Banglar Bir
SENIOR MEMBER
- Joined
- Mar 19, 2006
- Messages
- 7,805
- Reaction score
- -3
- Country
- Location
15 lacs Indian's Illegally Hiding in Bangladesh
বাংলাদেশে ঘাপটি মেরে আছে ১৫ লাখ অবৈধ ভারতীয়
বাংলাদেশে ঘাপটি মেরে আছে ১৫ লাখ অবৈধ ভারতীয়
দেশের হাই লেভেলের চাকরির বাজার করে রেখেছে বিদেশীরা।যার অধিকাংশই অবৈধ।ইউরোপ সহ উন্নত দেশ গুলির অভিবাসীরা বৈধ পথে আসলেও বাংলাদেশের সঙ্গে তিন দিক থেকে ঘেরা ভারত থেকে যারা আসছেন তাদের ৯৯% অবৈধ।যার সংখ্যা রীতিমত চমকে দেয়ার মত।২০১০ সালের হিসাবেই বাংলাদেশে ১২ লাখের বেশি অবৈধ ভারতীয় শুধু বসবাস করছেন যা এখন ১৫ লাখের অধিক ছাড়িয়েছে। তারা শুধু বসবাসই করছে না, দেশের উচ্চপদের চাকরির ৯০% তাদের দখলে। ভাষা এবং সংস্কৃতির সাথে মিল থাকায় তাদের বাংলাদেশী হিসেবে বাস করতে কোন সমস্যা হচ্ছেনা।
দেশের গার্মেন্টস থেকে হোটেল-রেস্টুরেন্ট, বিজ্ঞাপনী সংস্থা এবং মোবাইলফোন কোম্পানি পর্যন্ত নানা ধরনের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছে অবৈধ ভারতীয়রা। উচ্চ পদে শুধু নয়, অনেককে এমনকি নীতিনির্ধারকের অবস্থানেও দেখা যাচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে চাকরি করছে তারা অবৈধভাবে। অনেকে ট্যুরিস্ট ভিসায় দু’মাসের জন্য এসে চাকরিতে ঢুকে পড়েছে, অনেকে আবার ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে এলেও সে পারমিট আর নবায়ন করেনি। সবকিছুর পেছনে রয়েছে সরকারি সংস্থাগুলোর গাফিলতি। অবৈধ বিদেশীদের সংখ্যা এবং তারা কোথায় কোন্ ধরনের চাকরি করছে এসব বিষয়ে সরকারের কাছে কোনো তথ্য-পরিসংখ্যান নেই। থাকলেও তা প্রকাশ করা হয় না। এ অবস্থারও সুযোগ নিয়ে থাকে বিদেশীরা।
তারা আরো বেশি সংখ্যায় চাকরি নিয়ে ঢুকে পড়ে বাংলাদেশে। এর ফলে একদিকে শিক্ষিত তরুণ-যুবকরা চাকরি পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে দেশের নিরাপত্তার জন্য সৃষ্টি হচ্ছে মারাত্মক হুমকির। উল্লেখ্য, স্বল্পসংখ্যক ছাড়া অবৈধ বিদেশীদের প্রায় সবাই ভারতীয় নাগরিক।
দেশের ভেতরে লাখ লাখ শিক্ষিত তরুণ-যুবক যেখানে চাকরি পাওয়ার জন্য হা-পিত্যেশ করছে, বেকারের সংখ্যাও যেখানে হু হু করে বেড়ে চলেছে সেখানে ১২ লাখের বেশি ভারতীয়র অবৈধভাবে চাকরিতে নিয়োজিত থাকার তথ্য শুধু আশঙ্কাজনক নয়, যথেষ্ট আপত্তিকরও। একে বেকারের দেশে নির্মম নিষ্ঠুরতা ছাড়া আর কিছু বলা যায় না। সরকারের গাফিলতিই এমন অবস্থার প্রধান কারণ।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, স্থল সীমান্ত পথে পাসপোর্ট ছাড়া যে হাজার হাজার ভারতীয় হিন্দু আসছে তাদের তো খবরই নেই, পুলিশ এমনকি সেই সব ভারতীয় সম্পর্কেও কোনো খোঁজ-খবর করে না, যারা পাসপোর্ট নিয়ে আসে। অর্থাৎ বিদেশীদের ব্যাপারে সরকারের কোনো রকম মনিটরিং নেই বললেই চলে। অথচ বিদেশীরা তথা অবৈধ ভারতীয় কোথায় কি করছে বা কোনো ধরনের তৎপরতা চালাচ্ছে এসব বিষয়ে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের মাধ্যমে খোঁজ-খবর রাখা সরকারের কর্তব্য। ভিসার মেয়াদ শেষে বিদেশীরা ফিরে যাচ্ছে কিনা- তা মনিটর করার পাশাপাশি ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কেউ থেকে গেলে তাকে বহিস্কার বা গ্রেফতার করাসহ আইনত ব্যবস্থা নেয়াও সরকারের কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। অন্যদিকে সরকার সে কর্তব্য পালনের ধারে-কাছেও যাচ্ছে না। আরো অনেকভাবেও অবৈধ বিদেশীদের জন্য দরজা খুলে দেয়া হচ্ছে। বায়িং হাউস ও মোবাইলফোন কোম্পানিগুলোর উদাহরণ লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, বিনিয়োগের আড়ালে বিশেষ করে ভারতীয় হিন্দুরা তাদের দেশ থেকে বেশি বেতনে লোকজন নিয়ে আসছে। তারা বেতনের টাকাও হুন্ডির মাধ্যমে দেশে পাঠাচ্ছে। ফলে একদিকে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশীরা চাকরি পাচ্ছে না, অন্যদিকে হুন্ডির কারণে ভারতীয়দের বিনিয়োগে দেশও উপকৃত হচ্ছে না। এভাবে বিশেষ করে গার্মেন্টস ও মোবাইলফোনের মতো খাতগুলো বরং ভারতীয়দের দখলে চলে যাচ্ছে। বিদেশীদের ব্যাপারে মনিটরিং না থাকায় দেশের নিরাপত্তার দিকটিও উপেক্ষিত হচ্ছে। তথ্য পাচার হয়ে যাচ্ছে প্রতি মুহূর্তে।
ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার যে অঙ্গিকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন তা পূরণের কিছুটা কাছাকাছি যেতে হলেও অবৈধ বিদেশীদের বিদায় করা দরকার। এই সহজ সত্যটুকুও বুঝতে হবে যে, দেশে চাকরি পায় না বলেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশীরা সমুদ্র পাড়ি দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে এবং সে কারণেই বিদেশে দেশের সম্মান ক্ষুণœ হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার জন্য হাজার হাজার বিদেশী নাগরিক বিশেষতঃ ভারতীয় নাগরিক অবৈধভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যম পর্যায় বা শীর্ষ পদে চাকরি করছে। বছরে এক একজন বিদেশী নাগরিক গড়ে ১ থেকে দেড় কোটি টাকা আয় করলেও তারা কোনো কর দিচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বেপজা’র অনুমোদিত সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার আর এনজিও ব্যুরোর অনুমোদিত বিদেশী নাগরিক প্রায় ৫শ’। বিদ্যমান আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, বাংলাদেশে কাজ করে এমন বিদেশী নাগরিককে তাদের যেকোনো পরিমাণ আয়ের উপর ৩০ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হয়। একটানা তিন মাস বাংলাদেশে থাকলে বা এক বছরে ১৮০ দিন এ দেশে থাকলে তারা আয়করের আওতায় পড়বে।
সম্প্রতি বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেছে, ‘আমাদের দেশে যথেষ্ট বেকার যুবক থাকা সত্ত্বেও ব্যাপকভাবে বিদেশী জনশক্তি এখানে কাজ করে। তাদের অনেকেই করের আওতায় আসে না। বিদেশী কর্মরত লোকজনের নিবন্ধন গতবছর (২০১৪ সালে) আমরা শুরু করেছি। এবারে তাদের উপর নিয়মিত কর ধার্যের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা এখন অবৈধভাবে কোনো প্রতিষ্ঠানের কাজে নিয়োজিত থাকবে সেইসব প্রতিষ্ঠানের উপর প্রদেয় আয়করের ৫০ শতাংশ বা ৫ লাখ টাকা (যেটি বেশি) অতিরিক্ত কর আরোপের প্রস্তাব করছি। একই সঙ্গে ওই প্রতিষ্ঠানের সব রকম কর সুবিধা প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করছি। এই দুর্জনদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের লক্ষ্যে জেল ও জরিমানাও করা হবে।’
এ অবস্থায় আগামী অর্থবছর থেকে এ ধরনের বিদেশী নাগরিকদের কাছ থেকে কর আহরণের পাশাপাশি তাদের অবৈধভাবে নিয়োগের বিরুদ্ধে মাঠে নামার কথা বলেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
নিয়মানুযায়ী বিনিয়োগ বোর্ড অথবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতিক্রমে যথাযথ নিবন্ধনের মাধ্যমে তাদের বাংলাদেশে কাজ করার কথা। বর্তমানে এমন নিবন্ধিত কর্মীর সংখ্যা ১২ থেকে ১৫ হাজার। কিন্তু এনবিআরসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো মনে করছে, দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ভারতীয় হিন্দুর সংখ্যা ১২ লক্ষাধিক। বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে তারা হুন্ডির মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে অর্থ নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া অনেক বিদেশী নাগরিক দেশীয় অনেক উদ্যোক্তার সঙ্গে যৌথভাবে পোশাক খাতের বায়িং হাউজসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। এক্ষেত্রে বিনিয়োগ বোর্ডে নিবন্ধন নেয়ার কথা থাকলেও দেশীয় উদ্যোক্তাদের সহযোগিতায় তারা পার পেয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি নানা খরচ দেখিয়ে অর্থ পাচার করছে তারা। নিজেদের লভ্যাংশও ব্যাংকিং মাধ্যমে না নিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠাচ্ছে। এক্ষেত্রে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। বিশেষ করে তৈরী পোশাক খাতে এমন অবৈধ বিদেশী কর্মীর সংখ্যা অনেক বেশি বলে জানা গেছে।
এসব ব্যক্তির কাছ থেকে কর আদায়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। এরই মধ্যে ২০১৫ সালের অর্থ আইনে বিদেশীদের কাছ থেকে কর আদায়ে ১৮৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশ সংশোধনের প্রস্তাব সন্নিবেশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি তার প্রতিষ্ঠানে বিদেশী কোনো কর্মী নিয়োগ দিতে চাইলে অবশ্যই তাদের বিনিয়োগ বোর্ডসহ দেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে নিবন্ধিত হতে হবে। আয় বর্ষের যে সময়েই কোনো বিদেশী একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করুক না কেন, তাদের কর দিতে হবে। আর কোনো প্রতিষ্ঠান যদি অবৈধভাবে বিদেশীদের কাজ করার অনৈতিক সুযোগ দেয়, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানকে স্বাভাবিকের তুলনায় ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত কর দিতে হবে। অথবা ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। এ দুটির মধ্যে যেটির পরিমাণ বেশি হবে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সেটি আদায় করা হবে। আয়করের এ বিধান বাস্তবায়নে ব্যাপক কর্মতৎপরতা শুরুর পরিকল্পনা করছে এনবিআর।
উল্লিখিত শ্রেণীর বিদেশী কর্মী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢাকার অনেক বিদেশী দূতাবাস, হাইকমিশন ও মিশনগুলোয় কর্মরত কর্মকর্তারা খ-কালীন ক্লাস নিয়ে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করে। কিন্তু এ অর্থ ট্যাক্সের আওতায় আসে না। অনেক সময় উপযুক্ত উৎসবহির্ভূত অর্থসহ বিমানবন্দরে বিদেশী নাগরিকের ধরা পড়ার ঘটনাও ঘটে। পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে অনেক বিদেশী চিকিৎসক খ-কালীন সেবা দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ নিজ দেশে নিয়ে যায়। তারাও কোনো কর দেয় না। এ ধরনের চিকিৎসকের আয় থেকেও ট্যাক্স আদায়ের ব্যবস্থা করা দরকার।
প্রস্তাবিত অর্থ আইন-২০১৫এর মাধ্যমে অনিবাসী ব্যক্তিদের জেল-জরিমানার বিধান রেখে আয়কর অধ্যাদেশে ১৬৫সি নামে একটি ধারা সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া একই ধরনের অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকলে ওই প্রতিষ্ঠানের করযোগ্য আয়ের অতিরিক্ত কর ৫০ শতাংশ অথবা ৫ লাখ টাকা জরিমানার করার বিধান করা হয়েছে। এজন্য আয়কর অধ্যাদেশের ১৬বি ধারাটি সংশোধন করা হয়েছে।
অবৈধ চাকুরেদের ঠেকাতে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য অথবা এনবিআরের পদক্ষেপ কোনোটাই যথেষ্ট নয়। বাংলাদেশে কোনো বিদেশী চাকুরে দরকার নেই। কারণ যেসব পদে তারা চাকরি করে ওই পদে চাকরি করার জন্য দেশেই অভিজ্ঞ লোকবল রয়েছে।
http://rtnews24.net/exclusive/76752
বাংলাদেশে ঘাপটি মেরে আছে ১৫ লাখ অবৈধ ভারতীয়
বাংলাদেশে ঘাপটি মেরে আছে ১৫ লাখ অবৈধ ভারতীয়
দেশের হাই লেভেলের চাকরির বাজার করে রেখেছে বিদেশীরা।যার অধিকাংশই অবৈধ।ইউরোপ সহ উন্নত দেশ গুলির অভিবাসীরা বৈধ পথে আসলেও বাংলাদেশের সঙ্গে তিন দিক থেকে ঘেরা ভারত থেকে যারা আসছেন তাদের ৯৯% অবৈধ।যার সংখ্যা রীতিমত চমকে দেয়ার মত।২০১০ সালের হিসাবেই বাংলাদেশে ১২ লাখের বেশি অবৈধ ভারতীয় শুধু বসবাস করছেন যা এখন ১৫ লাখের অধিক ছাড়িয়েছে। তারা শুধু বসবাসই করছে না, দেশের উচ্চপদের চাকরির ৯০% তাদের দখলে। ভাষা এবং সংস্কৃতির সাথে মিল থাকায় তাদের বাংলাদেশী হিসেবে বাস করতে কোন সমস্যা হচ্ছেনা।
দেশের গার্মেন্টস থেকে হোটেল-রেস্টুরেন্ট, বিজ্ঞাপনী সংস্থা এবং মোবাইলফোন কোম্পানি পর্যন্ত নানা ধরনের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছে অবৈধ ভারতীয়রা। উচ্চ পদে শুধু নয়, অনেককে এমনকি নীতিনির্ধারকের অবস্থানেও দেখা যাচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে চাকরি করছে তারা অবৈধভাবে। অনেকে ট্যুরিস্ট ভিসায় দু’মাসের জন্য এসে চাকরিতে ঢুকে পড়েছে, অনেকে আবার ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে এলেও সে পারমিট আর নবায়ন করেনি। সবকিছুর পেছনে রয়েছে সরকারি সংস্থাগুলোর গাফিলতি। অবৈধ বিদেশীদের সংখ্যা এবং তারা কোথায় কোন্ ধরনের চাকরি করছে এসব বিষয়ে সরকারের কাছে কোনো তথ্য-পরিসংখ্যান নেই। থাকলেও তা প্রকাশ করা হয় না। এ অবস্থারও সুযোগ নিয়ে থাকে বিদেশীরা।
তারা আরো বেশি সংখ্যায় চাকরি নিয়ে ঢুকে পড়ে বাংলাদেশে। এর ফলে একদিকে শিক্ষিত তরুণ-যুবকরা চাকরি পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে দেশের নিরাপত্তার জন্য সৃষ্টি হচ্ছে মারাত্মক হুমকির। উল্লেখ্য, স্বল্পসংখ্যক ছাড়া অবৈধ বিদেশীদের প্রায় সবাই ভারতীয় নাগরিক।
দেশের ভেতরে লাখ লাখ শিক্ষিত তরুণ-যুবক যেখানে চাকরি পাওয়ার জন্য হা-পিত্যেশ করছে, বেকারের সংখ্যাও যেখানে হু হু করে বেড়ে চলেছে সেখানে ১২ লাখের বেশি ভারতীয়র অবৈধভাবে চাকরিতে নিয়োজিত থাকার তথ্য শুধু আশঙ্কাজনক নয়, যথেষ্ট আপত্তিকরও। একে বেকারের দেশে নির্মম নিষ্ঠুরতা ছাড়া আর কিছু বলা যায় না। সরকারের গাফিলতিই এমন অবস্থার প্রধান কারণ।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, স্থল সীমান্ত পথে পাসপোর্ট ছাড়া যে হাজার হাজার ভারতীয় হিন্দু আসছে তাদের তো খবরই নেই, পুলিশ এমনকি সেই সব ভারতীয় সম্পর্কেও কোনো খোঁজ-খবর করে না, যারা পাসপোর্ট নিয়ে আসে। অর্থাৎ বিদেশীদের ব্যাপারে সরকারের কোনো রকম মনিটরিং নেই বললেই চলে। অথচ বিদেশীরা তথা অবৈধ ভারতীয় কোথায় কি করছে বা কোনো ধরনের তৎপরতা চালাচ্ছে এসব বিষয়ে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের মাধ্যমে খোঁজ-খবর রাখা সরকারের কর্তব্য। ভিসার মেয়াদ শেষে বিদেশীরা ফিরে যাচ্ছে কিনা- তা মনিটর করার পাশাপাশি ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কেউ থেকে গেলে তাকে বহিস্কার বা গ্রেফতার করাসহ আইনত ব্যবস্থা নেয়াও সরকারের কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। অন্যদিকে সরকার সে কর্তব্য পালনের ধারে-কাছেও যাচ্ছে না। আরো অনেকভাবেও অবৈধ বিদেশীদের জন্য দরজা খুলে দেয়া হচ্ছে। বায়িং হাউস ও মোবাইলফোন কোম্পানিগুলোর উদাহরণ লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, বিনিয়োগের আড়ালে বিশেষ করে ভারতীয় হিন্দুরা তাদের দেশ থেকে বেশি বেতনে লোকজন নিয়ে আসছে। তারা বেতনের টাকাও হুন্ডির মাধ্যমে দেশে পাঠাচ্ছে। ফলে একদিকে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশীরা চাকরি পাচ্ছে না, অন্যদিকে হুন্ডির কারণে ভারতীয়দের বিনিয়োগে দেশও উপকৃত হচ্ছে না। এভাবে বিশেষ করে গার্মেন্টস ও মোবাইলফোনের মতো খাতগুলো বরং ভারতীয়দের দখলে চলে যাচ্ছে। বিদেশীদের ব্যাপারে মনিটরিং না থাকায় দেশের নিরাপত্তার দিকটিও উপেক্ষিত হচ্ছে। তথ্য পাচার হয়ে যাচ্ছে প্রতি মুহূর্তে।
ঘরে ঘরে চাকরি দেয়ার যে অঙ্গিকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন তা পূরণের কিছুটা কাছাকাছি যেতে হলেও অবৈধ বিদেশীদের বিদায় করা দরকার। এই সহজ সত্যটুকুও বুঝতে হবে যে, দেশে চাকরি পায় না বলেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশীরা সমুদ্র পাড়ি দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে এবং সে কারণেই বিদেশে দেশের সম্মান ক্ষুণœ হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার জন্য হাজার হাজার বিদেশী নাগরিক বিশেষতঃ ভারতীয় নাগরিক অবৈধভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যম পর্যায় বা শীর্ষ পদে চাকরি করছে। বছরে এক একজন বিদেশী নাগরিক গড়ে ১ থেকে দেড় কোটি টাকা আয় করলেও তারা কোনো কর দিচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বেপজা’র অনুমোদিত সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার আর এনজিও ব্যুরোর অনুমোদিত বিদেশী নাগরিক প্রায় ৫শ’। বিদ্যমান আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, বাংলাদেশে কাজ করে এমন বিদেশী নাগরিককে তাদের যেকোনো পরিমাণ আয়ের উপর ৩০ শতাংশ হারে আয়কর দিতে হয়। একটানা তিন মাস বাংলাদেশে থাকলে বা এক বছরে ১৮০ দিন এ দেশে থাকলে তারা আয়করের আওতায় পড়বে।
সম্প্রতি বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেছে, ‘আমাদের দেশে যথেষ্ট বেকার যুবক থাকা সত্ত্বেও ব্যাপকভাবে বিদেশী জনশক্তি এখানে কাজ করে। তাদের অনেকেই করের আওতায় আসে না। বিদেশী কর্মরত লোকজনের নিবন্ধন গতবছর (২০১৪ সালে) আমরা শুরু করেছি। এবারে তাদের উপর নিয়মিত কর ধার্যের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা এখন অবৈধভাবে কোনো প্রতিষ্ঠানের কাজে নিয়োজিত থাকবে সেইসব প্রতিষ্ঠানের উপর প্রদেয় আয়করের ৫০ শতাংশ বা ৫ লাখ টাকা (যেটি বেশি) অতিরিক্ত কর আরোপের প্রস্তাব করছি। একই সঙ্গে ওই প্রতিষ্ঠানের সব রকম কর সুবিধা প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করছি। এই দুর্জনদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের লক্ষ্যে জেল ও জরিমানাও করা হবে।’
এ অবস্থায় আগামী অর্থবছর থেকে এ ধরনের বিদেশী নাগরিকদের কাছ থেকে কর আহরণের পাশাপাশি তাদের অবৈধভাবে নিয়োগের বিরুদ্ধে মাঠে নামার কথা বলেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
নিয়মানুযায়ী বিনিয়োগ বোর্ড অথবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতিক্রমে যথাযথ নিবন্ধনের মাধ্যমে তাদের বাংলাদেশে কাজ করার কথা। বর্তমানে এমন নিবন্ধিত কর্মীর সংখ্যা ১২ থেকে ১৫ হাজার। কিন্তু এনবিআরসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো মনে করছে, দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ভারতীয় হিন্দুর সংখ্যা ১২ লক্ষাধিক। বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে তারা হুন্ডির মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে অর্থ নিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া অনেক বিদেশী নাগরিক দেশীয় অনেক উদ্যোক্তার সঙ্গে যৌথভাবে পোশাক খাতের বায়িং হাউজসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। এক্ষেত্রে বিনিয়োগ বোর্ডে নিবন্ধন নেয়ার কথা থাকলেও দেশীয় উদ্যোক্তাদের সহযোগিতায় তারা পার পেয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি নানা খরচ দেখিয়ে অর্থ পাচার করছে তারা। নিজেদের লভ্যাংশও ব্যাংকিং মাধ্যমে না নিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠাচ্ছে। এক্ষেত্রে বিপুল অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। বিশেষ করে তৈরী পোশাক খাতে এমন অবৈধ বিদেশী কর্মীর সংখ্যা অনেক বেশি বলে জানা গেছে।
এসব ব্যক্তির কাছ থেকে কর আদায়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। এরই মধ্যে ২০১৫ সালের অর্থ আইনে বিদেশীদের কাছ থেকে কর আদায়ে ১৮৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশ সংশোধনের প্রস্তাব সন্নিবেশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি তার প্রতিষ্ঠানে বিদেশী কোনো কর্মী নিয়োগ দিতে চাইলে অবশ্যই তাদের বিনিয়োগ বোর্ডসহ দেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে নিবন্ধিত হতে হবে। আয় বর্ষের যে সময়েই কোনো বিদেশী একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করুক না কেন, তাদের কর দিতে হবে। আর কোনো প্রতিষ্ঠান যদি অবৈধভাবে বিদেশীদের কাজ করার অনৈতিক সুযোগ দেয়, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানকে স্বাভাবিকের তুলনায় ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত কর দিতে হবে। অথবা ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। এ দুটির মধ্যে যেটির পরিমাণ বেশি হবে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সেটি আদায় করা হবে। আয়করের এ বিধান বাস্তবায়নে ব্যাপক কর্মতৎপরতা শুরুর পরিকল্পনা করছে এনবিআর।
উল্লিখিত শ্রেণীর বিদেশী কর্মী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢাকার অনেক বিদেশী দূতাবাস, হাইকমিশন ও মিশনগুলোয় কর্মরত কর্মকর্তারা খ-কালীন ক্লাস নিয়ে অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করে। কিন্তু এ অর্থ ট্যাক্সের আওতায় আসে না। অনেক সময় উপযুক্ত উৎসবহির্ভূত অর্থসহ বিমানবন্দরে বিদেশী নাগরিকের ধরা পড়ার ঘটনাও ঘটে। পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে অনেক বিদেশী চিকিৎসক খ-কালীন সেবা দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ নিজ দেশে নিয়ে যায়। তারাও কোনো কর দেয় না। এ ধরনের চিকিৎসকের আয় থেকেও ট্যাক্স আদায়ের ব্যবস্থা করা দরকার।
প্রস্তাবিত অর্থ আইন-২০১৫এর মাধ্যমে অনিবাসী ব্যক্তিদের জেল-জরিমানার বিধান রেখে আয়কর অধ্যাদেশে ১৬৫সি নামে একটি ধারা সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া একই ধরনের অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকলে ওই প্রতিষ্ঠানের করযোগ্য আয়ের অতিরিক্ত কর ৫০ শতাংশ অথবা ৫ লাখ টাকা জরিমানার করার বিধান করা হয়েছে। এজন্য আয়কর অধ্যাদেশের ১৬বি ধারাটি সংশোধন করা হয়েছে।
অবৈধ চাকুরেদের ঠেকাতে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য অথবা এনবিআরের পদক্ষেপ কোনোটাই যথেষ্ট নয়। বাংলাদেশে কোনো বিদেশী চাকুরে দরকার নেই। কারণ যেসব পদে তারা চাকরি করে ওই পদে চাকরি করার জন্য দেশেই অভিজ্ঞ লোকবল রয়েছে।
http://rtnews24.net/exclusive/76752