Banglar Bir
SENIOR MEMBER
- Joined
- Mar 19, 2006
- Messages
- 7,805
- Reaction score
- -3
- Country
- Location
Defence Technology of Bangladesh-DTB
থ্রিলার সিরিজ "সমর্পণ"
লেখক- Imtihan Azmee Nuban
পর্ব-১
খনখনে শুকনো দুপুর। সুর্য মাথার উপর, জনশুন্য নো ম্যান্স ল্যান্ড। তার মাঝখান দিয়ে দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে চারটি প্রানী। প্রাণীই তো, মায়ানমার এ রোহিঙ্গা দের উপর যে নির্যাতন চলছে, তা অন্য কোন পশুর উপরেও চলে না। চারজন রোহিঙ্গা প্রানী পার হচ্ছে দ্রুত, সন্তর্পণ গতিতে। যে করেই হোক পৌছতে হবে বাংলাদেশে। মা, বাবা, আর তাদের ৫ আর আড়াই বছরের ২টি ছেলে। বাবা বারবার তাগাদা দিচ্ছে, "তাড়াতাড়ি চলো, তাড়াতাড়ি চলো। জোরে হাটো"। জোর পায়ে বাংলাদেশের দিকে তারা এগিয়ে যেতে থাকে।
"Halt, থামো", গুরুগম্ভীর আওয়াজে থমকে গেল তারা। দেখল গাছপালার আড়াল থেকে বেরিয়ে এল ৪ জন বিজিবি সদস্য। বিজিবি দেখে তাদের বুক থেকে ভারী নিঃশ্বাসের বোঝাটা নেমে গেল। "তোমরা কোথায় যাচ্ছ? জানো না সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে,কোন রোহিঙ্গা আর ঢুকতে পারবে না, ফিরে যাও", রোহিঙ্গা দের লক্ষ্য করে বললেন বিজিবি সার্জেন্ট। "স্যার, প্লিজ,স্যার। আমাদের বাচান স্যার। আমাদের ঢুকতে দিন, স্যার। এই ছোট ছোট ২টা মাসুম বাচ্চা, স্যার। আমাদের ঘরবাড়ি সব পুড়িয়ে দিয়েছে,স্যার। অন্তত এই মাসুম বাচ্চা দুইটার জন্য দয়া করেন।" ধরা গলায় বলতে লাগল বাবা। নিঃশ্বাস ফেলে অন্যদের দিকে তাকালেন সার্জেন্ট। রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির ইতোমধ্যে ওভাররান হয়ে গেছে। উপর থেকে নির্দেশ, আর যেন কোন রোহিঙ্গা না ঢুকে। কিন্তু এদের অবস্থা দেখে তো মনে হয় ভয়াবহ বিপদেই আছে। ফিরিয়ে দিলে বর্ডারের ওপারে যেয়ে গুলি খেয়েই মরতে হবে। কিছুক্ষন ভাবলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত মানবতারই জয় হলো।
সার্জেন্ট সিদ্ধান্ত নিলেন তাদের যেতে দিবেন। ৪ জনে আর কিই বা আসে যায়। কিন্তু যেই মাত্র তিনি বলতে যাবেন, "আচ্ছা, যাও" ঠিক তখনই রোহিঙ্গা দের পিছন থেকে এক ঝাক গুলি এসে আছড়ে পড়ল তাদের মাঝে। আকস্মিক গুলির আঘাতে রোহিঙ্গা পরিবারটা কাটা কলাগাছের মতো পড়ে গেল। মুহুর্তে মাথা নিচু করে ফেলল বিজিবি সদস্যরা।গুলি তাদের মাথার উপর দিয়ে যেতে লাগল। সেই অবস্থায় কোনমতে তারা মাথা নিচু করে ছুটল জংলের দিকে। ছুটে এসে কাভার নিল গাছপালার আড়ালে। বার্মিজ সীমান্ত থেকে গুলিবর্ষণ এর কোন থামাথামি নাই। "অপারেটর, তাড়াতাড়ি আসো, বেস ক্যাম্পের সাথে যোগাযোগ করো। we need back up immediately "সার্জেন্ট চিৎকার করে উঠলেন।হঠাত করে বিজিবি সদস্য দের কানে কান্নার শব্দ ভেসে এলো। মাথা ঘুরিয়ে তারা দেখল, এত গোলাগুলির মাঝেওআড়াই বছরের রোহিঙ্গা শিশুটা কিভাবে যেন বেচে আছে, মৃত বাবা মা আর ভাইয়ের লাশের উপর হামাগুড়ি দিয়ে ওঠার চেস্টা করছে আর কাঁদছে।
"স্যার, বাচ্চাটা বেচে আছে, স্যার, বেচে আছে,,আমি ওকে নিয়ে আসি, স্যার", বলেই কনস্টেবল রফিক লাফ দিয়ে উঠে পরতে চাইল,কিন্তু তার আগেই সার্জেন্ট খপ করে তাকে ধরে মাটির সাথে চেপে ধরলেন। "Don't do anything stupid।
তুমি ওখানে যাবার চেস্টা করলে তোমার গায়েও গুলি লাগবে।""কিন্তু, স্যার, কিন্তু....." কনস্টেবল প্রতিবাদ করতে চাইল। "কোন কিন্তু না," বাচ্চাটার দিকে তাকিয়ে সার্জেন্ট হতাশাভরা কন্ঠে বললেন, "we have no choice। ব্যাকাপ আসা পর্যন্ত আমাদের এখানেই থাকতে হবে।""স্যার, বেস ক্যাম্পের সাথে যোগাযোগ হয়েছে, এই নিন",রিসিভার এগিয়ে দিল অপারেটর। রিসিভারটা নিয়ে কানেএ সাথে চেপে ধরলেন সার্জেন্ট,"Romeo-victor to base camp, do u copy?" কিছুক্ষন পর উত্তর ভেসে এল,"This is base camp, go ahead "। "সীমান্তে টহল দেবার সময় বার্মিজ সীমান্ত থেকে আমাদের উপর অতর্কিতে গুলি চালানো হচ্ছে। we are pinned down and immobilized। আমাদের পজিশন ৩ নং BOP থেকে 200 মিটার পশ্চিমে, we need Back up ASAP, Over"। "Roger, Back up will be there in 20 minutes. Over and out "। রিসিভারটা অপারেটরের কাছে দিয়ে এদিক তাকাতেই সার্জেন্ট দেখলো কনস্টেবল আর তার জায়গায় নেই। বরং এত গুলির মাঝেও মাথা নিচু করে বাচ্চাটার দিকে দৌড়ে যাচ্ছে। "Oh! shit" অস্ফুট স্বরে বলে উঠলেন সার্জেন্ট। সবাই দম বন্ধ করে তাকিয়ে আছে কনস্টেবলের দিকে। কনস্টেবল দৌড়ে মাথা নিচু করে যেয়ে বাচ্চাটার পাশে শুয়ে পড়লেন। তারপর বাচ্চাটাকে দুই বাহু দিয়ে জড়িয়ে উল্টোদিকে দৌড় দিলেন। উত্তেজনায় বিজিবি সদস্যরা টানটান হয়ে আছে। পারবে তো কনস্টেবল ফিরে আসতে!
থ্রিলার সিরিজ "সমর্পণ"
লেখক- Imtihan Azmee Nuban
পর্ব-১
খনখনে শুকনো দুপুর। সুর্য মাথার উপর, জনশুন্য নো ম্যান্স ল্যান্ড। তার মাঝখান দিয়ে দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে চারটি প্রানী। প্রাণীই তো, মায়ানমার এ রোহিঙ্গা দের উপর যে নির্যাতন চলছে, তা অন্য কোন পশুর উপরেও চলে না। চারজন রোহিঙ্গা প্রানী পার হচ্ছে দ্রুত, সন্তর্পণ গতিতে। যে করেই হোক পৌছতে হবে বাংলাদেশে। মা, বাবা, আর তাদের ৫ আর আড়াই বছরের ২টি ছেলে। বাবা বারবার তাগাদা দিচ্ছে, "তাড়াতাড়ি চলো, তাড়াতাড়ি চলো। জোরে হাটো"। জোর পায়ে বাংলাদেশের দিকে তারা এগিয়ে যেতে থাকে।
"Halt, থামো", গুরুগম্ভীর আওয়াজে থমকে গেল তারা। দেখল গাছপালার আড়াল থেকে বেরিয়ে এল ৪ জন বিজিবি সদস্য। বিজিবি দেখে তাদের বুক থেকে ভারী নিঃশ্বাসের বোঝাটা নেমে গেল। "তোমরা কোথায় যাচ্ছ? জানো না সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে,কোন রোহিঙ্গা আর ঢুকতে পারবে না, ফিরে যাও", রোহিঙ্গা দের লক্ষ্য করে বললেন বিজিবি সার্জেন্ট। "স্যার, প্লিজ,স্যার। আমাদের বাচান স্যার। আমাদের ঢুকতে দিন, স্যার। এই ছোট ছোট ২টা মাসুম বাচ্চা, স্যার। আমাদের ঘরবাড়ি সব পুড়িয়ে দিয়েছে,স্যার। অন্তত এই মাসুম বাচ্চা দুইটার জন্য দয়া করেন।" ধরা গলায় বলতে লাগল বাবা। নিঃশ্বাস ফেলে অন্যদের দিকে তাকালেন সার্জেন্ট। রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির ইতোমধ্যে ওভাররান হয়ে গেছে। উপর থেকে নির্দেশ, আর যেন কোন রোহিঙ্গা না ঢুকে। কিন্তু এদের অবস্থা দেখে তো মনে হয় ভয়াবহ বিপদেই আছে। ফিরিয়ে দিলে বর্ডারের ওপারে যেয়ে গুলি খেয়েই মরতে হবে। কিছুক্ষন ভাবলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত মানবতারই জয় হলো।
সার্জেন্ট সিদ্ধান্ত নিলেন তাদের যেতে দিবেন। ৪ জনে আর কিই বা আসে যায়। কিন্তু যেই মাত্র তিনি বলতে যাবেন, "আচ্ছা, যাও" ঠিক তখনই রোহিঙ্গা দের পিছন থেকে এক ঝাক গুলি এসে আছড়ে পড়ল তাদের মাঝে। আকস্মিক গুলির আঘাতে রোহিঙ্গা পরিবারটা কাটা কলাগাছের মতো পড়ে গেল। মুহুর্তে মাথা নিচু করে ফেলল বিজিবি সদস্যরা।গুলি তাদের মাথার উপর দিয়ে যেতে লাগল। সেই অবস্থায় কোনমতে তারা মাথা নিচু করে ছুটল জংলের দিকে। ছুটে এসে কাভার নিল গাছপালার আড়ালে। বার্মিজ সীমান্ত থেকে গুলিবর্ষণ এর কোন থামাথামি নাই। "অপারেটর, তাড়াতাড়ি আসো, বেস ক্যাম্পের সাথে যোগাযোগ করো। we need back up immediately "সার্জেন্ট চিৎকার করে উঠলেন।হঠাত করে বিজিবি সদস্য দের কানে কান্নার শব্দ ভেসে এলো। মাথা ঘুরিয়ে তারা দেখল, এত গোলাগুলির মাঝেওআড়াই বছরের রোহিঙ্গা শিশুটা কিভাবে যেন বেচে আছে, মৃত বাবা মা আর ভাইয়ের লাশের উপর হামাগুড়ি দিয়ে ওঠার চেস্টা করছে আর কাঁদছে।
"স্যার, বাচ্চাটা বেচে আছে, স্যার, বেচে আছে,,আমি ওকে নিয়ে আসি, স্যার", বলেই কনস্টেবল রফিক লাফ দিয়ে উঠে পরতে চাইল,কিন্তু তার আগেই সার্জেন্ট খপ করে তাকে ধরে মাটির সাথে চেপে ধরলেন। "Don't do anything stupid।
তুমি ওখানে যাবার চেস্টা করলে তোমার গায়েও গুলি লাগবে।""কিন্তু, স্যার, কিন্তু....." কনস্টেবল প্রতিবাদ করতে চাইল। "কোন কিন্তু না," বাচ্চাটার দিকে তাকিয়ে সার্জেন্ট হতাশাভরা কন্ঠে বললেন, "we have no choice। ব্যাকাপ আসা পর্যন্ত আমাদের এখানেই থাকতে হবে।""স্যার, বেস ক্যাম্পের সাথে যোগাযোগ হয়েছে, এই নিন",রিসিভার এগিয়ে দিল অপারেটর। রিসিভারটা নিয়ে কানেএ সাথে চেপে ধরলেন সার্জেন্ট,"Romeo-victor to base camp, do u copy?" কিছুক্ষন পর উত্তর ভেসে এল,"This is base camp, go ahead "। "সীমান্তে টহল দেবার সময় বার্মিজ সীমান্ত থেকে আমাদের উপর অতর্কিতে গুলি চালানো হচ্ছে। we are pinned down and immobilized। আমাদের পজিশন ৩ নং BOP থেকে 200 মিটার পশ্চিমে, we need Back up ASAP, Over"। "Roger, Back up will be there in 20 minutes. Over and out "। রিসিভারটা অপারেটরের কাছে দিয়ে এদিক তাকাতেই সার্জেন্ট দেখলো কনস্টেবল আর তার জায়গায় নেই। বরং এত গুলির মাঝেও মাথা নিচু করে বাচ্চাটার দিকে দৌড়ে যাচ্ছে। "Oh! shit" অস্ফুট স্বরে বলে উঠলেন সার্জেন্ট। সবাই দম বন্ধ করে তাকিয়ে আছে কনস্টেবলের দিকে। কনস্টেবল দৌড়ে মাথা নিচু করে যেয়ে বাচ্চাটার পাশে শুয়ে পড়লেন। তারপর বাচ্চাটাকে দুই বাহু দিয়ে জড়িয়ে উল্টোদিকে দৌড় দিলেন। উত্তেজনায় বিজিবি সদস্যরা টানটান হয়ে আছে। পারবে তো কনস্টেবল ফিরে আসতে!