A status from Pinaky Bhattachariya about west bengal election. Copy and paste, and bengali only. I found it very useful. Now users from WB can say better.
পশ্চিম বঙ্গে মমতা ব্যানার্জি আবার জিততে যাচ্ছেন এবং বিপুল ভোটে। বিজেপির ভোট কমেছে চার শতাংশ। নির্বাচনকে নিয়ে বিজেপির এবং মোদির বিপুল বিনিয়োগ, তৃণমুলের নেতাদের সমানে কিনে নেয়া কিছুই কাজে আসেনি। অনেকেই বলেছিলেন এইবারই নাকি মমতার শেষ জেতা। এরপরে বিজেপি আসবে।
আমার মত ভিন্ন। আমার মতে বিজেপির হিন্দুত্ববাদ অগ্রযাত্রার রথ বাংলায় এসে এইবার পরাজিত হয়ে থেমে গেছে। কেন? কী আছে মমতার রাজনিতীতে যে হিন্দুত্ববাদের এই বাড়বাড়ন্ত ঘৃণার রাজনিতীকে থামিয়ে দিতে পারলো? মমতা পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের মেনে নিতে বাধ্য হতে হয়েছে যে একজন মুসলমানও তার মতই সম অধিকারের নাগরিক।
মমতার রাজনিতি কী? তত্ত্ব কী? কিছুই না। তার বামেদের মতো ভারী কোন তত্ত্ব নেই, লিবারেলদের মতো আদর্শের কচকচানি নেই। মমতা মনে হয় নিজেও বলতে পারবে না যে তার রাজনীতি কী? তার রাজনীতি হচ্ছে কমনসেন্সের রাজনীতি। একজন মুসলমান সে তার মুসলমান পরিচয় নিয়েই অন্য নাগরিকের সাথে একই ও সমান নাগরিক অধিকার ভোগ করবে। এইটা সিম্পল সাম্যের রাজনিতি। কংগ্রেস আর বামেরা আমলে তাদের মুসলমান ডিলিং আমরা দেখেছি সেয়া হল, তারা মুসলমানকে তার মুসলমান পরিচয় বাদ দিয়ে স্যেকুলার জামা পরিয়ে সাম্যের প্রলোভন দেখিয়েছিলো, মমতা সেই স্যেকুলার জামা ছুড়ে ফেলে দিয়ে তার মুসলমান পরিচয় দিয়েই সাম্যের সিংহ দুয়েরে পৌছে দিয়েছেন। শুধুই সাম্য আর সম অধিকারের নাগরিক পরিচয়। আর সেই সাথে দরিদ্র পিছিয়ে পরা মানুষের সাথে জীবন্ত সংযোগ। এটাই মমতার রাজনীতি। গরিবের সুরক্ষা ভাতা দেয়ার জন্য মমতার কোন মিডিল ম্যানের দরকার নেই। তিনি নিজেই সরকারি দপ্তর থেকে একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করে দেন। বড়লোকের টাকার ট্যাক্স নিয়ে গরীবের মাঝে বিলিয়ে দেয়া আজকের রবিন হুড হচ্ছেন মমতা।
এই মমতাকে হারানোর জন্যই মুসলমান ভোটকে বিভক্ত করার জন্য পীর সাহেবকে দিয়ে স্যেকুলার ফ্রন্ট করা হয়েছিল। এটাই ছিল পীরসাহেবের শঠতা। তিনি যদি বলেন বুঝি নাই তবুওও এটা শঠতাই। ওদিকে কংগ্রেস ও বামেরা মাঠে নেমেছে যেন মমতার ভোট কাটা যায়। ভোটের ফলাফল তাই বলছে। কার্যত নিলজ্জভাবে বামেরা আর পীর সাহেবেরা বিজিপির বাক্সেই তাদের ভোট দিয়েছে। কিন্তু মমতাকে ঠেকানো যায়নি। মমতা একা হাতে তার দলের গুরুত্বপুর্ণ নেতাদের বিজেপিতে যোগ দেয়ার পরেও মমতা বিপুল ভোটে জিতে এসেছেন। কারণ ভোটারেরা ভুল করেনি। তারা জানতো নিজেকে বাচাতে হলে, কেন মমতাকেই রক্ষা করতে হবে।
এই বিজয়ের তাতপর্য সুদুরপ্রসারী। হিন্দুতেবাদের বিজয় রথ থামিয়ে দিতে পারাটা একটা ঐতিহাসিক ঘটনা। এটা যেন সেই ইতিহাসের পুনরাভিনয় যখন উত্তর ভারত থেকে আর্য আক্রমণ বাংলায় এসে প্রতিরোধের মুখে পড়েছিলো। বাংলাকে আর্যরা পরাজিত করতে পারেনি। এই অনার্য দ্রাবিড় আর তামাটে জাতির কাছে আর্যদের পরাজয় স্বীকার করে নিতে হয়েছে।
মোদির পরাজয় শুরু হলো পশ্চিমবঙ্গ থেকে। ভারতকে যে হিন্দুত্ববাদের আঠা দিয়ে জুড়তে চেয়েছিলো বিজেপি সেই তত্ত্ব পরাজিত হলো। ভারতের রাজনীতির সবচেয়ে দুর্বল অংশ হচ্ছে পুরো দেশকে জুড়তে পারে এমন কোন আঠা নাই। অখণ্ড পাকিস্তানেও ছিলোনা। ইসলামিজম আর উর্দু ভাষাকে দিয়ে এভাবেই পাকিস্তানকে জুড়তে গেছিলো তারা ফলাফল যা হয়েছে সেই একই ফলাফল অপেক্ষা করছে ভারতের জন্য হিন্দুত্ব আর হিন্দি ভাষাকে দিয়ে জাতিকে জুড়তে যাওয়ার ফলে।
ভারত রাষ্ট্রের ডিস ইন্ট্রিগ্রেশন হয়তো আমাদের জিবদ্দশায় নাও দেখতে পারি। কিন্তু ভারত রাষ্ট্রের ডিজ ইন্ট্রিগ্রেশনের দিকে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেলো। মমতার জয় কী বাংলাদেশের জন্য শুভ বার্তা দিচ্ছে? আমার মনে হয় আরো এক টার্ম মমতার ক্ষমতায় থাকার পরে যেটা সহজের মমতা থাকবেনও বাংলাদেশের সাথে পশ্চিমবঙ্গের ইতিবাচক অনেক কিছু করার রাস্তা আমরা দেখতে সক্ষম হব।বরফ গলতে শুরু করবে।
বাংলাদেশেও তত্ত্বের বদলে, চেতনার বদলে, তথাকথিত আদর্শের রাজনীতির বদলে কমনসেন্সের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হোক। জনগনের প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব করে এমন সরকার আসুক। তাহলে সব বরফই গলতে শুরু করবে। পশ্চিমবঙ্গের মুসলমান নাগরিক, বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে নির্ধারক ভুমিকা রাখবে। আর এটাই এই অঞ্চলের আগামীর রাজনীতি হয়ে উঠবে।
(Courtesy: Pinaky Bhattachariya)
Ps: I think we also should accept such politics of Mamota didi.