Just wondering will it be possible for anyone to post the 12 documents which were released by wikileaks and was sent by then US ambassador to Bangladesh??
উইকিলিকসে বাংলাদেশ
আমেরিকান নথিতে বিডিআর বিদ্রোহ-১
???????? ????? ?????? ???????-? - ????? ???
মশিউল আলম | তারিখ: ২৫-০২-২০১৩
পিলখানায় কয়েকজন বিদ্রোহী জওয়ান
পিলখানায় কয়েকজন বিদ্রোহী জওয়ান
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে ঢাকার পিলখানায় বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে শুরু হয় এক রক্তাক্ত বিদ্রোহ। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নাম তখন ছিল বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর
। চিরাচরিতভাবে এ বাহিনীর নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে আসা অফিসাররা। সেদিন বিডিআর জওয়ানরা তাঁদের অফিসারদের নির্বিচারে হত্যা করা শুরু করেন। তাঁরা চাকরিক্ষেত্রে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে ধরে বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দাবি জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের বয়স তখন দুই মাসও পূর্ণ হয়নি; বিডিআর জওয়ানদের সহিংস বিদ্রোহে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অর্ধশতাধিক অফিসারের হত্যাযজ্ঞের ফলে সরকার অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় পড়ে যায়; সংকট দেখা দেয় বাংলাদেশের সিভিল-মিলিটারি সম্পর্কে।
সে সময় ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে ছিলেন জেমস এফ মরিয়ার্টি। তিনি বিডিআর বিদ্রোহ সম্পর্কে মোট এক ডজনের বেশি গোপনীয় তারবার্তা ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগের সদর দপ্তরে পাঠান। সেসব তারবার্তা আমাদের হস্তগত হয়েছে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের ওয়েবসাইট উইকিলিকসের মাধ্যমে। ওয়েবসাইটটি ২০১০ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে প্রায় আড়াই লাখ গোপনীয় মার্কিন কূটনীতিক তারবার্তার একটি ভান্ডার প্রকাশ করতে শুরু করে। সেই ভান্ডারে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে পাঠানো প্রায় দুই হাজার গোপনীয় তারবার্তা পাওয়া যায়। সেখান থেকে বাছাই করা বেশ কিছু তারবার্তার হুবহু বাংলা অনুবাদ আমরা সংকলিত করেছি উইকিলিকসে বাংলাদেশ নামের একটি বইতে, প্রথমা প্রকাশন থেকে যা সদ্য প্রকাশিত হয়েছে। এই লেখাটিতে আমরা দেখার চেষ্টা করব, মার্কিন দূতাবাসের সেসব তারবার্তায় ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহ কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে; বিশেষত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি পর্যবেক্ষণ ও দৃষ্টিভঙ্গি কী ছিল।
বিদ্রোহের প্রথম দিনই রাত ১২টার দিকে তিনি পাঠান প্রথম তারবার্তাটি; সকালে বিদ্রোহ শুরু হয়ে বিকেল চারটা পর্যন্ত যা যা ঘটেছে, সংক্ষেপে তার বিবরণ দেন। তারপর তিনি মন্তব্য লিখেছেন, এ ঘটনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নতুন সরকারের জন্য সত্যিকারের এক পরীক্ষা। শেষে রাষ্ট্রদূত তাঁর সদর দপ্তরকে জানান: আমরা পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছি; সামরিক বাহিনী, পুলিশ বিভাগ, সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা ও সংসদ সদস্যদের সঙ্গে আমাদের নিবিড় যোগাযোগ চলছে।
২৬ ফেব্রুয়ারি পাঠানো দ্বিতীয় তারবার্তার শুরুতেই রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টি লেখেন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুই মাস বয়সী সরকার আধা সামরিক সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিদ্রোহ নিবারণে হিমশিম খাচ্ছে; বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়েছে, ২৬ ফেব্রুয়ারি তা দ্বিতীয় দিনে প্রবেশ করেছে।...বিদ্রোহী জওয়ানরা সারা দেশের বিডিআর ক্যাম্পগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে; কয়েকটি ক্যাম্পে অধস্তনরা অস্ত্রাগারগুলো দখলে নিয়ে ঢাকার বিদ্রোহীদের সমর্থনে রক্ষণাত্মক অবস্থান নিলে অফিসাররা ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে যান। ওই তারবার্তায় রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টি আরও লিখেছেন, সেদিন বিকেল সাড়ে পাঁচটায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করে বলেন, তাঁর সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সমর্থন অটুট রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টিকে বলেন, তিনি আশা করছেন, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সংকটের নিরসন হবে।
ওই তারবার্তায় শেখ হাসিনা শান্তিপূর্ণ সমাধান চাইছেন উপশিরোনামের অনুচ্ছেদে মরিয়ার্টি লেখেন, হাসিনা মন্ত্রিসভার সদস্য ও আওয়ামী লীগের অন্য নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করার পর স্থানীয় সময় বেলা দুইটা ১৫ মিনিটে থমথমে চেহারা নিয়ে টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ১৫ মিনিটের একটি ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি বিদ্রোহীদের অস্ত্র সমর্পণ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অস্ত্র সমর্পণ না করলে তাঁরা সহিংস পরিণতির মুখোমুখি হবেন। ওই তারবার্তার সারসংক্ষেপ অংশে মরিয়ার্টি এ প্রসঙ্গে আরও স্পষ্ট করে লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী হাসিনা বিডিআরের বিদ্রোহীদের উদ্দেশ করে বলেন, তাঁরা যদি অস্ত্র সমর্পণ করে আপস-মীমাংসার আলোচনায় না আসেন তাহলে তিনি তাঁদের ওপর আক্রমণ চালানোর নির্দেশ দেবেন।
মরিয়ার্টি আরও লিখেছেন, বিদ্রোহের দ্বিতীয় দিন ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেল পাঁচটা নাগাদ ১১টি টি-৬৯ ট্যাংক বিডিআর সদর দপ্তরের সন্নিকটে অভিজাত ধানমন্ডি এলাকার পত্রপল্লবময় রাস্তাগুলোতে অবস্থান নেয়; এর উদ্দেশ্য সম্ভবত আপস-আলোচনার সমর্থনে শক্তি প্রদর্শন এবং বিদ্রোহীদের মধ্যে যাঁরা আত্মসমর্পণে অস্বীকৃতি জানাবেন, তাঁদের ওপর আক্রমণ চালানোর প্রস্তুতিও।
রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টি আরও লিখেছেন যে তাঁর মনে হয়েছে, বিডিআর জওয়ানদের বিদ্রোহটি ছিল স্বতঃস্ফূর্ত এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বহীন। সে কারণে তা মোকাবিলা করতে সরকারকে হিমশিম খেতে হচ্ছিল। তিনি লিখেছেন: বিদ্রোহীদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সংকট নিরসনের প্রয়াসকে বাধাগ্রস্ত করছে; বিদ্রোহীরা সক্রিয় রয়েছেন দৃশ্যত কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে, তাঁদের কেন্দ্রীয় কোনো নেতৃত্ব নেই। একই দিনে রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টির কথা হয় সে সময়ের বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খানের সঙ্গে। এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত লিখেছেন: মন্ত্রী বলেন, সরকার কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে আলোচনা করেছে। আওয়ামী লীগের কিছু দলীয় লোক দাবি করেছেন যে এই বিদ্রোহ একটি দীর্ঘদিনের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, যাতে বিরোধী দলগুলোর অন্তত পরোক্ষ সমর্থন ছিল; কিন্তু বিদ্রোহের এই খণ্ড খণ্ড রূপ থেকে তা মনে হয় না; বরং মনে হয় যে এই বিদ্রোহ ঘটেছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে।
বিডিআর বিদ্রোহ সম্পর্কে প্রধান বিরোধী দলের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টি সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি লিখেছেন, প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি
প্রকাশ্যে যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, তা ছিল সংযত ও দায়িত্বশীল। সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, দলের একজন মুখপাত্র সমস্যাগুলোর ন্যায্য ও যুক্তিসংগত সমাধানে পৌঁছানোর লক্ষ্যে সকল পক্ষের প্রতি ধৈর্য ও সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন। বিদ্রোহের দ্বিতীয় দিনে রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টি যেমন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করেছিলেন, তেমনি করেছিলেন প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকেও। বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে টেলিফোন আলাপ সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত লিখেছেন, রাষ্ট্রদূত বিরোধী নেতা খালেদা জিয়াকেও টেলিফোন করে বিরোধী দলের দায়িত্বশীল আচরণের জন্য ধন্যবাদ জানান। খালেদা জিয়া রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, জাতির মঙ্গলের স্বার্থে সংকট উত্তরণে তিনি সরকারকে সহযোগিতা করতে আগ্রহী।
বিডিআর বিদ্রোহের ফলে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমান্তের নিরাপত্তাব্যবস্থার নাজুকতা বেড়েছে বলে রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টির মনে হয়েছে। তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশের স্থলসীমান্ত নিরাপত্তাব্যবস্থায় এমনিতেই অনেক ফাঁকফোকর রয়েছে; এই বিদ্রোহের ফলে সেই দুর্বলতা আরও বেড়েছে। বাংলাদেশ রাইফেলসে বিদ্রোহের নেতিবাচক প্রভাব বাহিনীটির মধ্যে অন্তত নিকট ভবিষ্যতে রয়ে যাবে, ফলে সীমান্তের নিরাপত্তাব্যবস্থা বেশ নাজুক থেকে যাবে। এর পরিণতিতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে; ভারত এমনিতেই দাবি করে থাকে যে বাংলাদেশের ভেতর থেকে দেশি-বিদেশি সন্ত্রাসবাদীরা ভারতের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালায়।
রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টির মনে হয়েছে, সার্বিকভাবে বিডিআর বিদ্রোহের প্রভাব হবে দীর্ঘস্থায়ী। একই তারবার্তায় এ প্রসঙ্গে তিনি যা লিখেছেন তার বাংলা অনুবাদ হুবহু এখানে তুলে দিচ্ছি। শেষে বন্ধনীর ভেতরের টীকাও রাষ্ট্রদূতেরই লেখা।
এই অচলাবস্থার অবসান যেভাবেই ঘটুক না কেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালনা ও সন্ত্রাসবাদ দমনের ক্ষেত্রে এর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব পড়বে। এই সংকটকে সামরিক বাহিনীর ওপর বেসামরিক নিয়ন্ত্রণের একটি পরীক্ষা বলে মনে হচ্ছে; এ দেশে সামরিক বাহিনীর ওপর বেসামরিক নিয়ন্ত্রণ ক্ষীণ বলে ব্যাপকভাবে মনে করা হয়। যদিও মনে হচ্ছে হাসিনা যত দূর সম্ভব রক্তপাত এড়াতে চাইছেন, তাঁর রাজনৈতিক মিত্ররা স্বীকার করেছেন যে সামরিক অফিসারদের হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার পক্ষে সেনাবাহিনীর দিক থেকে চাপ আছে। (টীকা: সামরিক বাহিনীর রাজনীতিতে জড়ানোর দীর্ঘ ইতিহাস আছে; অতিসম্প্রতি ২০০৭-২০০৮ কালপর্বের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান সমর্থক ছিল সামরিক বাহিনী। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুর্নীতি দমন অভিযান ও গণতান্ত্রিক সংস্কারের লক্ষ্যবস্তু হয়েছিলেন হাসিনাসহ অনেক নেতৃস্থানীয় রাজনীতিক। টীকা শেষ।
বিদ্রোহের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ২৬ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টি তাঁর সদর দপ্তরকে জানিয়ে দেন, বিডিআর বিদ্রোহের ফলে উদ্ভূত জটিল ও বিপজ্জনক ওই পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার নতুন সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবেএ কথা তিনি টেলিফোন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছেন। ওই তারবার্তার শেষে রাষ্ট্রদূত সুস্পষ্ট ভাষায় লিখেছেন: দূতাবাস গণতান্ত্রিক রীতিনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ পথে, বিশেষত সামরিক বাহিনীর ওপর বেসামরিক নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখে, সংকট নিরসনের আহ্বান জানাতে হাসিনা, বিরোধী দল ও সামরিক নেতৃবৃন্দসহ সকল পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। নবনির্বাচিত সরকারের জন্য প্রথম এ ধরনের এক বিরাট পরীক্ষার মুহূর্তে তার প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সমর্থন জোর দিয়ে তুলে ধরতে দূতাবাস প্রত্যেকটি সুযোগ গ্রহণ করছে।
রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টির আরেকটি পর্যবেক্ষণ ছিল এ রকম: বিদ্রোহের ঘটনা থেকে এই তাগিদ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন, বিশেষত সংকটের মুহূর্তগুলোতে...।
প্রথমা থেকে সদ্য প্রকাশিত বই উইকিলিকসে বাংলাদেশ অবলম্বনে
মশিউল আলম: সাংবাদিক
mashiul.alam@gmail.com
=================================================================================
বিডিআর বিদ্রোহ সম্পর্কে একটি গোপনীয় তারবার্তা
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-02-25/news/331966
| তারিখ: ২৫-০২-২০১৩
২০০৯ সালের ১ মার্চ ঢাকার তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টির লেখা একটি গোপনীয় তারবার্তার অংশবিশেষের অনুবাদ
“২. (সি
শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশ রাইফেলসের বিদ্রোহ দমন করার তিন দিন পর তিনি প্রায় ৫০০ সেনা কর্মকর্তার সামনে বক্তব্য দেন, যাঁরা আধা সামরিক সীমান্তরক্ষা বাহিনীর জওয়ানদের হাতে নিজেদের সহকর্মীদের হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় এখনো শোকগ্রস্ত। (টীকা: বাংলাদেশ রাইফেলসের জওয়ানরা সেনাবাহিনীর অফিসারদের কমান্ডে চলেন। টীকা শেষ।
সেনা অফিসাররা মনে করেন, বিদ্রোহীদের সাধারণ ক্ষমার প্রস্তাব দেওয়া, তাদের বেতন-ভাতাসংক্রান্ত ক্ষোভ-অভিযোগের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করা এবং বাংলাদেশ রাইফেলসের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরিবর্তে হাসিনার উচিত ছিল তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্রোহীদের ওপর সামরিক আক্রমণ পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া। অধিকাংশ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বিদ্রোহের শুরুতে; সংবাদমাধ্যম ও আন্তর্জাতিক মহল মনে করে, আরও রক্তপাত যে এড়ানো গেছে, তার কৃতিত্ব হাসিনার (সংশ্লিষ্ট একাধিক তারবার্তা দ্রষ্টব্য
।
৩. (সি
হাসিনা সেনাবাহিনীর অফিসারদের মুখোমুখি হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন কিছু অন্যান্য পদক্ষেপ গ্রহণের পর। সেগুলো হলো: হত্যাকাণ্ডগুলোর দায়ে সন্দেহভাজন বিদ্রোহীদের অবিলম্বে বিচার করার লক্ষ্যে একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন, বিদ্রোহের ঘটনা তদন্ত করার জন্য কমিটি গঠন এবং নিহত সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারগুলোর জন্য নগদ অর্থ অনুদান প্রদান। কিন্তু এসব পদক্ষেপ সেনানিবাসকে শান্ত করতে পারেনি। (টীকা: হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিকী দূতাবাসের কর্মকর্তাকে বলেন, হাসিনার মন্ত্রিসভা তাঁকে ওই সভায় না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। টীকা শেষ।
তারেক সিদ্দিকী ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী—এই দুজন ঘনিষ্ঠ আস্থাভাজন ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে হাসিনা প্রায় ৫০০ সামরিক অফিসারের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মিলিত হন এবং সেখানে তিনি বারবার গালাগালির (ভারবাল অ্যাবিউজ
শিকার হন। তারেক সিদ্দিকী আমাদের বলেন, ওই সমাবেশে তিনি অনেক কট্টর আওয়ামী লীগবিরোধী অফিসারকে শনাক্ত করতে পেরেছেন, যাঁদের অনেকেই হাসিনাকে ‘আলোচ্য বিষয়ের’ বাইরে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, অত্যন্ত উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পর মোনাজাতের মাধ্যমে বৈঠক শান্তভাবে শেষ হয়। তবু, তিনি বলেন, হাসিনার যে কোনো ক্ষতি করা হয়নি, তাতে তিনি (তারেক সিদ্দিকী
বিস্মিত হয়েছেন।
৪. (সি
বৈঠকটি সংবাদমাধ্যমের জন্য উন্মুক্ত ছিল না, তবে একাধিক সূত্র থেকে বলা হয়, কয়েকজন সেনা অফিসার সরকারের দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অপসারণের দাবি তোলেন, যাঁরা বাংলাদেশ রাইফেলসের বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংলাপের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাঁরা হলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক। উত্তেজিত কিছু অফিসার চেয়ার ভাঙচুর করেন এবং নিজেদের মাথা দেয়ালে ঠোকেন বলে জানা যায়। অন্যরা দাবি করেন, বিদ্রোহীদের বিচার অবিলম্বে শুরু করতে হবে এবং যারা দোষী সাব্যস্ত হবে তাদের প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝোলাতে হবে।”
সূত্র: মশিউল আলমের সম্পাদনায় সদ্য প্রকাশিত বই উইকিলিকসে বাংলাদেশ।