Riyad
FULL MEMBER
- Joined
- Jul 30, 2015
- Messages
- 1,525
- Reaction score
- -5
- Country
- Location
The report says Indians along with Bangladeshis fought side by side to liberate Bangladesh from Pakistan but its already too late for Bangladesh to honor Indian martyrs. The Govt. officials say we should have honored the martyrs long ago but its good that its atleast happening even after 45 years.
Bangladesh will give monetary honor of 5 lakh rupees and special crest to each family of 1700 Indian martyrs who were killed by Pakistani force during 1971 Mukti Juddho (Liberation War). Bangladesh's high level officials will go to India to honor them.
Photo: Bangladesh's father of the nation Sheikh Mujibur Rahman taking salute from Indian army in Dhaka shortly after he returned to Bangladesh from Kolkata, India in 1972.
মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় শহীদ
৫ লাখ রুপি করে পাচ্ছে ১৭০০ পরিবার
ফখরুল ইসলাম | আপডেট: ০২:২৬, নভেম্বর ২১, ২০১৬ | প্রিন্ট সংস্করণ
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া ভারতীয় নাগরিকদের সম্মাননা জানাবে সরকার। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শহীদ পরিবারগুলোকে নগদ অর্থও দেওয়া হবে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ জন্য ১১৭ কোটি ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ চেয়ে ১৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।
অর্থসচিব মাহবুব আহমেদের কাছে পাঠানো চিঠিতে মোট বরাদ্দের জন্য যে টাকা চাওয়া হয়, তার মধ্যে নগদ সম্মাননা বাবদ বরাদ্দের অংশ ১০৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অন্য খরচের মধ্যে রয়েছে সম্মাননা ক্রেস্ট তৈরি বাবদ ৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা, সনদ তৈরি বাবদ ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, ভ্রমণ ব্যয় বাবদ ১ কোটি ২৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং আনুষঙ্গিক ব্যয় বাবদ ৫০ লাখ টাকা।
জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় নাগরিকদের রক্তদানে আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। ভারতীয় শহীদদের আমরা সম্মাননা জানাব। আমি মনে করি, আরও আগেই তা জানানো উচিত ছিল।’ ভারতীয় শহীদদের উত্তরাধিকারীদের হাতে অর্থ তুলে দেওয়ার ইচ্ছাও সরকারের আছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি শহীদ পরিবারকে পাঁচ লাখ ভারতীয় রুপি (বর্তমান দরে ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা) অর্থ-সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে দুই লাখ টাকা মূল্যের সোনা-রুপার তৈরি ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়েছিল, জালিয়াতির কারণে প্রক্রিয়াটি মাঝখানে বন্ধ রাখা হয়। এ যেন চোরের ওপর রাগ করে মাটিতে ভাত খাওয়ার মতো। আমি মনে করি, মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় শহীদদের পাঁচ লাখ রুপি করে দেওয়া হলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।’
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এ হান্নানও বলেন, ভারতীয় শহীদদের সম্মাননা জানানোর কাজটি আরও আগেই করা দরকার ছিল। তারপরও বিশ্ব ইতিহাসে এটা একটা বিরল ঘটনা হবে।
জানা গেছে, ভারতীয় শহীদদের সম্মাননা জানানোর প্রথম প্রস্তাবে নগদ অর্থ দেওয়ার বিষয়টি ছিল না। চলতি অর্থবছরের (২০১৬-১৭) বাজেটে অবশ্য এ বিষয়ে কোনো অর্থ বরাদ্দও নেই। তবে সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বাজেটের থোক বরাদ্দ থেকে এ অর্থ খরচ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। খরচের অনুমোদন চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।
তবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেড় বছর আগে থেকেই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে বলে জানা গেছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে ২০১৫ সালের ১৭ আগস্ট অনুষ্ঠিত বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ১ হাজার ৯৮৪ জন ভারতীয় শহীদ হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর ১ হাজার ৭৬৯ জন, নৌবাহিনীর ২০৪ জন এবং বিমানবাহিনীর ১১ জন শহীদ।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভারত সরকারের পাঠানো নামের তালিকা অনুযায়ী সম্মাননা ও অর্থ-সহায়তা পাবে ১ হাজার ৭০০ শহীদের পরিবার। বাকি ২৮৪ জনের কোনো তথ্য দিতে পারেনি ভারত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০১৫ সালের ১০ মে ভারতীয় শহীদদের সম্মাননা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি সার-সংক্ষেপ উপস্থাপন করে। এক সপ্তাহ পরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি অনুমোদন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক পরের মাস, অর্থাৎ একই বছরের ২৩ জুন চিঠি দেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদকে। এতে বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় (৬ থেকে ৭ জুন) রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ভারতীয়দের সম্মাননা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এক মাস পর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং বৈঠকে বিষয়টি বাস্তবায়নে কাজী সাজ্জাদ আলী জহিরকে (বীর প্রতীক) সমন্বয়ক করে চার সদস্যের একটি কমিটি করা হয়।
যোগাযোগ করা হলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত কাজী সাজ্জাদ আলী জহির গতকাল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিনিই প্রথম ভারতীয় শহীদদের সম্মাননা জানানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এনেছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় শহীদদের আত্মত্যাগ ও পরিবারের সদস্যদের বর্তমান অবস্থাও তিনিই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ গত রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সম্মাননা জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। কাজ চলছে। এখন বাস্তবায়নের অপেক্ষা।
এদিকে গত ২১ আগস্ট অনুষ্ঠিত বৈঠকে শিল্পী হাশেম খানের মাধ্যমে ক্রেস্টের নমুনা তৈরি এবং এতে জাতির পিতার প্রতিকৃতি সংযুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বলা হয়, সনদ দেওয়া হবে একটি ভাষায়। আর কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য তিনটি ভাষা ব্যবহার করা হবে।
সূত্র জানায়, ভারতীয় শহীদ পরিবারের উত্তরাধিকারীদের বাংলাদেশে এনে সম্মাননা দেওয়া হবে না। বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি দল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরাসহ সাতটি জায়গায় গিয়ে সম্মাননা জানিয়ে আসবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী মাসে ভারত সফরে যাবেন। এই সফরের সময়ই প্রথম দফায় ভারতীয় শহীদদের সম্মাননা জানানোর কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন তিনি। এ দফার কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পরের কাজগুলো হবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে।
যোগাযোগ করা হলে মেজর জেনারেল (অব.) আজিজুর রহমান (বীর উত্তম) প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিদ্ধান্ত যেহেতু হয়ে গেছে, এটিকে নেতিবাচকভাবে দেখার কোনো অবকাশ নেই। আর এটা তো ঠিক, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন ভারতীয়রা। সেই শহীদদের সম্মান জানানো ও তাঁদের পরিবারকে সহযোগিতা করা আমাদের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।’
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ঐতিহাসিক অবদান রাখার জন্য এর আগে বিশ্বের ২১টি দেশের ৩২৯ ব্যক্তি ও ৯টি প্রতিষ্ঠানকে ‘বাংলাদেশ স্বাধীনতা সম্মাননা’, ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ এবং ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’ দেওয়া হয়। ২০১০ সালের ১০ মার্চ অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিন বছরের (২০১১-২০১৩) বিভিন্ন সময়ে এ সম্মাননাগুলো দেওয়া হয়।
এর মধ্যে বাংলাদেশ স্বাধীনতা সম্মাননা দেওয়া হয় শুধু ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা দেওয়া হয় ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিসহ ১৫ জনকে। বাকিগুলো হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা। সবচেয়ে বেশি মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা পেয়েছে ভারত। এর মধ্যে রয়েছেন ভারতের ২১৬ ব্যক্তি ও ৯টি প্রতিষ্ঠান। সম্মাননাপ্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল প্রয়াত জে এফ আর জ্যাকব, ভারতীয় ও বাংলাদেশি যৌথ বাহিনীর জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ইন চিফ জগজিৎ সিং অরোরা এবং ফিল্ড মার্শাল মানেকশ।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ২৯, পাকিস্তানের ১৭, যুক্তরাজ্যের ১৩ ও নেপালের ৯ জনকে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা দেওয়া হয়।
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/1025143/৫-লাখ রুপি-করে-পাচ্ছে-১৭০০-পরিবার
Bangladesh will give monetary honor of 5 lakh rupees and special crest to each family of 1700 Indian martyrs who were killed by Pakistani force during 1971 Mukti Juddho (Liberation War). Bangladesh's high level officials will go to India to honor them.
Photo: Bangladesh's father of the nation Sheikh Mujibur Rahman taking salute from Indian army in Dhaka shortly after he returned to Bangladesh from Kolkata, India in 1972.
মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় শহীদ
৫ লাখ রুপি করে পাচ্ছে ১৭০০ পরিবার
ফখরুল ইসলাম | আপডেট: ০২:২৬, নভেম্বর ২১, ২০১৬ | প্রিন্ট সংস্করণ
অর্থসচিব মাহবুব আহমেদের কাছে পাঠানো চিঠিতে মোট বরাদ্দের জন্য যে টাকা চাওয়া হয়, তার মধ্যে নগদ সম্মাননা বাবদ বরাদ্দের অংশ ১০৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অন্য খরচের মধ্যে রয়েছে সম্মাননা ক্রেস্ট তৈরি বাবদ ৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা, সনদ তৈরি বাবদ ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, ভ্রমণ ব্যয় বাবদ ১ কোটি ২৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং আনুষঙ্গিক ব্যয় বাবদ ৫০ লাখ টাকা।
জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় নাগরিকদের রক্তদানে আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। ভারতীয় শহীদদের আমরা সম্মাননা জানাব। আমি মনে করি, আরও আগেই তা জানানো উচিত ছিল।’ ভারতীয় শহীদদের উত্তরাধিকারীদের হাতে অর্থ তুলে দেওয়ার ইচ্ছাও সরকারের আছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি শহীদ পরিবারকে পাঁচ লাখ ভারতীয় রুপি (বর্তমান দরে ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা) অর্থ-সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে দুই লাখ টাকা মূল্যের সোনা-রুপার তৈরি ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়েছিল, জালিয়াতির কারণে প্রক্রিয়াটি মাঝখানে বন্ধ রাখা হয়। এ যেন চোরের ওপর রাগ করে মাটিতে ভাত খাওয়ার মতো। আমি মনে করি, মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় শহীদদের পাঁচ লাখ রুপি করে দেওয়া হলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।’
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এ হান্নানও বলেন, ভারতীয় শহীদদের সম্মাননা জানানোর কাজটি আরও আগেই করা দরকার ছিল। তারপরও বিশ্ব ইতিহাসে এটা একটা বিরল ঘটনা হবে।
জানা গেছে, ভারতীয় শহীদদের সম্মাননা জানানোর প্রথম প্রস্তাবে নগদ অর্থ দেওয়ার বিষয়টি ছিল না। চলতি অর্থবছরের (২০১৬-১৭) বাজেটে অবশ্য এ বিষয়ে কোনো অর্থ বরাদ্দও নেই। তবে সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে বাজেটের থোক বরাদ্দ থেকে এ অর্থ খরচ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। খরচের অনুমোদন চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।
তবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেড় বছর আগে থেকেই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে বলে জানা গেছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে ২০১৫ সালের ১৭ আগস্ট অনুষ্ঠিত বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ১ হাজার ৯৮৪ জন ভারতীয় শহীদ হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর ১ হাজার ৭৬৯ জন, নৌবাহিনীর ২০৪ জন এবং বিমানবাহিনীর ১১ জন শহীদ।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভারত সরকারের পাঠানো নামের তালিকা অনুযায়ী সম্মাননা ও অর্থ-সহায়তা পাবে ১ হাজার ৭০০ শহীদের পরিবার। বাকি ২৮৪ জনের কোনো তথ্য দিতে পারেনি ভারত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০১৫ সালের ১০ মে ভারতীয় শহীদদের সম্মাননা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি সার-সংক্ষেপ উপস্থাপন করে। এক সপ্তাহ পরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি অনুমোদন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক পরের মাস, অর্থাৎ একই বছরের ২৩ জুন চিঠি দেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদকে। এতে বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় (৬ থেকে ৭ জুন) রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ভারতীয়দের সম্মাননা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এক মাস পর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং বৈঠকে বিষয়টি বাস্তবায়নে কাজী সাজ্জাদ আলী জহিরকে (বীর প্রতীক) সমন্বয়ক করে চার সদস্যের একটি কমিটি করা হয়।
যোগাযোগ করা হলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত কাজী সাজ্জাদ আলী জহির গতকাল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিনিই প্রথম ভারতীয় শহীদদের সম্মাননা জানানোর বিষয়টি সরকারের নজরে এনেছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় শহীদদের আত্মত্যাগ ও পরিবারের সদস্যদের বর্তমান অবস্থাও তিনিই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ গত রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সম্মাননা জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। কাজ চলছে। এখন বাস্তবায়নের অপেক্ষা।
এদিকে গত ২১ আগস্ট অনুষ্ঠিত বৈঠকে শিল্পী হাশেম খানের মাধ্যমে ক্রেস্টের নমুনা তৈরি এবং এতে জাতির পিতার প্রতিকৃতি সংযুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বলা হয়, সনদ দেওয়া হবে একটি ভাষায়। আর কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য তিনটি ভাষা ব্যবহার করা হবে।
সূত্র জানায়, ভারতীয় শহীদ পরিবারের উত্তরাধিকারীদের বাংলাদেশে এনে সম্মাননা দেওয়া হবে না। বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি দল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরাসহ সাতটি জায়গায় গিয়ে সম্মাননা জানিয়ে আসবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী মাসে ভারত সফরে যাবেন। এই সফরের সময়ই প্রথম দফায় ভারতীয় শহীদদের সম্মাননা জানানোর কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন তিনি। এ দফার কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পরের কাজগুলো হবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে।
যোগাযোগ করা হলে মেজর জেনারেল (অব.) আজিজুর রহমান (বীর উত্তম) প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিদ্ধান্ত যেহেতু হয়ে গেছে, এটিকে নেতিবাচকভাবে দেখার কোনো অবকাশ নেই। আর এটা তো ঠিক, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন ভারতীয়রা। সেই শহীদদের সম্মান জানানো ও তাঁদের পরিবারকে সহযোগিতা করা আমাদের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে।’
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ঐতিহাসিক অবদান রাখার জন্য এর আগে বিশ্বের ২১টি দেশের ৩২৯ ব্যক্তি ও ৯টি প্রতিষ্ঠানকে ‘বাংলাদেশ স্বাধীনতা সম্মাননা’, ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ এবং ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’ দেওয়া হয়। ২০১০ সালের ১০ মার্চ অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিন বছরের (২০১১-২০১৩) বিভিন্ন সময়ে এ সম্মাননাগুলো দেওয়া হয়।
এর মধ্যে বাংলাদেশ স্বাধীনতা সম্মাননা দেওয়া হয় শুধু ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা দেওয়া হয় ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিসহ ১৫ জনকে। বাকিগুলো হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা। সবচেয়ে বেশি মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা পেয়েছে ভারত। এর মধ্যে রয়েছেন ভারতের ২১৬ ব্যক্তি ও ৯টি প্রতিষ্ঠান। সম্মাননাপ্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল প্রয়াত জে এফ আর জ্যাকব, ভারতীয় ও বাংলাদেশি যৌথ বাহিনীর জেনারেল অফিসার কমান্ডিং ইন চিফ জগজিৎ সিং অরোরা এবং ফিল্ড মার্শাল মানেকশ।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ২৯, পাকিস্তানের ১৭, যুক্তরাজ্যের ১৩ ও নেপালের ৯ জনকে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা দেওয়া হয়।
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/1025143/৫-লাখ রুপি-করে-পাচ্ছে-১৭০০-পরিবার
Last edited: