Banglar Bir
SENIOR MEMBER
- Joined
- Mar 19, 2006
- Messages
- 7,805
- Reaction score
- -3
- Country
- Location
27 Hindus cunningly taken back to Burma
২৭ হিন্দুকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে গেছে মিয়ানমার!
বার্মায় হিন্দুরা আক্রান্ত হলেও ভারতের হিন্দু নেতারা নীরব কেন?
২৭ হিন্দুকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে গেছে মিয়ানমার!
Fleeing into Bangladesh and seeking shelter in Coxsbazar, out of the minority hindu community of around 500, 27 members mysteriously went missing. Later it was found out that these hindus were lured by the Burmese Armt over mobile tele calls, and were subsequently transported by Helicopters, after crossing into Burma. বাংলাদেশে পালিয়ে এসে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের পাঁচ শতাধিক সদস্যের মধ্যে ছয় পরিবারের ২৭ সদস্য রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ রয়েছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ফুঁসলিয়ে তাদের সীমান্ত পার করে হেলিকপ্টারে তুলে নিয়ে গেছে সেনাবাহিনী—এমনটাই সন্দেহ স্বজনদের।
কয়েকজন আশ্রয়স্থল ছাড়ার সময় বলেছে, in the facade of celebrating Durga puja দুর্গাপূজা দেখতে মিয়ানমার যাচ্ছে, আবার ফিরে আসবে। বাংলাদেশে রয়ে যাওয়া তাদের ঘনিষ্ঠনজরা বলছে, মিয়ানমার সরকার to be used later as propaganda/misinformation/smeer campaign tools by the Burmese authorities অপপ্রচারের অস্ত্র বানাতেই হিন্দু সম্প্রদায়ের এসব সদস্যকে কূটকৌশলে মিয়ানমারে নিয়ে যাচ্ছে। এদের মধ্যে এক নবদম্পতিও রয়েছেন এবং তাঁদের গত বুধবার সীমান্তের ওপারে ফুঁসলিয়ে নিয়ে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানা যায়।
মিয়ানমারের রাখাইন থেকে এসে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং পশ্চিম হিন্দু পল্লীর একটি পরিত্যক্ত মুরগির খামারে সম্প্রতি আশ্রয় নেয় these 27 were from the 523 hindu community,taking refuge in West Kutupalong,Ukhia. ৫২৩ জন নির্যাতিত হিন্দু। মূলত বেসরকারি ত্রাণেই তারা টিকে আছে। তাদের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক পুলিশ প্রহরার ব্যবস্থা রয়েছে। রাখাইনে রোহিঙ্গা নিধন নিয়ে অব্যাহত আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার সরকার নিজেদের গা বাঁচাতে এখন উঠেপড়ে লেগেছে। এর মধ্যে একটি এলাকার গণকবর থেকে উদ্ধার করা কিছু মরদেহকে সংখ্যালঘু হিসেবে চিহ্নিত করে সেনাবাহিনী বলছে, কাজটি রোহিঙ্গা জঙ্গিগোষ্ঠী আরসার। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, হামলাকারীদের মধ্যে বার্মিজভাষীরাও ছিল।
হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান নিহত হলেও তাদের জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কোনো ধরনের দুঃখপ্রকাশ না করাকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা হিন্দুরাও মানতে পারছে না।
গতকাল শুক্রবার দুপুর। সরেজমিনে কুতুপালং গিয়ে দেখা গেল, হিন্দু পল্লীতে চলছিল এক ধর্মীয় অনুষ্ঠান। আয়োজকরা জানায়, রাখাইনে হতাহত সব হিন্দু-মুসলিমের আত্মার শান্তি কামনায় প্রার্থনাসভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের পুরোহিতও এগিয়ে এসে জানান, ‘আমরা শুধু হিন্দুদের জন্য এ আয়োজন করিনি। কামনা করেছি রাখাইনে মিয়ানমার বাহিনীর হাতে নির্যাতিত সব মানুষের শুভ কামনা। ’ ধর্মীয় অনুষ্ঠানস্থলের কাছেই পরিত্যক্ত মুরগি খামারটির সামনে গিয়ে দেখা গেল, নারী-পুরুষের জটলা। তারা সবাই হৈ-হুল্লোড় করলেও এর মধ্যেই দোষারোপ করছে একজন আরেকজনকে কয়েকজনের পালিয়ে যাওয়ার ওই ঘটনায়।
ঘটনাস্থলে কালের কণ্ঠ’র এ প্রতিবেদককে দেখে এগিয়ে এলেন উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (ইউপি মেম্বার) স্বপন শর্মা রনি। তিনিই এসব হিন্দুর দেখভাল করছেন। রনি জানান, ‘মাইনরিটি অ্যাক্টিভিষ্ট ফোরামের সদস্য আশীষ দাশ সংগঠনের ঢাকা কেন্দ্রীয় অফিস থেকে পাঠানো কিছু উপহারসামগ্রী এনেছেন। এসবের মধ্যে রয়েছে কনের লাল শাড়ি ও জামাইবাবুর পায়জামা-পাঞ্জাবি থেকে শুরু করে বিয়ের যাবতীয় আইটেম। সঙ্গে ৫০ হাজার টাকাও। ’
ইউপি মেম্বার রনি বলেন—দেখুন, নতুন বউ-জামাইকে সাজাতে এত আয়োজন, সেই বউ-জামাই সবার অগোচরে পাড়ি জমিয়েছে বর্বর দেশ মিয়ানমারের রাখাইনে। যে মেয়েটির মা-বাবাকে হত্যা করা হয়েছে এক মাস আগে, সে কিনা আমাদের কাউকে কিছু না জানিয়ে মিয়ানমার সেনাদের হাতে হাত রেখেছে। ’ আশীষ দাশ আরো বলেন, ‘আসলে এসব অল্প বয়সের মেয়েটিকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। দোষ আমাদেরই। আমরা এত লোক তাদের পাহারা দিচ্ছি অথচ মিয়ানমারের সেনাদের দোসররা এই মেয়েসহ এত হিন্দু সদস্যদের লোভ-লালসা দেখিয়ে একদম নীরবেই সীমান্ত পার করে নিল। ’ তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকার বিশ্বে এখন গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত। তাকে রেহাই পেতে হবে যেকোনো প্রকারে। এ জন্য মরিয়া হয়েই তারা এখন অপপ্রচারে নেমেছে। ’
মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া হিন্দু মিলন কুমার মল্লিক (৩০) গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রাখাইনে আমাদের এখান থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের লোকজন চেষ্টা চালাচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরে। আমরা পালিয়ে এখানে আশ্রয় নেওয়ার সংবাদ প্রচারের পরপরই মিয়ানমার বাহিনী আমাদের টার্গেট করে।
আমাদের হিন্দু সদস্যদের হত্যা করা হয়েছে—বিদেশি সংবাদমাধ্যমে তারা তা বিশ্বাসযোগ্য করতে চায়। ’ তিনি আরো বলেন, ‘একসঙ্গে এলেও কিছু হিন্দু আমাদের সঙ্গে একত্রে না থেকে আশপাশের হিন্দুপল্লীতে রয়েছে। তাদের কারো কারো মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে মিয়ানমার বাহিনী। ’
মিলন কুমার মল্লিক আরো বলেন, ‘গত সপ্তাহে দুর্গাপূজার সময় আমাদের কিছু হিন্দু মিয়ানমারের ওপারে চলে যায়। তারা প্রথমে জানিয়েছিল, তারা সেখানে পূজা উপলক্ষে বেড়াতে যাচ্ছে। কিন্তু পরে আমরা বুঝতে পেরেছি, ওপারে চলে যাওয়া হিন্দুরা মিয়ানমারের সেনাদের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক করেই গেছে। তবে ওপারে যাওয়া হিন্দুদের মধ্যে প্রায় সবাই নারী। ’ তিনি জানান, রাখাইনে চলে যাওয়া সাতটি পরিবার হচ্ছে যথাক্রমে—প্রমিলা বালা, বীণা বালা, গঙ্গা বালা, রিকা বালা, অনিত্য বালা, সুশীলা বালা ও সুষমা বালা। এসব পরিবারে ২৫ জন সদস্য রয়েছে।
পালিয়ে কুতুপালং হিন্দুপল্লীতে আশ্রয় নেওয়া হিন্দুদের একজন রূপপতি রূদ্র গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যারা পালিয়ে গেছে তাদের একজন রাজকুমারী শীল আমার ভাগ্নি হয়। সদ্য সমাপ্ত দুর্গাপূজার দশমীর দিন মিয়ানমারে আমাদের একই এলাকার তরুণ আধারাম শীলের সঙ্গে বিয়ে পড়িয়ে মালা বদল করা হয়েছে। আমার ভাগ্নিটি আমাকে পর্যন্ত না জানিয়ে রাখাইনে চলে গেছে। ’ তিনি জানান, রাজকুমারীর বাবা মিলন শর্মা ও মা গৈরা রুদ্র হত্যার শিকার হয়েছেন। রাখাইনের ফকিরাবাজার এলাকায় যে ৮৬ জন হিন্দু হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়, এই দুজন সে দলেই রয়েছেন।
জগদীশ দাশ নামের এক যুবক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার সঙ্গে মোবাইলে আমাদের ফেলে আসা পাড়ার বন্ধুদের যোগাযোগ রয়েছে। আমাদের এখান থেকে যারা ফিরে গেছে, মিয়ানমার সরকারের লোকজন তাদের হেলিকপ্টারে করেই মংডু শহরে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাদের নেওয়া হয় ফকিরাবাজারে—যেখানে ৮৬ জন হিন্দুকে গত ২৫ আগস্ট হত্যা করা হয়েছে। ’ জগদীশ জানান, তিনি মোবাইলে তাঁর ওপারের বন্ধু-বান্ধবের কাছে জানতে পেরেছেন, এখান থেকে ফিরে যাওয়া প্রত্যেককে মংডু শহরে বাড়িঘর থেকে শুরু করে প্রচুর জমি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাদের সেখানে রাখা হয়েছে অত্যন্ত জামাই আদরে।
জগদীশ বলেন, মিয়ানমারের সরকারি গণমাধ্যমে এখন ফিরে যাওয়া নির্যাতিত ২৭ জন হিন্দুর সাক্ষাৎকারই মূল খবর হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। সেখানে বিদেশি সংবাদমাধ্যমেও এসব হিন্দুকে দিয়ে সাক্ষাৎকার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সাক্ষাৎকারে হিন্দুদের দিয়ে বলানো হচ্ছে—গত ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনী আল ইয়াকিন (যা পরে আরসা) নামে পরিচিত সন্ত্রাসীরাই হিন্দুদের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এসব হিন্দু গত ৩০ আগস্ট থেকেই বলে যাচ্ছে, কালো পোশাকে আচ্ছাদিত সন্ত্রাসীরা তাদের হত্যা, নির্যাতন ও নিপীড়ন করেছে। এসব সন্ত্রাসী রোহিঙ্গা, নাকি রাখাইন, সেটা তারা শনাক্ত করতে পারেনি। তবে তারা বার্মিজ (রাখাইন) এবং রোহিঙ্গা দুই ভাষায়ই কথা বলেছিল। তবে মংডুর চিকনছড়ি ও ফকিরাবাজার এলাকা (যেখানে হিন্দুদের বসতি) থেকে আসা অনেকেই জানিয়েছে, মিয়ানমারের সহিংসতার সময় ক্যামেরা থেকে পরিচয় গোপন করার জন্য মিয়ানমার বাহিনীর সদস্য এবং রাখাইন সন্ত্রাসীরাও কালো পোশাকে আচ্ছাদিত ছিল।
কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং থেকে গোপনে হিন্দুদের রাখাইনে পাড়ি দেওয়া প্রসঙ্গে গতকাল সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার ড. এ কে এম ইকবাল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার কাছে এ রকম খবর নেই। ’ তিনি বলেন, ‘দেখুন, আমরা তাদের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক পুলিশ প্রহরার ব্যবস্থা করেছি। ’
কালের কণ্ঠ
http://monitorbd.news/2017/10/06/২৭-হিন্দুকে-ফুঁসলিয়ে-নিয়/
২৭ হিন্দুকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে গেছে মিয়ানমার!
বার্মায় হিন্দুরা আক্রান্ত হলেও ভারতের হিন্দু নেতারা নীরব কেন?
২৭ হিন্দুকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে গেছে মিয়ানমার!
Fleeing into Bangladesh and seeking shelter in Coxsbazar, out of the minority hindu community of around 500, 27 members mysteriously went missing. Later it was found out that these hindus were lured by the Burmese Armt over mobile tele calls, and were subsequently transported by Helicopters, after crossing into Burma. বাংলাদেশে পালিয়ে এসে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের পাঁচ শতাধিক সদস্যের মধ্যে ছয় পরিবারের ২৭ সদস্য রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ রয়েছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ফুঁসলিয়ে তাদের সীমান্ত পার করে হেলিকপ্টারে তুলে নিয়ে গেছে সেনাবাহিনী—এমনটাই সন্দেহ স্বজনদের।
কয়েকজন আশ্রয়স্থল ছাড়ার সময় বলেছে, in the facade of celebrating Durga puja দুর্গাপূজা দেখতে মিয়ানমার যাচ্ছে, আবার ফিরে আসবে। বাংলাদেশে রয়ে যাওয়া তাদের ঘনিষ্ঠনজরা বলছে, মিয়ানমার সরকার to be used later as propaganda/misinformation/smeer campaign tools by the Burmese authorities অপপ্রচারের অস্ত্র বানাতেই হিন্দু সম্প্রদায়ের এসব সদস্যকে কূটকৌশলে মিয়ানমারে নিয়ে যাচ্ছে। এদের মধ্যে এক নবদম্পতিও রয়েছেন এবং তাঁদের গত বুধবার সীমান্তের ওপারে ফুঁসলিয়ে নিয়ে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানা যায়।
মিয়ানমারের রাখাইন থেকে এসে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং পশ্চিম হিন্দু পল্লীর একটি পরিত্যক্ত মুরগির খামারে সম্প্রতি আশ্রয় নেয় these 27 were from the 523 hindu community,taking refuge in West Kutupalong,Ukhia. ৫২৩ জন নির্যাতিত হিন্দু। মূলত বেসরকারি ত্রাণেই তারা টিকে আছে। তাদের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক পুলিশ প্রহরার ব্যবস্থা রয়েছে। রাখাইনে রোহিঙ্গা নিধন নিয়ে অব্যাহত আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার সরকার নিজেদের গা বাঁচাতে এখন উঠেপড়ে লেগেছে। এর মধ্যে একটি এলাকার গণকবর থেকে উদ্ধার করা কিছু মরদেহকে সংখ্যালঘু হিসেবে চিহ্নিত করে সেনাবাহিনী বলছে, কাজটি রোহিঙ্গা জঙ্গিগোষ্ঠী আরসার। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছে, হামলাকারীদের মধ্যে বার্মিজভাষীরাও ছিল।
হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান নিহত হলেও তাদের জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কোনো ধরনের দুঃখপ্রকাশ না করাকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা হিন্দুরাও মানতে পারছে না।
গতকাল শুক্রবার দুপুর। সরেজমিনে কুতুপালং গিয়ে দেখা গেল, হিন্দু পল্লীতে চলছিল এক ধর্মীয় অনুষ্ঠান। আয়োজকরা জানায়, রাখাইনে হতাহত সব হিন্দু-মুসলিমের আত্মার শান্তি কামনায় প্রার্থনাসভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের পুরোহিতও এগিয়ে এসে জানান, ‘আমরা শুধু হিন্দুদের জন্য এ আয়োজন করিনি। কামনা করেছি রাখাইনে মিয়ানমার বাহিনীর হাতে নির্যাতিত সব মানুষের শুভ কামনা। ’ ধর্মীয় অনুষ্ঠানস্থলের কাছেই পরিত্যক্ত মুরগি খামারটির সামনে গিয়ে দেখা গেল, নারী-পুরুষের জটলা। তারা সবাই হৈ-হুল্লোড় করলেও এর মধ্যেই দোষারোপ করছে একজন আরেকজনকে কয়েকজনের পালিয়ে যাওয়ার ওই ঘটনায়।
ঘটনাস্থলে কালের কণ্ঠ’র এ প্রতিবেদককে দেখে এগিয়ে এলেন উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (ইউপি মেম্বার) স্বপন শর্মা রনি। তিনিই এসব হিন্দুর দেখভাল করছেন। রনি জানান, ‘মাইনরিটি অ্যাক্টিভিষ্ট ফোরামের সদস্য আশীষ দাশ সংগঠনের ঢাকা কেন্দ্রীয় অফিস থেকে পাঠানো কিছু উপহারসামগ্রী এনেছেন। এসবের মধ্যে রয়েছে কনের লাল শাড়ি ও জামাইবাবুর পায়জামা-পাঞ্জাবি থেকে শুরু করে বিয়ের যাবতীয় আইটেম। সঙ্গে ৫০ হাজার টাকাও। ’
ইউপি মেম্বার রনি বলেন—দেখুন, নতুন বউ-জামাইকে সাজাতে এত আয়োজন, সেই বউ-জামাই সবার অগোচরে পাড়ি জমিয়েছে বর্বর দেশ মিয়ানমারের রাখাইনে। যে মেয়েটির মা-বাবাকে হত্যা করা হয়েছে এক মাস আগে, সে কিনা আমাদের কাউকে কিছু না জানিয়ে মিয়ানমার সেনাদের হাতে হাত রেখেছে। ’ আশীষ দাশ আরো বলেন, ‘আসলে এসব অল্প বয়সের মেয়েটিকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। দোষ আমাদেরই। আমরা এত লোক তাদের পাহারা দিচ্ছি অথচ মিয়ানমারের সেনাদের দোসররা এই মেয়েসহ এত হিন্দু সদস্যদের লোভ-লালসা দেখিয়ে একদম নীরবেই সীমান্ত পার করে নিল। ’ তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকার বিশ্বে এখন গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত। তাকে রেহাই পেতে হবে যেকোনো প্রকারে। এ জন্য মরিয়া হয়েই তারা এখন অপপ্রচারে নেমেছে। ’
মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া হিন্দু মিলন কুমার মল্লিক (৩০) গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রাখাইনে আমাদের এখান থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারের লোকজন চেষ্টা চালাচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরে। আমরা পালিয়ে এখানে আশ্রয় নেওয়ার সংবাদ প্রচারের পরপরই মিয়ানমার বাহিনী আমাদের টার্গেট করে।
আমাদের হিন্দু সদস্যদের হত্যা করা হয়েছে—বিদেশি সংবাদমাধ্যমে তারা তা বিশ্বাসযোগ্য করতে চায়। ’ তিনি আরো বলেন, ‘একসঙ্গে এলেও কিছু হিন্দু আমাদের সঙ্গে একত্রে না থেকে আশপাশের হিন্দুপল্লীতে রয়েছে। তাদের কারো কারো মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে মিয়ানমার বাহিনী। ’
মিলন কুমার মল্লিক আরো বলেন, ‘গত সপ্তাহে দুর্গাপূজার সময় আমাদের কিছু হিন্দু মিয়ানমারের ওপারে চলে যায়। তারা প্রথমে জানিয়েছিল, তারা সেখানে পূজা উপলক্ষে বেড়াতে যাচ্ছে। কিন্তু পরে আমরা বুঝতে পেরেছি, ওপারে চলে যাওয়া হিন্দুরা মিয়ানমারের সেনাদের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক করেই গেছে। তবে ওপারে যাওয়া হিন্দুদের মধ্যে প্রায় সবাই নারী। ’ তিনি জানান, রাখাইনে চলে যাওয়া সাতটি পরিবার হচ্ছে যথাক্রমে—প্রমিলা বালা, বীণা বালা, গঙ্গা বালা, রিকা বালা, অনিত্য বালা, সুশীলা বালা ও সুষমা বালা। এসব পরিবারে ২৫ জন সদস্য রয়েছে।
পালিয়ে কুতুপালং হিন্দুপল্লীতে আশ্রয় নেওয়া হিন্দুদের একজন রূপপতি রূদ্র গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যারা পালিয়ে গেছে তাদের একজন রাজকুমারী শীল আমার ভাগ্নি হয়। সদ্য সমাপ্ত দুর্গাপূজার দশমীর দিন মিয়ানমারে আমাদের একই এলাকার তরুণ আধারাম শীলের সঙ্গে বিয়ে পড়িয়ে মালা বদল করা হয়েছে। আমার ভাগ্নিটি আমাকে পর্যন্ত না জানিয়ে রাখাইনে চলে গেছে। ’ তিনি জানান, রাজকুমারীর বাবা মিলন শর্মা ও মা গৈরা রুদ্র হত্যার শিকার হয়েছেন। রাখাইনের ফকিরাবাজার এলাকায় যে ৮৬ জন হিন্দু হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়, এই দুজন সে দলেই রয়েছেন।
জগদীশ দাশ নামের এক যুবক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার সঙ্গে মোবাইলে আমাদের ফেলে আসা পাড়ার বন্ধুদের যোগাযোগ রয়েছে। আমাদের এখান থেকে যারা ফিরে গেছে, মিয়ানমার সরকারের লোকজন তাদের হেলিকপ্টারে করেই মংডু শহরে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাদের নেওয়া হয় ফকিরাবাজারে—যেখানে ৮৬ জন হিন্দুকে গত ২৫ আগস্ট হত্যা করা হয়েছে। ’ জগদীশ জানান, তিনি মোবাইলে তাঁর ওপারের বন্ধু-বান্ধবের কাছে জানতে পেরেছেন, এখান থেকে ফিরে যাওয়া প্রত্যেককে মংডু শহরে বাড়িঘর থেকে শুরু করে প্রচুর জমি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাদের সেখানে রাখা হয়েছে অত্যন্ত জামাই আদরে।
জগদীশ বলেন, মিয়ানমারের সরকারি গণমাধ্যমে এখন ফিরে যাওয়া নির্যাতিত ২৭ জন হিন্দুর সাক্ষাৎকারই মূল খবর হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। সেখানে বিদেশি সংবাদমাধ্যমেও এসব হিন্দুকে দিয়ে সাক্ষাৎকার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সাক্ষাৎকারে হিন্দুদের দিয়ে বলানো হচ্ছে—গত ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনী আল ইয়াকিন (যা পরে আরসা) নামে পরিচিত সন্ত্রাসীরাই হিন্দুদের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এসব হিন্দু গত ৩০ আগস্ট থেকেই বলে যাচ্ছে, কালো পোশাকে আচ্ছাদিত সন্ত্রাসীরা তাদের হত্যা, নির্যাতন ও নিপীড়ন করেছে। এসব সন্ত্রাসী রোহিঙ্গা, নাকি রাখাইন, সেটা তারা শনাক্ত করতে পারেনি। তবে তারা বার্মিজ (রাখাইন) এবং রোহিঙ্গা দুই ভাষায়ই কথা বলেছিল। তবে মংডুর চিকনছড়ি ও ফকিরাবাজার এলাকা (যেখানে হিন্দুদের বসতি) থেকে আসা অনেকেই জানিয়েছে, মিয়ানমারের সহিংসতার সময় ক্যামেরা থেকে পরিচয় গোপন করার জন্য মিয়ানমার বাহিনীর সদস্য এবং রাখাইন সন্ত্রাসীরাও কালো পোশাকে আচ্ছাদিত ছিল।
কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং থেকে গোপনে হিন্দুদের রাখাইনে পাড়ি দেওয়া প্রসঙ্গে গতকাল সন্ধ্যায় পুলিশ সুপার ড. এ কে এম ইকবাল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার কাছে এ রকম খবর নেই। ’ তিনি বলেন, ‘দেখুন, আমরা তাদের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক পুলিশ প্রহরার ব্যবস্থা করেছি। ’
কালের কণ্ঠ
http://monitorbd.news/2017/10/06/২৭-হিন্দুকে-ফুঁসলিয়ে-নিয়/
Last edited: