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্যই তাঁর বিচার হতে হবে।
১৯৭১ সালে পাকিসত্মানের আজাদী দিবস উপলৰে পাকিসত্মানের এ গোলাম ঘোষণা করেছিলেন_ 'পাকিসত্মান টিকিয়া থাকিলে বাঙালী মুলমানের হক একদিন আদায় হইবে। আর যদি পাকিসত্মান না থাকে তবে বাঙালী মুসলমানের অসত্মিত্বই থাকিবে না। যাহারা এই কথাটি বুঝিতে চায় না তাহাদের উৎখাত করিতে হইবে।' অর্থাৎ বাংলাদেশের পৰে যাঁরা আছেন তাঁদের হত্যা করতে হবে। এরপরও এ লোকটি যুদ্ধাপরাধী নয়? এখনও গোলাম আযম একই সুরে বলেছেন_ 'ইসলামকে রৰা করতে হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রৰা করতে হবে। আর ইসলাম না থাকলে এ দেশ ভারতের অঙ্গরাজ্য হয়ে যাবে। [সাপ্তাহিক]
বিজয় দিবসের প্রাক্কালে গোলাম আযমের ঔদ্ধত্য দেখাবার কারণ আছে। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে তাঁর বিরম্নদ্ধে ৫২টি অভিযোগ আনা হয়েছে। ২৬ জানুয়ারি অভিযোগের শুনানি হবে। ট্রাইবু্যনাল সন্তুষ্ট হলে হয়ত তাঁকে গ্রেফতার করা হবে। গোলাম আযম এ বিষয়ে প্রায় নিশ্চিত। মিডিয়াকে যেভাবে হোক ম্যানেজ করে তাঁর বক্তব্য প্রচার করেছেন। ভাবটা এই, এক. তাঁর পেছনে এখনও দৈবশক্তি কাজ করছে অতএব সাবধান। তাঁর গায়ে হাত দিলে সরকার পাল্টে যাবে। আফ্রিকান ভুুডু আর কী! আমাদের নেতাদের অনেকে আবার তুকতাকে বিশ্বাসী। দুই. নতুন প্রজন্মকে বোঝানো, আমাকে রাজনৈতিক কারণে টানাহেঁচড়া করা হচ্ছে। আমি তো বৃদ্ধ, আমি কি কারও ৰতি করতে পারি!
মনে রাখা উচিত, এ লোকটি এককভাবে যত মুসলমান হত্যায় সহায়তায় করেছে পৃথিবীতে আর কোন মুসলমান এত মুসলমান হত্যায় সহায়তা করেনি। মাঝে মাঝে মনে হয়, আলস্নাহ্্র আরশ কি এতেও কেঁপে উঠল না। নাকি এটি সত্য যে, নেক লোক তাড়াতাড়ি প্রস্থান করে, বদ লোক বেঁচে থাকে মানুষকে বিভ্রানত্ম করার জন্য। যুদ্ধাপরাধী হিসাবে তার নামে চার্জশীট হওয়া উচিত ছিল সবার আগে। হয়নি দেখেই এ ঔদ্ধত্য। আওয়ামী লীগ বা বর্তমান সরকারও এর জন্য খানিকটা দায়ী। বাদী হিসাবে সরকারের প্রথম কাজ ছিল গোলাম আযমকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো। না করানোর ফলে ধারণা হয়েছে আমজনতার, যে তার পিছে মহাশক্তি আছে। গোলাম যদি কোন অপরাধ নাই করে থাকে তা হলে ১৯৭১-৭৫ দেশে থাকেননি কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের একটি মসত্ম ভুল ছিল তাকে বাঁচিয়ে রাখা।
বঙ্গবন্ধু হত্যার পর জেনারেল জিয়াউর রহমান গোলাম আযমকে দেশে ফিরিয়ে আনেন। এ কারণে তার মরণোত্তর বিচার হওয়া বাঞ্ছনীয়। গোলাম আযম বলেছেন, "আমার মা আমার দেশে ফেরার সুযোগ চেয়ে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কাছে আবেদন করেন। তার পরিপ্রেৰিতেই আমাকে দেশে ফেরার সুযোগ দেয়া হয়। পাকিসত্মানী পাসপোর্ট দেখিয়ে বাংলাদেশে আসি। এরপর একদফা সময় বাড়ানো হয়। পরে জানিয়ে দেয়া হয় আর সময় বাড়ানো হবে না। কিন্তু আমিও বলে দেই, আমি আর দেশ থেকে ফিরে যাব না। এরপর জিয়াউর রহমান আমাকে দেশে থাকার সুযোগ দেন। কিন্তু কোন বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই। আমাকে বলে দেয়া হয়, দেশে থাকুন কিন্তু সরকার কোন কাগজপত্র দেবে না।" [যাযাদিন]
বিএনপি যে গোলাম আযমকে সমর্থন করবে তা তো স্বাভাবিক।
দেশে ফিরে গোলাম আযম আমীর হিসাবে পাকিসত্মানের হয়ে জামায়াতকে সংগঠিত করেছেন। পাকিমনা বিএনপিকেও সহায়তা করেছেন। আমরা, রাজনৈতিক দল, সবাই তা সহ্য করেছি। জাতিকে, শহীদদের, এই রাষ্ট্রকে এভাবে আমরা অপমান করেছি। আমরা সবাই এর জন্য দায়ী। মানুষের বাচ্চা হলে আমরা এ জঘন্য অপরাধ করতাম না।
প্রেসক্লাবে জামায়াত এখন অনুষ্ঠান করে এবং বলে, তারা পুরনো ইতিহাস ভুলতে চান। আমাদের নয় তাদের। বর্তমান জামায়াত নেতা গোলাম পারওয়ার বলছেন, "অনেক দেশ যুদ্ধ করেছে, কিন্তু স্বাধীনতার পর তারা বিভক্ত হয়নি। প্রত্যেক জাতি আগে যা খারাপ কাজ হয়েছে তা ভুলে যায়।" তাদের খুনখারাবি আমাদের ভুলে যেতে হবে! তার ঔদ্ধত্য এমন যে বিজয় দিবসে এ কথা বলার পর বলছেন, যুদ্ধাপরাধী বিচারে ট্রাইবু্যনাল 'তথাকথিত'। আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আপনাদের যাওয়ার জায়গা আছে (ভারতে)। আমাদের নেই। আমাদের চারদিকে ভারত ও বঙ্গোপসাগর। আমাদের ইসলামী আদর্শ ও সেই বাসত্মবতার কারণে দেশকে ভালবাসি (ডেইলি স্টার, ১৬-১২-১১)। আওয়ামী লীগ হচ্ছে, গ-ারের মতো। কাতুকাতু দিলে সাত দিন পর হাসে। আজ ৩ বছর পর আওয়ামী নেতারা ঘোষণা করছেন, তারা ঢাকায় এখন মিছিল করবেন যুদ্ধাপরাধের বিরম্নদ্ধে। ৰমতা এত মদমত্ত করে দেয় এইসব লোকদের! আমাদের কপাল!
আজ বিএনপির মওদুদও বলছেন, বুদ্ধিজীবী হত্যায় পাকিসত্মানী হানাদার বাহিনীর চেয়ে তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার (গোলাম আযম) আলবদররা (নিজামী) বেশি সক্রিয় ছিল [ঐ ১৫.১২], অধ্যাপক এমাজউদ্দিনও বলছেন, "মানবতাবিরোধীদের বিচার চলছে, বিচারের দিকেই জাতি চেয়ে আছে।"
আমাদের নিষ্ক্রিয়তা, বোধহীনতা, লজ্জাহীনতার কারণে গোলাম আযমরা আজ বিজয় দিবসেও আমাদের নিয়ে ঠাট্টা মশকরা করে। সাংবাদিকরা তার খবর ফলাও করে প্রচার করেন। ইকবাল সোবহানরা প্রেসক্লাবে কেন যান? যেদিন পারওয়ার বিজয় দিবসে সেখানে সভা করেন সেদিন একটা প্রতিবাদ তো করতে পারতেন!
সরকার গোলাম আযমের বিচার করতে পারবে কিনা জানি না। আমরা রাজনৈতিক নেতা নই, এখনও বিবেকের দংশন বোধ করি দেখে গোলাম আযমের বিচারের জন্য গণআদালত করেছিলাম আর সাধারণ মানুষ আমাদের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। তাই এখনও ঐসব খুনীর কথা মনে করিয়ে দিই নিজেদের বিপদাপন্ন করে। গোলাম আযমের প্রতি আওয়ামী-বিএনপি দুর্বলতার কথা আমরা জানি, গোলাম আযমও জানেন। এ বৃদ্ধ এখনও ইসলামের নামে অনর্গল মিথ্যা বলে যাচ্ছেন, তাও আমরা সহ্য করেছি। তার বাসত্মব বিচার না হোক ইতিহাসের বিচার হয়ে গেছে। সাধারণের কাছে গোলাম আযম পরিচিত রাজাকার হিসাবে। সভ্যসমাজে তিনি বা তার পরিবার গ্রহণযোগ্য নয়, রাজাকারদের কাছে ছাড়া। বাংলাদেশে, দেশকে ভালবাসে এমন কোন মানুষ, তার সনত্মানের নাম গোলাম আযম রাখবে না। মীরজাফর নামটি যে কারণে কেউ রাখে না। অনেকে এফিডেভিট করে এ নাম বদলও করেছে। এ নাম মানুষকে গৌরবান্বিত করে না। কারণ এ লোকটি চিরদিন পাকিদের গোলাম হয়েই রইল, তাদের বা নিতান্ত মানুষদের, কারও আযম হতে পারল না।
Akmal Bhai, have you ever seen Muntasir's profile or faced him bodily? I guess, posting the above news is a spontaneous, not a thoughtful act of yours. Prof. Azam is far better of a human being than any Commie or Awamy-Leaguers can think off. He had authored above forty books, practiced ethics over fifty years but never being able to make a mansion in Maghbazar, thanks. If you don't know that Muntasir is another knee-Jerking propagandist of Bharat than check out if he has ever admitted any of the goddies of JI-SHIBIR, thanks.
 
.
Akmal Bhai, have you ever seen Muntasir's profile or faced him bodily? I guess, posting the above news is a spontaneous, not a thoughtful act of yours. Prof. Azam is far better of a human being than any Commie or Awamy-Leaguers can think off. He had authored above forty books, practiced ethics over fifty years but never being able to make a mansion in Maghbazar, thanks. If you don't know that Muntasir is another knee-Jerking propagandist of Bharat than check out if he has ever admitted any of the goddies of JI-SHIBIR, thanks.

Muntasir Mamun is a well known Bharati Boot Licker. Bharati Budhijibis like him are the real razakars
The PAK army should have finished this type of Budhijibi Bharati dalals when they left us. The day
we get rid of these Muntasir mamuns our country will become pest free.
 
.
Muntasir Mamun is a well known Bharati Boot Licker. Bharati Budhijibis like him are the real razakars
The PAK army should have finished this type of Budhijibi Bharati dalals when they left us. The day
we get rid of these Muntasir mamuns our country will become pest free.

They did but could not finished them all. Our bad luck is that revolution of 75 wasn't fully executed and biggest mistake General Zia made was allowing Hasina back in Bd soil.:hitwall:

It's hard to say, what's gonna happen in 2 years but if election take place then BNP-Jamat will regain power Insh'Allah. That time no back up, no compromise, Bharti dalals must be eliminated from the scene. :guns:
 
.
What more we can expect from this monkey court ? this man and his associate are going to face a concoct order from the this court its sure . i think if this govt will even try to sent any one of them to gallows .

Just take a look at the profile of these Awamis made up witness against Jamat leaders. Most of them are thieves or cheaters(Chor aar batpar). :angry:
 
.
Akmal Bhai, have you ever seen Muntasir's profile or faced him bodily? I guess, posting the above news is a spontaneous, not a thoughtful act of yours. Prof. Azam is far better of a human being than any Commie or Awamy-Leaguers can think off. He had authored above forty books, practiced ethics over fifty years but never being able to make a mansion in Maghbazar, thanks. If you don't know that Muntasir is another knee-Jerking propagandist of Bharat than check out if he has ever admitted any of the goddies of JI-SHIBIR, thanks.

@ I just posted it how lier this Mintasir Mamun is ?? I have not given my opinion.
 
.
অধ্যাপক গোলাম আযম টিভি চ্যানেলে এক সাক্ষাতকারে বলেন,


" আপনারাতো প্রশ্ন করবেন, আমি একটি প্রশ্নের জবাব পাচ্ছি না। সেটা হচ্ছে, একাত্তরের পরে ৩০ বছর পর্যন্ত কেউ কোনদিন আমাদেরকে যুদ্ধাপরাধী বলে নাই। যুদ্ধাপরাধীরা তো ছিলই। শেখ মুজিব সাহেব এই ইস্যুর মীমাংসা করে দিয়ে গেছেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১৯৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে তিনি যুদ্ধাপরাধী সাব্যস্ত করেছেন, তালিকাভুক্ত করেছেন। ঐ তালিকায় কোন সিভিলিয়ানের নাম ছিল না। এবং তাদেরকে বিচার করার জন্য একটা আইনও করেছিলেন। সে আইনটা দিয়ে এখন আমাদেরকে বিচার করার চেষ্টা চলছে। তালিকা করলেন। বিচার করার জন্য আইন করলেন। কিন্তু ভুট্টোর সঙ্গে বৈঠক করে ওদেরকে মাফ করে বিদায় করে দিলেন। মাফ করে দিলেন। এরপরে যাদেরকে তিনি তাদের সহযোগী মনে করেছেন, তাদেরকে নাম দিয়েছেন কলাবরেঠর। সহযোগী। তাদের জন্য আইন করলেন। সে আইনে লাখ খানেক লোককে গ্রেফতার করলেন। কিছু লোককে বিচার করলেন। তারপর দেখে যে, কোন সাক্ষী প্রমাণ পাওয়া যায় না। তখন জেনারেল এ্যামনেস্টি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা হয়ে গেল, মাফ করে দিলেন। উনিতে এটা মীমাংসা করে দিয়ে গেলেন। যুদ্ধাপরাধী ইস্যুটার মীমাংসা করে দিয়ে গেলেন। এখন ৩০ বছর পর এখন ৪০ বছর হয়ে গেল। ৪০ বছর পর এই ইস্যুটাকে খাড়া করা হলো কেন?



১৯৯৩-৯৪, কেয়ারটেকার সরকারেরও আগে এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আমরা একসঙ্গে আন্দোলন করলাম। বিএনপি, আওয়ামী লীগ জাময়াত এক সঙ্গে আমরা আন্দোলন করলাম। আমাদের সাথে বৈঠকও করল। লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকও হলো, তখনও তো আমরা যুদ্ধাপরাধী ছিলাম না। এরপরে বিএনপি যখন ৯১ সালে ক্ষমতায় আসলো, কেয়ারটেকার সিস্টেমে নির্বাচন হওয়ার কারণেই বিএনপি ক্ষমতায় আসলো। এরশাদের সময় যদি এরশাদের আন্ডারে ইলেকশন হতো তো এরশাদই ক্ষমতায় আসতো। তো এই সিস্টেমটাকে, কেয়ারটেকার সিস্টেমটাকে শাসনতন্ত্রে অন্তরভুক্ত করার জন্য আমরা দাবি জানালাম। বিএনপি সরকার এটা করতে রাজী হলো না। বিএনপি গভর্নমেন্ট কিন্তু আমাদের সমর্থনেই গভর্নমেন্ট ফরমড করতে পেরেছে। তাদের পুরা মেজরিটি ছিল না। এ্যাবসুলেট মেজরিটি ছিল না। তারা কিছুতেই এটা কনস্টিটিউশনের অন্তর্ভুক্ত করতে রাজী হলো না। তখন মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুরের আওয়ামী লীগের একটা আসন উপনির্বাচনে বিএনপি দখল করলো। আওয়ামী লীগকে পাস করতে দিলো না। তখন আওয়ামী লীগ তাদের বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে এসেম্বলী বয়কট করলো। আর কেয়ারটেকার সরকারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করলো। আর এই ইস্যুটাতো আমাদের। আমরাই তো কেয়ারটেকার সিস্টেমটা সাজেস্ট করেছি। তা আমরা তো এ ইস্যু নিয়ে চুপ করে থাকতে পারি না। আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলে এই আন্দোলনে শরীক হলাম। ইস্যুটা আমাদের সেই জন্য আমাদের চুপ করে থাকাটা স্বাভাবিক ছিল না। তখনও আমাদেরকে যুদ্ধাপরাধী বলা হয়নি। এই প্রশ্নের জবাব আমি তালাশ করে এক জায়গায় পেয়েছি। আপনারা একথা তাদের জিজ্ঞেস করেছেন কিনা জানি না। আপনাদের জিজ্ঞেস করা উচিত তাদেরকে। যে তারা ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে কখনও যুদ্ধাপরাধী বলেনি কেন? পরে এরা যুদ্ধাপরাধী বলা শুরু করলেন কেন? সেক্টর কমান্ডাররা এর আগে কোনদিন এই অভিযোগ করেন নাই।



আমি তালাশ করে পেলাম এ প্রশ্নের জবাব যে, ২০০১ সালে যে নির্বাচন হলো, জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ঐ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত এক জোট হয়ে নির্বাচন করেছে। বিএনপি-জামায়াত-জাতীয় পার্টি ও ইসলামী ঐক্যজোট। সেই ইলেকশনে জামায়াতে ইসলামী আর ইসলামী ঐক্য মিলে ৫০টা আসনও প্রতিযোগিতা করে নাই। ৫০-এর কমই ছিল। ৩শ আসনের মধ্যে আড়াইশ আসনেই এই দুই ইসলামী পার্টির পক্ষ থেকে কোন ইলেকশন করা হয়নি। সেখানে আওয়ামী লীগ আর বিএনপি। ঐ সব আসনে যে ইসলামী ভোটগুলো ছিল। আমাদের সমর্থক ছিল যারা, তাদের ভোটগুলো সব বিএনপি পেয়েছে। দেখা গেল যে, ভোট আওয়ামী লীগ-বিএনপি সমান সমান। ফোরটি পার্সেন্ট, ফোরটি পার্সেন্ট। বিএনপি সামান্য কিছু বেশি ভোট পেয়েছে ফোরটি পার্সেন্টের। কিন্তু ওয়ান পার্সেন্ট বেশিও পায়নি। অথচ আসন সংখ্যার দিক আওয়ামী লীগ পেল ৫৮টি এবং বিএনপি ১শ' ৯৭টি। সমান সমান ভোট পাওয়া সত্ত্বেও এত বড় পার্থক্য কেন হল। এ পার্থক্য হয়েছে বিএনপি ইসলামী ভোটগুলো একতরফা পেয়েছে। এরপরে দেখা গেল বিএনপি জামায়াত এক হয়ে গেলে আওয়ামী লীগ ফেল করে। যেমন চট্টগ্রাম মেয়র নির্বাচন হল, জামায়াতের প্রার্থী ছিল। বেগম জিয়া রিকোয়েস্ট করার কারণে জামায়াতে ইসলামী উইথড্র করলো, আর এক লক্ষ দশ হাজার ভোট বেশি পেয়ে বিএনপি কেন্ডিডেট পাস করলো।


আপনারা সাংবাদিক, সাংবাদিক ময়দানেও বিএনপি জামায়াত এক হলে তারা মেজরিটি হয়ে যায়। সাংবাদিক সমিতিও তো বিভক্ত হয়ে গেছে এই কারণে। সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনে গত দুইটা ইলেকশনে জামায়াত-বিএনপি এক হয়ে গেল আর আওয়ামী লীগ ফেল করলো। এরকমভাবে বার এসোসিয়েশনগুলোতে, ইউনিভার্সিটি শিক্ষক সমিতি নির্বাচনে এ ঘটনা ঘটলো। আওয়ামী লীগ দেখলো যে, বিএনপি এবং জামায়াত এক হলেই আওয়ামী লীগ পাস করতে পারে না। সেজন্য জামায়াতকে রাজনীতি থেকে উৎক্ষাত করতে হবে। যাতে জামায়াত বিএনপির সঙ্গে যোগ দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে না পারে। এটাই একমাত্র কারণ যে, জামায়াতে ইসলামীকে নেতৃত্বহীন করতে হবে। রাজনীতির ময়দানে তারা যাতে ভূমিকা রাখতে না পারে। সে ব্যবস্থা করতে হবে। এই কারণেই যুদ্ধাপরাধী গালিটা ২০০১ সালের নির্বাচনের পর থেকে চালু হয়েছে এবং পাকিস্তানী আসল যুদ্ধাপরাধী যারা তাদেরকে বিচারের জন্য যে আইন করা হয়েছিল সে আইনটি আমাদের বিরুদ্ধে বিচারে প্রয়োগ করতে শুরু করেছে।" Extract from Golam Azam's TV interview.
 
.
They did but could not finished them all. Our bad luck is that revolution 75 wasn't fully executed and biggest mistake General Zia made was allowing Hasina back in Bd soil.:hitwall:

It's hard to say, what's gonna happen in 2 years but if election take place then BNP-Jamat will regain power Insh'Allah. That time no back up, no compromise, Bharti dalals must be eliminated from the scene. :guns:

Letting Hasina come back was not the only mistake. BNP also made a mistake by Promoting The traitor Moin to COAS and
appointing the dalal fakurudin as BB. These were disastrous mistakes. BNP-Jamat had a democratic mindset and allowed Al
to practice their rights even though the awami thugs caused anarchy. BNP-Jamat should have ruled over these Bharati
dalals with an iron fist. Inshallah when BNP-Jamat come back to power I hope they won't make the same mistakes.
 
.
On March 25'1971 Awami League leaders saved their own lives. They did not think for the lives of innocent people. Awami League chief Sheikh Mujibur Rahman made the situation more complicated surrendering to the Pakistan Army. He gave the impression that he was not in favor of independence. indian Prime Minister Indira Gandhi said that she did not understand Sheikh Mujib. She wondered how a general could surrender to the enemy after declaring war.Tajuddin and others declared the independence with the help of Indian Govt. Indian involvement created frustration in the mind of the people and the politicians inside the country. They apprehended that India would enslave the country. More than 80% of the people thought that India would swallow East Pakistan. Their fear came true. Now New Delhi is subjugating Dhaka indirectly through the agents. Maolana Abdul Hamid JKhan Bhasani went to India to take part in the Freedom Fighting, but he was put under house arrest. Rashed Khan Menon, now the leader of the Worker's Party, alongwith Haidar Akbar Rono went to India for the same purpose. Tajuddin suspected them and did not accord permission to take part in the struggle. Kazi Zafar , who became the prime minister during President Ershad regime also went to India. He too was refused permission. How Ghulam Azam could cross the border?

In such a situation Ghulam Azam could not remain passive to the woes and sufferings of people at the hands of the military.He joined peace committee formed by all the Political Parties and saved hundreds irrespective of political affiliations. He used to criticise vehemently military actions. A preacher on the way of Allah can never remain silent when people are suffering. Risking his own life Prof Azam saved lives of many including Awami League supporters. He saved houses and villages from destruction.He changed to some extent the outlook of the civil and military officials and public who had the opportunity to listen to him.

Ghulam Azam did not build up Razakar, Al-Badar Bahini, though his opponents blamed him for doing so.He was a civilian and a politician dedicated to the cause of Islam and Muslim. He was never in the service of the government, nor did he represent the govt. How could he help raise such a force? Razakar and Al-badar Bahini worked under East Pakistan police.

This was the role of prof. Ghulam Azam in the 1971 war.
 
.
REGARDING CIZENSHIP OF GOLAM AZAM

The supreme court of Bangladesh gave the verdict that Professor Ghulam Azam is the citizen of Bangladesh.Thus his citizenship has been restored. For the restoration of his citizenship he had to wait 21 years.Through a notice in 18th April'1973 the then Awami League government declared that Professor Ghulam Azam with 38 other persons is disqualified for citizenship. Prof. Azam at that time had been staying at Mecca and performing the Hajj.

He could not return back to Bangladesh after the liberation war of 1971 and had to stay out side the country for ling time. In July 1978 he returned to his country with a Pakistani Passport ( he had to use that as travel documents under the cfompelling situation). He had surrendered his Pakistani Passport to the government and applied for the citizenship. But till 1992 no government took the matter seriously.Time to time some notice were issued to him saying how he has been staying in the country without Visa. And in the national assembly discussion on Ghulam Azam came several times.

On the 24th of March'1992 he was arrested by a local thana police under the foreigner's Act. Jamaat and Chatra Shibir leaders and workers along with thousands of people lay poratrate on the streets and started sobbing on chorus.Ghulam Azam delivered his speech to the crowd.

The citizenship issue of prof. Azam then reach into the court area. In the high court division Bench of Supreme Court the verdict came 1:1. Justice Ismail Uddin Sarkar rejected the petition for citizenship. Justice Badrul Islam Chowdhury upheld that Prof. Ghulam Azam was a citizen of Bangladesh by birth and by the operation of law. He was a citizen on March 26'1971. He said that the government notification dated april18,1973 cannot be operative retrospective because in the exercise of the government's delegated power retrospective effect cannot be given to any of i's order unless specifically empowered by law. Ghulam Azam had the right to exercise his franchise and stay in Bangladesh. The case then had been referred to the chief Justice of the supreme court for hearing. As per constitutional provision Chief Justice formed a seperate bench to hear the case. The supreme verdict was totally infavor of Prof. Azam.

Professor Azam's lawyer Barrister A.R yousuf is one of the senior Advocates of the Appealate division of the supreme court. He passed the M.A LLb from the Dhaka University and was admitted as barrister in the Lincoln's Inn U.K on Feb'9'1965. He joined the high court in July 2,1965. About the case of Professor Azam Barrister Yousuf remarks that he appeared for a pious and respectable leader and an innocent person who was fighting relentlessly for a cause. Barrister is from Akhaura, Comilla.
 
.
জাতির উদ্দেশ্যে অধ্যাপক গোলাম আযম (গ্রেফতারের পূর্বে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া বক্তব্য)
১১ জানুয়ারি ২০১২

বিসমিল্ল¬াহির রাহমানির রাহীম।
নাহমাদুহু ওয়া-নুসাল্লি¬ আলা রাসূলিহিল কারীম, ওয়া-আলা আলিহি ওয়াসহাবিহী আজমাঈন।
আমার প্রিয় দেশবাসী,
আস্সালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্ল¬াহ।
বাংলাদেশে ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে যে সেক্যুলার সরকার কায়েম হয়েছে, তারা আল্লাহর আইন ও সৎ লোকের শাসন কায়েমের চরম বিরোধী। তাই তারা বাংলাদেশে ইসলামী রাজনীতিকে বেআইনী ঘোষণা করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ জঘন্য উদ্দেশ্যেই ১৯৭৩ সালের মীমাংসিত যুদ্ধাপরাধ ইস্যুর দোহাই দিয়ে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করে তাদের মনগড়া ট্রাইব্যুনালে এক জংলী আইনে বিচার করে শাস্তি দেওয়ার চক্রান্ত করছে।
ঐ আইন অনুযায়ী গঠিত তদন্ত সংস্থা আমার বিরুদ্ধে ৬২টি অভিযোগ এনেছে। জেলে নেওয়ার পর এক তরফা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণার বন্যা বইতে থাকবে। আমার কোনো বক্তব্য জনগণের নিকট পৌঁছাবার সামান্য সুযোগও থাকবেনা। তাই গ্রেফতার হওয়ার সাথে সাথেই যাতে আমার বক্তব্য জনসাধারণ অবগত হতে পারে, সে উদ্দেশ্যেই আমি আমার এ বক্তব্য পেশ করছি। সম্প্রতি কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল আমার সাক্ষাৎকার প্রচার করলেও যেহেতু সেগুলোতে আমার সকল বক্তব্য আসেনি, তাই এ ব্যবস্থা করেছি।
প্রিয় দেশবাসী,
২০১১ সালের নভেম্বরে আমার ৮৯ বছর পূর্ণ হয়ে গেল। বার্ধক্যে রোগের অন্ত থাকে না। আমার ডান পায়ে সায়াটিকা ও বাম হাঁটুতে আর্থরাইটিস। এর জন্য দু’বেলা এমন কতক ব্যায়াম করতে হয়, যা অন্য কারো সাহায্য ছাড়া করা যায় না। একা চলাফেরা করতে পারি না। ডান হাতে ক্র্যাচে ভর দিয়ে বাম হাত একজনের কাঁধে রেখে মসজিদে যেতে হয়। তাই অত্যাবশ্যক না হলে কোথাও যাই না। ব্লাড প্রেসার সহ নানা অসুখের কারণে রোজ নিয়মিত ঔষধ খেতে হয়। এ অবস্থায়ও সরকার ৯০ বৎসর বয়সে আমাকে জেলে নিচ্ছে। আমি জীবনে চারবার জেলে গিয়েছি। জেল বা মৃত্যুকে আমি ভয় পাইনা। আমি আল্লাহ্ ছাড়া কাউকেই ভয় পাইনা। শহীদ হওয়ার জয্বা নিয়েই ইসলামি আন্দোলনে শরীক হয়েছি। মিথ্যা মামলায় ফাঁসি দিলে শহীদ হওয়ার মর্যাদা পাবো ইনশাআল্লাহ্। এবার বার্ধক্যে ও অসুস্থতা নিয়ে বন্দি জীবন কেমন করে কাটবে সে ব্যাপারে মহান মাবূদের উপর ভরসা করে আছি।
আপনারা অবহিত আছেন যে, ১১ বৎসর পূর্বে, ২০০০ সালে, আমি স্বেচ্ছায় জামায়াতে ইসলামীর আমীর-এর পদ হতে অব্যাহতি নেওয়ার পর কোনো রাজনৈতিক বিবৃতি দেই না। কিন্তু, বিগত কিছু দিন থেকে আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় মিথ্যা, ভিত্তিহীন, কাল্পনিক ও বানোয়াট খবর, কেবলমাত্র বিদ্বেষ ছড়ানোর উদ্দেশ্যে নির্লজ্জভাবে প্রচার করা হচ্ছে। তাই, সত্য প্রকাশের তাড়নায় আমি আপনাদের সামনে এ বক্তব্য পেশ করতে বাধ্য হলাম।
প্রিয় দেশবাসী,
আমি জন্মগতভাবে এ দেশের নাগরিক। ১৯২২ সালে ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে আমার নানার বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করি। ম্যাট্রিক ও ইন্টারমিডিয়েট ঢাকা থেকে পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ পাশ করি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে আমি ছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত হই। ১৯৪৭-৪৮ ও ৪৮-৪৯ সালে পরপর দু’বছর আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)-এর জিএস (জেনারেল সেক্রেটারি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। আমি ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্র সংসদেরও জিএস ছিলাম। ১৯৪৮ সালের নভেম্বরে রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবী সম্বলিত স্মারকলিপি তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াবযাদা লিয়াকত আলী খানের নিকট আমিই পেশ করেছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন ১৯৪৮-৫০ সালে আমি ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলাম এবং পরবর্তীতে রংপুর কারমাইকেল কলেজে অধ্যাপনাকালে ১৯৫২ ও ১৯৫৫ সালে ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দানের জন্য আমি দু’বার কারাবরণ করি।
১৯৫৪ সালে আমি জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করি এবং প্রত্যক্ষভাবে আমার রাজনৈতিক জীবন শুরু করি। অখণ্ড পাকিস্তানে ১৯৫৫ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত আমি সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করি। কপ (ঈঙচ- ঈড়সনরহবফ ঙঢ়ঢ়ড়ংরঃরড়হ চধৎঃু), পিডিএম (চউগ- চধশরংঃধহ উবসড়পৎধঃরপ গড়াবসবহঃ), ডাক (উঅঈ- উবসড়পৎধঃরপ অপঃরড়হ ঈড়সসরঃঃবব) ইত্যাদি আন্দোলনে জনাব শেখ মুজিবুর রহমান সহ অন্য সকল দলের নেতাদের সাথে অংশগ্রহণ করে অগ্রণী ভূমিকা পালন করি। রাজনৈতিক কারণে ১৯৬৪ সালেও আমাকে কারাবরণ করতে হয়েছিল।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় লাভের পর আমি বিবৃতি দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর দলকে অভিনন্দন জানাই। সেই সাথে কাল বিলম্ব না করে বিজয়ী দলের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট-এর নিকট আহ্বান জানাই। এরপর আসে মার্চ ১৯৭১।
১৯৭১-এর মার্চ মাসের ঐ উত্তাল দিনগুলোতে প্রেসিডেন্ট ইয়াহইয়ার সাথে শেখ সাহেবের আলোচনার সময় আমার সাথে শেখ সাহেবের একান্ত ঘনিষ্ঠ সঙ্গী ও বর্তমান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জনাব সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম-এর পিতা জনাব সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং জনাব আব্দুস সামাদ আযাদ-এর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। তাঁরা আমাকে জানিয়েছিলেন যে, অখণ্ড পাকিস্তান-এর চিন্তা নিয়েই উনারা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। জনাব আব্দুস সামাদ আযাদের সাথে ২৫শে মার্চেও আমার টেলিফোনে আলোচনা হয়। তিনি আমাকে পুনরায় আশ্বস্ত করে বলেন যে, তাঁরা অখণ্ড পাকিস্তান ছাড়া অন্য কোন বিকল্প চিন্তা করছেন না।
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের পর
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ দিবাগত রাতে ঢাকায় পাকিস্তানী সেনাবাহিনী যে নিমর্ম হত্যাকাণ্ড চালায় তা থেকে বুঝা গেল যে, ইয়াহইয়া-মুজিব সংলাপ ব্যর্থ হয়ে গেছে। পরে জানা গেল যে, ’৭০-এ নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু শেখ সাহেব পাক বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। ইচ্ছা করলে তিনিও ভারতে চলে যেতে পারতেন, কিন্তু তিনি যাননি। শেখ সাহেব গ্রেফতার হওয়ায় তাঁর কথা কিছুই জানা গেল না। অন্যদিকে বুঝা গেল যে, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ভারত সরকারের সহযোগিতা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করতে চান। এদিকে, ’৭০-এর নির্বাচনে বিজয়ী নেতৃবৃন্দ ভারতে চলে যাওয়ায় অসহায় নির্যাতিত জনগণ আত্মরক্ষার জন্য দেশে অবস্থানরত আমাদের মত রাজনৈতিক নেতাদের নিকটই ধরণা দিতে বাধ্য হলো।
১৯৪৭ সাল থেকে ’৭০ সাল পর্যন্ত ভারত সরকার এ দেশের সাথে যে আধিপত্যবাদী আচরণ করেছে তাতে আমাদের নিশ্চিত এ বিশ্বাস ছিল যে, ভারতের সহযোগিতা নিয়ে দেশ স্বাধীন হলে তা ভারতের তাবেদার রাষ্ট্রই হবে। তাই, কিছু বামপন্থী, সকল ডানপন্থী ও সকল ইসলামী দলগুলো সহ প্রায় সকল সুপরিচিত ইসলামী ব্যক্তিত্ব এ সুস্পষ্ট ধারণার কারণেই ভারতের সাহায্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করা সঠিক মনে করেননি। ভারতের সাহায্য না নিয়ে যদি স্বাধীনতা যুদ্ধ করা হতো, তাহলে আমরা অবশ্যই সে যুদ্ধে যোগদান করতাম।
ভারত বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ সাবেক পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক প্রধানমন্ত্রী ও ১৯৭০-এ নির্বাচিত গণপরিষদ সদস্য জনাব নুরুল আমীনের বাসায় সমবেত হয়ে সিদ্ধান্ত নেয় যে, জেনারেল টিক্কা খানের সাথে সাক্ষাৎ করে গণহত্যা বন্ধ করার দাবী জানাতে হবে এবং সেনাবাহিনীর যুলুম-নির্যাতনের শিকার অসহায় জনগণের সহায়তার জন্য আমাদেরকে সুযোগ দেবার ব্যবস্থা করতে হবে। সেই অনুযায়ী আমরা ৭/৮ জন একসাথেই টিক্কা খানের সাথে সাক্ষাৎ করি। পিডিপি’র জনাব নূরুল আমীন, জামায়াতে ইসলামী থেকে আমি, নেজামে ইসলাম পার্টির মৌলভী ফরিদ আহমদ, মুসলিম লীগের খাজা খায়রুদ্দীন, কেএসপি’র এ এস এম সুলাইমান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ তাতে সামিল ছিলেন। এখন ঐ মিটিং-এর ছবির বরাত দিয়ে আমার নামে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে। উনাদের কি ধারণা যে, ছবি কথা বলে? তাহলে শেখ সাহেবের সাথেও তো আমার এবং মাওলানা মওদূদী (র)-এর মিটিং-এর ছবি আছে। সেগুলোর আলোচনার বিষয়বস্তু কী ছিল তা কি তারা বলতে পারবেন?
১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করতে না পারা রাজনৈতিক নেতাগণ জনগণকে যুলুম থেকে রক্ষা করার জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন। নির্বাচনে বিজয়ী নেতৃবৃন্দ দেশে না থাকায় সাহায্যপ্রার্থী অসহায় জনগণের সমস্যার সমাধান করাই তাদের একমাত্র দায়িত্ব ও চেষ্টা ছিল। আমিও এ চেষ্টাই করেছি। আমি ১৪ই আগস্ট ১৯৭১-এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের এক মিটিং-এ সেনাবাহিনীর জুলুম-নির্যাতনের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তীব্র প্রতিবাদ ও প্রতিকার দাবী করেছিলাম। বায়তুল মোকাররমের সামনে আরেকটি মিটিং-এও আমি এই প্রতিবাদ ও প্রতিকার দাবী উত্থাপন করেছিলাম। আমার বক্তব্য পত্রিকায় আসতে দেয়া হয়নি; বক্তব্য প্রকাশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
বাংলাদেশের স্থপতি স্বয়ং যুদ্ধাপরাধী ইস্যুর চূড়ান্ত মীমাংসা করে গেছেন
শেখ সাহেব এর সরকার তদন্তের মাধ্যমে পাক-সেনাবাহিনী ও সহযোগী অন্যান্য বাহিনীর মধ্যে থেকে ১৯৫ জন পাকিস্তানী সেনা কর্মকর্তাকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে তালিকাভুক্ত করেন। তাদের বিচার করার জন্য ১৯৭৩ সালের ১৯ জুলাই জাতীয় সংসদে ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঈৎরসবং (ঞৎরনঁহধষং) অপঃ পাশ করা হয়। পরবর্তীতে, ১৯৭৪ সালের ৯ই এপ্রিল নয়াদিল্ল¬ীতে বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে একটি চুক্তির মাধ্যমে ঐ যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা করা হয়। শেখ সাহেব বাংলাদেশের কোন বেসামরিক ব্যক্তিকে যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় শামিল করেননি। যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়নি, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল এবং যারা সেনাবাহিনীর সহযোগী হয়েছিল, তাদেরকে শেখ সাহেবের সরকার ‘কলাবরেটর’ আখ্যা দিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথে সহযোগিতা করার উদ্দেশ্যে ১৯৭১ সালের সামরিক সরকার সরকারি আদেশের মাধ্যমে জনগণ থেকে রাজাকার, আল-বদর, আশ-শামস নামে বিভিন্ন বাহিনী গঠন করে। এসব বাহিনীকেও শেখ সাহেব এর সরকার ‘কলাবরেটর’ আখ্যা দেন। ‘কলাবরেটরদের’ বিচার করার উদ্দেশ্যে ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি ‘কলাবরেটর্স অর্ডার’ নামে একটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। এ আইনে বিচারের জন্য লক্ষাধিক লোককে গ্রেফতারও করা হয়েছিল। এদের মধ্যে অভিযোগ আনা হয়েছিল ৩৭ হাজার ৪শ’ ৭১ জনের বিরুদ্ধে। এই অভিযুক্তদের মধ্যে ৩৪ হাজার ৬শ’ ২৩ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষী-প্রমাণের অভাবে কোন মামলা দায়েরই সম্ভব হয়নি। মাত্র ২ হাজার ৮শ’ ৪৮ জনকে বিচারে সোপর্দ করা হয়। বিচারে ৭শ’ ৫২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয় এবং অবশিষ্ট ২ হাজার ৯৬ জন বেকসুর খালাস পেয়ে যায়। পরবর্তীতে, ১৯৭৩ সালের নভেম্বরে সরকার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করার পর গ্রেফতারকৃত ও সাজাপ্রাপ্ত সকলেই মুক্তি পায়। অবশ্য যারা হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মত অপরাধে অপরাধী তাদেরকে ঐ আইনে বিচার করার সিদ্ধান্ত অব্যাহত রাখা হয়। কিন্তু, এরপর দু’ বছর পর্যন্ত কারো বিরুদ্ধে ঐসব অভিযোগে মামলা দায়ের না হওয়ায় এ আইনটিই বিলুপ্ত করা হয়। যাদের বিরুদ্ধে সে সময় অভিযোগ উঠেনি, কোন মামলা দায়ের হয়নি, সেই নিরাপরাধীদেরকেই যুদ্ধাপরাধী সাজাবার জন্যে আজ মামলা তালাশ করা হচ্ছে।
যুদ্ধাপরাধী ইস্যুর উদ্ভাবন
১৯৮০’র দশকে এবং ১৯৯০ সালে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে এবং ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত কেয়ারটেকার সরকারের দাবীতে বিএনপি’র বিরুদ্ধে আন্দোলনে জামায়াত ও আওয়ামী লীগ যুগপৎ আন্দোলন করেছিল। সকল আন্দোলনকারী দলের লিয়াজোঁ কমিটি একত্রে বৈঠক করে কর্মসূচী ঠিক করতো। তখন তো কোন দিন আওয়ামী লীগ জামায়াত নেতৃবৃন্দকে যুদ্ধাপরাধী মনে করেনি। ফেব্র“য়ারি ১৯৯১-এর নির্বাচনের পর সরকার গঠনের জন্য আওয়ামী লীগ জামায়াতের সহযোগিতা প্রার্থনা করে আমার নিকট ধরণা দিয়েছিল। আওয়ামী লীগের নেতা আমির হোসেন আমু সাহেব জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল মুজাহিদ সাহেবের মাধ্যমে আমাকে মন্ত্রী বানাবার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। তখনও তো আওয়ামী লীগের মনে হয়নি যে, জামায়াতে ইসলামী যুদ্ধাপরাধী! পরবর্তীতে, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বিচারপতি বদরুল হায়দার চৌধুরী জামায়াতের সমর্থন লাভের আবদার নিয়ে যখন আমার সাথে সাক্ষাৎ করেন, তখনও তো তাদের দৃষ্টিতে জামায়াত নেতৃবৃন্দ ‘যুদ্ধাপরাধী’ ছিল না। এরপর এমন কী ঘটলো যে আওয়ামী লীগ ও কতক বাম দল জামায়াতকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ আখ্যা দিয়ে জামায়াতকে নির্মূল করার জন্য জেহাদে নামলেন? এরূপ দু’মুখো নীতি কোনো সুস্থ রাজনীতির পরিচয় বহন করে না।
২০০১ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মাত্র ৫৮টি আসনে বিজয়ী হয় আর বিএনপি ১৯৭টি আসন পায়। জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন হওয়ায় নির্বাচনে ইসলামপন্থী দলসমূহের শতকরা ২০ ভাগ ভোট একতরফা বিএনপি পাওয়ায় এসব ভোট থেকে বঞ্চিত হয়ে আওয়ামী লীগ মাত্র পাঁচ হাজার থেকে বিশ হাজার ভোটের ব্যবধানে বহু আসন হারায়।
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হওয়ার কারণ হিসেবে বুঝতে পেরেছিল যে, জামায়াতে ইসলামীকে ঘায়েল করতে না পারলে ভবিষ্যতে নির্বাচনে বিজয়ের কোনো আশা নেই। এ উপলব্ধি থেকেই ২০০১ সালের নির্বাচনের পর থেকে জামায়াত নেতাদেরকে যুদ্ধাপরাধীর অপবাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ ব্যাপক প্রচারাভিযান চালায়। যাদেরকে এক সময় ‘কলাবরেটর’ আখ্যা দেওয়া হয়েছিল তাদেরকেই এখন আওয়ামী লীগ ‘যুদ্ধাপরাধী’ হিসেবে বিচার করতে চাচ্ছে। ২০০১ সালের পূর্বে কখনো জামায়াত নেতাদেরকে যুদ্ধাপরাধী বলা হয়নি। এখন পাকিস্তানী ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীকে বিচার করার জন্য ১৯৭৩ সালে যে আইন করা হয়েছিল সে আইনেই আওয়ামী লীগ নতুনভাবে আমাদেরকে যুদ্ধাপরাধী আখ্যা দিয়ে বিচার করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এর আগে আওয়ামী লীগ ১৯৭১ থেকে ১৯৭৫ এবং ১৯৯৬ থেকে ২০০১, মোট দু’বার ক্ষমতায় ছিল। তখনতো তারা আমাদের এ আখ্যাও দেয়নি এবং ঐ আইনে বিচারের উদ্যোগও নেয়নি। সেটা কেন নেয় নি এর কি কোন সন্তোষজনক জবাব আওয়ামী লীগ জনগণের সামনে দিয়েছে বা দিতে পারবে?
এ বিচারের অসাধু উদ্দেশ্য
এ বিচারের অপচেষ্টার উদ্দেশ্য আসলে মোটেও সৎ নয়। হীন রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যেই বিচারের নামে এ প্রহসন চলছে। জামায়াতকে নেতৃত্বশূন্য করে যাতে আগামী নির্বাচনে জামায়াত আওয়ামী লীগের পরাজয়ের কারণ হতে না পারে সে উদ্দেশ্যেই এ বিচার।
যুদ্ধাপরাধী ইস্যুর যে মীমাংসা শেখ সাহেব স্বয়ং করে গেছেন তা নাকচ করে নতুনভাবে বিচার করাই যদি আসল উদ্দেশ্য হতো, তাহলে ১৯৫ জন পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীর বিচার আগে করতে হতো। কিন্তু সেটা সরকার করছে না। শেখ সাহেবের সমাপ্ত করা সে বিচার নাকচ না করেই অন্যায়ভাবে গোঁজামিলের আশ্রয় নিয়ে সরকার শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতকে দুর্বল ও জামায়াত নেতৃবৃন্দকে দৃশ্যপট থেকে সরানোর জন্যেই নতুন করে যুদ্ধাপরাধ ইস্যু সৃষ্টি করেছে।
যে আইনে বিচার করা হচ্ছে
যে কালো আইনে বিচার করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে সে আইনে ন্যায় বিচারের পরিপন্থী ১৭টি ধারা আন্তর্জাতিক আইনজীবি সমিতি চিহ্নিত করেছে। হোটেল সোনারগাঁও-এ অনুষ্ঠিত আইনজীবি সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠতম আইনজীবি বিচারপতি টিএইচ খান বলেছেন, ‘এ আইনটি চরম জংলী আইন। কুরবানীর পশুকে যেভাবে বেঁধে জবাই করা হয়, এ আইনে সেভাবেই বিচার করা হবে। আইনটির শিরোনামে আন্তর্জাতিক শব্দটি থাকলেও এ আইনে আন্তর্জাতিক মানের কোন চিহ্নও নেই।’ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করেছে, যাতে আইনটি সংশোধন করে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা হয়। কিন্তু, সরকার এ সব কথায় কান দিচ্ছে না; কারণ যুদ্ধাপরাধ আইনকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করে ন্যায় বিচার করা হলে জামায়াত নেতৃবৃন্দের মত নিরপরাধ কাউকে সাজা দেয়া যাবে না এবং জামায়াতকে পথ থেকে সরানোর তাদের উদ্দেশ্য সফল হবে না।
১৩ই অক্টোবর ২০১০ তারিখে হোটেল সোনার গাঁ-এ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশন আয়োজিত সেমিনারে যুক্তরাজ্যের বিশিষ্ট আইনজ্ঞ, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত যুগোশ্লাভিয়া ও রুয়াল্ডার আইনজীবি স্টিফেন কেয়ি কিউসি বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বর্তমান যুদ্ধাপরাধ বিচার সম্পর্কে তার অভিমত প্রকাশ করেন। তিনি সে সেমিনারে বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও যুদ্ধাপরাধ আইনকে বাংলাদেশের সংবিধান, ফৌজদারী দন্ডবিধি ও আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি আরো বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এটাকে নিরপেক্ষ আইন ও নিরপেক্ষ বিচারিক প্রক্রিয়া বলে গণ্য করবে না। যুদ্ধাপরাধের বিচার আন্তর্জাতিক মানে করতে হলে সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে করতে হবে, বিচারক হতে হবে উভয়পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক মানের নিরপেক্ষ বিচারকও সেখানে থাকতে হবে। প্রসঙ্গত তিনি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা এটা নিশ্চিত করা হয়েছে যে, কোন ব্যক্তিকে এমন কোনো অপরাধের জন্য সাজা দেওয়া যাবে না, যা কিনা তৎকালীন সময়ে কোন আইন দ্বারা ঐ অপরাধকে চিহ্নিত করা হয়নি।
প্রহসনমূলক বিচার
এ মামলার বাদী বর্তমান সরকার। আসামীদের অপরাধের তদন্ত করার জন্য যে সংস্থা, তা এ সরকারই তাদের নিজেদের লোকদের সমন্বয়ে গঠন করেছে। ট্রাইব্যুনালের বিচারকদেরকেও এ সরকারই বাছাই করে নিজেদের পছন্দের লোকদের নিয়োগ দান করেছে। একদিকে আইনের দুর্বলতা, অন্যদিকে নিজেদের মনোনীত দলীয় লোকদের দিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত তদন্ত ও বিচার। এ অবস্থায় ন্যায় বিচারের সামান্য সম্ভাবনাও থাকতে পারেনা।
তদন্ত সংস্থা তাদের সাজানো লোকদেরকেই মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে সুযোগ দিচ্ছে। ওয়াকিবহাল ও নিরপেক্ষ সাক্ষ্যদাতাদেরকে পুলিশ দিয়ে তাড়িয়ে দেয়ার কথাও জানা গেছে। এটা এক হাস্যকর তদন্ত প্রক্রিয়া। আসলে নিরপেক্ষ তদন্ত তারা করতে চায় না। সরকারের রায় হয়েই আছে। ঐ রায়কে ঠিক রাখার জন্যে যে ধরণের তদন্ত দরকার সেটাই করা হচ্ছে। তাই, সরকারের পছন্দ মত বিচার ও রায় ঘোষণা হবার আশংকাই বেশি।
আমার সম্পর্কে তদন্তের নমুনা
তদন্ত সংস্থা কিছুদিন আগে আমার বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করেছে। এতে একটি অভিযোগ আমার যে, আমি নাকি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গণহত্যার হুকুমদাতা। অথচ ১৯৭১ সালে আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যাইই নি। আরো অভিযোগ করেছে, আমার পরামর্শেই নাকি সামরিক সরকার রাজাকার বাহিনী ও শান্তি কমিটি গঠন করেছে। স্বাধীনতার পর আমি নাকি পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার বা রক্ষা কমিটি গঠন করেছিলাম। এর প্রমাণ তারা কোথায় পেলেন? আসলে তারা যা বলছে তাকেই তারা প্রমাণ বলতে চায়। এগুলো সবই অপবাদ, অভিযোগ নয়। তদন্ত সংস্থা আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ এনেছে এসবই সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট, কাল্পনিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যারা রাজনৈতিকভাবে আমাকে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ তারাই নিজস্ব হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে এ জঘন্য পন্থা বেছে নিয়েছে । আমি অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে দ্ব্যর্থহীনভাবে দাবী করছি যে এসব অভিযোগ ডাহা মিথ্যা। নিরপেক্ষ বিচার হলে এগুলোর একটিরও প্রমাণ পাওয়া যাবে না। আমার সারা জীবনে আমি কখনো কোন খারাপ কাজ করা তো দূরের কথা, কোন খারাপ কাজের চিন্তাও আমার মাথায় আসেনি। মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব সহ এ দেশের সকল বর্ষীয়ান ব্যক্তি আমার এ দাবীর পক্ষেই কথা বলবেন। যারা আমার বিরুদ্ধে সোচ্চার তারাও জানেন যে, এ সকল অভিযোগই সম্পূর্ণ মিথ্যা।
ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরা আমার বিরুদ্ধে যে সব অপবাদ ও মিথ্যা তথ্য লিখে প্রচার করেছে সেসব তথ্যই ঐ জংলী আইনে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করার বিধান রয়েছে, যাতে বিচারে সরকারের মন মতো শাস্তি দেওয়া যায়। তাই, এ আইনে বিচার হলে সুবিচারের কোনো আশাই করা যায় না।
বাংলাদেশে ভারতের ভূমিকা
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত তাদের সেনাবাহিনীর ভূমিকাকেই বড় করে দেখে। বাংলাদেশকে স্বাধীন করার কৃতিত্ব সবটুকুই ভারত তাদের বলে মনে করে। মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানকে তারা স্বীকারই করে না। তাই, ’৭১-এর ১৬ই ডিসেম্বর পাক সেনাবাহিনী ভারতীয় বাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করে। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীকে সেখানে হাজির হতেই দেওয়া হয়নি। প্রায় এক লাখ বন্দী পাকিস্তানী সৈন্যকে বাংলাদেশে না রেখে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পাক বাহিনীর সকল অস্ত্রশস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম লুট করে ভারতে নিয়ে গিয়েছিল তারা। অথচ, এসব বাংলাদেশের সম্পদ ছিলো। বাংলাদেশ রেলওয়েসহ অন্যান্য সংস্থার সম্পদও ভারত লুট করে নিয়ে যায়। এমনকি আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোও তাদের লুন্ঠনের হাত থেকে রেহাই পায়নি।
আসলে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশকে স্বাধীন করার উদ্দেশ্যে ভারত এগিয়ে আসেনি। তাদের চিরশত্র“ পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশকে বিচ্ছিন্ন করে তাদের কুক্ষিগত করে রাখার উদ্দেশ্যেই তারা সবকিছু করেছে। তাদের পরবর্তী আচরণ সে কথাই প্রমাণ করে।
দেশবাসী বিবেচনা করে দেখুন, ১৯৭১ সালে ভারতীয় আধিপত্যের যে আশংকা প্রকাশ করা হয়েছিলো তা সত্যে পরিণত হচ্ছে কিনা? বিগত ৪০ বৎসরের ইতিহাস এ সত্যের এক জ্বলন্ত সাক্ষী।
ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষশক্তি হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে উপজাতি বিদ্রোহীদেরকে অস্ত্র ও ট্রেনিং দিয়ে সাহায্য করতো না, আমাদের পানি সম্পদ নিয়ে আমাদের সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করে বাংলাদেশকে মরুভূমিতে পরিণত করতো না বা বর্ষায় পানি ছেড়ে দিয়ে বন্যার সৃষ্টি করতো না। ভারতের পণ্য বাংলাদেশকে ভারতের বাজারে পরিণত করেছে। সীমান্তে অব্যাহতভাবে বাংলাদেশী মানুষকে পাখি শিকারের মতো গুলি করে হত্যা করছে ভারত। জনগণ বিক্ষুব্ধ হলেও সরকার এর প্রতিকার করছে না। এর পাশাপাশি ভারত বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ট্রানজিট ও করিডোর আদায় এবং চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহার করার সুযোগ নেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশকে তার আঙ্গিনা বানাতে চাচ্ছে। এটা হলে বাংলাদেশ স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হারিয়ে ফেলবে।
এসব কারণেই বাংলাদেশের জনগণ ভারতকে বন্ধু মনে করে না। নিরপেক্ষভাবে জনমত যাচাই করলে তা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হবে। ভারত বাংলাদেশকে প্রায় চারদিক দিয়ে ঘেরাও করে আছে। যদি কখনো এ দেশের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করা হয়, তাহলে একমাত্র ভারতই করবে। এটা বড়ই দু:খের বিষয় যে, জনগণ ভারতকে বন্ধু মনে না করলেও সরকার ভারতকে শুধু বন্ধুই মনে করেনা, জনগণের মধ্যে ভারতের বিরুদ্ধে যত অভিযোগই থাকুক তারা কখনো ভারতের কোন মন্দ আচরণেরই প্রতিবাদ করে না। বাংলাদেশের উপর আধিপত্য কায়েমের উদ্দেশ্যে ভারত যা দাবী করে তা সবই তারা বিনা দ্বিধায় দিয়ে দিচ্ছে। বাংলাদেশের স্বার্থের বিরোধী হলেও ভারতের স্বার্থ বজায় রাখতে তারা অতি উৎসাহী। অথচ, বাংলাদেশের জনগণ দৃঢ়ভাবে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে।
প্রিয় দেশবাসী,
আপনাদেরকে সম্বোধন করে আবার কিছু বলার সুযোগ পাব কিনা জানি না। তাই, প্রাসঙ্গিকভাবে আমি যা বলতে চাই তার প্রয়োজনে পাকিস্তান আন্দোলন সম্পর্কে দু’এক কথা উল্লেখ করতে হয়।
চল্লিশের দশকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে বৃটিশ সরকার ঘোষণা করে যে, যুদ্ধের পর তারা ভারতবর্ষকে স্বাধীনতা দিবে। মি. গান্ধি ও মি. নেহরুর নেতৃত্বে কংগ্রেস দল থেকে দাবী করা হয় যে, ভারতীয় জাতীয়তা ও সেক্যুলার গণতন্ত্রের ভিত্তিতে অখন্ড ভারত ‘এক রাষ্ট্র’ হবে, কারণ ভারতের সকল ধর্মের মানুষ এক জাতি। কায়েদে আযম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর নেতৃত্বে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শেখ মুজিবের মত নেতারা দাবী করলেন যে, ‘মুসলিমরা আলাদা জাতি’। ৪০ কোটি ভারতবাসীর রাষ্ট্রে ১০ কোটি মুসলমান ৩০ কোটি হিন্দুর শাসনাধীন হলে মুসলিমরা স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারবেনা। তাই, মুসলিম জাতীয়তার ভিত্তিতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশগুলোকে ভারত থেকে আলাদা করে পাকিস্তান কায়েম করার আন্দোলন হয়। ১৯৪৬ সালের নির্বাচনে ১০ কোটি মুসলমান পাকিস্তানের পক্ষে ভোট দেওয়ার কারণে ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্ত হয়ে পাকিস্তানের জন্ম হয়।
কিন্তু পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আদর্শিক লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। তার ফলে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান শোষণ ও বঞ্চনার শিকার হয়। এই বিভেদ বঞ্চনা থেকেই পৃথক হওয়ার ধারণার জন্ম। আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ বিভক্ত ভারত ও বিভক্ত পাকিস্তানের উত্তরসূরী। এই বিভক্তির ফলে আমরা আলাদা জাতিসত্ত্বা ও স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
বিগত ৬০ বৎসর ধরে ভারতে মুসলমানদের যে দুর্দশা চলছে, ভারত বিভক্ত না হলে বাংলাদেশের মুসলমানদেরও একই দুরবস্থা হতো। পাকিস্তান হওয়ার কারণেই সর্বক্ষেত্রে মুসলমানদের এত ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছিল। ভারত বিভক্ত না হলে ১৯৪৭ সালের পর বাংলাদেশ ভূখন্ডের যে উন্নতি হয়েছে তা কখনো হতো না। আমরা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ পেয়েছি ৪৭ এর দেশ বিভাগের ফল হিসেবেই।
বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ আল্ল¬াহকে বিশ্বাস করে, রাসূল (সা.)-কে মহব্বত করে এবং কুরআনকে ভক্তি ও শ্রদ্ধা করে। রাসূল (সা.) কুরআনের জীবন বিধান বাস্তবে চালু করেই ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র কায়েম করেন। তিনি ইসলামকে শুধু কতক অনুষ্ঠানসর্বস্ব ধর্ম মনে করেননি। মানবজাতির পার্থিব সুখ-শান্তি ও আখিরাতে সাফল্যের জন্যই আল্ল¬াহ কুরআন নাযিল করেন।
বাংলাদেশে ধর্মহীন সেক্যুলার মতবাদ কায়েম করা হলে কংগ্রেসের ভারতীয় জাতীয়তাবাদের সাথে কোন পার্থক্য আর থাকবে না এবং ভারত বিভাগ ও আমাদের আলাদা স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের কোন যৌক্তিকতা থাকবে না। এই কারণেই আমরা বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন, সুখী ও ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চাই। তাহলেই আমাদের স্বাধীনতা অর্থবহ হবে। তা না হলে এদেশ একদিন ভারতীয় জাতীয়তাবাদের কবলে পড়ে ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশের সেক্যুলার সরকার আমাদের স্বাধীন ও স্বতন্ত্র জাতীয়তার ভিত্তি ইসলামকে এ দেশের জনজীবন থেকে উচ্ছেদ করে কংগ্রেসের ভারতীয় জাতীয়তাবাদের আগ্রাসনের পথই পরিষ্কার করছে।
আমি মুসলিম দেশবাসীর প্রতি আকুল আবেদন জানাই, যেন তারা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে এ দেশে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র কায়েমের জন্য জান-মাল দিয়ে প্রচেষ্টা চালান। কারণ, এটা ঈমানেরই দাবী এবং এটা স্বাধীনতারও একমাত্র গ্যারান্টি।
প্রিয় দেশবাসী,
দেশ বর্তমানে এক কঠিন সঙ্কটের মধ্য দিয়ে চলছে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর সমাধান ব্যতীত দেশের উন্নতি ও অগ্রগতি সম্ভব নয়। তাই, দলমত নির্বিশেষে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এসব জাতীয় সঙ্কট উত্তরণে কাজ করে যাওয়া একান্ত জরুরী।
এখন বিভাজনের সময় নয়- জাতীয় বৃহত্তর ঐক্যের সময়। দেশের অগ্রগতি অর্জনের স্বার্থে আমাদের পেছনে তাকানোর সময় নেই; আমাদেরকে সামনে অগ্রসর হতে হবে। আমি কামনা করি, বর্তমান সরকার এবং ভবিষ্যতেও যারা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিবেন তারা দলমত নির্বিশেষে সামাজিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা ও দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির স্বার্থে কাজ করে বাংলাদেশকে একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করবেন। আমি দোআ করি, দেশের শাসকগণকে আল্ল¬াহ যেন হীন দলীয় স্বার্থ ও হিংসা-বিদ্বেষের উর্ধ্বে উঠে সঠিকভাবে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার তাওফীক দেন, আইনি সাম্যের ভিত্তিতে সামাজিক ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে নিয়মতান্ত্রিকভাবে যা করণীয় তা তাঁরা করেন, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি নাগরিকদের অধিকার রক্ষার লক্ষ্যে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, এবং বয়স্ক, দরিদ্র ও ইয়াতিমদের ব্যাপারে বিশেষ যতœবান হন। তাঁদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হবে, এ দেশের মানুষকে আধুনিক, সুশিক্ষিত, দেশপ্রেমিক সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা।
প্রিয় দেশবাসী,
আমি অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে দাবী করছি যে, আমি কখনও কোন মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিলাম না। এক শ্রেণীর অন্ধ স্বার্থান্বেষী মহল আমাকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য বিগত প্রায় ৪০ বৎসর যাবৎ এ ধরণের ঘৃণ্য অপপ্রচার করে জনমনে আমার বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুট করছে। আজ পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য কোথাও কোন মামলা হয় নি। ১৯৭৩ সালে তৎকালীন সরকার অন্যায়ভাবে আমার জন্মগত নাগরিকত্ব অধিকার হরণ করলেও পরবর্তীতে, ১৯৯৪ সালে, সুপ্রীম কোর্টের সর্বসম্মত রায়ে আমি আমার জন্মগত নাগরিক অধিকার ফিরে পাই এবং আমার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এখন নতুন করে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে আবার সেই একই অভিযোগের অবতারণা করা হচ্ছে।
আমি জেল, জুলুম, নির্যাতন, এমনকি মৃত্যুকেও ভয় পাই না। মৃত্যু অত্যন্ত স্বাভাবিক, অনিবার্য। একদিন সবাইকে মৃত্যুবরণ করতে হবে। আমি দৃঢ়ভাবে আল্ল¬াহকে বিশ্বাস করি, আখিরাতে বিশ্বাস করি, তাক্বদির বিশ্বাস করি। আরও বিশ্বাস করি যে, আল্ল¬াহর ইচ্ছা ছাড়া কোন কিছুই হয় না এবং তিনি যা করেন তা বান্দাহর কল্যাণের জন্যই করেন। সুতরাং, আমি আমার মৃত্যু নিয়ে সামান্যও শংকিত নই। আমি নিশ্চিত, আমি এ দেশের মানুষের অকল্যাণের জন্য কোন কাজ কোনদিনই করিনি। নিরপেক্ষ তদন্ত ও নিরপেক্ষ বিচার হলে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হবো, এ ব্যাপারে আমার কোন সন্দেহ নেই। যারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছেন, তারাও জানেন যে, আমি দোষী নই- এ সবই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। তবে যে রকম প্রহসনের বিচার হচ্ছে তেমন হলে তো আর কোন বক্তব্য থাকে না।
আমার দীর্ঘ ৫০ বছরের কর্মজীবনে সারা দেশে ব্যাপক সফর করেছি। জনগণের মধ্যেই বিচরণ করেছি। উন্নত নৈতিক চরিত্রে ভূষিত হওয়ার জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেছি। মানবতাবিরোধী যে সব অপরাধের অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে তোলা হচ্ছে তা কখনো জনগণ বিশ্বাস করবেনা। আমাকে ফাঁসি দিলেও জনগণ আমাকে আল্লাহর সৈনিক হিসেবেই গণ্য করবে, ইনশাআল্ল¬াহ।
পরিশেষে, বলতে চাই যে, দেশের মানুষের দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণের জন্য আমি নিজের সারা জীবন উৎসর্গ করেছি। আত্মপ্রচার বা আত্মপ্রতিষ্ঠা কখনোই চাইনি। এ দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে আমিই একমাত্র কর্মক্ষম থাকা অবস্থায় দলীয় প্রধানের পদ থেকে অবসর নেয়ার মত নজির সৃষ্টি করেছি। কোন প্রতিদান বা স্বীকৃতি কারো কাছে কোন দিন চাইনি; এখনো চাই না। আমার জন্য আমার আল্ল¬াহই যথেষ্ট। তবে আফসোস, দেশ এবং জাতির জন্য যা চেয়েছি তা দেখে য�§
 
. .

Latest posts

Pakistan Defence Latest Posts

Back
Top Bottom