What's new

COMPARING THE ELECTORAL PROCEDURE IN SOUTH ASIA COUNTRIES

Banglar Bir

SENIOR MEMBER
Joined
Mar 19, 2006
Messages
7,805
Reaction score
-3
Country
United States
Location
United States
এম সাখাওয়াত হোসেন
hhintlbd@yahoo.com

ভারতীয় গণতন্ত্র ও নির্বাচনী ব্যবস্থা

DEMORACY IN INDIA AND ELECTION COMMISSION.

02 November 2016, Wednesday

নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও নির্বাচন প্রশাসন নিয়ে গবেষণার জন্য উপমহাদেশের আর তিনটি দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা ও পক্ষান্তরে নির্বাচনী প্রশাসন সম্পর্কে জানার জন্য মাত্র কয়েক দিন আগে দিল্লি সফর করে ফিরলাম। দিল্লি যাওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ভারতের নির্বাচন কমিশনের ওপর দেশটির নাগরিক সমাজ এবং বিজ্ঞজনের মতামত নেওয়া। ভারতীয় নির্বাচন কমিশন এখন যে অবস্থায় রয়েছে, তার পেছনের শক্তিগুলোর ভেতরে নাগরিক সমাজ এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা যথেষ্ট সহযোগী ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ভারতের রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিবিদেরা। গবেষণার কাজে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক সময় কাটাতে হয়েছিল। দিল্লিতে আমাদের সাবেক রাষ্ট্রদূত তারেক করিমের উদ্যোগে স্বামী বিবেকানন্দ ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনে একটি সেমিনার ছিল এবং সেখানে আমিই ছিলাম প্রধান বক্তা। সেমিনারের বিষয় ছিল বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা। ওই আলোচনায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থার সাবেক প্রধানেরা ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় ভারতীয় মিশনের কয়েকজন সাবেক কর্মকর্তা এবং হাইকমিশনার পিনাক চক্রবর্তী। অনেক প্রশ্নের মধ্যে একটি প্রশ্ন ছিল বর্তমানের নির্বাচন কমিশন নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক।
তবে শুধু গবেষণার কাজে অনেকের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্যই নয়, এবারের দিল্লি সফর আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল আরেকটি বিশেষ কারণে। সেটা হলো ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে একান্তে সাক্ষাৎ। ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মতো সময়ে রাষ্ট্রপতি ভবনে তাঁর দপ্তরে সৌজন্য কথোপকথনের সুযোগ পাওয়া যায়। কোনো দিন কল্পনাও করিনি ভারতের মতো বিশাল দেশের প্রথম একজন খাঁটি বাঙালি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বাংলায় কথোপকথনের সুযোগ হবে। আমার মতো অতি সাধারণ মানুষের সুযোগ হওয়ার কথা নয়। তবে অনেক কিছুই অভিনব ঘটার পেছনে প্রায় সময়ই কোনো না কোনো শুভানুধ্যায়ীর সহযোগিতা থাকে। আমার ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অবশ্য সেই শুভানুধ্যায়ীর কথায় পরে আসছি।
ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে আমার কোনো পূর্বপরিচয় ছিল না বা আগে কখনো সাক্ষাৎ হয়নি। হওয়ার কথাও নয়। তবে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের চড়াই-উতরাই মোটামুটিভাবে যাঁরা উপমহাদেশের রাজনীতির খোঁজখবর রাখেন তাঁদের জানা রয়েছে। তাঁর আত্মজীবনীর একখণ্ড, দ্য ড্রামাটিক ডিকেড: দ্য ইন্দিরা গান্ধী ইয়ারস বইয়ের কিছু অংশ পড়ে অভিভূত হয়েছিলাম। বইটিতে তৎকালীন পাকিস্তানের কৃষ্টি থেকে শুরু করে বাংলাদেশের জন্ম সবই রয়েছে। তিনি তাঁর বই লেখা সম্বন্ধে বললেন, রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হলে এ অভিজ্ঞতার কথাও লিখবেন। ভারতের ব্যস্ততম রাষ্ট্রপতি হওয়া সত্ত্বেও প্রচুর পড়াশোনা করেন। রাষ্ট্রপতির জন্য রয়েছে বিশাল
লাইব্রেরি। তারপরও বিভিন্নজনের দেওয়া বইও তিনি পড়েন। আমি তিনটি বই নিয়ে গিয়েছিলাম। তিনি তা গ্রহণ করে বললেন যে বইগুলো তিনি অবশ্যই পড়বেন।
প্রণব মুখার্জি বাংলাদেশ নিয়ে বেশ আবেগপ্রবণ। এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। শুধু মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর অবদানের জন্যই নয় বা তাঁর শ্বশুরালয় নড়াইলে হওয়ার জন্যও নয়। বাঙালিদের একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনে তাঁর অবদানের জন্যই তিনি আবেগপ্রবণ, তা নিশ্চিত হলাম। যাহোক, অনেক কথার মাঝে তিনি আমার গবেষণার বিষয় ভারতের নির্বাচন কমিশনের ওপর যা বলেছেন তাতেই প্রতীয়মান হয় যে ওই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে প্রত্যেক রাজনীতিবিদ ও সরকার নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালীভাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন। ভারতীয় নির্বাচন কমিশন এতটাই শক্তিশালী যে নির্বাচনকালীন তা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমিকা পালন করে। প্রণব মুখার্জি বলেন যে ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে উত্তরোত্তর শক্তিশালী করা হয়েছে এবং সব সরকারই এসব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে সমীহ করেছে বলেই আজ বিশ্বে ভারতের গণতন্ত্র একটি উদাহরণ।
তিনি অবশ্য ভারতের নির্বাচন কমিশনকে এ পর্যায়ে নিয়ে আসার পেছনে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার টি এন সেশনের অনবদ্য ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন।
প্রণব মুখার্জির সঙ্গে এই সৌজন্য সাক্ষাৎকারটি ছিল আমার কাছে অসাধারণ। উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এই অতি অমায়িক মানুষটি কথাবার্তায়, চলনে-বলনে একজন খাঁটি বাঙালি। আমার মতো অপরিচিত মানুষের সঙ্গে যে রকম আন্তরিকভাবে কথা বললেন, তা সত্যিই মনে রাখার মতো। তিনি, বিশেষ করে, ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস, একই সঙ্গে ভারতের গণতান্ত্রিক ভিত শক্ত করতে রাজনৈতিক সংগ্রাম আর রাজনৈতিক নেতাদের দূরদর্শিতার ইতিহাস নিয়ে কথা বলেন। নির্ধারিত সময়ের অনেক বেশি সময় ধরে আমি তাঁর বক্তব্য গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনছিলাম। হয়তো আমার জীবদ্দশায় আর কোনো বাঙালিকে একদা ব্রিটিশ রাজের ভাইসরয় প্রাসাদ বর্তমানে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে অধিষ্ঠিত হতে দেখব না। ভারতের ইতিহাসে এর আগে দিল্লিতে কোনো বাঙালি এত উঁচু আসনে উপনীত হননি। প্রণব মুখার্জি এমন একজন অমায়িক মানুষ, যাঁকে শ্রদ্ধা না করে পারা যায় না। অনেক কম মানুষই এত উঁচু আসনে বসে আমার মতো সাধারণ মানুষকে যেভাবে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন, তা ভুলবার মতো নয়। আমাকে তাঁর মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রণব মুখার্জির কাছ থেকে বিদায় নিয়েছিলাম।
পরদিন সকালে সৌভাগ্য হয়েছিল এই ৩৪০ রুমের বিশাল ভবনটির প্রধান অংশ দেখার এবং এর জন্য ধন্যবাদ জানাই রাষ্ট্রপতির অন্যতম সহচর বর্তমানে অতিরিক্ত ব্যক্তিগত সচিব ও কংগ্রেস নেতা প্রদ্যোত গুহকে। রাষ্ট্রপতি ভবন আগে পরিচিত ছিল ভাইসরয় হাউস হিসেবে। ১৯১১ সালে ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত করা হয়। ব্রিটিশ স্থপতি এডউইন ল্যান্ডসার লুটিয়েনসের করা নকশা অনুযায়ী ভাইসরয় হাউসের নির্মাণ শুরু হয় ১৯১২ সালে। শেষ হয় ১৯২৯ সালে এবং ভাইসরয় লর্ড আরউইন প্রথম এই প্রাসাদের বাসিন্দা হন। এরপর ভারতবর্ষে বেশি দিন ব্রিটিশ সাম্রাজ্য টেকেনি।
যাহোক, আমার গবেষণার একটি উপাদান হলো নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা। নির্বাচন কমিশনের ওপর রাজনৈতিক দল ও সাধারণ ভোটারদের আস্থার সংকট হলে নির্বাচনের ফলাফল জনসাধারণ মেনে নেয় না আর তখনই গণতন্ত্রের ভিত দুর্বল হয়ে পড়ে। নির্বাচন কমিশনের আস্থার সংকট শুরু হয়, বিশেষ করে, আমাদের দেশে নিয়োগের পর থেকেই। এ পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া অন্য সময়ের নিয়োগ নিয়ে বিতর্কের কারণে কমিশন প্রথম থেকে আস্থার সংকটে পড়ে। তাই নিয়োগপদ্ধতি অত্যন্ত জরুরি বিষয়। আমাদের দেশের বর্তমান এই নিয়োগপদ্ধতি নিয়ে দেশে-বিদেশেও আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে।
লক্ষণীয় বিষয় হলো যে আমাদের সংবিধানের ১১৮ ধারায় আইন প্রণয়নের কথা থাকলেও আজও সংবিধান মোতাবেক কোনো আইন তৈরি হয়নি। অনুরূপভাবে ভারতেও একই পদ্ধতিতে আইন প্রণয়নের কথা থাকলেও সেখানেও আইন তৈরি হয়নি এবং ক্ষমতাসীন সরকারের সুপারিশেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিয়ে থাকেন। তবে ওই দেশের রাজনৈতিক নেতাদের প্রজ্ঞা এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভিত শক্ত থাকার কারণে নির্বাচন কমিশন আস্থার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তেমনটা আমাদের দেশে নয়।
ভারতের রাষ্ট্রপতির একটি উক্তিই ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের ওপর ভারতীয়দের আস্থার প্রকাশ পায়। তিনি বলেছেন, নির্বাচন কমিশনারের বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণেই ভারতের গণতন্ত্রের ভিত রচিত হয়েছে এবং প্রতিবারই তেমনটি হয়।
আমাদের দেশে দলীয় সরকারের অধীনে নিয়োজিত নির্বাচন কমিশন কেন আস্থার সংকটে পড়ে, এ প্রশ্নের সমাধান হওয়া বাঞ্ছনীয়। একটি আইন প্রণয়নের মাধ্যমে যে বাছাই কমিটি তৈরি হবে, তাতে নির্বাচনের শরিক বলে আখ্যায়িত রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্তি থাকলে হয়তো এই আস্থার সংকটের অবসান হবে। বর্তমানে বাছাই কমিটির গঠন নিয়ে যে বিতর্কের অবতারণা হয়েছে, তা নিরসন করার দায়িত্বও সরকারের। সে ক্ষেত্রে আইন প্রণয়নের বিকল্প হিসেবে সর্বসম্মতিক্রমে একটি বাছাই কমিটি গঠন করতে হবে। তাতে হয়তো বিতর্কের অবসান যেমন হবে, তেমনি নির্বাচন কমিশনের ওপর সবার আস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বিতর্ক কখনোই কাম্য নয়।
হয়তো আমাদের গণতন্ত্রের ভিত ভারতীয় গণতন্ত্রের মতো শক্ত অবস্থানে দাঁড়াতে পারেনি। তবে সবটাই নির্ভর করে রাজনৈতিক দল এবং তাদের গণতান্ত্রিক মানসিকতার ওপর। এমনটাই ভারতের রাষ্ট্রপতি তাঁর দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে গর্বের সঙ্গে বলেছেন।
পরিশেষে আমার গবেষণা এবং দিল্লিতে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য যে ব্যক্তির কাছে আমি কৃতজ্ঞ, তিনি হলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম নায়ক বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম। তাঁর সঙ্গে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির বহুদিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণেই আমার মতো অত্যন্ত সাধারণ মানুষের পক্ষে এ সাক্ষাৎ সম্ভব হয়েছে। এই সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে আমার গবেষণাপত্রে ভারতের অধ্যায় পরিপূর্ণতা লাভ করবে বলে আশা রাখি। আরও আশা রাখি যে আমাদের নির্বাচন কমিশনকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রেখে শক্তিশালী অবস্থানে দাঁড় করাতে সব মত ও দলের অকুণ্ঠ সহযোগিতা থাকবে। এ ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের দায়িত্ব সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরাও আমাদের গণতান্ত্রিক নির্বাচন ব্যবস্থাপনা নিয়ে গর্ববোধ করতে চাই।
এম সাখাওয়াত হোসেন: অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও কলাম লেখক৷

উৎসঃ প্রথমআলো
এম সাখাওয়াত হোসেন
hhintlbd@yahoo.com
http://www.facebd.net/columndetail/detail/67/6008

উপমহাদেশের বাস্তবতা, নেপাল ও আমরা

REALITY OF SOUTH ASIAN – NEPAL- BANGLADESH
24 November 2016, Thursday

আমি বর্তমানে একটি গবেষণার কাজ করছি। বিষয়, নির্বাচনী প্রশাসন: নির্বাচন কমিশন এবং সহযোগীদের ভূমিকা। এ নিয়ে যথেষ্ট পড়াশোনা করতে হচ্ছে। এ গবেষণায় প্রাসঙ্গিকভাবে এই উপমহাদেশের কয়েকটি দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর আলোকপাত করতে হচ্ছে। বিশেষ করে ভারত, পাকিস্তান ও নেপাল। এ তিনটি দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা প্রায় কাছাকাছি। শুধু একটু ব্যতিক্রম নেপালের ব্যবস্থাপনায়, যেখানে প্রকৃতপক্ষে সংসদীয় গণতন্ত্রের যাত্রা মাত্র এক দশকেরও কম সময়ের; তারপরও ইতিমধ্যেই নেপালের গণতন্ত্রে বহু মত ও বহু পথের সমাবেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বড় দলগুলোর পাশাপাশি ছোট ছোট দলের প্রতিনিধিত্ব বর্তমান সংসদে রয়েছে। সংসদের মেয়াদ শেষে নতুন নির্বাচন হওয়ার কথা ২০১৮ সালে। ২০১৩ সালের নির্বাচনে প্রধান তিনটি দল ছাড়াও ১২২টিদল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে ২৯টি দলের সংসদে প্রতিনিধিত্ব রয়েছে এবং এমনটা সম্ভব হয়েছে ভোটের মিশ্র প্রক্রিয়ার সংখ্যাগরিষ্ঠ (এফপিটিপি) এবং আনুপাতিক হারে (পিআর) ব্যবস্থাপনার কারণে।
নেপালের প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচন হিসেবে বিবেচিত ২০০৮ সালের এবং হালের ২০১৩ সালের নির্বাচনের ফলাফল ও ব্যবস্থাপনার ওপর জনগণের অগাধ বিশ্বাস পরিলক্ষিত হয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচন প্রত্যক্ষ করা এবং নেপালের নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থাপনা সম্বন্ধে জানার সুযোগ হয়েছিল। ওই সময়েও গৃহযুদ্ধ-উত্তর নেপালের নবগঠিত এবং পুরোনো পার্টি মিলে ১২০টির ওপরে ছোট-বড় দল অংশগ্রহণ করেছিল এবং নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কোনো ধরনের নেতিবাচক ধারণাও কোনো দল বা গোষ্ঠী পোষণ করেনি।

ওই নির্বাচনে প্রায় ১০ বছর যুদ্ধরত গেরিলা সংগঠন মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টির জয় হয়েছিল এবং প্রথম গণপরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে
ওই দলের এককালের গেরিলা নেতা পুষ্প কমল দহল ওরফে প্রচন্ড প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হয়েছিলেন। ২০১৩ সালে ওই একই দল তৃতীয় বৃহত্তম দলে নেমে আসে। তবে রাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যেও পুষ্প কমল দহল প্রধানমন্ত্রী পদে রয়েছেন।

সম্প্রতি আমার গবেষণার বিষয়টি নিয়ে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে নেপালের প্রধানমন্ত্রীসহ আরও দুটি দলের প্রধান, যাঁরা পর্যায়ক্রমে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, এবং সদ্য সাবেক ও বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে মতবিনিময় হয়েছে। নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল, কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপালের (ইউএমএল) কেপি শর্মা ওলি এবং একসময়ের মাওবাদী নেতা বর্তমানে নয়াশক্তি পার্টির কনভেনর বাবুরাম ভট্টরাইয়ের সঙ্গে আলাপচারিতায় যে বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে, তা হলো নেপালের গণতন্ত্রকে সুসংহত করা এবং তার জন্য অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। যদিও সবাই একমত যে নেপালের নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা ভোটের মিশ্র পদ্ধতির কারণে কিছুটা জটিল। তবে যেহেতু নেপালে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন রয়েছে এবং প্রথম থেকেই একটি প্রতিষ্ঠিত আইনি ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে তা গঠিত হয়, তাই কমিশনের প্রতি সব কটি দল ও সাধারণ মানুষের আস্থার অভাব নেই। সর্বসম্মতিতে প্রণীত আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠিত হওয়ার কারণে তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে কোনো প্রশ্ন এ পর্যন্ত ওঠেনি।

নেপালের নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থাপনা ও কার্যপদ্ধতি নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়েছে। আমার গবেষণার বিষয়বস্তু বিবেচনায় নিয়েই নেপালের সদ্য অবসরে যাওয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার নীলকান্ত উপ্রিতি ও বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনারের আয়োধি প্রাসাদ ইয়াদবের সঙ্গে কথা বলেছি। আমার কয়েকটি পরিবর্তনীয় (variabls) উপাদান নিয়ে আলোচনাকালে প্রথমেই আলোচিত হয় নির্বাচন কমিশনের কার্যক্ষমতা ও বিশ্বাসযোগ্যতার উপাদান নিয়োগপদ্ধতি এবং সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নিয়ে। আমার একটি পরিবর্তনীয় উপাদান নির্বাচন কমিশনের ওপরে আস্থার সংকটের অন্যতম কারণ নিয়োগপদ্ধতির কোনো প্রচলিত আইন না থাকা, যা আমাদের সংবিধানে সন্নিবেশিত রয়েছে। এই উপমহাদেশের যে কয়েকটি দেশের নির্বাচনী শাসনব্যবস্থা নিয়ে আমার গবেষণা, তার মধ্যে নেপাল ও পাকিস্তানে সংবিধানে সন্নিবেশিত অথবা আলাদা আইনের মাধ্যমে বর্ণিত নিয়োগপদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। ভারত ও বাংলাদেশের সংবিধানে আইন প্রণয়নের বিষয় উল্লেখ থাকলেও তা করা হয়নি।

তবে বাংলাদেশের বর্তমান নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের আগে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান একটি বাছাই কমিটি গঠন করে নিবন্ধিত সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে নিয়োগ দিয়েছিলেন। তবে ওই নিয়োগের এবং বাছাই কমিটি কর্তৃক নির্বাচিত ব্যক্তিদের তালিকা রাষ্ট্রপতিকে দেওয়ার পর রাষ্ট্রপতি তা থেকেই নিয়োগ দিয়েছিলেন। তবে পরবর্তী সময়ে এ নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা নিয়ে নানা মহলে আলোচিত-সমালোচিত হন।

যা-ই হোক, নেপালের নিয়োগপদ্ধতি সংবিধান মোতাবেক একটি কনস্টিটিউশনাল কাউন্সিলের মাধ্যমে হয়ে থাকে। ওই কাউন্সিল শুধু নির্বাচন কমিশনই নয়, অন্যান্য সাংবিধানিক পদেও নিয়োগের জন্য বাছাই করে থাকে। নেপালের কনস্টিটিউশন কাউন্সিলের প্রধান থাকেন প্রধানমন্ত্রী। অন্য সদস্যরা হলেন প্রধান বিচারপতি, সংসদের নিম্নকক্ষের স্পিকার, উচ্চকক্ষের চেয়ারপারসন, কয়েকজন মন্ত্রী এবং বিরোধী দলের নেতা। এই কাউন্সিলের সুপারিশকৃত নামের মধ্য থেকে রাষ্ট্রপতি প্রধান ও অন্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। নেপালের সংবিধান মোতাবেক প্রধান ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার ৬ বছর মেয়াদ অথবা ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকতে পারেন, তবে পরবর্তী সময়ে বয়সের সময়সীমা সাপেক্ষে জ্যেষ্ঠ কমিশনার প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগপ্রাপ্ত হলে তাঁর মেয়াদ বৃদ্ধি হলেও বয়সসীমায় অবসর গ্রহণ করবেন। ভারতের মতো নেপালকেও সাধারণত জ্যেষ্ঠ কমিশনার হতেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগপ্রাপ্ত হন। বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার ২০০৭ সালে কমিশনার পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছিলেন।

পাকিস্তানে নির্বাচন কমিশনে ১৯৭৩ সালের সংবিধানের সংশোধনী মোতাবেক সম্পূর্ণ কমিশন বিচার বিভাগের সাবেক ও কর্মরত বিচারকদের সমন্বয়ে গঠিত। তিন বছর মেয়াদে একজন সাবেক আপিল বিভাগের বিচারপতিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং বাকি চার সদস্য পাকিস্তানের চারটি প্রদেশের উচ্চ আদালতের বিচারকদের মধ্য থেকে নিয়োজিত হন। এ পদ্ধতিতে প্রতিটি প্রদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন উচ্চ আদালতের বিচারপতিরা।

পাকিস্তানের নিয়োগপদ্ধতি যেভাবে বিন্যাসিত, তাতে প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলের প্রধান ১২ সদস্যবিশিষ্ট সংসদীয় কমিটির কাছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম প্রেরণ করেন। পরবর্তী সময়ে সংসদীয় কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে চূড়ান্ত নিয়োগের জন্য নাম পাঠিয়ে দেয়। সংসদীয় কমিটি সমানুপাতে সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্য দ্বারা গঠিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ সিনেটের সদস্য থাকেন। কমিটি গঠিত হয় স্পিকারের মাধ্যমে।

ভারতের সংবিধানের ৩২৪ ধারায় সংসদ দ্বারা একটি আলাদা আইন প্রণয়নের কথা থাকলেও কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়ার পরও আইন প্রণয়ন করা হয়নি। ভারতে প্রথম থেকেই রাষ্ট্রপতি দ্বারা কমিশন গঠিত হয়, তবে ৬৫ বছর বয়স এবং ৬ বছরের মাথায় একজন সদস্যকে অবসরে যেতে হয়। সে ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠ কমিশনার বয়স ও মেয়াদ থাকা সাপেক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োজিত হয়ে থাকেন। এ কারণেই ভারতে ও নেপালে নির্বাচন কমিশনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকে। তবে ভারতের নির্বাচনপদ্ধতি কোনো চ্যালেঞ্জের মুখে না পড়লেও খোদ নির্বাচন কমিশনাররা মনে করেন, সংবিধান মোতাবেক আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নিয়োগই সর্বোত্তম। বিষয়টি সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কোরেশি তাঁর রচিত পুস্তক আনডকুমেন্টেড ওয়ান্ডার-এ (পাতা ৪০) উল্লেখ করেছেন। তিনি বহুবিধ কারণে ভারতের নির্বাচন কমিশন গঠনপ্রক্রিয়া কোনো চ্যালেঞ্জ না হওয়াকে ‘অলৌকিক ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেছেন।

যা-ই হোক, নির্বাচন কমিশন অতিগুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। যার কারণে সংবিধানে নির্বাচন কমিশনকে বিশেষভাবে ক্ষমতায়ন করা হয়েছে। এবং এ কারণেই নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিশেষ করে, যেসব গণতান্ত্রিক দেশে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করার বিষয়টি সংবিধানবিধৌত। আমাদের মতো দেশে যেখানে গণতান্ত্রিক ভিত দুর্বল, গণতন্ত্রের সহায়ক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী নয়, সেখানে সব প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করার উদ্যোগও সরকার এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে নিতে হবে।

একটি নিরপেক্ষ ও কার্যক্ষম নির্বাচন কমিশন গঠনে শরিকদের সহযোগিতা ও ন্যূনতম ঐকমত্যের, আইন অবর্তমানে, মাধ্যমে গঠিত হলে কমিশনের আত্মবিশ্বাস যেমন বাড়ে ও অটুট থাকে, তেমনি সহায়ক শক্তিগুলো থেকে সহযোগিতা পেতে সুবিধা হয়। আমাদের দেশে এ পর্যন্ত ১১টি নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে, যার মধ্যে শুধু একটি কমিশন অ্যাডহক ব্যবস্থাপনায় বাছাই কমিটির মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির চূড়ান্ত অনুমোদনে গঠিত হলেও বিতর্ক পিছু ছাড়েনি। বাকি সব কমিশন নিয়েই কমবেশি বিতর্ক হয়েছে। এখন যা প্রয়োজন তা হলো, এই বিতর্ক হ্রাস করতে সংবিধানে উল্লেখিত আইন তৈরি না করা পর্যন্ত সর্বদলীয় অথবা ন্যূনতম রাজনৈতিক ঐক্যের মাধ্যমে গঠিত হওয়া। অবশ্য নিয়োগের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। অপেক্ষা করতে হবে আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি কীভাবে নিয়োগ দেন, যাতে বিতর্কের জায়গাটি সংকুচিত হয় এবং নবগঠিত নির্বাচন কমিশন সরকার, সরকারি দলসহ অন্যান্য দলের আকাঙ্ক্ষা পূরণকল্পে একটি অবাধ, স্বচ্ছ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে পারে। তবে এ ধরনের নির্বাচন শুধু নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে করা কঠিন হয়ে পড়ে, যদি সহায়ক শক্তিগুলো সহায়ক না হয়।

আমরা আশা করি যে উপমহাদেশের অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও নির্বাচন কমিশন গঠনপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ হবে, যাতে শুরু থেকে নির্বাচন কমিশন জনগণের আস্থার জায়গায় পরিণত হয়। উপমহাদেশের প্রায় একই সামাজিক ও সংস্কৃতির ধারক অন্যান্য দেশ পারলে আমরা পারব না কেন?

এম সাখাওয়াত হোসেন: অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও কলাম লেখক৷
 
. .
PLEASE GOOGLE THE CONSTITUTIONS OF INDIA+ NEPAL+ PAKISTAN, ON ELECTION COMMISSIONS,A CONSTITUTIONAL BODY. THANKS..
 
.
এম সাখাওয়াত হোসেন
hhintlbd@yahoo.com
67_pht.jpg

পুনর্গঠন নিয়ে কিছু ভাবনা
07 December 2016, Wednesday


বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশন নিয়ে থেকে থেকে বিতর্কের শেষ নেই। যদিও সত্তর-আশির দশকে নির্বাচন কমিশন নিয়ে জনগণ তেমন মাথা না ঘামালেও ওই সময়ের নির্বাচনগুলো যে কখনোই স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য ছিল না, তা নিয়েও আলোচনা সীমিত ছিল। নির্বাচন কমিশন প্রথমে রাজনৈতিক আন্দোলনের কেন্দ্র হয়ে ওঠে ১৯৯৪ সালে মাগুরার উপনির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির কারণে। যদিও ওই সময়কার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (প্রনিক) বিচারপতি আবদুর রউফের নেতৃত্বের কমিশন, ১৯৯১ সালের গণতন্ত্রের পুনঃপ্রবর্তনের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্পন্ন করেছিল; কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারেনি। রাজনৈতিক অঙ্গনে মাগুরার ওই নির্বাচনের পরই নির্বাচনকালীন দলীয় সরকারের বদলে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলনের একমাত্র অ্যাজেন্ডা।

তখন বিএনপি সরকার ক্ষমতায়। ওই আন্দোলন নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে হলেও নির্বাচন কমিশন তেমনভাবে নিরীক্ষণে আসেনি। তার কারণ নির্বাচনকালীন সরকারের ভূমিকা নিরপেক্ষ নির্বাচন সহায়ক না হলে আমাদের দেশের নির্বাচন কমিশনসহ কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নিরপেক্ষ কাজ করা দুরূহ ব্যাপার হয়। যা-ই হোক, ওই আন্দোলন আরও যৌক্তিক হয়ে ওঠে পরবর্তী সময়ে ১৯৯৫ সালে আরও কয়েকটি উপনির্বাচনে। সে সময়কার নির্বাচন কমিশন নিয়োজিত হয়েছিল তখনকার দলীয় সরকার দ্বারা। ওই সময়কার প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি এ কে এম সাদেক বিচারপতি আবদুর রউফের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন। তাঁকেও বিদায় নিতে হয় বিতর্ক আর রাজনৈতিক আন্দোলনের কারণে। এরপর মোহাম্মদ আবু হেনার নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার কর্তৃক। কিন্তু তারপর আবারও আওয়ামী লীগ সরকারের মনোনয়নে এম এ সাঈদ প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিযুক্ত হন। পরবর্তী সময়ে ২০০৫ সালে বিচারপতি এম এ আজিজ নিয়োজিত হন তৎকালীন বিএনপি সরকার দ্বারা। তাঁর নেতৃত্বের পূর্ণ কমিশনকে বিদায় নিতে হয় এক উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে। এর পরের ইতিহাস মাত্র কয়েক বছর আগের, তাই পুনরাবৃত্তির প্রয়োজন বোধ করছি না।

ওপরের সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনায় যে বিষয়টি প্রণিধানযোগ্য তা হলো, স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত ১২টি নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে, যার মধ্যে তিনটি কমিশন নিয়োজিত হয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার দ্বারা। এ তিনটি কমিশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন দেশে ও বিদেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হিসেবে স্বীকৃত হয়েছিল; যদিও আমাদের দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ভঙ্গুর অবস্থার কারণে পরাজিত দল সহজে নির্বাচনের ফলাফল পরিপূর্ণভাবে না মানলেও এ কারণে সংসদে যোগদান থেকে বিরত থাকেনি। ওই কয়েকটি নির্বাচন কমিশন ছোটখাটো বিতর্কের মধ্যে পড়লেও দলীয় সরকার দ্বারা নিয়োজিত সব কটি নির্বাচন কমিশন ব্যাপক বিতর্কিত হয়েছিল। এমনকি ২০১২ সালে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান একটি বাছাই কমিটির মাধ্যমে যে কমিশন গঠন করেন, সেই কমিশন ৫ জানুয়ারি ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচন ঘিরে যে বিতর্কের মুখে পড়েছে, তা আর থেমে থাকেনি।

সংবিধান দ্বারা গঠিত স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের ওপরে জনগণের আস্থা থাকার কথা বেশি। বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত যে নব্য, এমনকি পুরোনো গণতান্ত্রিক দেশে তিন মডেলের—স্বাধীন, মিশ্র ও সরকারনিয়ন্ত্রিত নির্বাচন কমিশনের মধ্যে সংবিধান দ্বারা গঠিত স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের ওপর জনগণ তথা ভোটারদের আস্থা সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে নব্য গণতান্ত্রিক দেশগুলো স্বাধীন নির্বাচন কমিশনই সাংবিধানিকভাবে বেছে নেয়। এক গবেষণা জরিপের ফল অনুযায়ী বিশ্বের যে ১৮৭টি দেশে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তার মধ্যে ১৩১ দেশে (যার মধ্যে বাংলাদেশও অন্তর্গত) স্বাধীন নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। বাকি ৩৩টি দেশে সরকারি এবং ২৩টি দেশে মিশ্র মডেলের নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা রয়েছে। অবশ্য এ ৫৬টি দেশের সিংহভাগই পশ্চিমা ও জাপানের মতো প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক দেশ।

একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু সাংবিধানিক প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো দ্বারাই পূর্ণভাবে স্বাধীন হয় না, যদিও কাঠামোগত স্বাধীনতা প্রাথমিকভাবে জনমনে নির্বাচন কমিশন নিয়ে ইতিবাচক ধারণা জন্ম দেয়। তবে কাঠামোগত স্বাধীনতা নিরপেক্ষ নির্বাচনের ধারণাকে পোক্ত করে। কাঠামোগত ছাড়াও আরও যে ধরনের স্বাধীনতা আবশ্যক, তার মধ্যে রয়েছে আর্থিক ও কমিশনের সদস্য-কর্মচারীদের স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনের সক্ষমতা। গবেষকেরা মনে করেন, কাঠামোগত স্বাধীন নির্বাচন কমিশন তখনই পূর্ণতা লাভ করে, যখন নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা এবং কমিশনের সদস্যরা অবশ্যই স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন। এবং এর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো কী পদ্ধতিতে এবং কী ধরনের ব্যক্তি দ্বারা নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়। কাজেই নির্বাচন-প্রক্রিয়া এবং নির্বাচিত ব্যক্তিদের স্বাধীনভাবে কাজ করার মনোবৃত্তি এবং দক্ষতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের ব্যক্তিদের নিয়োজিত করার জন্য বেশির ভাগ দেশেই রয়েছে আইনগত কাঠামো। এ বিষয়ে একাধিক লেখায় উপমহাদেশের দেশগুলোর আইনগত কাঠামোর আলোচনা করেছি। তাই এখানে পুনরাবৃত্তি করা থেকে বিরত থাকলাম।

বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন কাঠামোগতভাবে শক্তিশালী বলে বিবেচিত। ২০০৮-০৯ সালে স্বাধীন সচিবালয় নির্বাচন কমিশনের অন্তর্ভুক্ত করায় নির্বাচন কমিশন কাঠামোগতভাবে যথেষ্ট স্বাধীন ও শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে, আর্থিক স্বাধীনতাও অনেকটা নিশ্চিত। যতটুকু ব্যত্যয় ঘটে তা শুধু পরিচালনা ক্ষেত্রের দুর্বলতার কারণে পরিলক্ষিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীন নির্বাচন কমিশন কিছু কিছু জায়গায় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দুর্বল বলে বিবেচিত। যেসব কারণে বিতর্কের সূত্রপাত হয়—এর মধ্যে অন্যতম হলো কমিশনের সদস্য নির্বাচনের দুর্বলতা। আগেই বলেছি যে মাত্র তিনটি নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট দক্ষতা দেখাতে পেরেছে, বাকি আটটি নির্বাচন কমিশনের পক্ষে তেমনটি সম্ভব হয়নি। এর প্রধান কারণ নিয়োগ-পদ্ধতির অস্বচ্ছতা অথবা জনমনে অস্বচ্ছতার ধারণার কারণে কমিশনকে প্রথম থেকেই আস্থার সংকটে পড়তে হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক অঙ্গনে এবং নাগরিক সমাজে ব্যাপক আলোচনা ও তর্কবিতর্ক শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশের সংবিধানে যে তিনটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের কাঠামো রয়েছে তার মধ্যে শুধু নির্বাচন কমিশনের গঠন-প্রক্রিয়ায় একটি আইনের উল্লেখ থাকলেও ওই আইনের অবর্তমানে নিয়োগ নিয়ে এ ধরনের বিতর্ক। এই বিতর্ক এড়াতে হলে প্রয়োজন সর্বসম্মতিক্রমে একটি গ্রহণযোগ্য আইন প্রণয়ন, যার একটি কাঠামো ২০১১ সালে হুদা কমিশন সুপারিশ করেছিল। তবে এখন যখন নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মাত্র দুই মাসের কম সময় বাকি এবং সর্বসম্মতিক্রমে আইন প্রণয়নের সম্ভাবনা কম, সে কারণে স্বচ্ছ পদ্ধতিতে নির্বাচন কমিশনের শরিকদের ন্যূনতম সম্মতিক্রমে কমিশন গঠন করতে পারলে এ বিতর্ক এড়ানো সম্ভব। অন্যথায় নিয়োগপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনকে শুধু বিব্রত হতে হবে, তা–ই নয়, তাদের পক্ষে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়া হাতে নেওয়াই দুষ্কর হতে পারে। আগামী নির্বাচন অবশ্যই সব দলের অংশগ্রহণমূলক না হলে গণতন্ত্রের যতটুকু রয়েছে, তা দেশে-বিদেশে শুধু প্রশ্নবিদ্ধই হবে না, ওই ধরনের নির্বাচনে গঠিত সরকারের নৈতিক বৈধতা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। অবশ্যই এ বিষয়ে সরকারের দায়িত্বই বেশি।

আমাদের দেশের নির্বাচন কমিশনের আরেকটি বিশেষ দুর্বলতা ধারাবাহিকতার (Continuity) অভাব। ২০০১ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত কমিশনারদের মেয়াদের কারণে কিছুটা ধারাবাহিকতা থাকলেও ২০০৭ থেকে ধারাবাহিকতার অভাব দৃশ্যমান। ২০০৭ সালে বিচারপতি আজিজ কমিশনের একযোগে পদত্যাগের পর থেকে এ পর্যন্ত নিয়োগের সময়ের কারণে ভবিষ্যতেও এ ক্ষেত্রে ঘাটতি হবে। এ অবস্থার কারণে প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়ে, যা একটি পূর্ণ নতুন কমিশনের কার্যক্রমের ওপরে প্রভাব ফেলে। তবে বর্তমানে সংবিধানের ১১৮ ধারায় নির্বাচন কমিশনারদের সংখ্যা নির্ধারিত থাকায় সহজেই এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায় যে তিন সদস্যের কমিশন বাংলাদেশে অধিক কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। যে কারণেও এবং সংবিধানে সদস্যসংখ্যার উল্লেখ থাকার কারণে ধারাবাহিকতা স্থাপন করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতার আলোকে আমি মনে করি, আগামী নির্বাচন কমিশন দুই ধাপে নিয়োগ করলে তা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম পর্যায়ে সংবিধানে প্রদত্ত কমিশনের মেয়াদকালের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ফেব্রুয়ারি (২০১৭) মাসে প্রথম ধাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ দুজন কমিশনার, মোট তিনজন, নিয়োগ দেওয়ার পর থেকে ন্যূনতম পক্ষে এক বছর পর অথবা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রয়োজনে আরও দুজন কমিশনারের নিয়োগ প্রদান করলে ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। ভবিষ্যতে সংবিধানের ১১৮(৩)(বি) উপধারা মোতাবেক কমিশনারদের মধ্য থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ প্রদান করলেও প্রাতিষ্ঠানিক ধারাবাহিকতা নিশ্চিত হবে। এ ধরনের ব্যবস্থা ভারতে ও নেপালে বিদ্যমান। সে ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ হতে পারেন, তেমন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কমিশনারও নিয়োগ দেওয়া প্রতিষ্ঠানের জন্য শ্রেয় হবে।

আমাদের নির্বাচন কমিশনের Institutional Memory-এর (প্রাতিষ্ঠানিক প্রজ্ঞা) জন্য ধারাবাহিকতা বেশ গুরুত্ব বহন করে। এদিক থেকে আমাদের নির্বাচন কমিশন যথেষ্ট দুর্বল। এ ব্যবস্থায় নির্বাচন কমিশনের ওপরে গণ-আস্থা তৈরি এবং বজায় রাখা সহজতর হবে। নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার ওপর গণ-আস্থা না থাকলে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা বেশ কষ্টকর।

সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়দায়িত্ব শুধু নির্বাচন কমিশনেরই নয়, এর দায়িত্ব অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল, নির্বাচনকালীন সরকার, বিচার বিভাগ, মিডিয়া ও নাগরিক সমাজের। তবে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন যেহেতু রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অন্যতম কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান, সেহেতু নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ; যে কারণে সংবিধান, নির্বাচনী আইন এবং আনুষঙ্গিক আইন বলে অগাধ (Plenary) ক্ষমতা দেওয়া আছে। এ কারণেই নির্বাচনী বিষয়ে সংবিধান ও আইন দ্বারা রহিত বা সাংঘর্ষিক নয় এমন ব্যবস্থা নেওয়া বা গ্রহণ করা নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার বা অর্পিত দায়িত্ব। এমনটাই আমরা বর্তমান ও আগামী নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা প্রয়োগে দেখতে চাই।
এম সাখাওয়াত হোসেন: অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও কলাম লেখক৷



উৎসঃ প্রথমআলো
 
.
বাংলাদেশে নিবার্চন কমিশন পুনর্গঠন প্রশ্নে সংলাপে রাষ্ট্রপতি
  • 43 মিনিট আগে
http://www.bbc.com/bengali/38289090

শেয়ার করুন
_92932472_20a6d0f7-8347-4a83-9f85-bfc900bc7f23.jpg
Image copyrightবিবিসি
Image captionপ্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ
বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে এর পুনর্গঠন প্রশ্নে সংলাপের জন্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ বিএনপিসহ বেশ ক'টি রাজনৈতিক দলের সাথে বৈঠক করার সময় দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতির দফতর জানাচ্ছে, মি. হামিদ আগামী ১৮ই ডিসেম্বর প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।

বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া গত ২১শে নভেম্বর এক প্রস্তাবে ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের কথা বলছেন।

এর মধ্যে খালেদা জিয়ার একটি প্রস্তাব বিএনপি রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে পৌঁছে দিয়েছে।

বর্তমান কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে।

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের ইস্যুটি রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে নবগঠিত নির্বাচন কমিশনের হাতেই পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব পড়বে।

বিএনপির পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি বর্তমান সরকারের শরিক জাতীয় পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগ এবং জাসদ (ইনু) সাথেও বৈঠক করবেন বলে কথা রয়েছে।
 
.
Qamrul Islam
39 mins ·
মূলা একটি সবজি। ইহা মাটির নীচে হয়। ইহাতে কিছুটা গন্ধ থাকার কারনে সবাই পছন্দ করে না, তবে ইহা রক্ত পরিস্কারক। মূলা ঝুলাইয়া কৌশলে কার্যসিদ্ধি একটি চালাকি কান্ড।

বর্তমান বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষে ১৮ ডিসেম্বর আওয়ামী রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিএনপিকে বৈঠকের দাওয়াত- একটি মূলা!

এ থেকে বিএনপির দাবী পুরন বা কোনো কিছু অর্জন হওয়ার ক্ষীণতম সম্ভাবনাও নেই। তবে হ্যা, আলোচনায় থাকার জন্য ঠিক আছে। রাষ্ট্রপতি হামিদ যেভাবে মূলাটা ঝুলিয়েছেন, সপ্তাহখানেক হয়ত খুশি থাকতে পারে বিএনপি, কিন্তু এরপরেই ফিকে হয়ে আসবে উৎসাহ।

এ জাতীয় কৌশলের খেলায় বিএনপি খুবই কাঁচা, অনেক সময় জিতা খেলাও হেরে আসে, কেননা ঝানু খেলোয়াড়ের বড় অভাব আজকাল! তাই যা কিছু করবেন, যা বলবেন, খুব সাবধানে এবং কৌশল করে আগাতে হবে।

যারা মনে করেন, শান্তিপূর্ন পদ্ধতিতে দাবী আদায় করা যাবে, তাদের সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষন করি। কেনো মানতে যাবে আপনার দাবী? দাবী আদায় করতে হলে জনগনকে নিয়ে চাপ দিতে হবে- প্রবল চাপ। এর কোনো বিকল্প নাই। যতক্ষণ এটার ব্যবস্থা না করা যাচ্ছে, ততক্ষণ মূলাটা নাগালের বাইরেই থাকছে।


See translation
 
.
Qamrul Islam
7 hrs

সরকার যা পাঠাবে, রাষ্ট্রপতি তা করতে বাধ্য- বলছে সুরেন্দ্র কোর্ট। তারপরও বিএনপি সেখানে যাচ্ছে, আগের বারও গেছিলো- ফলাফল অশ্বডিম্ব!
president.jpg
 
.
BNP seeks consensus on EC thru presidential talks
Staff Correspondent | Update: 19:51, Dec 18, 2016

An 11-member BNP delegation, led by its chairperson Khaleda Zia, held talks with president Abdul Hamid over the reconstitution of the election commission (EC).

“We have placed a summarised version of the chairperson’s EC proposals before the president. The primary objective of this talk is to reconstitute the election commission with the consensus of all political parties," said Mirza Fakhrul.

“As there is no specific law for reconstituting the EC, there is no alternative to reconstitute the EC with such a consensus. And it is the president who should take the initiative to reach the consensus in this regard,” said Fakhrul.

Fakhrul said the president has termed constructive the BNP chairperson’s EC proposal and thanked the BNP for placing the proposals.

President Abdul Hamid said he thinks the proposals will help institutionalise the country’s democracy, said the BNP leader.

“At the same time, he [president Abdul Hamid] thinks that in a democratic state, there is no alternative to talks and dialogue to end the crisis,” claimed Fakhrul.

The BNP secretary general said the party proposals include three parts - firstly, how to form the search committee; secondly, the reconstitution of the EC based on consensus and finally amendment of electoral laws.

“The search body should be neutral and accepted by all. We have proposed that the five-strong search body should be headed by a former chief justice who is not controversial,” he said.

“As our talk with the president is the first one of series of talks, he said he will look into the proposals regarding the system of forming the search once his talks with others end,” said Fakhrul.

“The honourable president thinks that a credible and strong election commission which will be able to all is much crucial for the nation,”

Fakhrul said they held talks on the system of forming the search body. “Khaleda Zia has placed specific suggestions on the issue.”

The BNP leader said his party hoped that the president will again hold talks with the political parties after completing his first round talks with political parties and before finalising the system of forming the search body.

“As the honourable president is a seasoned and all-respected politician, we are optimistic that his initiative to help end the country’s ongoing political crisis will succeed,” said the BNP secretary general.

He said his party hoped the president, as the guardian of the state, will play “the due role to end the country’s political crisis."

The BNP secretary general did not reply to a question whether the party put forth any names for forming the search body.

In response to another questioner, the BNP secretary general said the BNP delegation also raised the issue of election-time government before the president, but he declined to give the details about it.
 
.
Bernicat: EC has to be neutral
http://www.dhakatribune.com/bangladesh/politics/2016/12/18/bernicat-ec-neutral/


File photo

The new Election Commission has to be seen as being truly neutral, US ambassador in Dhaka Marcia Bernicat has said.
In an interview with Indian business daily Mint on Friday, Ambassador Bernicat discussed several issues surrounding Bangladesh, focusing in particular on terrorism and politics.

“The mandate of EC’s members is expiring in February. The president has a real task ahead of him, of finding enough members who are seen as being truly neutral,” Bernicat told the Mint.

She said in the interview that the US, along with the European Union, had worked hard to help strengthen the EC in Bangladesh.

“But its efficiency and credibility rests with who its members are,” she said.

“We believe that the formation of a strong and credible EC will send a very powerful signal that it is indeed the government’s intention that the next elections will be above questions,” she added.

After the current EC’s term comes to an end on February 8, the president will form a search committee to suggest names for new commissioners, with whom he will reconstitute the commission.

President Abdul Hamid held a dialogue with leaders of the BNP yesterday, beginning a round of talks with political parties on EC reform and selection process.


http://en.prothom-alo.com/bangladesh/news/133141/Dialogue-crucial-to-form-strong-EC-President

Dialogue crucial to form strong EC: President
Online Desk | Update: 21:42, Dec 18, 2016

643xNxce76a10207f1d49ff5498affb8f5deaf-President.jpg.pagespeed.ic.Z3Qus5WS3X.jpg


President Abdul Hamid Sunday said discussion with political parties will play an important role in constituting a strong election commission (EC), reports BSS.

"Election is very important in a democratic process and the election commission plays the main role in conducting the elections," a Bangabhaban spokesperson quoted the president as saying during a discussion with the 11-member BNP delegation led by its chairperson Khaleda Zia at the Darbar Hall of the presidential palace, Bangabhaban.

President's press secretary Joynal Abedin said the president also told the BNP delegation that he believed the discussion and “your [Khaleda] well-thought opinion will play an important role in forming a strong election commission".

The president's dialogue with some political parties on reconstitution of election commission began with the discussion with BNP since he took the initiative as the tenure of the current EC led by Kazi Rakibuddin Ahmad is set to expire in February next.

The president said exchange of opinions through this discussion would give multiple paths of solution to any issue.

"I believe your [BNP] proposals will play a positive role in forming next election commission," president Hamid quoted to have said.

During the hour-long meeting, president Hamid sought cooperation from all political parties including BNP to form a strong EC.

BNP chairperson Khaleda Zia presented BNP's proposals for the formation process of a search body and the new EC.

She also highlighted her party's proposal to strengthen the EC and amend the Representation of the People Order (RPO).

The president will hold talks with Jatiya Party on 20 December, Liberal Democratic Party and Krishak Sramik Janata League on 21 December and Jatiya Samajtantric Dal (Inu) on 22 December, he added.
 
.
Electoral competition deteriorates in Bangladesh: Report
Staff Correspondent | Update: 18:48, Dec 20, 2016

The country has witnessed a deterioration in electoral competition and state of governance in recent years, says a study.

Such deterioration has been manifested in declining of voters’ turnout in the city corporation elections and growing electoral violence, said the study report released Tuesday.

The report titled 'State of Governance, Bangladesh 2016' by BRAC Institute of Governance and Development, also shows that half of the complaints of corruption in the public sector are discontinued.

The pending cases of inquiries about corruption allegations across the divisions are high, said the report.

It also found an increase in gender gap in the final voter list prepared before the 2014 10th national elections as well.

“Female participation was low in the last national and recent local government elections,” read the governance report.

Shedding light on the public sector governance, the study found that the executive magistrates on average have exceeded the targeted number of mobile courts.

The study revealed that some 80% to 90% applications under Right to Information Act have been made to ten out of 64 districts about ten out of 52 ministries.

More than half of the corruption complaints are discontinued and filed for record and across the divisions, pending rate of the inquiries is high.
 
.
12:00 AM, December 21, 2016 / LAST MODIFIED: 03:39 AM, December 21, 2016
EC Formation: JP hands 5 proposals to Hamid


jp_election_proposal.jpg


Jatiya Party Chairman HM Ershad exchanges views with President Abdul Hamid at the Bangabhaban yesterday. Ershad and his party delegation members, including Leader of the Opposition Raushan Ershad, discussed reconstitution of the Election Commission with the president. Photo: PID

Rashidul Hasan

President Abdul Hamid has said it is necessary to enact a law in line with the country's constitution for appointment of election commissioners, according to JP leaders.

The president apparently said this when a Jatiya Party delegation met him and submitted a five-point proposal, including enactment of a law on forming the next Election Commission.

“The honourable president agreed to our proposal that a law should be enacted [to form the EC], which successive governments failed to do in the last 45 years,” JP Secretary General Ruhul Amin Hawlader said.

He added that the president during the hour-and-a-half-long meeting told them that he might talk to Prime Minister Sheikh Hasina about this.

According to section 118 (1) of the constitution, the president would appoint the chief election commissioner (CEC) and other commissioners of the EC as per the rules and law regarding EC formation.

The tenure of the current EC, led by Kazi Rakibuddin Ahmad, will expire in February next year.

Led by its chief HM Ershad, the 18-member JP delegation held talks with the president around 3:00pm on formation of the EC, which would oversee the 2019 general elections.

Terming the dialogue important for democracy, the president said a framework on the formation of the new EC would come out through talks with different political parties, a release of the Bangabhaban said.

In the Bangabhaban release, there was no mention whether the president spoke about enactment of a law for EC formation.

On Sunday, the president began the dialogue with registered political parties at the Bangabhaban over the EC formation. The BNP was the first party to meet the president.

On the third day of the dialogue today, the president will meet Liberal Democratic Party and Krishok Sramik Janata League.

In his speech, President Abdul Hamid yesterday said, “The dialogue is very important for democracy as it creates opportunity for holding views-exchange meetings with different political parties.”

Ruhul Amin at a press conference at the party's Kakrail office said their talk with the president was fruitful. “The honourable president, who is a wise person and acceptable to all, will be able to reduce the distance and disunity among political parties through the dialogue initiative,” he said.

JP leaders hoped that the president would be able to forge a national unity for making an acceptable EC after forming a search committee.

Asked whether JP submitted any list of names for the search committee, JP presidium member SM Foysal Chishti, who was in the delegation, said, “We did not give any list to the president.”

5-POINT PROPOSAL
JP recommended establishing a separate EC Secretariat, passage of a new law by the present parliament on the formation of the EC, and determining certain qualities and experience of the probable election commissioners.

The potential commissioners should be politically inactive, impartial, honest, professionally qualified, physically and mentally fit, are not holding any public office, and have knowledge of electoral issues.

ELECTION REFORMS
About reforms of the electoral system, the JP said every political party would secure seats in parliament according to the proportion of the votes received by them.

“The party with the highest number of votes would win the highest number of seats.”

Every political party would prepare a list of its candidates, make it public and submit the list to the EC. Then they will go to polls in 300 constituencies with their respective electoral symbols.

If a political party bagged 50 percent of the total votes cast, it would secure 150 seats. Similarly, if a party won one percent of the total votes cast, it would get three seats.
 
.

Pakistan Defence Latest Posts

Back
Top Bottom