http://www.dailybdnews.net/?p=20915
ডেইলি বিডি নিউজঃ ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র তাণ্ডব থেকে বাঁচাতে চট্টগ্রামস্থ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বিএএফ বেস জহুরে বিরাজ করছে সর্তকবস্থা। ইতিমধ্যে বিমান ঘাঁটির বেশীরভাগ বিমানকে নিরাপদে রাখতে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বিমানবাহিনী ছাড়াও বাংলাদেশ নেভাল এভিয়েশনের বিমান ও হেলিকপ্টার সমুহও সরিয়ে নেয়া হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে। এছাড়া শাহ আমানত বিমানবন্দর ও কক্সবাজার বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ করেছে সিভিল এভিয়েশন অথরিটি। চট্টগ্রামের শাহ্ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও বরিশাল বিমানবন্দরে আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনা করে সর্তক অবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র কারণে চট্টগ্রাম নৌঘাটি থেকে ১০টি যুদ্ধজাহাজ ও চট্টগ্রাম কোস্টগার্ডের দুটি জাহাজ নিরাপদ আশ্রয়ে রাখতে মংলায় নিয়ে আসা হয়েছে।
একটি বিশ্বস্ত সুত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামস্থ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বিএএফ বেস জহুরের বেশিরভাগ বিমান ঢাকাস্থ বিএএফ বেস বঙ্গবন্ধু এবং যশোরের বিএএফ বেস মতিউর রহমানে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোরার কারণে মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চট্টগ্রামে শাহ আমানত বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠা-নামা বন্ধ থাকবে। ১০ নম্বর মহাবিপদ সঙ্কেত নিয়ে আসা ঘূর্ণিঝড়টি মঙ্গলবার সকাল নাগাদ চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানবে বলে আভাস দেওয়া হচ্ছে, তাই সতর্কতা হিসেবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপ। শাহ আমানতে সোমবার রাতে শেষ ফ্লাইটটি রাত ১১টায়, সে পর্যন্ত কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলবে বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দরটির ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার মোহাম্মদ রিয়াজুল কবির।
সোমবার রাত ১১টার পর থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত আর কোনো ফ্লাইট নেই শাহ আমানতে।
রিয়াজুল কবির ডেইলি বিডি নিউজ কে বলেন, আগামীকাল (মঙ্গলবার) সকাল পৌনে ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কোনো ফ্লাইট চলাচল করবে না। এয়ারলাইন্সগুলোকে চিঠি পাঠিয়ে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এছাড়া, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র কারণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরসমূহকে ‘সাত’ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ‘১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত’ দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া পায়রা ও মংলা বন্দরকে ‘৫’ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ‘৮’ নম্বর পুনঃ ‘৮’ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল বাংলাদেশে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় মেরি অ্যানের আঘাতে বিভিন্ন ধরণের ১৫০ জঙ্গিবিমান, প্রশিক্ষণ বিমান ও হেলিকপ্টার হারায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। এমনকি পাঁচটি এমআই-৮ হেলিকপ্টার, যেগুলো সদ্য সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আনা হয়েছিলো, এবং তখনো খণ্ড খণ্ড অবস্থায় হ্যাঙ্গারে বাক্সবন্দী ছিলো; সেগুলোও জলোচ্ছ্বাসে পুরোপুরি বিকল হয়।
এছাড়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীও প্রচণ্ড ক্ষতির সম্মুখীন হয়। বেশ কিছু ছোট রণতরী ধ্বংস হয়। ফ্রিগেট আবু বকর দড়ি ছিঁড়ে কালুরঘাট রেলসেতুর সাথে ধাক্কা লেগে এতোটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে, বছর দুয়েক আগে ডিকমিশন্ড হবার আগ পর্যন্ত এটি আর কখনো পূর্ণরূপে কর্মক্ষম ছিলো না। যুদ্ধ জাহাজ উমর ফারুক এবং ওসমান সহ প্রতিটি অক্ষত রণতরীই কোন না কোন ক্ষতির শিকার হয়।